শেখ হাসিনার এপিএস লিকুর বাড়িবিলাস – ইউ এস বাংলা নিউজ




শেখ হাসিনার এপিএস লিকুর বাড়িবিলাস

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ৯:০৩ 110 ভিউ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) গাজী হাফিজুর রহমান লিকু। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রীর অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার হিসাবে জায়গা পেয়েছিলেন ক্ষমতার কেন্দ্রে। তখন থেকেই পালটাতে থাকে তার জীবনধারা। নামে-বেনামে গড়তে থাকেন সম্পদের পাহাড়। ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস পদে নিয়োগের পর যেন তার হাতে চলে আসে আলাদিনের আশ্চর্য চেরাগ। ১৬ বছর নানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থে ঢাকা ও গোপালগঞ্জে ৭টি বাহারি বহুতল বাড়ি করেছেন। কুয়াকাটায় শেয়ারে গড়ে তুলেছেন ওশান ব্লু রিসোর্ট। গোপালগঞ্জে স্ত্রীর নামে ৪০০ বিঘা জমিতে প্রতিষ্ঠা করেছেন রাফী অ্যাগ্রো অ্যান্ড ফিশারিজ। পরিবহণ ব্যবসায় আছে বিপুল বিনিয়োগ। তবে সম্পদ গোপন করতে বেশির ভাগের নিবন্ধনই করেছেন স্ত্রী, ভাই, শ্যালক, শ্যালকের স্ত্রীসহ

আত্মীয়স্বজনের নামে। বেনামেও আছে তার বিপুল সম্পদ। বুধবার তার অনিয়ম-দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। দুদকের উপপরিচালক আখতারুল ইসলাম বলেন, গোয়েন্দা শাখার গোপন অনুসন্ধানে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর বিপুল সম্পদের তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পর কমিশন থেকে তার বিরুদ্ধ অনুসন্ধান টিম গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার পর ২০০৯-২০১০ করবর্ষে প্রথম আয়কর দেন লিকু। ওই সময় তার মূল বেতন ছিল ৫ হাজার ১০০ টাকা। ২০০৯ সালের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তার একমাত্র আয়ের খাত বেতন-ভাতা থেকে নিট আয় ৩০ হাজার

৩৫২ টাকা আয়কর ফাইলে প্রদর্শন করা হয়। ওই করবর্ষ শেষে তার অতীত জীবনের সঞ্চয় ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার বিপরীতে নিট সম্পদ ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৩৫৩ টাকা মর্মে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন। সবশেষ ২০২৩-২০২৪ করবর্ষে তার মূল বেতন ৬৭ হাজার ১০ টাকা এবং নিট আয় ৯ লাখ ৫ হাজার ৪৪৪ টাকা। এই করবর্ষ শেষে তার নিট সম্পদ ১ কোটি ৪৮ লাখ ৭ হাজার টাকা মর্মে তিনি আয়কর রিটার্নে ঘোষণা দেন। কিন্তু দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে আয়কর নথিতে উল্লেখ করা সম্পদের বাইরে লিকুর নামে-বেনামে বিপুল সম্পদ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে স্ত্রী রহিমা আক্তারের নামে গোপালগঞ্জে মেসার্স রাফী অ্যাগ্রো অ্যান্ড ফিশারিজের মতো বিশাল

প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। এ প্রতিষ্ঠানের নামে কাশিয়ানি থানা এলাকায় বিভিন্ন সময় একাধিক দলিলমূলে ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ১৫ বিঘা জমি কেনেন। বেনামে লিকুর রয়েছে পরিবহণ ব্যবসা। খুলনা-ঢাকা-সাতক্ষীরা-গোপালগঞ্জ রুটে ‘ওয়েলকাম এক্সপ্রেস’ নামে চলাচল করে তার ৪২টি বাস। গাড়িগুলো টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কালু ও তার যৌথ মালিকানায় বলে জানা গেছে। প্রতিটি গাড়ির দাম ৫০ লাখ টাকা। তবে এখান থেকে সাতটি গাড়ি তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন। এছাড়া ঢাকা মহানগরে চলাচলকারী ‘ওয়েলকাম পরিবহণ’ কোম্পানিতে রয়েছে লিকুর শেয়ার। জানা যায়, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থানার কুশলা ইউনিয়নের গোড়ার গ্রাম ও সদর উপজেলার কাজুলিয়া গ্রামের ৪০০ বিঘা জমিতে রয়েছে মৎস্য ঘের। সদর উপজেলার থানাপাড়া রোডে পৈতৃক জমিতে অন্তত ২

কোটি টাকা খরচে নির্মাণ করেছেন ৫ তলা বাড়ি। শ্যালক শেখ মো. ইকরাম ওরফে হালিম মোল্লার নামে থানাপাড়া রোডে অনির্বাণ স্কুলের দক্ষিণ পাশে তৈরি করেছেন ৬ তলা নজরকাড়া বাড়ি। ওই বাড়িতে লিকুর শ্বশুর-শাশুড়ি থাকেন। গোপালগঞ্জ পৌরসভার নীলের মাঠসংলগ্ন ১৩ শতাংশ জায়গায় ১০তলা কমার্শিয়াল কাম আবাসিক কমপ্লেক্স তৈরি করেছেন লিকু। শ্যালক ইকরাম ও তার স্ত্রী স্বর্ণা খানমের নামে গড়ে তোলা এই ভবনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্বর্ণা টাওয়ার’। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধায় মোড়ানো ভবনটিতে সুইমিংপুলসহ ৪০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। ২০১৫ সালে এ জায়গা কিনে ছয়তলা ভবনের প্ল্যান পাশ করিয়ে অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে ১০ তলা ভবন। এ জায়গার দলিল মূল্য ১৭ লাখ টাকা দেখানো হলেও প্রকৃত

মূল্য কয়েক কোটি টাকা। দুদকের কাছে তথ্য রয়েছে লিকুর প্রভাবে ইকরাম গার্মেন্ট ব্যবসার আড়ালে হুন্ডি কারবারে জড়িত। দুলাভাইয়ের বিপুল অবৈধ অর্থ বৈধ করার কাজে সহযোগিতা করেন শ্যালক ইকরাম। তিনি ভিয়েতনামে বসবাস করেন। সেখানে বিপুল টাকা পাচার করেছেন লিকু। এপিএস পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর পরিস্থিতি প্রতিকূল ভেবে সরকার পতনের আগেই ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি যান লিকু। সেখান থেকে ভিয়েতনাম গিয়ে শ্যালকের বাসায় আপাতত থিতু হয়েছেন। দুদকের গোপন অনুসন্ধানে লিকুর বেনামে আরও কয়েকটি বাড়ির তথ্য পাওয়া গেছে। গোপালগঞ্জ পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে গোবরা নামক স্থানে লিকুর শ্যালক ইকরাম, তার শ্যালক রিপন ফকিরের নামে ১৩ শতক জমি কিনে সেখানে নজরকাড়া ডুপ্লেক্স বাড়ি তৈরি

করা হয়েছে। একই এলাকায় ইকরামের আরেক শ্যালক মিল্টন ফকিরের নামে কোনো প্ল্যান ছাড়াই তৈরি করা হয়েছে তিনতলা বাড়ি। লিকুর ছোট ভাই শফিকুর রহমান ছোটনের নামে পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বকুলতলায় ২২ শতাংশ জমি কেনা হয়েছে। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে শ্যালক ইকরামের নামে সাত কাঠা জায়গা কিনেছেন সোয়া কোটি টাকায়। এছাড়া গোপালগঞ্জের বেতগ্রাম মৌজায় ৫৯৬/৭ ও ১০৮/৩ নম্বর হোল্ডিংয়ে স্ত্রী রহিমা বেগমের নামে ১৮ শতাংশ বসতভিটা কেনেন লিকু। পৌরসভার ১৩ নম্বর রোডে কমিশনার হুমায়ুনের কাছ থেকে শ্যালক ইকরামের নামে ১৫ বিঘা জমি কিনে সেখানে পুকুর খনন করা হয়েছে। ভায়রা ওমর আলীর নামে পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে চারতলা বাড়ি করেছেন। আরও জানা যায়, ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার বছিলায় মধু সিটিতে এক বিঘা জমির ওপর ছয় তলা বাড়ি করেছেন লিকু। আদাবরে ছয় নম্বর রোডে ৫৮৩ নম্বর বাড়ির এ-৬ নম্বর ফ্ল্যাট কিনেছেন স্ত্রী রহিমা বেগমের নামে। ধানমন্ডির ২৫ মিতালী রোডে আনোয়ার ল্যান্ডমার্কের ভবনে তার আরও একটি অভিজাত অ্যাপার্টমেন্ট আছে। কুয়াকাটায় লাইট হাউজের পাশে ওশান ব্ল– রিসোর্টের চেয়ারম্যান লিকুর ভাই মুস্তাফিজুর রহমান দিপু। এই রিসোর্টের জমির মালিক ছিলেন মুমরেজ নামে এক ব্যক্তি। পরে তিনি বিভিন্ন জনের কাছে শেয়ার বিক্রি করেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
কট্টর হিন্দুত্ববাদী আরএসএস ‘প্রচারকরা’ কেন বিয়ে করতে পারেন না? আজকের খেলা: ১৯ এপ্রিল ২০২৫ আফগানিস্তানে পরিত্যক্ত মার্কিন অস্ত্র এখন জঙ্গিদের হাতে গাজার যুদ্ধাহত শিশুর ছবি বিশ্বসেরা জোট সরকারে থাকছেন না বিলাওয়াল আসাদকে সিরিয়ায় প্রত্যার্পণে রাশিয়ার অস্বীকৃতি টানা ৫ দিন বৃষ্টি নিয়ে নতুন বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস রক্তক্ষরণজনিত জন্মগত রোগ মেসির তিন ছেলে কে কোন ফুটবলারের ভক্ত বিদ্রোহী ৮ নারী ফুটবলারও আসছেন চুক্তির আওতায় রুশ নাগরিকের মুক্তিতে হামাসের ভূমিকার প্রশংসা করলেন পুতিন হাট ইজারা নেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১০ দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে আ. লীগ নেতা, যা বলছে জামায়াত ইরাকে প্রবল বালুঝড় : অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ৩ হাজার ৭ শতাধিক পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’ : ভারত বাজারে কাঁকরোলের কেজি ১৪০, বেগুনের সেঞ্চুরি চেকপোস্ট ব্যারাক থেকে পুলিশ সদস্যের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার রাষ্ট্র পরিবর্তনের জন্য লড়াই বিশ্বের ইতিহাসে বিরল: নজরুল এবার প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার মডেল মেঘনা আলম