‘চুলকাতে গিয়ে দেখি পা নেই’ – ইউ এস বাংলা নিউজ




‘চুলকাতে গিয়ে দেখি পা নেই’

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ৭:১৫ 118 ভিউ
আমার এখনও মনে হয় যে, আমার পা আগের মতোই আছে। এটা যে কেটে ফেলে দেয়া হয়েছে, এটা যে নাই সেটা মনেই থাকে না। আমি পুরো পায়ের অনুভূতি আগের মতোই পাই। হাসপাতালের বিছানায় বসে কথাগুলো বলছিলেন ১৫ বছর বয়সী কিশোর তামিম হোসেন। বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন। গত ৫ই আগস্ট বিকেলের দিকে ঢাকার মিরপুরে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর মিরপুরে যে আনন্দ মিছিল হয়, সেটাতে অংশ নিয়েছিলেন তামিম হোসেন। একপর্যায়ে মিছিলে পুলিশ গুলি ছুঁড়লে একটি গুলি এসে পায়ে লাগে তামিমের। বাংলাদেশে জুলাই এবং অগাস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অনেকে যেমন মারা গেছেন, তেমনি তামিমের মতো আহতও হয়েছেন কয়েক হাজার। এদের কেউ গুলিতে চোখ হারিয়েছেন, কেউ

পা হারিয়েছেন আবার কেউ শরীরে বুলেট নিয়েই বেঁচে আছেন না বাঁচার মতোই। তাদের পরিবারও আছে দুর্দশার মধ্যে। আহতদের কেউ হাসপাতাল ছেড়েছেন। আবার একমাস পরও সুস্থ না হওয়ায় অনেকের ঠিকানা হয়েছে হাসপাতাল। ঢাকার তামিম হোসেন পড়তেন একটি হাফেজি মাদ্রাসায়। চলতি বছর মাদ্রাসা থেকে ভর্তি হয়েছিলেন একটি মাধ্যমিক স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে। গত ৫ই আগস্ট মিরপুরে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। গুলি তার যান পায়ের পেছনের অংশে ঢুকে পাশ কেটে বেরিয়ে যায়। তামিম বলেন, গুলি লাগার সঙ্গে সঙ্গে আমি রাস্তায় পড়ে যাই। পুরো ডান পা অবশ হয়ে যায়। রক্ত আর রক্ত। হাঁটতে পারছিলাম না সহজে। ঐ অবস্থাতেই গুলি থেকে বাঁচতে আশ্রয় নেই রাস্তার ফ্লাইওভারে। আধাঘণ্টা পর গুলি থামলে

নেমে আসি। পরে মানুষজন আমাকে হাসপাতালে নেই। সেদিন মিরপুরের একটি হাসপাতাল ঘুরে তাঁর আশ্রয় হয় পঙ্গু হাসাপাতালে। সেখান থেকে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে। কিছুদিন ড্রেসিং করে। কিন্তু আস্তে আস্তে জায়গাটা পচে যায়। তখন পঙ্গু থেকে আমাকে হৃদরোগে পাঠায়। সেখানে টেস্ট করার পর তারা বলে যে, পা রাখা যাবে না। এটা কেটে ফেলতে হবে। পরে পঙ্গুতে আবারও ডাক্তাররা দেখে। তারা বলে যে, পা রাখার আর কোনও সুযোগ নেই। তামিমের পা কেটে ফেলার পর নতুন জটিলতা শুরু হয়। পা বিহীন অবস্থার সঙ্গে কিছুতেই মানিয়ে নিতে পারছিলেন না তামিম। অপারেশনের তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। কিন্তু পা হারিয়েও পা থাকার ‘অদ্ভুত’ অনুভূতি এখনও বয়ে চলেছেন অষ্টম শ্রেণির এই শিক্ষার্থী। প্রথম তিন-চার

দিন আমি ঘুমাতে পারি নাই। আমার মনে হতো যে, পুরো পা আমার অক্ষত আছে। পায়ে যেখানে গুলি লেগেছিলো, সেখানকার ব্যথা আমি এখনও অনুভব করি। অথচ সেই পা কেটে ফেলা হয়েছে। মাঝে মাঝে চুলকায়। চুলকাতে গিয়ে দেখি পা নেই। আমার যখন পা ছিল, তখন যে ফিল করতাম যে মশা কামড় দিয়েছে বা পিঁপড়া কামড় দিয়েছে, ঐরকমের ফিল হয়। আমার পা চুলকাতে থাকে। পিঁপড়া কামড় দেয়। কিন্তু আসলে কিছু নেই। তামিম এখন অভ্যস্ত হওয়ার চেষ্টা করছেন নতুন জীবনে। কিন্তু তার জীবনধারা যে আজীবনের জন্য বদলে গেছে, বুঝতে পারছেন সেটাও। তামিম বলেন, আমি এখন ক্রাচে ভর করে হাঁটার চেষ্টা করছি। আমি ফুটবল খেলতাম। সেগুলো মনে

পড়ে। আমার বন্ধুরা খেলবে। কিন্তু আমি খেলতে পারবো না -এগুলো মনে হয়। তখন আমার আম্মু ডাক্তারদের কথা বলে যে, তারা এমন পা লাগায় দিবে যে তুমি খেলতে পারবা।” তবে পরিস্থিতি যেমনই হোক, ভবিষ্যৎ নিয়ে হাল ছাড়ছেন না তামিম। স্বপ্ন দেখছেন, বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হবেন। আবু সাঈদ ভাই যখন মারা গেছে। অনেকেই আহত হয়েছে। তখন আমি বসে থাকতে পারিনি। আমার আম্মু নিষেধ করেছিল, কিন্তু আমি শুনি নাই। এখন ভাবি, আমি তো নিজেই সাহস করে আন্দোলনে গিয়েছি। নিজের একটা অঙ্গ গিয়েছে, আফসোস নাই। তবু দেশটা যেন ভালো থাকে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
জিমে ঘাম ঝরাচ্ছেন ৭০ বছরের বৃদ্ধা, জানালেন ফিট থাকার রহস্য ঢাবির হলে প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি বন্ধ ঘোষণা কর্তৃপক্ষের নীরবতায় ক্ষুব্ধ তিস্তাপাড়বাসী, নদী গর্ভে শত শত বিঘা জমি অসুস্থ স্ত্রীকে কবর দেওয়ার চেষ্টা স্বামীর, ভিডিও ভাইরাল গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যায় গ্রেপ্তার ৪ সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে যেসব অঞ্চলে ফাইনালের আগে যুবাদের দুর্দান্ত জয় ডেঙ্গুতে টালমাটাল চট্টগ্রাম মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল ঢাবি জুলাইয়ে আবারও বেড়েছে মূল্যস্ফীতি স্ত্রী-সন্তানকে অস্বীকার, কারাগারে ভুয়া ডাক্তার শুল্ক ইস্যুতে বিশ্ববাজারে বাড়ল সোনার দাম মাদুরোকে ধরিয়ে দিলে ৫ কোটি ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র পোশাক রপ্তানি কমেছে ১২ শতাংশ বিমান থেকে ফেলা ত্রাণ বাক্স মাথায় পড়ে শিশুর মৃত্যু প্রবাসীদের জন্য সুখবর গরম নিয়ে দুঃসংবাদ আবহাওয়া অফিসের এস আলমের ২০০ কোটি টাকার সম্পদ ক্রোক রাখার নির্দেশ মেঘনায় নিখোঁজের ১৯ ঘণ্টা পর শিশুর লাশ উদ্ধার ২২ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল ভারত