গুম নাটকের কুশীলব মাইকেল চাকমা আত্মগোপন থেকে প্রকাশ্যে: পাহাড় আবারও অশান্ত, বাড়ছে অস্ত্রের মজুদ – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আপডেটঃ ৭ অক্টোবর, ২০২৫
     ১০:৫৬ অপরাহ্ণ

গুম নাটকের কুশীলব মাইকেল চাকমা আত্মগোপন থেকে প্রকাশ্যে: পাহাড় আবারও অশান্ত, বাড়ছে অস্ত্রের মজুদ

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৭ অক্টোবর, ২০২৫ | ১০:৫৬ 44 ভিউ
কল্পিত আয়নাঘর তত্ত্বের অন্যতম কলাকুশলী মাইকেল চাকমা। আত্মগোপনে থেকে দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ে-সমতলে চালিয়ে গেছেন অপরাজনীতি ও প্রোপাগান্ডা। গত বছরের ৫ই আগস্ট সরকার উৎখাত ষড়যন্ত্রের অন্যতম অংশীজন মাইকেল গোপন ডেরা থেকে প্রকাশ্যে বেরিয়ে এসেছেন। এরপর থেকে আবারও অশান্ত হয়ে উঠেছে পাহাড়ি জনপদ। পাহাড়ে অশান্তির কারিগর মাইকেল এখন ধরাছোঁয়ার বাইরে। পার্বত্য চট্টগ্রামের অশান্তির কেন্দ্রবিন্দুতে আবারও উঠে এসেছে তার নাম। ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত মাইকেল হত্যা, চাঁদাবাজি, অস্ত্র ব্যবসা ও সশস্ত্র সংঘাতের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কুখ্যাত। একাধিক মামলার আসামি হলেও তিনি এখনো পার্বত্য রাজনীতিতে প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করছেন, যা পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা

সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে ধর্ষণের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে অস্থিরতা সৃষ্টির পেছনে মাইকেল চাকমার পরিকল্পনার অভিযোগ উঠেছে। ইউপিডিএফ ১৯৯৭ সালের পার্বত্য শান্তিচুক্তির বিরোধিতা করে “পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন” দাবি করে সশস্ত্র আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। ফলে ২৮ বছর পরও পাহাড়ে শান্তির পরিবর্তে রক্তপাত ও সার্বভৌমত্বের ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, ইউপিডিএফের হাতে এখনো শান্তিচুক্তির আওতায় জমা না দেওয়া বিপুল অস্ত্র রয়ে গেছে। এছাড়া ভারতের মিজোরাম, ত্রিপুরা ও মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে আধুনিক অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহ করছে তারা, যার আর্থিক যোগান আসে চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা থেকে। মাইকেল চাকমা ও শক্তিমান চাকমা একসময় ইউপিডিএফের সহযোদ্ধা ছিলেন। কিন্তু ক্ষমতার লড়াইয়ে তাদের মধ্যে সংঘাত তীব্র হয়। ২০১১

সালে র‌্যাবের হাতে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারের পর মাইকেলের অবস্থান দুর্বল হলে শক্তিমান চাকমা নানিয়ারচর উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এই ঘটনা মাইকেলের মনে প্রতিশোধের আগুন জ্বালায়। ফলে ২০১৮ সালের ৩রা মে শক্তিমান চাকমাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরদিন তপন জ্যোতি (বর্মা) ও তার সঙ্গীদের ওপর হামলায় তিনজন নিহত হন। এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার সঙ্গে মাইকেলের নাম জড়ায়, যা নানিয়ারচর থানায় মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়। ২০১৯ সালে মাইকেল চাকমা “গুম” হয়েছিলেন বলে তার পরিবার দাবি করে। তাদের দাবি, আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে মাইকেলকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটক করেছিল। যদিও এ বিষয়ে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং একাধিক সূত্র বলছে, পাহাড়ি জনপদে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির কারণে মাইকেল

চাকমা কয়েকটি পক্ষের টার্গেটে পরিণত হন। এরপর তিনি আত্মগোপনে চলে যান গ্রেপ্তার এড়াতে। দীর্ঘদিন অজ্ঞাতস্থানে বসবাস করার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে গুম-খুনসহ নানাবিদ গালগল্প ছড়ান। এই পরিকল্পনায় যুক্ত হয়েছিল কয়েকটি তথাকথিত মানবাধিকার সংস্থা এবং কয়েকটি গণমাধ্যম। তারাও মাইকেল চাকমার অন্তর্ধানের বিষয়ে দায় চাপায় আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর। এর মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ক্ষুণ্ন করা হয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করার পর মাইকেল প্রকাশ্যে বেরিয়ে আসেন এবং ইউপিডিএফের নেতৃত্বে সক্রিয় হন। ফিরে এসে তিনি নিজেকে “ভিক্টিম” হিসেবে উপস্থাপন করলেও পাহাড়ে নতুন বিভাজন ও অস্থিরতা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। নিরাপত্তা সূত্র জানায়, ইউপিডিএফের অস্ত্র

সংগ্রহের মূল জোগান চাঁদাবাজির অর্থ। স্থানীয় ব্যবসায়ী, ঠিকাদার এমনকি পর্যটকদের কাছ থেকে চিরকুট ও বিভিন্ন কৌশলে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এই অর্থে সংগঠনটি সীমান্তপথে আধুনিক অস্ত্র কিনে পাহাড়ে মজুদ করছে, যা অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। মাইকেল চাকমার নামে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে ১১টি মামলা রয়েছে, যদিও কয়েকটি সূত্রের দাবি এ সংখ্যা ২০-এর বেশি। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি মামলা: ২০০৭, লংগদু, রাঙামাটি: জেলেদের মারধর ও চাঁদাবাজি (মামলা নং ০৪)। ২০০৭, ভাইবোনছড়া: খুন ও অস্ত্র চোরাচালান। ২০১১, জুরাছড়ি: নিরঞ্জন চাকমা হত্যা (মূল আসামি)। ২০১৮, নানিয়ারচর: শক্তিমান চাকমা ও তপন জ্যোতি হত্যা। ২০১৮, বাঘাইছড়ি: সুরেন বিকাশ, বন কুসুম ও মিশন চাকমা হত্যা। বিশ্লেষকদের মতে, পার্বত্য শান্তিচুক্তির তিন দশক পরও চাঁদাবাজি, অস্ত্র বাণিজ্য ও হত্যার

চক্র বন্ধ না হলে পাহাড়ের অস্থিরতা দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠবে। মাইকেল চাকমার মতো বিতর্কিত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় না আনা গেলে পার্বত্য অঞ্চলে প্রকৃত শান্তি অধরাই থাকবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ‘ক্যাঙ্গারু কোর্ট’; বাতিলের দাবিতে রাজধানীতে ৩২ স্থানে আওয়ামী লীগের তীব্র বিক্ষোভ সালমান শাহ হত্যাকাণ্ড : সামীরার মা লুসির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা গণভোট নিয়ে হ্যাঁ-না পোস্টের প্রতিযোগিতা ফেসবুক-ইনস্টায় বছরে ৭৫০০ শরণার্থী আশ্রয় দেবে যুক্তরাষ্ট্র, অগ্রাধিকার পাবেন কারা? গতি বাড়িয়ে ‘মেলিসা’ এগোচ্ছে বারমুডার দিকে, মৃত্যু বেড়ে ৪৯ বন্যায় প্লাবিত নিউ ইয়র্ক, ২ জনের মৃত্যু এখানে মনে হয় আমিই সবচেয়ে বয়স্ক, নিশোকে খোঁচা পূজা চেরীর সাংস্কৃতিক অঙ্গন ও রাজনীতির আলোকবর্তিকা আসাদুজ্জামান নূরের জন্মদিন আজ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শেখ হাসিনা: তিনিই জাতির কাণ্ডারি ইতিহাস গড়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের মেয়েরা জেএমবিএফ-এর প্রতিবেদন: অন্তবর্তী সরকারের অধীনে বাংলাদেশে আইনজীবীদের ওপর দমন-পীড়নের চিত্র বৈদেশিক অর্থায়ন ব্যর্থ, তহবিলের টাকায় ইস্টার্ন রিফাইনারি-২ নির্মাণের সিদ্ধান্ত জামায়াত কি আদৌ মওদুদীর ‘বিকৃত আকিদা’ ঝেড়ে ফেলতে পেরেছে? নাকি আগের পথেই আছে? শেখ হাসিনা: যারা আগুন দিয়েছে, লুটপাট করেছে, তাদের চিহ্নিত করে রাখুন, পাই পাই হিসাব নেওয়া হবে শীত আসার আগেই রাজধানীতে তীব্র গ্যাস সংকট: অব্যবস্থাপনায় ক্ষুব্ধ নাগরিকরা বৈদেশিক অর্থায়ন ব্যর্থ, তহবিলের টাকায় ইস্টার্ন রিফাইনারি-২ নির্মাণের সিদ্ধান্ত পুলিশ-র‌্যাবের পক্ষে শেখ হাসিনার শক্ত অবস্থান: ‘আন্দোলনকারীরাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যায়’ ডিসেম্বরে খাদ্যসংকটে পড়বে ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ: ঝুঁকির মুখে ১৬ লাখ শিশু বিজিএমইএ’র বিবৃতি: প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও উপ-প্রেস সচিবের বক্তব্য বিভ্রান্তিকর আবারও বাংলাদেশি জেলে অপহৃত: সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে বাংলাদেশ?