ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর
৫ আগস্টের মতো রাজপথে নামার আহ্বান মির্জা ফখরুলের
রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় গেলে বদলে যেতে পারে
বিএনপির অফিসে আ. লীগের হামলা, কলারোয়ায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
মানুষ সংস্কার বোঝে না, তারা বোঝে ভোট: মির্জা ফখরুল
সেই তাহেরীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা
রাজপথে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি
আমাদের পাকঘরে উঁকি মারবেন না: ভারতকে ডা. শফিকুর রহমান
স্বাস্থ্যব্যবস্থা সংস্কারের শুরুতেই দেখছি ফ্যাসিবাদ: ড্যাব
ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যব্যবস্থা সংস্কারের শুরুতেই ফ্যাসিবাদী ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দোষীদের পদায়ন করার তথ্য পেয়েছেন তারা।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্থবিরতা ও ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতাকারী পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের পুর্নবাসন এবং চিকিৎসক, কর্মকর্তাদের প্রতি বৈষম্য ও হয়রানির প্রতিবাদে আয়েজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন হারুন আল রশীদ। এ সময় তিনি বলেন, চিকিৎসকরা এ দেশের সচেতন নাগরিক। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে চিকিৎসকদের আত্মত্যাগ, নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ডা. শামসুল আলম খান মিলনের আত্মত্যাগ যেমন আন্দোলনকে গণঅভ্যুত্থানে
রূপ দিয়েছিল। তেমনি এ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চিকিৎসক সমাজ ও মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। যার ফলে ডা. সজীবসহ একাধিক চিকিৎসক শহিদ হন। হারুন আল রশীদ বলেন, আন্দোলন চলাকালীন আমরা দেখেছি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. আহমেদুল কবির, লাইন ডিরেক্টর (এনসিডিসি) ডা. রোবেদ আমীন, পরিচালক (প্রশাসন) ডা. হারুনুর রশিদ, লাইন ডিরেক্টর ডা. নাজমুল ইসলাম মুন্না, লাইন ডিরেক্টর ডা. সোহেল মাহমুদ, উপপরিচালক ডা. মোবারক হোসেন দিগন্ত, নিপসমের পরিচালক ডা. সামিউল ইসলাম সাদিসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অন্যান্য পরিচালক, লাইন ডিরেক্টর, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক, বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, ইনস্টিটিউটের পরিচালকসহ অন্য কর্মকর্তারা সরকারি হাসপাতালে আহত ছাত্রদের
চিকিৎসা দেওয়ার ব্যাপারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। এমনকি বিভিন্ন হাসপাতালে ছাত্রলীগের পেটুয়া বাহিনী ও পুলিশ বাহিনী আহতদের চিকিৎসা কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি করেছে। এমনকি নিহত ছাত্র-জনতার লাশের সংখ্যা গোপন করেছে এবং ছাত্র-জনতার লাশগুলোকে সরকারকে দিয়ে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করতে সাহায্য করেছে। কিন্তু ড্যাবের চিকিৎসকরা সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে আহত ছাত্র-জনতার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করে। ফলে তারা বদলি, শারীরিক নির্যাতন এবং হয়রানির শিকার হয়। তিনি আরও বলেন, ৮ আগস্ট নতুন সরকার গঠনের পর বাংলাদেশের সব নাগরিকের মতো চিকিৎসক সমাজ আমরা আশা করেছিলাম বৈষম্যবিরোধী যে চিন্তা নিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে, তার আলোকে বৈষম্যহীন নতুন স্বাস্থ্যব্যবস্থা। কিন্তু স্বাস্থ্যব্যবস্থা সংস্কারের শুরুতেই আমরা দেখলাম ফ্যাসিবাদী ও
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দোষী বিগত সরকারের সুবিধাভোগী লোকদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, নিপসমের পরিচালক, আইপিএইচের পরিচালক পদে পদায়ন করা হয়। আমরা স্বাভাবিকভাবে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। এ সময় ড্যাবের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির মহাসচিব ডা. মো. আব্দুস সালাম বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে ড্যাবের চিকিৎসকসহ ভিন্নমত পোষণকারী সব চিকিৎসক কর্মকর্তারাই জুলুম, নির্যাতন, পদোন্নতি বঞ্চনা, বদলি হয়রানি ও মিথ্যা মামলায় অবর্ণনীয় বৈষম্যের শিকার হয়েছে। অনেকের চাকরিচ্যুতি হয়েছেন, নির্যাতনের কারণে অনেকেই চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। তার পরও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ড্যাব সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই ড্যাব এই আন্দোলনের প্রতি নৈতিক সমর্থন প্রদান করে এবং ড্যাবের চিকিৎসকরা বিভিন্ন পর্যায়ে ছাত্রদের
সঙ্গে যোগাযোগ করে সহযোগিতা করেছে। তিনি বলেন, ড্যাবের চিকিৎসকরা পুলিশের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সারা দেশে পুলিশ ও আওয়ামী গুন্ডাবাহিনী দ্বারা হাজার হাজার যে ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন তাদের চিকিৎসা, জরুরি অপারেশন ও পরবর্তীতে পুনর্বাসনে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে যা এখনো চলমান রয়েছে। ড্যাব মহাসচিব আরও বলেন, আমরা চিকিৎসকরা আশা করেছিলাম, গণঅভ্যুত্থানে পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের সহিত আলাপ-আলোচনা করে আওয়ামী সরকারের ভঙ্গুর স্বাস্থ্য খাতকে পুনর্গঠন এবং দুর্নীতিবাজ চিকিৎসকদের অপসারণ এবং দুর্নীতি তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। একই সঙ্গে সৎ, যোগ্য, পরিশ্রমী ও বঞ্চিত চিকিৎসকদের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল, হাসপাতালের পরিচালক এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ পূরণ করে একটি আস্থাশীল
স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তুলবেন। কিন্তু আমরা গণঅভ্যুত্থানের এক মাস হয়ে গেলেও তার কোনো প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি না। বরং শান্তি মিছিলে অংশগ্রহণকারী, দুর্নীতিবাজ ও ছাত্র-জনতার চিকিৎসায় বাধা প্রদানকারী স্বৈরাচারের দোসর চিকিৎসকদের পদায়ন করার মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে ড্যাবের পক্ষ থেকে বেশকিছু দাবি উপস্থাপন করা হয়- ১. স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদের অযোগ্য দুর্নীতিবাজ ফ্যাসিবাদের দোসর ডা. রোবেদ আমীনসহ অন্যান্য সুবিধাপ্রাপ্ত ও ফ্যাসিবাদের দোসর যাদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ও অন্যান্য স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে তাদের নিয়োগ আদেশ বাতিল করতে হবে। ২. আহত ছাত্র জনতাকে যারা চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করেছে (বিএসএমএমইউ থেকে শুরু করে সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান) তাদের তালিকা প্রণয়ন
করে বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে হবে। শাস্তি সমাবেশে যোগদানকারী ও ফ্যাসিবাদের দোসর সব চিকিৎসক ও কর্মকর্তা/ কর্মচারীকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দিতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করে শান্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ৩. অতিদ্রুত বৈষম্যের শিকার সব চিকিৎসক ও কর্মচারীকে ভূতাপেক্ষভাবে পদোন্নতি দিয়ে বৈষম্য দূর করতে হবে। বর্তমানে পদোন্নতিযোগ্য প্রত্যেককেই দ্রুততার সঙ্গে পদোন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলেই বঞ্চিত, দক্ষ, যোগ্য কর্মকর্তাদের পদায়ন করে স্বাস্থ্য প্রশাসন ঢেলে সাজানো সম্ভব হবে, যাহা অতিজরুরি। ৪. মেডিকেল কলেজসহ প্রতিটি হাসপাতাল দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান দুর্নীতিমুক্ত করতে যোগ্য ও বৈষম্যের শিকার শিক্ষক ও চিকিৎসকদের যথোপযুক্ত পদে পদায়িত করতে হবে। বিগত দীর্ঘ ১৬ বছর সময়ে স্বাস্থ্য খাতে যত দুর্নীতি হয়েছে তার শ্বেতপত্র প্রকাশ ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। ৫. মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ইনস্টিটিউটসমূহ, নার্সিং কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অতিদ্রুত স্বৈরাচারের দোসরদের সরিয়ে বৈষম্যের শিকার চিকিৎসকদের পদায়ন করতে হবে। ৬. প্রতিবাদকারী যেসব চিকিৎসকদের হয়রানিমূলক বদলি করা হয়েছে সেই বদলি আদেশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। ভবিষ্যতে বৈষম্যের শিকার চিকিৎসকদের কোনোভাবেই হয়রানিমূলক বদরি না করার দারি জানাচ্ছি। ৭. স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যব্যবস্থার ও চিকিৎসাসেবার গুণগতমান উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থার কাঠামো শক্তিশালীকরণের জন্য গঠিত বিশেষজ্ঞ প্যানেল কমিটি অতিদ্রুত বাতিল করে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশকারী চিকিৎসক সমাজের প্রতিনিধিত্ব রেখে কমিটি পুনঃগঠনের জোর দাবি জানাচ্ছি।
রূপ দিয়েছিল। তেমনি এ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চিকিৎসক সমাজ ও মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। যার ফলে ডা. সজীবসহ একাধিক চিকিৎসক শহিদ হন। হারুন আল রশীদ বলেন, আন্দোলন চলাকালীন আমরা দেখেছি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. আহমেদুল কবির, লাইন ডিরেক্টর (এনসিডিসি) ডা. রোবেদ আমীন, পরিচালক (প্রশাসন) ডা. হারুনুর রশিদ, লাইন ডিরেক্টর ডা. নাজমুল ইসলাম মুন্না, লাইন ডিরেক্টর ডা. সোহেল মাহমুদ, উপপরিচালক ডা. মোবারক হোসেন দিগন্ত, নিপসমের পরিচালক ডা. সামিউল ইসলাম সাদিসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অন্যান্য পরিচালক, লাইন ডিরেক্টর, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক, বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, ইনস্টিটিউটের পরিচালকসহ অন্য কর্মকর্তারা সরকারি হাসপাতালে আহত ছাত্রদের
চিকিৎসা দেওয়ার ব্যাপারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। এমনকি বিভিন্ন হাসপাতালে ছাত্রলীগের পেটুয়া বাহিনী ও পুলিশ বাহিনী আহতদের চিকিৎসা কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি করেছে। এমনকি নিহত ছাত্র-জনতার লাশের সংখ্যা গোপন করেছে এবং ছাত্র-জনতার লাশগুলোকে সরকারকে দিয়ে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করতে সাহায্য করেছে। কিন্তু ড্যাবের চিকিৎসকরা সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে আহত ছাত্র-জনতার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করে। ফলে তারা বদলি, শারীরিক নির্যাতন এবং হয়রানির শিকার হয়। তিনি আরও বলেন, ৮ আগস্ট নতুন সরকার গঠনের পর বাংলাদেশের সব নাগরিকের মতো চিকিৎসক সমাজ আমরা আশা করেছিলাম বৈষম্যবিরোধী যে চিন্তা নিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে, তার আলোকে বৈষম্যহীন নতুন স্বাস্থ্যব্যবস্থা। কিন্তু স্বাস্থ্যব্যবস্থা সংস্কারের শুরুতেই আমরা দেখলাম ফ্যাসিবাদী ও
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দোষী বিগত সরকারের সুবিধাভোগী লোকদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, নিপসমের পরিচালক, আইপিএইচের পরিচালক পদে পদায়ন করা হয়। আমরা স্বাভাবিকভাবে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। এ সময় ড্যাবের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির মহাসচিব ডা. মো. আব্দুস সালাম বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে ড্যাবের চিকিৎসকসহ ভিন্নমত পোষণকারী সব চিকিৎসক কর্মকর্তারাই জুলুম, নির্যাতন, পদোন্নতি বঞ্চনা, বদলি হয়রানি ও মিথ্যা মামলায় অবর্ণনীয় বৈষম্যের শিকার হয়েছে। অনেকের চাকরিচ্যুতি হয়েছেন, নির্যাতনের কারণে অনেকেই চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। তার পরও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ড্যাব সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই ড্যাব এই আন্দোলনের প্রতি নৈতিক সমর্থন প্রদান করে এবং ড্যাবের চিকিৎসকরা বিভিন্ন পর্যায়ে ছাত্রদের
সঙ্গে যোগাযোগ করে সহযোগিতা করেছে। তিনি বলেন, ড্যাবের চিকিৎসকরা পুলিশের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সারা দেশে পুলিশ ও আওয়ামী গুন্ডাবাহিনী দ্বারা হাজার হাজার যে ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন তাদের চিকিৎসা, জরুরি অপারেশন ও পরবর্তীতে পুনর্বাসনে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে যা এখনো চলমান রয়েছে। ড্যাব মহাসচিব আরও বলেন, আমরা চিকিৎসকরা আশা করেছিলাম, গণঅভ্যুত্থানে পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের সহিত আলাপ-আলোচনা করে আওয়ামী সরকারের ভঙ্গুর স্বাস্থ্য খাতকে পুনর্গঠন এবং দুর্নীতিবাজ চিকিৎসকদের অপসারণ এবং দুর্নীতি তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। একই সঙ্গে সৎ, যোগ্য, পরিশ্রমী ও বঞ্চিত চিকিৎসকদের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল, হাসপাতালের পরিচালক এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ পূরণ করে একটি আস্থাশীল
স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তুলবেন। কিন্তু আমরা গণঅভ্যুত্থানের এক মাস হয়ে গেলেও তার কোনো প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি না। বরং শান্তি মিছিলে অংশগ্রহণকারী, দুর্নীতিবাজ ও ছাত্র-জনতার চিকিৎসায় বাধা প্রদানকারী স্বৈরাচারের দোসর চিকিৎসকদের পদায়ন করার মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে ড্যাবের পক্ষ থেকে বেশকিছু দাবি উপস্থাপন করা হয়- ১. স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদের অযোগ্য দুর্নীতিবাজ ফ্যাসিবাদের দোসর ডা. রোবেদ আমীনসহ অন্যান্য সুবিধাপ্রাপ্ত ও ফ্যাসিবাদের দোসর যাদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ও অন্যান্য স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে তাদের নিয়োগ আদেশ বাতিল করতে হবে। ২. আহত ছাত্র জনতাকে যারা চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করেছে (বিএসএমএমইউ থেকে শুরু করে সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান) তাদের তালিকা প্রণয়ন
করে বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে হবে। শাস্তি সমাবেশে যোগদানকারী ও ফ্যাসিবাদের দোসর সব চিকিৎসক ও কর্মকর্তা/ কর্মচারীকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দিতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করে শান্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ৩. অতিদ্রুত বৈষম্যের শিকার সব চিকিৎসক ও কর্মচারীকে ভূতাপেক্ষভাবে পদোন্নতি দিয়ে বৈষম্য দূর করতে হবে। বর্তমানে পদোন্নতিযোগ্য প্রত্যেককেই দ্রুততার সঙ্গে পদোন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলেই বঞ্চিত, দক্ষ, যোগ্য কর্মকর্তাদের পদায়ন করে স্বাস্থ্য প্রশাসন ঢেলে সাজানো সম্ভব হবে, যাহা অতিজরুরি। ৪. মেডিকেল কলেজসহ প্রতিটি হাসপাতাল দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান দুর্নীতিমুক্ত করতে যোগ্য ও বৈষম্যের শিকার শিক্ষক ও চিকিৎসকদের যথোপযুক্ত পদে পদায়িত করতে হবে। বিগত দীর্ঘ ১৬ বছর সময়ে স্বাস্থ্য খাতে যত দুর্নীতি হয়েছে তার শ্বেতপত্র প্রকাশ ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। ৫. মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ইনস্টিটিউটসমূহ, নার্সিং কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অতিদ্রুত স্বৈরাচারের দোসরদের সরিয়ে বৈষম্যের শিকার চিকিৎসকদের পদায়ন করতে হবে। ৬. প্রতিবাদকারী যেসব চিকিৎসকদের হয়রানিমূলক বদলি করা হয়েছে সেই বদলি আদেশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। ভবিষ্যতে বৈষম্যের শিকার চিকিৎসকদের কোনোভাবেই হয়রানিমূলক বদরি না করার দারি জানাচ্ছি। ৭. স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যব্যবস্থার ও চিকিৎসাসেবার গুণগতমান উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থার কাঠামো শক্তিশালীকরণের জন্য গঠিত বিশেষজ্ঞ প্যানেল কমিটি অতিদ্রুত বাতিল করে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশকারী চিকিৎসক সমাজের প্রতিনিধিত্ব রেখে কমিটি পুনঃগঠনের জোর দাবি জানাচ্ছি।