‘কোথায় থাকব, কে আশ্রয় দেবে জানি না’ – ইউ এস বাংলা নিউজ




‘কোথায় থাকব, কে আশ্রয় দেবে জানি না’

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৬ জুলাই, ২০২৫ | ১০:০৪ 25 ভিউ
ফেনীতে গত বছরের ব্যাপক বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আগেই এ বছরও টানা বর্ষণে প্লাবিত হয়েছে জেলাটি। গত ৮ জুলাই থেকে টানা বৃষ্টি এবং ভারতের ত্রিপুরা থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদী উপচে প্লাবিত হয় পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া, দাগনভূঞা ও সদর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। আট দিন পর জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে বন্যার নতুন ক্ষত। সঙ্গে শুরু হয়েছে বন্যা-পরবর্তী ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে ক্ষতিগ্রস্তদের সংগ্রাম। ফেনীর পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের উত্তর শালধর গ্রামের মুহুরী নদীপাড়ের বাসিন্দা সুনীল কুমার শীলের স্ত্রী প্রতিমা রানী শীল। গতকাল মঙ্গলবার তিনি জানান, বন্যায় মাথা গোঁজার ঠাঁইসহ সহায়-সম্বল সব হারিয়ে দিশেহারা

হয়ে পড়েছেন। ৮ জুলাই ঘরে পানি উঠলে পরিবার নিয়ে এক কাপড়ে ঘর থেকে বের হতে হয়েছে। আশ্রয় নিয়েছিলেন পার্শ্ববর্তী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে। পানি নেমে যাওয়ার পর এসে দেখেন ঘরবাড়ি কিছুই নেই। প্রতিমা শীল বলেন, মুহুরী নদীর বাঁধ যেদিন ভাঙে, সেদিন আশপাশের লোকজন না থাকলে আমরা বেঁচে থাকতে পারতাম না। স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যান। তারা আমাদের সাহায্য করেছেন এবং পরার কাপড় দিয়েছেন। সেই কাপড়ই এখনও পরে আছি। কিন্তু আমাদের ঘর-দুয়ার তো কিছুই নেই। কোথায় থাকব, কে আমাদের আশ্রয় দেবে, কীভাবে কী করব, কিছুই জানি না। একই অবস্থা পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের উত্তর শালধর গ্রামের মুহুরী নদীপাড়ের বাসিন্দা

চাঁপা রানী শীলের। তাঁর দুই মেয়ে তন্বী শীল ও তৃষা শীল। স্বামী শিব কুমার শীল প্রবাসী। চাঁপা শীল জানান, ৮ জুলাই মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে পানি হু-হু করে ঢুকতে থাকে তাদের বাড়িতে। আশপাশের মানুষ তাদের উদ্ধার করে এক কাপড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে ছয় দিন কাটানোর পর গত সোমবার ফিরে এসে দেখেন, বাড়ির আর তেমন কিছুই অবশিষ্ট নেই। এখন বাড়ির ভাঙা অংশ জোড়াতালি দিয়ে চলছে তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা। শুধু প্রতিমা বা চাঁপা শীল নন, বন্যায় পরশুরাম ও ফুলগাজী এলাকার নদীপাড়ের বাসিন্দাদের শতাধিক ঘর বন্যায় সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়েছে। বর্তমানে দাগনভূঞা ও সদর উপজেলার প্লাবিত এলাকাগুলো থেকে পানি কমতে শুরু করেছে।

তবে অনেক এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ নেই। ইতোমধ্যে ৯ হাজার ৭৬ জন আশ্রয়কেন্দ্র ত্যাগ করে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে নতুন করে বেঁচে থাকার সংগ্রাম শুরু করেছেন। জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, এবারের বন্যায় পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া, দাগনভূঞা ও সদর উপজেলার ১৩৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়। পানিবন্দি হয়ে পড়েন অন্তত দেড় লাখ মানুষ। গতকাল পর্যন্ত ১২১টি গ্রাম থেকে পানি নেমে গেছে। ফলে ভেসে উঠতে শুরু করেছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। বন্যায় জেলায় হাজারের বেশি ঘরবাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত। ক্ষতি হয়েছে ফসল, সড়ক, সেতু ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। ফেনীর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ আল ফারুক বলেন, এবারের বন্যায় ৩০১ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়কের ক্ষতি হয়েছে। টাকার অঙ্কে ক্ষতির

পরিমাণ প্রায় ৯৫ কোটি। জেলা কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্যমতে, এবারের বন্যায় ফেনীর ছয়টি উপজেলার মৎস্য খাতে ১০ কোটি টাকার দুই হাজার ৩০০টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। কৃষিতে পাঁচ হাজার ৮০০ হেক্টর ফসলি জমির ক্ষতি হয়েছে। টাকার অঙ্কে কৃষিতে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৮ কোটি। প্রাণিসম্পদ খাদে ৫৭টি খামার ক্ষতিগ্রস্ত। অন্তত ১০ হাজার হাঁস-মুরগি, চারটি গরু মারা গেছে। এই খাতে ৬৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পুরোপুরি পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত পরিমাণ তুলে ধরা হবে। ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইসমাইল হোসেন বলেন, এবারের বন্যায় বিভিন্ন খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলায় শতাধিক ঘর আংশিক বা

সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। পানি পুরোপুরি নেমে যাওয়ার পর ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত পরিমাণ জানানো যাবে। এদিকে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেছেন, এবার মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৪১টি স্থান ভেঙেছে। এরই মধ্যে ভেঙে যাওয়া ছোট বাঁধগুলো মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। তবে ভেঙে যাওয়া বড় বাঁধ মেরামতের জন্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে। বিষয়টি তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জনিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
যেভাবে কোলেস্টেরল কমাবেন ঐকমত্য না হওয়ায় সংসদের উচ্চকক্ষই বাদের চিন্তা সকল দায় ঢাকার ওপর চাপাতে চায় জাতিসংঘ ‘কোথায় থাকব, কে আশ্রয় দেবে জানি না’ সিরিজ জয়ে চোখ বাংলাদেশের চাকরি জীবনে একবার গুরুদণ্ড পেলে ওসি হতে পারবেন না পাহাড়ে ফলের নতুন ভান্ডার সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের বাড়ি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ভারতের মোহাম্মদপুরের গ্যাং প্রধানসহ গ্রেপ্তার ৪২ সৌদিতে নারী যাত্রীদের জন্য বিশেষ সেবা আনছে উবার নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে গত মাসে ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে জয়ী হয়েছেন জোহরান মামদানি। এটি শহরটির অনেক মানুষের জন্য আনন্দের খবর হলেও কপালে উদ্বেগের ভাঁজ পড়েছে আবাসন ব্যাবসায়ীদের। তারা ক্ষতির ঝুঁকি দেখছেন। এরই মধ্যে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন খাতসংশ্লিষ্ট অনেকে। তারা বলছেন, পরিবর্তনশীল এ সময়ে গ্রাহকরা ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না; তারা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। নিউইয়র্কে আবাসন ব্যবসার ব্রোকার জে বাত্রা জানান, তাঁর ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ম্যানহাটানে লাখ লাখ ডলারের সম্পত্তির দুই পৃথক ক্লায়েন্ট বাত্রাকে জানিয়েছেন, তারা নিউইয়র্কের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে লেনদেন করতে চান। বাত্রার উদ্ধৃতি দিয়ে গতকাল সোমবার সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক ধনী ও বিলাসবহুল ক্রেতা একটু বেশি সতর্ক হয়ে উঠেছেন। মামদানি যত বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করছেন, ততই তাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। অনেককে বলতে শোনা যাচ্ছে– ‘হায়, শহরটি কোথায় যাচ্ছে!’ ৩৩ বছর বয়সী গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক মামদানি গত জুনের শেষ দিকে নিউইয়র্কের মেয়র প্রাইমারিতে জয়লাভ করেন। এর পর থেকে বেশ কয়েকজন পেশাদার আবাসন ব্যবসায়ী সিএনএনকে জানান, উচ্চস্তরের ক্রেতারা তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ বন্ধ করতে শুরু করেছেন। মামদানির প্রস্তাবিত নীতিগুলোর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে অনিশ্চিত। তারা আরও বলেন, মামদানির জয়ের ফলে তাঁর রাজনীতির সঙ্গে একমত না হওয়া নিউইয়র্কের কিছু ধনী বাসিন্দা শহর ত্যাগের পরিকল্পনা ত্বরান্বিত করেছেন। মামদানি ১০ লাখ ডলারের বেশি আয়কারী নিউইয়র্কের বাসিন্দাদের ওপর ২ শতাংশ হারে কর আরোপের প্রস্তাব করেছেন। তাঁর কাছে আবাসন প্রস্তাবের একটি তালিকাও আছে, যার মধ্যে রয়েছে– ভাড়া স্থির করার প্রতিশ্রুতি, ব্যাপক পাবলিক হাউজিং নির্মাণ ও সংস্কার এবং কঠোর তদারকি। মার্কিন গণমাধ্যমটি বলছে, মামদানি মেয়র হলেও তাঁর প্রস্তাবগুলো বাস্তবে পরিণত নাও হতে পারে। এর অনেক কারণ রয়েছে। তবুও তাঁর প্রাথমিক জয় বাত্রার কিছু ক্লায়েন্টকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। কেউই আসলে তাদের কর বাড়ুক, এমনটা চান না। নিউইয়র্ক সিটি বিশ্বের অন্যতম বিলাসবহুল আবাসন বাজারের আবাসস্থল। এটি এমন একটি জায়গা, যেখানে ঝলমলে বিলাসবহুল টাওয়ারের লোকেরা শ্রমিক শ্রেণির বাসিন্দাদের পাশাপাশি বাস করেন। এ শ্রমজীবী শ্রেণির মানুষ ক্রমবর্ধমান ভাড়া ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে তাল মেলাতে লড়াই করছেন। শহরের আবাসন খাতের অবস্থা চরম। নিউইয়র্ক শহরের আপার ইস্ট সাইড এলাকার বাসিন্দাদের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ যাচাই করে সিএনএন জানাতে পেরেছে, ওই এলাকার বাসিন্দারা বেনামে মামদানির প্রাথমিক জয়ের পর শহর ছেড়ে যাওয়ার সম্ভাব্য পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু এখনও এসব গল্প কাল্পনিক। যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক ফল পছন্দ না হলে স্থানান্তরিত হওয়ার হুমকি দেওয়ার একটি দীর্ঘকালীন ঐতিহ্য রয়েছে। মামদানির আবাসন ও অর্থনৈতিক প্রস্তাবগুলো এমন এক সময়ে এসেছে, যখন নিউইয়র্কের ভাড়া ক্রমাগত বাড়ছে। রিয়েলেটর ডটকমের মতে, এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে শহরে গড় চাওয়া ভাড়া ছিল ৩ হাজার ৩৯৭ ডলার, যা এক বছরের আগের তুলনায় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। এটা ২০২০ সালের শুরু থেকে ১৮ শতাংশ বেশি। বাত্রা জানান, কিছু ক্লায়েন্ট যারা ভাড়া আয়ের জন্য ছোট অ্যাপার্টমেন্ট ভবন কেনার পরিকল্পনা করছিলেন, তারা এখন প্রস্তাবিত ভাড়া স্থগিত করার কারণে পুনর্বিবেচনা করছেন। নিউইয়র্কের এ পরিস্থিতির সুবিধা পেতে পারে যুক্তরাষ্ট্রেরই ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য। সেখানে আবাসন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অনেকে জানিয়েছেন, নিউইয়র্ক ছেড়ে আবারও ফ্লোরিডায় আসতে পারেন অনেকে। এমনটাই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। মামদানির জয়ে নিউইয়র্কের আবাসন খাতে আতঙ্ক ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিতে বিভক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন একই অভিযোগে এনবিআরের আরও ৬ কর্মকর্তা বরখাস্ত শান্তির হ্যাটট্রিকে দুই ভেন্যুর ম্যাচে বাংলাদেশের দুর্দান্ত জয় জবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা দিলেন শিক্ষার্থীরা মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সুখবর কেন ইমাম হুসাইনের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন হিন্দুরা? সরাসরি কাবার ওপর সূর্য, বিরল মহাজাগতিক ঘটনা গাড়ি থামিয়ে ঘুষের অভিযোগ, ওসিসহ ৬ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার