ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর
হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে দেশ, কষ্টে শ্রমজীবীরা
রানা প্লাজায় উদ্ধার কাজ অসমাপ্ত রেখে ভবন মিশিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা!
ফসলের মাঠে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন ধানের শীষ
হাসিনার ‘ট্রাম্প কার্ড’ ষড়যন্ত্র
শেখ হাসিনার অবস্থান জানিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন
আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে হাসপাতালে মাহমুদুর রহমান
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছেলের শহীদি মর্যাদা চান বাবা
সংসার খরচ আরও বাড়বে
নতুন বছরে সংসার খরচ আরও বাড়বে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে ৬৫ পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। এ তালিকায় আছে-জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, এলপি গ্যাস, গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, আচার, টমেটো কেচাপ/সস, সিগারেট, জুস, টিস্যু পেপার, ফলমূল, সাবান, ডিটারজেন্ট পাউডার, মিষ্টি, চপ্পল (স্যান্ডেল), বিমান টিকিট। এসব পণ্য ও সেবার দাম বাড়বে, যা মূল্যস্ফীতিকে উসকে দিয়ে সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়াবে। এমনকি মোবাইলে কথা বলা, ইন্টারনেট ব্যবহার এবং হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাবার খরচ বাড়বে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। আরও জানা গেছে, ঋণ দিতে আইএমএফ বাংলাদেশকে কর-জিডিপির অনুপাত দশমিক ২ শতাংশ বাড়ানোর শর্ত দিয়েছে, টাকার অঙ্কে যা ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি। এই ২০২৪-২৫ অর্থবছরের রাজস্ব
লক্ষ্যমাত্রার (৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা) সঙ্গে যোগ হবে। বাজেট প্রণয়নের সময় এনবিআরকে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। এই লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবভিত্তিক নয় বলে এনবিআর থেকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। তার ওপর আইএমএফ আরও ১২ হাজার কোটি টাকা আদায়ের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। এ অবস্থায় ভ্যাট হার বাড়ানোর বিকল্প ছিল না। সূত্র আরও জানায়, উপদেষ্টা পরিষদ নতুন ভ্যাট হারের বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছে। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। যেহেতু সংসদ নেই, সেহেতু অধ্যাদেশ আকারে জারি হবে। এটি আগামী সপ্তাহ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। এনবিআরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার কারণে অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে এনবিআর ভ্যাট হার
বাড়াতে চায়নি। এমনিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এনবিআর চাল, চিনি ও ভোজ্যতেলসহ ৭টি পণ্য আমদানিতে শুল্ক ছাড় দিয়েছে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় ঋণ পেতে কর-জিডিপি অনুপাত দশমিক ২ শতাংশ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছে এবং অতিরিক্ত সেই অর্থ আদায় করতে হবে বাজেট পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে। তাই মাঝামাঝি সময়ে ভ্যাট বাড়ানো ছাড়া এনবিআরের হাতে অন্য অপশন ছিল না। গত বছরের ৪ ও ৫ ডিসেম্বর এনবিআরের শুল্ক, ভ্যাট ও আয়কর খাতের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে সফররত আইএমএফ প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশে আইএমএফ মিশনের প্রধান জয়েন্দু দে। বৈঠকে আইএমএফ কর অব্যাহতি সুবিধা কমিয়ে আনার জন্য চাপ দেয়। একইসঙ্গে বাজেট পদক্ষেপের মাধ্যমে কর-জিডিপি অনুপাত আগের দশমিক
৫০ শতাংশের অতিরিক্ত আরও দশমিক ২ শতাংশ বাড়ানোর শর্ত জুড়ে দেয়। কোন খাতে কত বাড়ছে : আইএমএফের শর্তে ভ্যাটের পরিধি বাড়াতে নজর দিয়েছে এনবিআর। বছরে ৩০ লাখ টাকার বেশি টার্নওভার থাকলে ভ্যাটের খাতায় (টার্নওভার করের তালিকাভুক্তি) নাম লেখাতে হবে। বর্তমানে টার্নওভার করের তালিকাভুক্তির সীমা ৫০ লাখ টাকা। অর্থাৎ ২০ লাখ টাকা কমানো হয়েছে। এতে ছোট ব্যবসায়ীরাও ভ্যাটের আওতায় চলে আসবেন। একই সঙ্গে ভ্যাট নিবন্ধনের সীমা ৩ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ৫০ লাখ টাকা করা হয়েছে। সহজ পন্থায় ভ্যাট আদায় করতে এবারও এনবিআর মোবাইল ফোনে কথা বলা ও ইন্টারনেট খরচকে বেছে নিয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার সময় মোবাইল ফোনের সম্পূরক শুল্ক একদফা বাড়িয়ে
১৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ করা হয়। এতে ১০০ টাকা রিচার্জ করলে ৭২ টাকার সেবা (কথা বলা ও ইন্টারনেট) পেতেন ব্যবহারকারীরা। আইএমফের চাপে একই অর্থবছরে দ্বিতীয় দফায় মোবাইলের সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে গ্রাহকরা ফোনে ১০০ টাকা রিচার্জ করলে ৬৭ টাকার সেবা পাবেন, বাকি টাকা ভ্যাট-সম্পূরক শুল্ক হিসাবে কেটে নেওয়া হবে। রাজস্ব আদায় বাড়াতে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দিকেও নজর দিয়েছে এনবিআর। সরবরাহ পর্যায়ে ওষুধের ভ্যাট হার ২ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে সব ধরনের ওষুধের দাম বাড়বে। বাসা-বাড়িতে এলপিজি গ্যাসের দামও বাড়বে। কারণ এলপিজি গ্যাস সরবরাহ পর্যায়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ
থেকে বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাবার খরচও বাড়বে। আগামীতে সব ধরনের হোটেলে খাবার খেতে অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ বাড়তি টাকা খরচ করতে হবে, যা সরকার ভ্যাট হিসাবে আদায় করবে। বর্তমানে রেস্তোরাঁয় খেতে ৫ শতাংশ এবং হোটেলে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। ব্র্যান্ডের পোশাক কেনার খরচও বাড়বে। কারণ তৈরি পোশাকের ভ্যাট ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। বিমান টিকিটের দাম বাড়বে। কারণ বিমান টিকিটের আবগারি শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান টিকিটের আবগারি শুল্ক ৩০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করা হয়েছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক রুটের বিমান টিকিটের আবগারি শুল্ক ৩ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে
৪ হাজার টাকা করা হয়েছে। এছাড়াও আরও দাম বাড়বে যেসব পণ্যের, সেগুলো হচ্ছে-গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, আচার, টমেটো সস, এইচআর কয়েল, সিআর কয়েল, চশমার ফ্রেম, সানগ্লাস, টয়লেট টিস্যু, মিষ্টি, ব্র্যান্ডের তৈরি পোশাক, গাড়ির ওয়ার্কশপ, তাজা-শুকনা সুপারি, ফলের রস, তাজা ফল, সাবান-ডিটারজেন্ট, রং এবং সিগারেট। সামগ্রিক বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি এক্সচেঞ্জের নির্বাহী পরিচালক ড. মাশরুর রিয়াজ বলেন, প্রতিযোগী দেশগুলোর চাইতে বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত কম, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে আইএমএফের পরামর্শে অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে করহার পরিবর্তন করা উচিত হবে না, বিশেষত ভ্যাট হার। এমনিতে মূল্যস্ফীতি ১৩ শতাংশের উপরে আছে। এনবিআর চাল, তেল, চিনি আমদানির শুল্ক কমিয়েও সেটি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। এই অবস্থায় ভ্যাট হার বাড়ানো হলে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে নিশ্চিতভাবেই। এক্ষেত্রে ঋণের শর্তের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে আইএমএফের সঙ্গে আরও শক্তভাবে দরকষাকষি করা উচিত ছিল। তিনি আরও বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সুচারু গবেষণা ও সুচিন্তিত বিশ্লেষণ ছাড়া ভ্যাট হার বাড়ানো হলে তা অর্থনীতিতে সঠিক ফলাফল নাও দিতে পারে। অর্থনীতিতে ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। যেমন ভ্যাটের পরিধি বাড়াতে টার্নওভারের তালিকাভুক্তি ও নিবন্ধনসীমা কমানো হয়েছে। এতে ছোট ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত করবে। কারণ মূল্যস্ফীতির কশাঘাতে ছোট ব্যবসা আরও ছোট হচ্ছে। এই মুহূর্তে ভ্যাটের মতো জটিল নিয়ম তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হলে টিকে থাকাই মুশকিল হবে। বড় ব্যবসা বা করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো ভ্যাটের বোঝা ভোক্তার ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে পারলেও ছোট ব্যবসার পক্ষে তা অনেকাংশেই সম্ভব নয়। তাই টিকতে না পেরে ছোট উদ্যোগ বা ব্যবসা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে কর্মসংস্থানের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। তাছাড়া অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে নীতি এত বড় পরিবর্তন বড় ব্যবসা বা করপোরেটগুলোরও সমন্বয় করতে বেগ পোহাতে হবে।
লক্ষ্যমাত্রার (৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা) সঙ্গে যোগ হবে। বাজেট প্রণয়নের সময় এনবিআরকে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। এই লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবভিত্তিক নয় বলে এনবিআর থেকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। তার ওপর আইএমএফ আরও ১২ হাজার কোটি টাকা আদায়ের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। এ অবস্থায় ভ্যাট হার বাড়ানোর বিকল্প ছিল না। সূত্র আরও জানায়, উপদেষ্টা পরিষদ নতুন ভ্যাট হারের বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছে। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। যেহেতু সংসদ নেই, সেহেতু অধ্যাদেশ আকারে জারি হবে। এটি আগামী সপ্তাহ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। এনবিআরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার কারণে অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে এনবিআর ভ্যাট হার
বাড়াতে চায়নি। এমনিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এনবিআর চাল, চিনি ও ভোজ্যতেলসহ ৭টি পণ্য আমদানিতে শুল্ক ছাড় দিয়েছে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় ঋণ পেতে কর-জিডিপি অনুপাত দশমিক ২ শতাংশ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছে এবং অতিরিক্ত সেই অর্থ আদায় করতে হবে বাজেট পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে। তাই মাঝামাঝি সময়ে ভ্যাট বাড়ানো ছাড়া এনবিআরের হাতে অন্য অপশন ছিল না। গত বছরের ৪ ও ৫ ডিসেম্বর এনবিআরের শুল্ক, ভ্যাট ও আয়কর খাতের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে সফররত আইএমএফ প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশে আইএমএফ মিশনের প্রধান জয়েন্দু দে। বৈঠকে আইএমএফ কর অব্যাহতি সুবিধা কমিয়ে আনার জন্য চাপ দেয়। একইসঙ্গে বাজেট পদক্ষেপের মাধ্যমে কর-জিডিপি অনুপাত আগের দশমিক
৫০ শতাংশের অতিরিক্ত আরও দশমিক ২ শতাংশ বাড়ানোর শর্ত জুড়ে দেয়। কোন খাতে কত বাড়ছে : আইএমএফের শর্তে ভ্যাটের পরিধি বাড়াতে নজর দিয়েছে এনবিআর। বছরে ৩০ লাখ টাকার বেশি টার্নওভার থাকলে ভ্যাটের খাতায় (টার্নওভার করের তালিকাভুক্তি) নাম লেখাতে হবে। বর্তমানে টার্নওভার করের তালিকাভুক্তির সীমা ৫০ লাখ টাকা। অর্থাৎ ২০ লাখ টাকা কমানো হয়েছে। এতে ছোট ব্যবসায়ীরাও ভ্যাটের আওতায় চলে আসবেন। একই সঙ্গে ভ্যাট নিবন্ধনের সীমা ৩ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ৫০ লাখ টাকা করা হয়েছে। সহজ পন্থায় ভ্যাট আদায় করতে এবারও এনবিআর মোবাইল ফোনে কথা বলা ও ইন্টারনেট খরচকে বেছে নিয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার সময় মোবাইল ফোনের সম্পূরক শুল্ক একদফা বাড়িয়ে
১৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ করা হয়। এতে ১০০ টাকা রিচার্জ করলে ৭২ টাকার সেবা (কথা বলা ও ইন্টারনেট) পেতেন ব্যবহারকারীরা। আইএমফের চাপে একই অর্থবছরে দ্বিতীয় দফায় মোবাইলের সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে গ্রাহকরা ফোনে ১০০ টাকা রিচার্জ করলে ৬৭ টাকার সেবা পাবেন, বাকি টাকা ভ্যাট-সম্পূরক শুল্ক হিসাবে কেটে নেওয়া হবে। রাজস্ব আদায় বাড়াতে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দিকেও নজর দিয়েছে এনবিআর। সরবরাহ পর্যায়ে ওষুধের ভ্যাট হার ২ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে সব ধরনের ওষুধের দাম বাড়বে। বাসা-বাড়িতে এলপিজি গ্যাসের দামও বাড়বে। কারণ এলপিজি গ্যাস সরবরাহ পর্যায়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ
থেকে বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাবার খরচও বাড়বে। আগামীতে সব ধরনের হোটেলে খাবার খেতে অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ বাড়তি টাকা খরচ করতে হবে, যা সরকার ভ্যাট হিসাবে আদায় করবে। বর্তমানে রেস্তোরাঁয় খেতে ৫ শতাংশ এবং হোটেলে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। ব্র্যান্ডের পোশাক কেনার খরচও বাড়বে। কারণ তৈরি পোশাকের ভ্যাট ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। বিমান টিকিটের দাম বাড়বে। কারণ বিমান টিকিটের আবগারি শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান টিকিটের আবগারি শুল্ক ৩০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করা হয়েছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক রুটের বিমান টিকিটের আবগারি শুল্ক ৩ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে
৪ হাজার টাকা করা হয়েছে। এছাড়াও আরও দাম বাড়বে যেসব পণ্যের, সেগুলো হচ্ছে-গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, আচার, টমেটো সস, এইচআর কয়েল, সিআর কয়েল, চশমার ফ্রেম, সানগ্লাস, টয়লেট টিস্যু, মিষ্টি, ব্র্যান্ডের তৈরি পোশাক, গাড়ির ওয়ার্কশপ, তাজা-শুকনা সুপারি, ফলের রস, তাজা ফল, সাবান-ডিটারজেন্ট, রং এবং সিগারেট। সামগ্রিক বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি এক্সচেঞ্জের নির্বাহী পরিচালক ড. মাশরুর রিয়াজ বলেন, প্রতিযোগী দেশগুলোর চাইতে বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত কম, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে আইএমএফের পরামর্শে অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে করহার পরিবর্তন করা উচিত হবে না, বিশেষত ভ্যাট হার। এমনিতে মূল্যস্ফীতি ১৩ শতাংশের উপরে আছে। এনবিআর চাল, তেল, চিনি আমদানির শুল্ক কমিয়েও সেটি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। এই অবস্থায় ভ্যাট হার বাড়ানো হলে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে নিশ্চিতভাবেই। এক্ষেত্রে ঋণের শর্তের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে আইএমএফের সঙ্গে আরও শক্তভাবে দরকষাকষি করা উচিত ছিল। তিনি আরও বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সুচারু গবেষণা ও সুচিন্তিত বিশ্লেষণ ছাড়া ভ্যাট হার বাড়ানো হলে তা অর্থনীতিতে সঠিক ফলাফল নাও দিতে পারে। অর্থনীতিতে ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। যেমন ভ্যাটের পরিধি বাড়াতে টার্নওভারের তালিকাভুক্তি ও নিবন্ধনসীমা কমানো হয়েছে। এতে ছোট ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত করবে। কারণ মূল্যস্ফীতির কশাঘাতে ছোট ব্যবসা আরও ছোট হচ্ছে। এই মুহূর্তে ভ্যাটের মতো জটিল নিয়ম তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হলে টিকে থাকাই মুশকিল হবে। বড় ব্যবসা বা করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো ভ্যাটের বোঝা ভোক্তার ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে পারলেও ছোট ব্যবসার পক্ষে তা অনেকাংশেই সম্ভব নয়। তাই টিকতে না পেরে ছোট উদ্যোগ বা ব্যবসা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে কর্মসংস্থানের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। তাছাড়া অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে নীতি এত বড় পরিবর্তন বড় ব্যবসা বা করপোরেটগুলোরও সমন্বয় করতে বেগ পোহাতে হবে।