তোমার নানাকে বইলো লাখ পাঁচেক টাকা দিতে – ইউ এস বাংলা নিউজ




তোমার নানাকে বইলো লাখ পাঁচেক টাকা দিতে

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২১ এপ্রিল, ২০২৫ | ১০:১২ 42 ভিউ
গাজীপুরের শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডলের সঙ্গে একটি অডিও কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল হওয়া অডিও রেকর্ডে শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নগর হাওলা গ্রামের ঝুট ব্যবসায়ী সেলিম সিকদারের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অডিও রেকর্ড ফাঁস হওয়ার পর থেকেই ওসি বিভিন্নভাবে তাকে হুমকি অব্যাহত রেখেছেন বলে তিনি জানান। সোমবার দুপুরে ঝুট ব্যবসায়ী সেলিম সিকদার নিজেই রেকর্ডের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এবং ওসি তাকে অব্যাহত হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান। ঝুট ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঘুস লেনদেন নিয়ে ওসি বলেন, তুমি তো আমাকে গেঞ্জি দিলা না, ফুল হাতা। আচ্ছা ঢাকা থেকে নিয়ে আসব। তোমার নানা আমাকে দেখে না কেন? ৫

হাজার ১০ হাজার এটা কোনো টাকা? এই টাকা দিয়ে কী হয়। আমি এত চাপ নিচ্ছি। তোমার নানাকে বইলো আমাকে লাখ পাঁচেক টাকা দিতে। তবে ওসি বলছেন, একটি চক্র তার কথা এডিট (সম্পাদনা) করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব ছড়িয়ে দিয়েছে। সেলিম শিকদার বলেন, অনেক টেনশনে আছি, অনেক হুমকি (থ্রেড) খাইলাম। আমার এক আত্মীয় আছে, তার মাধ্যমে গত রোববার সকাল থেকেই ওসি ফোন দিতাছে। পরে রাতে যখন রেকর্ড ফাঁস হয়ে গেছে, তখন আর ফোন দেয় নাই। ওনার তৈরি করা একটি লেখা (প্রেসক্রিপশন) আমাকে ধরাইয়া দিছে। কয় এভাবে এভাবে ফেসবুক লাইভে এসে বলবেন এই রেকর্ড ভুয়া, তাহলে আমার কোনো প্রবলেম হবে না, আপনারও কোনো প্রবলেম হবে

না। নইলে কিন্তু আপনার খবর আছে। তিনি জানান, উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নগর হাওলা গ্রামে ফর্মুলা ওয়ান স্পিনিং মিলস লিমিটেড কারখানা তার নানা (সেলিম শিকদার) ১০-১৫ বছর আগে জমি কিনে দেওয়াসহ কারখানা স্থাপনে সহযোগিতা করেন। এ সুবাদে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আমরা ঝুট ব্যবসাসহ কারখানার ভালোমন্দ দেখে আসছি, এখানে কোনো রাজনৈতিক পরিচয়ে ব্যবসা করতাম না। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও আমাদের ব্যবসায় বাধা দিয়েছিল; কিন্তু কারখানার মালিক বলেছিল, যেহেতু উনি আমার কারখানার জায়গা জমি কিনে দিয়েছে এই সূত্রে ওনাকে ব্যবসা দিয়েছি। এখানে রাজনৈতিক লোকের কোনো কাজ হয়নি আরকি। এই সূত্রে আমরা ব্যবসা করতাম। সেলিম শিকদার আরও বলেন, ৫ আগস্টের পরে ওসি থানায় আসার পর পুরোনো

এক এসআইয়ের কাছ থেকে আমার নাম্বার সংগ্রহ করে আমাকে ফোন দিয়ে থানায় যাইতে বলছে। থানায় যাওয়ার পর ওসি বলতেছে যদি ব্যবসা করতে চান তাহলে আমাকে মান্থলি টাকা দিতে হবে দুই লাখ করে। তো প্রথম দিন আমি পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। তারপরে ওনারে বললাম স্যার ব্যবসাই হয় ২-৩ লাখ টাকা। আপনারে দুই লাখ টাকা দিয়া দেই তাহলে কিভাবে হবে। পরে ওই জায়গায় এক লাখ টাকা মাসে তার সঙ্গে চুক্তি হলো। এক লাখ টাকা করে দিয়েছিলাম। প্রথম মাসে এক লাখই নিয়েছিলেন, পরের মাসে দুই লাখ। দেড় লাখ দুই লাখ এরকম করে নিতেন। এছাড়াও সাহাবুদ্দিন নামে ৫০ হাজার, আমার খালু জাকিরের কাছ থেকে

টাকা নিয়েছেন। অডিওতে ৫ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন। পরে ওসিকে বললাম, ব্যবসা বাণিজ্য ওই রকম নাই। যে দুই লাখ টাকা বলছেন সেই দুই লাখ টাকা আমি দেব। কিন্তু ৫ লাখ টাকা দিতে পারব না। পরে এই টাকা না দেওয়াতে, আমাকে যেকোনো নেতার মাধ্যমে ডেকে নিয়ে গ্রেফতার করে। পরে আমার কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। ১০ লাখ টাকা দিতে হবে, নইলে ১০টা হত্যা মামলা দিয়ে দিবে। ৫৪ ধারায় গ্রেফতারের শর্তে বাসায় গরু বিক্রির আড়াই লাখ টাকা দেওয়া হয়। ওসি বলেছিল ৫৪ ধারায় চালান দিয়েছিল। টাকা হাতে পাওয়ার পর ওসি থানায় আসেননি। আমাকে আদালতে নেওয়ার পর আর তিনি থানায় আসেন। পরে

আমাকে একটি রাজনৈতিক হত্যা মামলায় চালান দেওয়া হয়। ফোনে ধারণ করা রেকর্ড সম্পর্কে তিনি বলেন, মাস কয়েক আগে শ্রীপুর পৌরসভার তুলা গবেষণা মাঠ এলাকায় ওসি আমাকে ডেকে নেন। সেখানে যাওয়ার পর বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে বলে আমি ব্যবসা করলে তাকে টাকা দিতে হবে। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, এটা আমি শুনেছি, এটা আমার কণ্ঠ না। আমার কথা এডিট (সম্পাদনা) করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে একটি চক্র। ভাইরাল অডিও রেকর্ড নিচে দেওয়া হলো : সেলিম : স্যার কাহিনীটা কি আপনি জানেন। ওসি : কোনটা সেলিম : মানে কাহিনীডি করতেছে কেডা। ওসি : কাহিনী সবাই করতেছে, তোমার নানারে নিয়া। তোমার নানারে গ্রেফতার করার জন্য। গ্রেফতার

না করলে খুব সমস্যা। তোর নানারে আমি রাখলাম। সেলিম : ডিবিরে ওসি : ডিবি না, আমারে বলছে গ্রেফতার করার জন্য। আমি বলছি দেখি ব্যবস্থা করতেছি। তোর নানা কই? সেলিম : নানা তো ঢাকায়। আমিনুলই করাইতেছে স্যার? ওসি : আমিনুল করাবে কেন, উপরে? সেলিম : ওই যে জেলার মুন্না যে হে? ওসি : হুম হুম সেলিম : হে করতাছে করবার লিগা? ওসি : নাম জানার দরকার নাই, কেডা করতাছে। সেলিম : আচ্ছা স্যার অহন কি এইডা ব্যবসা যদি আমিনুল আর করি সমস্যা আছে, আমরা বাদ দিয়া। ওসি : তোমরা বেকার হইয়া থাকো, বেকার হইয়া থাকো। সেলিম : আমরা পেছনে থাইকা ওগো দিয়া করাই। ওসি : ওগো দিয়া করাবা, কিন্তু আমার...তোমার আসতে অইবো, তোমার কাছে আসতে অইবো। সেলিম : মানে আপনার পেমেন্ট টা। ওসি : হুম সেলিম : ওরা কইতো কিছু ওরা দিবো। ওসি : না না ওগরো তোমার কাছে আসতে হইবো। সেলিম : আমার হাত দিয়া। ওসি : হুম আমি আমিনুলকে বইলা দিছি। আমি বলছি ও আমারে ১ লাখ ৩০ দেয়। সেলিম : হায় হায় স্যার এই কথা বলছেন? ওসি : না না তুমি এইডা বুঝবা না, বুঝনা এইডা, না হলে তোমারে খাইবো। তুমি বুঝ। ভাইঙ্গা খাইবো। সেলিম : ওহ ওসি : না হলে ১ লাখ ৩০ হাজার দিয়া বইসা থাকবো। সেলিম : অহন তাহলে স্যার কি করার তাহলে অগো দিয়াই করামু। ওসি : ওগো সামনে দিয়া তুমি পেছনে থাকবা। সেলিম : আচ্ছা আমি পেছনে থাইকা অগো দিয়া করাইলাম তারপরও যদি ওরা গাড়ির সামনে খাড়ায় আপনি ব্যাকআপ দিবেন? ওসি : খাড়াইবো না, ওসি : তোমার সঙ্গে মুন্নার সম্পর্ক নাই? সেলিম : না, ওতো জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের। ওসি : মুন্না তো আবার পাতলা...। আমি তো টেকেল করতে পারি না বিষয়টা। সেলিম : অহনে কি আমিনুলরা টেকেল দিতে পারবো ওগো নামে দিলে? ওসি : আমি আগে দেখি, আমি কয়দিন দেখি আগে। সেলিম : শনিবারে বিস্কুট বাইর অইবো এক গাড়ি। ওসি : বিস্কুট বাইর অইবো তাহলে তো আরেক ঝামেলা। মুন্না এখন বিস্কুট চাচ্ছে না। সেলিম : স্পিনিং চাচ্ছে? ওসি : স্পিনিং চাচ্ছে মুন্না। সেলিম : তাহলে যদি বিএনপিরা করে তাহলে আর চাইতে পারবে না। আমিনুল তো থানা ছাত্রদলের সেক্রেটারি। ওসি : আমিনুল করলে তোমার কন্ট্রোলে থাকলো। সেলিম : আমিনুল বা দুইজনের নামে দিমু, স্ট্যাম্প কইরা। ওসি : কন্ট্রোলে থাকলো। সেলিম : মানে গোপনে প্রোপাইটর থাকলো আমার নানা। এমডি স্যারে বইলা দিবো আপাতত ভাইস্তা আর ছোট ভাইকে দিয়ে আমি করাইতেছি। আর তলে তলে আমি হ্যান্ডেল কইরা দিবো। ওসি : হ্যাঁ এইডা ভাল বুদ্ধি, আমি আমিনুলকে বইলা দিবোনি, এটা ভাল বুদ্ধি। মুন্নার কাছে গেলে আউট হইয়া যাইবো। সেলিম : মুন্নার কাছে গেলে আউট হইয়া যাইবো, নাহলে টাকার এমাউন্ট চাইবো অনেক। যে টাকা হয় এত কিছু দেওয়া সম্ভব না। ওসি : আমিও বলে দিবো এরকম। আমি আমিনুলকে বলে দিবো। সেলিম : আমিনুলরে আপনের আগেই কওন লাগতো না। আগে আমরা বাড়িতে বসি। আমিনুল নিয়া বসি নানারে ফোন দিয়া আইনা। গোপনে বইসা কথা কই। যদি আমাদের লেভেলে হয় তাহলে ওগরো দিয়া দিমু, আর যদি না হয় তাহলে মোরশেদকে দিয়া দিমু। ওসি : মোরশেদ চেয়ারম্যানরে। সেলিম : হু তাহলে মোরশেদরে দিয়া দিমু, খামুও না কেওরে খাইবারও দিমু না। ওসি : দেখা যাবেনে আমি কথা বলবোনে। সেলিম : আপনি আগেই কিছু কইনা জানি স্যার। ওসি : আর তোমার নানা আমারে দেখে না কে, ওই পাঁচ-দশ টাকার জন্য তোমার নানা আমারে দেখে না। আমি এত কিছু করতাছি, চাপ নিতাছি, তোমার নানারে বলো আমারে লাখ পাঁচেক টাকা দিতে। সেলিম : স্যার এক্কেরে বাড়ির কাজ করতে গিয়া খুব অবস্থা খারাপ। ওসি : কতা কইও না। আমি যেটা বলি না কইরো না ঝামেলায় পড়বা। সেলিম : আমি আরেকটা কথা কই স্যার। ওসি : বলো সেলিম : ওই যে সাহাবুদ্দিন মামুর কথা যে কইছিলাম আপনারে, সাহাবুদ্দিন ওই যে ওসি : কোন সাহাবুদ্দিন সেলিম : শৈলাট রোডে বাড়ি ওযে শাহাবুদ্দিন মামু। ওর বাসায় মনে হয় আপনারে আমিনুল পাঠাইছিল। ওর কথা আপনারে কইছিলাম। কইছে নিয়া আইসো। ওরে নিয়া আইলে ৫০ হাজার টাকা দিবো। ওসি : ধুর পঞ্চাশ হাজার ওরে বলো লাখখানেক টাকা দিতে কালকে। সেলিম : আমি তাহলে ফোন ধরাইয়া দেই, আপনি একটু কইবাইন। ওসি : ফোনে আমি এইসব কথা বলবো নাকি পাগল আমি। সেলিম : হোয়াটসঅ্যাপে কথা কই। ওসি : তোমারে বললাম তুমি আমারে চিন না। সেলিম : হ ওসি না চিনলে ...। ধইরা নিয়া আসবো। অত পিরিত করা যাবে না। ঠাব দিবো...। সেলিম : আমি এক কাম করি স্যার। আমি গিয়া ওর কাছে হোয়াটসঅ্যাপে আপনারে ধরাইয়া দেই। এক মিনিট কথা কইয়েন। ওসি : তুমি কথা কইয়ো। যাও ধরাইয়া দাও। আজই নিয়া নিবা। সেলিম : তাহলে আজকে আপনি বইলা দিয়েন, কালকে আসো। ওসি : ও আসবে না তুমি নিয়া নিবা। সেলিম : ও আপনার সামনে এক নজর আসবে। না হলে বিশ্বাস করবে না। ওসি : ঠিক আছে যাও কথা বলবোনি। সেলিম : আমি যাইয়া ফোন ধরাইয়া দিমুনি আপনি খালি কইবেন আপনি এক নিয়া আইসেন। ওসি : তুমি তো আমারে আর গেঞ্জি দিলা না। সেলিম : কোনটা ফুলহাতা। ওসি : হ। সেলিম : আচ্ছা ফুলহাতা? আমি ঢাকা থেকে আইনা দিমুনি। ওসি : আর শীত চলে গেলে কবে দিবা। সেলিম : আর সাহাবুদ্দিরে নিয়া আমি কথা কইতাছি।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
দেশে আরও বেকার বাড়ল ১ লাখ ৬০ হাজার গাজায় ‘ব্যাপক’ স্থল অভিযান শুরু ইসরাইলের হায়দ্রাবাদের ভবনে ভয়াবহ আগুন, বহু মানুষের প্রাণহানি মিরপুরে বস্তিতে আগুন নতুন শাখা খোলার বিষয়ে কঠোর নীতিমালা বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ইউনূসের রাষ্ট্রবিরোধী চক্রান্তের’ বিরুদ্ধে একদিনে আওয়ামী লীগের ৩৯ মিছিলে প্রকম্পিত ঢাকার রাজপথ ছাত্রলীগ নেতাকে তুলে নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে পিটিয়ে-কুপিয়ে গুরুতর জখম মতিঝিল-গুলিস্তান এলাকা জয় বাংলা স্লোগানে প্রকম্পিত ঢাকায় ‘ইউনূসবিরোধী’ বিক্ষোভ মিছিল করায় আওয়ামী লীগের ১১ কর্মী আটক রাষ্ট্রবিরোধী চক্রান্তের বিরুদ্ধে আসাদগেট থেকে ধানমণ্ডি ৩২ আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ মিছিল ২৮৬ দিন পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় দখলমুক্ত করলেন নেতাকর্মীরা মা হচ্ছেন রাধিকা, দাদা হচ্ছেন আম্বানি নির্বাচন বিলম্বিত হলে অস্থিরতা বাড়বে: আমির খসরু ডিবি কার্যালয়ে নুসরাত ফারিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ রিজার্ভ চুরি মামলার প্রতিবেদন জমার তারিখ ফের পেছাল দুদকের সাবেক ৩ চেয়ারম্যান ও এক সচিবের বিরুদ্ধে মামলা গ্রেফতার আতঙ্কে নেতানিয়াহু ফের ইয়েমেনি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বন্ধ বেন-গুরিয়ন বিমানবন্দর ‘প্রতিভা আর অদম্য মনোবল ছাড়া পেছনে কেউ ছিল না’ বলিউডে রেকর্ড পারিশ্রমিক দীপিকার