কয়লা উত্তোলনে পেপার ওয়ার্কই শেষ হয় না! – ইউ এস বাংলা নিউজ




কয়লা উত্তোলনে পেপার ওয়ার্কই শেষ হয় না!

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২১ মার্চ, ২০২৫ | ৪:৫২ 11 ভিউ
জ্বালানি সংকট জিইয়ে রাখতে কয়লা তোলার কোনও কাজই গতি পায়নি কখনও। উন্মুক্ত কিংবা ভূগর্ভস্থ সবখানেই বছরের পর বছর ধরে এক দফতর থেকে আরেক দফতরে কাগজপত্রের (পেপার ওয়ার্ক) ফাইল ঘুরেছে। কিন্তু কোনও প্রকল্পই চূড়ান্তভাবে অনুমোদন পায়নি বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের। কেন এই অচলাবস্থা জানতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, কয়লা তোলার বিষয়ে এক ধরনের অনাগ্রহ ছিল। অভিযোগ রয়েছে, জ্বালানি কিনলেই নগদ কমিশন পাওয়া যায়, কিন্তু দেশের জ্বালানি তুললে কেউ কমিশন দেয় না। উল্টো জ্বালানি সংকট কেটে গেলে বিদেশ থেকে আর জ্বালানিই আমদানি করতে হবে না। এই কারণেই দশ বছর ধরে বড়পুকুরিয়া উন্মুক্ত খননের প্রকল্প ঝুলছে। এদিকে কয়লা আমদানি না করে নিজেদের কয়লা উত্তোলন

করা উচিত বলে মনে করছেন অধ্যাপক বদরুল ইমাম। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, নিজেদের কয়লা উত্তোলন না করে দিনের পর দিন বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি করাটা আনজাস্টিফায়েড। আমাদের এখনই উচিত যে খনির যতটুকু কাজ হয়েছে সেটার অগ্রগতি যাচাই করে কাজ শুরু করা। তিনি বলেন, বড়পুকুরিয়া থেকে তো আগে থেকে কয়লা উত্তোলন হচ্ছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয়। ওই খনির নর্দার্ন ও সাউদার্ন পার্ট উন্মুক্ত করে কয়লা তোলা যেতে পারে। এদিকে অন্য খনিগুলোর ফিজিবিলিটি স্টাডির কী অবস্থা, কোনটা কোন স্টেজে আছে দেখে সে কাজ শুরু করার উচিত সরকারের। জ্বালানি সংকটের এই সময় এলএনজি ও কয়লা আমদানির পরিবর্তে এখন দেশীয় গ্যাস উত্তোলনে জোর

দেওয়ার পাশাপাশি কয়লার দিকটাও আমাদের মনোযোগ দেওয়া উচিত। বড়পুকুরিয়া উন্মুক্ত খনি আলোচনাতেই দশ বছর দেশের একমাত্র কয়লাখনি বড়পুকুরিয়ায় ভূগর্ভস্থ পদ্ধতির পাশাপাশি উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লাখনি করার বিষয়ে দশ বছর আগে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। তখন সাবেক সরকারের জ্বালানিমন্ত্রী জাতীয় সংসদকে বিষয়টি জানায়। কিন্তু এই প্রকল্পের সমীক্ষা শেষ করে জমা দেওয়া হয় ২০২৩ সালে। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কোম্পানি তাদের প্রতিবেদনে বলছে, বড়পুকুরিয়া কোল বেসিন থেকে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত "টেকনো ইকোনোমিক ফিজিবিলিটি স্টাডি ফর ওপেন পিট কোল মাইন ইন নর্দার্ন অ্যান্ড সাউদার্ন পার্ট অব বড়পুকুরিয়া কোল বেসিন, পার্বতীপুর, দিনাজপুর, বাংলাদেশ” শীর্ষক সমীক্ষা প্রকল্পের সংশোধিত পিএফএসের চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য ২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি

পেট্রোবাংলার মাধ্যমে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে পাঠায়। এরপর একই বছরে অর্থাৎ ২০২৩ সালের ২০ জুন জ্বালানি সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের জন্য কী পরিমাণ জমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, পরামর্শক নিয়োগের মাধ্যমে তা নির্ণয় করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই সিদ্ধান্তের আট মাস পর ২০২৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বড়পুকুরিয়া খনি কোম্পানির বোর্ড সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়। তবে সেই বোর্ড সভায় সেটি অনুমোদন পায়নি। আরও দুটি বোর্ড সভার পর ২০২৪ সালের ৮ মে প্রকল্পটি অনুমোদন করে কোম্পানি। তবে যেহেতু সরকারি কোম্পানি তাই বোর্ডের অনুমোদনই শেষ কথা নয়। কোম্পানির অনুমোদনের পর একই বছর ২৪ জুন বিষয়টি পেট্রোবাংলার

৫৮৯তম বোর্ড সভায় উঠানো হলে অনুমোদন দিয়ে তারা জ্বালানি বিভাগে পাঠায় অনুমোদনের জন্য। এখন বিষয়টি জ্বালানি বিভাগের কাছে রয়েছে। অর্থাৎ সরকার ইচ্ছা না করলে এই প্রকল্প আর আলোর মুখ দেখবে না। জামালগঞ্জে খনি উন্নয়নের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়েও যায়নি কয়লা সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, বছরে দুই মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলনের সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে খনি উন্নয়ন করা গেলে ওই কয়লা দিয়ে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পরিচালনা করা সম্ভব বলে মনে করা হয়। এ জন্য বছর পাঁচেক আগে সরকারের তরফ থেকে একটি প্রকল্প নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়। কিন্তু দেখা যায় এই প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ শেষ করে এখনও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্যই পাঠানো হয়নি। সবশেষ প্রতিবেদনে

বলা হচ্ছে, প্রিলিমিনারি স্টাডি ফর মাইন ডেভেলপমেন্ট অ্যাট জামালগঞ্জ কোল ফিল্ড (নর্থ ওয়েস্ট ১৫ বর্গ কিলোমিটার এরিয়া) জয়পুরহাট অ্যান্ড নওগাঁ জেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়ার কথা। জানা যায়, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কোম্পানি ২০২৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ৩৬৬তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রকল্পটির প্রস্তাব জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে পাঠানোর জন্য ২০২৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পেট্রোবাংলায় পাঠানো হয়। প্রস্তাবটি পেট্রোবাংলা পর্ষদের গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের ২ মে অনুষ্ঠিত ৫৮৭তম সভায় উপস্থাপন করা হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বর্তমানে প্রস্তাবটি অধিকতর যাচাই-বাছাই ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা পর্যায়ে আছে। এরপর বড়পুকুরিয়া খনি কোম্পানির ৩৭১তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বড়পুকুরিয়া ও বাপেক্সের মধ্যে ২-ডি সিসমিক সার্ভে (দ্বিমাত্রিক

জরিপ) পরিচালনার জন্য চুক্তি স্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত হয়। অর্থাৎ একই মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুক্তির ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যাচ্ছে। দীঘিপাড়া আরেক আশার নাম দীঘিপাড়ায় যে পরিমাণ কয়লা রয়েছে সেখান থেকে কয়লা তোলা সম্ভব হলে প্রতিদিন অন্তত দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। সরকারের তরফ থেকে বারবার এই আশার কথা শোনানো হয়েছে। পেট্রোবাংলা জানায়, ২০২০ সালের ৩১ মার্চ দীঘিপাড়াতে ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষ হয়েছে। অর্থাৎ সেটি আরও ৫ বছর আগের কথা। সম্ভাব্যতা জরিপ শেষ করার পর ২০২২ সালের ২৩ নভেম্বর জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নির্দেশনার আলোকে দীঘিপাড়ায় কয়লাক্ষেত্রের উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়টি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে উপস্থাপনের লক্ষ্যে একটি ভিডিও প্রেজেন্টেশন প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এই ঘটনায় স্পষ্ট হয় সম্ভাব্যতা জরিপ পাওয়ার পর পেট্রোবাংলা সেটি মন্ত্রণালয়কে জানাতে ২ বছর সময় নিয়েছে। এরপর দেখা যায় ২০২২ সালে মন্ত্রণালয় জানার পর ২০২৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সম্ভাব্যতা জরিপের আলোকে বড়পুকুরিয়া খনি কোম্পানিকে এলটিটিসি বা লংওয়াল টপ কোয়াল কেভিং পদ্ধতিতে কয়লা তোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়। এই পদ্ধতিতে অত্যন্ত পুরু কয়লা স্তর থেকে একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কয়লা নিষ্কাশন করতে সহায়ক, যা সাধারণত ৬ মিটার বা তারও বেশি পুরু হতে পারে। তবে হতাশার কথা হলো, এরপর আর কোনও কাজ হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
আইপিএলের উদ্বোধনী দিন বৃষ্টিতে ভেসে যাবে না তো? আর মাত্র ৩৫ বছর, বিশ্বের বৃহত্তম ধর্ম হবে ইসলাম সুন্দরবনের কলমতেজী এলাকায় আগুন জনগণের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীকে দাঁড় করানোর ষড়যন্ত্র চলছে: রাশেদ খান প্রবাসীরা ভারতীয়রা কেন ট্রাম্পকে পছন্দ করেন না? বাংলাদেশে এমন কোনো শক্তি নেই যে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারে—এ আরাফাত রেলওয়ের পাঁচটি প্রকল্পের মধ্যে তিনটিতে অর্থায়ন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিলো ভারত বীর বিক্রম ড. কর্নেল অলি আহমদ : দুর্নীতি, ক্ষমতা ও লোভ যাকে কখনই স্পর্শ করেনি কঠোর ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে অনুরোধ জানালেন শবনম ফারিয়া প্রধান উপদেষ্টার কাছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর ডাকাতির সময় মেরিন ড্রাইভে জনতার হাতে ৩জন আটক ৫ কোটি টাকার ইয়াবাসহ রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৪ বাংলাদেশ-মেক্সিকো দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের পরিকল্পনা শুরু হলো নাজাতের দশক ‘কন্যা’ গানের জোয়ারে মেতেছেন চার তারকা ৩০টি নতুন বিমান কিনছে মালয়েশিয়া এমপি হয়েই নেমে পড়েন লুটপাটে বিশ্বের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত কারাগার গাজা সেনাবাহিনী পাশে না দাঁড়ালে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি হতো: নুরুল হক পানিদূষণ, উদ্ভিদ ধ্বংস ভূমিধস বাড়ার শঙ্কা