ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স                            
                        আরও খবর
                                আজ সংবিধান দিবসঃ বাংলাদেশের সংবিধানের পটভূমি
                                বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক চীনের দিকে ঝোঁকার কারণে উদ্বেগ বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের
                                স্ট্রং ভল্টে সোনা-হীরা থাকলেও চুরি শুধু অস্ত্র, বাড়ছে শাহজালাল আগুনের রহস্য
                                ড. ইউনুসের পতনের ডাক যুবলীগের, ১৩ নভেম্বর ঢাকায় লকডাউন ঘোষণা
                                চার দিনের সফরে ঢাকায় পাকিস্তান নৌপ্রধান, সেনাপ্রধানকে পাশ কাটিয়ে পাকিস্তান নৌপ্রধানকে গলফ ও ভোজে আপ্যায়ন সশস্ত্র বাহিনীতে বিভেদ ও অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির ইঙ্গিত দিচ্ছে।
                                সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (FDI) নিয়ে ড. ইউনূসের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে বিতর্ক: তথ্য বিকৃতি ও বিভ্রান্তির অভিযোগ
                                ইউনূসকে রেফারির ভূমিকায় চায় ধর্মভিত্তিক ৮ দল
নির্মম ভয়ংকর আদর
                             
                                               
                    
                         কথায় কথায় নেমে আসত নির্মম নির্যাতন। ১৩ বছর বয়সী গৃহকর্মীকে রড, লাঠি দিয়ে মারধরের পাশাপাশি দেওয়া হতো ছ্যাঁকা। বিভিন্ন সময় গরম পানি ঢেলে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে প্রায় সমস্ত শরীর। সাড়ে ৪ বছর ধরে চলা এমন নির্যাতনে চিকিৎসা না পাওয়ায় দগদগে ঘা হয়ে গেছে তার হাত, পা, মুখ, পিঠে। কাঠের ব্রাশের আঘাতে ভেঙে ফেলা হয়েছে শিশুটির চারটি দাঁত। এমন বর্বরতার শিকার ওই শিশুকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। সে এখন হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুটির পুরোপুরি সুস্থ হতে অন্তত তিন মাস সময় লাগবে। এ ছাড়া নির্যাতনের এ ট্রমা থেকে তাকে 
বের করে আনতে প্রয়োজন হবে মানসিক চিকিৎসার। গত শনিবার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার আই ব্লকের ৩ নম্বর সড়কের একটি বাসা থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের সহায়তায় থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। মধ্য রাতেই ভর্তি করা হয়েছে ঢামেকের বার্ন ইউনিটে। একই সঙ্গে নির্যাতনের অভিযোগে গৃহকর্ত্রী দিনাত জাহান আদরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গৃহকর্মীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তাদের বাড়ি হবিগঞ্জে। পাঁচ বছর আগে এই শিশুকর্মীকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। অভিযুক্ত গৃহকর্ত্রী একাই বসুন্ধরার বাসায় থাকতেন। তার সঙ্গে ছিল এই গৃহকর্মী। ঢাকা মেডিকেলে মেয়ের শয্যাপাশে দাঁড়িয়ে মা আফিয়া বেগম জানান, ‘ওই বাসায় পাঁচ বছর ধরে কাজ করে কল্পনা। কাজের ভুল ধরে তাকে বিভিন্ন সময় হেয়ার স্ট্রেইটনার দিয়ে ছ্যাঁকা দিত।
রড দিয়ে মারধর করত। এই পাঁচ বছর আমাদের সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। শুধু বিকাশের মাধ্যমে মাসে ৫ হাজার টাকা পাঠাইতো। শনিবার রাতে পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে মেয়েকে দেখতে পাই।’ ভুক্তভোগী গৃহকর্মী সাংবাদিকদের জানিয়েছে, সবসময় কাজের ভুল ধরার চেষ্টা করত দিনাত জাহান। নিয়মিত মারধর করত তাকে। ২ মাস আগে কাঠের ব্রাশ দিয়ে আঘাত করে তার ৪টি দাঁত ভেঙে দেয়। দুদিন আগে হেয়ার স্ট্রেইটনার গরম করে মুখে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। চিকিৎসার জন্য কখনো বাসার বাইরে যেতে দেওয়া হতো না। একবেলা খাবার দিতো। তাও থাকত পচা-বাসি। শনিবার বাসার একটি বিড়ালকে চিকিৎসার জন্য গাড়ি দিয়ে শিশু গৃহকর্মীকে চিকিৎসকের কাছে পাঠান আদর। ওই চিকিৎসক শিশুর
শরীরের জখম দেখে তার বাসার ঠিকানা রেখে দেন। পরবর্তীতে তিনিই সাংবাদিক ও পুলিশের সাহায্য নেন এবং উদ্ধার হয় শিশুটি। গৃহকর্ত্রী আদর সম্পর্কে জানা গেছে, তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। পরিবার অন্যত্র থাকলেও বসুন্ধরাতে একা বাসা নিয়ে থাকেন তিনি। তার আচরণ ও চলাফেরা উগ্র। তার আয়ের কোনো উৎস না থাকলেও বিলাসী জীবন তার। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, নির্যাতনের শিকার মেয়েটিকে আমাদের হাসপাতাল থেকে যতটুকু সাপোর্ট দরকার, তার সব টুকুই দেওয়া হবে। বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসকরা তাকে দেখতেছেন। এ ছাড়া অন্য চিকিৎসকরাও তাকে দেখবেন। ঢাকা মেডিকেল বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সহযোগী অধ্যপক ডা. নাসির উদ্দিন বলেন, মেয়েটির শরীরের বিভিন্ন জায়গায়
পোড়া ক্ষত আছে। মেটাল কোনো জিনিস দিয়ে বিভিন্ন সময় তাকে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েছে। যখন তার চিকিৎসার দরকার ছিল, তখন পায়নি। নিজে নিজে চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। যার ফলে ইনফেকশন হয়ে গেছে। মেয়েটির মুখ থেকে শুরু করে হাত, পা, বুক, পিঠসহ বিভিন্ন জায়গায় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা এক দিনে করা হয়নি। বিভিন্ন সময় এই কাজ করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে হাসপাতালে শিশু গৃহকর্মীকে দেখতে যান জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, অনেক পরিবার দারিদ্র্যের কারণে অন্যের বাসায় কাজ করে। তাই বলে নির্মমতার শিকার হবে এটাতো মেনে নেওয়া যায় না। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এই মেয়েটিকে নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। মেরে
তার চারটি দাঁত ভেঙে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তার শরীরে সব ধরনের আঘাত রয়েছে। কোনো সুস্থ মানুষ এ ধরনের নির্যাতন করতে পারে না। দেশে ৫ লাখ শিশুশ্রমিক ও গৃহকর্মী আছে। এই মেয়েটা পাঁচ বছর ধরে একটা পরিবারে কাজ করে। সাড়ে চার বছর ধরে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, অথচ কেউ জানেও না। এরকম আরও কত হচ্ছে, অনেকেই তা জানি না। তিনি বলেন, এটি চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন, এটা বন্ধ করা উচিত। কমিশন সর্বশেষ গৃহকর্মী নিরাপত্তা আইনের একটা খসড়া প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে সাবমিট করেছে। এটি শিগগিরই প্রস্তুত করে আইন পাস করা দরকার। এরকম নিষ্ঠুর আচরণের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভাটারা থানার ওসি মাজহারুল
ইসলাম বলেন, শনিবার রাতেই খবর পেয়ে ওই গৃহকর্মীকে উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার সারা শরীরে পোড়া ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। গৃহকর্মীর মা আফিয়া বেগম বাদী হয়ে নারী শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। মামলায় গ্রেপ্তার গৃহকর্ত্রী দিনাত জাহান আদরকে রোববার আদালতে তোলা হয়। আদালত তার এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
                    
                                                          
                    
                    
                                    বের করে আনতে প্রয়োজন হবে মানসিক চিকিৎসার। গত শনিবার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার আই ব্লকের ৩ নম্বর সড়কের একটি বাসা থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের সহায়তায় থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। মধ্য রাতেই ভর্তি করা হয়েছে ঢামেকের বার্ন ইউনিটে। একই সঙ্গে নির্যাতনের অভিযোগে গৃহকর্ত্রী দিনাত জাহান আদরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গৃহকর্মীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তাদের বাড়ি হবিগঞ্জে। পাঁচ বছর আগে এই শিশুকর্মীকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। অভিযুক্ত গৃহকর্ত্রী একাই বসুন্ধরার বাসায় থাকতেন। তার সঙ্গে ছিল এই গৃহকর্মী। ঢাকা মেডিকেলে মেয়ের শয্যাপাশে দাঁড়িয়ে মা আফিয়া বেগম জানান, ‘ওই বাসায় পাঁচ বছর ধরে কাজ করে কল্পনা। কাজের ভুল ধরে তাকে বিভিন্ন সময় হেয়ার স্ট্রেইটনার দিয়ে ছ্যাঁকা দিত।
রড দিয়ে মারধর করত। এই পাঁচ বছর আমাদের সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। শুধু বিকাশের মাধ্যমে মাসে ৫ হাজার টাকা পাঠাইতো। শনিবার রাতে পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে মেয়েকে দেখতে পাই।’ ভুক্তভোগী গৃহকর্মী সাংবাদিকদের জানিয়েছে, সবসময় কাজের ভুল ধরার চেষ্টা করত দিনাত জাহান। নিয়মিত মারধর করত তাকে। ২ মাস আগে কাঠের ব্রাশ দিয়ে আঘাত করে তার ৪টি দাঁত ভেঙে দেয়। দুদিন আগে হেয়ার স্ট্রেইটনার গরম করে মুখে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। চিকিৎসার জন্য কখনো বাসার বাইরে যেতে দেওয়া হতো না। একবেলা খাবার দিতো। তাও থাকত পচা-বাসি। শনিবার বাসার একটি বিড়ালকে চিকিৎসার জন্য গাড়ি দিয়ে শিশু গৃহকর্মীকে চিকিৎসকের কাছে পাঠান আদর। ওই চিকিৎসক শিশুর
শরীরের জখম দেখে তার বাসার ঠিকানা রেখে দেন। পরবর্তীতে তিনিই সাংবাদিক ও পুলিশের সাহায্য নেন এবং উদ্ধার হয় শিশুটি। গৃহকর্ত্রী আদর সম্পর্কে জানা গেছে, তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। পরিবার অন্যত্র থাকলেও বসুন্ধরাতে একা বাসা নিয়ে থাকেন তিনি। তার আচরণ ও চলাফেরা উগ্র। তার আয়ের কোনো উৎস না থাকলেও বিলাসী জীবন তার। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, নির্যাতনের শিকার মেয়েটিকে আমাদের হাসপাতাল থেকে যতটুকু সাপোর্ট দরকার, তার সব টুকুই দেওয়া হবে। বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসকরা তাকে দেখতেছেন। এ ছাড়া অন্য চিকিৎসকরাও তাকে দেখবেন। ঢাকা মেডিকেল বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সহযোগী অধ্যপক ডা. নাসির উদ্দিন বলেন, মেয়েটির শরীরের বিভিন্ন জায়গায়
পোড়া ক্ষত আছে। মেটাল কোনো জিনিস দিয়ে বিভিন্ন সময় তাকে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েছে। যখন তার চিকিৎসার দরকার ছিল, তখন পায়নি। নিজে নিজে চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। যার ফলে ইনফেকশন হয়ে গেছে। মেয়েটির মুখ থেকে শুরু করে হাত, পা, বুক, পিঠসহ বিভিন্ন জায়গায় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা এক দিনে করা হয়নি। বিভিন্ন সময় এই কাজ করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে হাসপাতালে শিশু গৃহকর্মীকে দেখতে যান জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, অনেক পরিবার দারিদ্র্যের কারণে অন্যের বাসায় কাজ করে। তাই বলে নির্মমতার শিকার হবে এটাতো মেনে নেওয়া যায় না। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এই মেয়েটিকে নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। মেরে
তার চারটি দাঁত ভেঙে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তার শরীরে সব ধরনের আঘাত রয়েছে। কোনো সুস্থ মানুষ এ ধরনের নির্যাতন করতে পারে না। দেশে ৫ লাখ শিশুশ্রমিক ও গৃহকর্মী আছে। এই মেয়েটা পাঁচ বছর ধরে একটা পরিবারে কাজ করে। সাড়ে চার বছর ধরে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, অথচ কেউ জানেও না। এরকম আরও কত হচ্ছে, অনেকেই তা জানি না। তিনি বলেন, এটি চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন, এটা বন্ধ করা উচিত। কমিশন সর্বশেষ গৃহকর্মী নিরাপত্তা আইনের একটা খসড়া প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে সাবমিট করেছে। এটি শিগগিরই প্রস্তুত করে আইন পাস করা দরকার। এরকম নিষ্ঠুর আচরণের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভাটারা থানার ওসি মাজহারুল
ইসলাম বলেন, শনিবার রাতেই খবর পেয়ে ওই গৃহকর্মীকে উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার সারা শরীরে পোড়া ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। গৃহকর্মীর মা আফিয়া বেগম বাদী হয়ে নারী শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। মামলায় গ্রেপ্তার গৃহকর্ত্রী দিনাত জাহান আদরকে রোববার আদালতে তোলা হয়। আদালত তার এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

             

