৬২-এর পথে ৭১ এসেছিল – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আপডেটঃ ১০ মার্চ, ২০২৫
     ৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ

৬২-এর পথে ৭১ এসেছিল

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১০ মার্চ, ২০২৫ | ৪:৫৩ 133 ভিউ
১৯৬২ সাল। আমি তখন চট্টগ্রাম পাহাড়তলী রেলওয়ে স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। মান্নান ভাই ও ফেরদৌস ভাই আমাদের ডেকে বললেন, শুনো ছাত্ররা, আইয়ুব খান একটা কমিশন করেছে। সেটার নাম শরীফ কমিশন (কমিশন অব ন্যাশনাল এডুকেশন)। সেই কমিশন বাস্তবায়ন হলে বাংলা ভাষা আর থাকবে না, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা লেখাপড়া করতে পারবে না। কাজেই আমাদের আন্দোলন করতে হবে। এরপর আমাদের কাজ ভাগ করে দেওয়া হলো-চট্টগ্রাম থেকে চলাচলরত উল্কা নামক একটি ট্রেন থামাতে বলা হলো। পরদিন সকাল ৭টায় আমরা পাহাড়তলী স্টেশনে গিয়ে উল্কার সামনে লাইন ধরে দাঁড়াই, কিন্তু ট্রেনটি থামল না। পরে পাথর মেরে পিকেটিং করি ও রেললাইন তুলে ফেলি। সেই সময়ের আন্দোলনকারীরাই দল-মত

নির্বিশেষে ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। ’৬৪ সালে চট্টগ্রাম কলেজে লেখাপড়া করা অবস্থায় এসএম ইউসুফ ভাই বললেন, ‘এসব খুচরা আন্দোলন করে লাভ নেই। চল আমরা স্বাধীনতার আন্দোলন করি।’ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ’৬৬ সালে ৬ দফা দেওয়ার পর ’৬৭ সালে স্লোগান ওঠে ‘আমি কে, তুমি কে, বাঙালি-বাঙালি’ ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা’। ’৬৮ সালে সর্বদলীয় আন্দোলনে যোগ দিলাম। তখন স্লোগান ছিল-‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’। ’৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারি পুলিশ গুলি করে মতিউর, মকবুল, রুস্তম ও আলমগীর-এই চারজনকে হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ রাজপথে নেমে আসে। আন্দোলনমুখী মানুষকে আরও ক্রুদ্ধ করে তোলে। স্লোগান ওঠে জয় বাংলা। ’৭০ সালে

স্বাধীনতার পতাকা নিয়ে সারা দেশের মতো চট্টগ্রামেও মিছিল হয়। ওই সময় পর্যন্ত ছাত্রলীগের একটি পক্ষ ৬ দফার বাইরে এই জাতীয় স্লোগান পছন্দ করছিল না। আমরা ছিলাম সিরাজুল আলম খান গঠিত নিউক্লিয়াসের অনুসারী। ওই সময় আমাদের স্লোগান ছিল-‘পাকিস্তান-পাকিস্তান চৈতন্যগলির গোরস্তান।’ ’৭১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমরা বুঝে গেলাম, যুদ্ধ ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো পথ নেই। চট্টগ্রামে যারা স্বাধীনতাপন্থি ছিল তাদের ডিস্ট্রিক্ট গ্রুপ ও যারা ৬ দফাপন্থি ছিল তাদের সিটি গ্রুপ বলা হতো। আমি ডিস্ট্রিক্ট গ্রুপে ছিলাম। ১ মার্চ থেকে ট্রেনিং শুরু করি। তখনকার পুলিশ ও সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লোকজন কাঠের বন্দুক দিয়ে আমাদের ট্রেনিং দিয়েছিলেন। ট্রেনিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন ফাহিম উদ্দিন আহমেদ। ৩ মার্চ পাহাড়তলীতে

বিহারিদের সঙ্গে আমাদের সংঘর্ষ বাধে। সেই সংঘর্ষে শতাধিক ছাত্র-জনতা মারা যায়। ১৬ মার্চ আন্দরকিল্লা এলাকায় বন্দুকের দোকান লুট করি। ২৫ মার্চ থেকে ঘরছাড়া হয়ে যাই। ভারত থেকে দুই দফায় ট্রেনিং নিয়ে চট্টগ্রামে প্রবেশ করে একাধিক অপারেশন করেছিলাম। এক কথায় বলতে গেলে, চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপে তাদের দায়িত্ব সফলভাবে পালনে সমর্থ হয়েছিল। এর মূল কারণ ছিল, চট্টগ্রামের আপামর জনগণ মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে জনগণের শাসন প্রয়োজন। জাতীয় সংসদ ও শাসন কাঠামোর প্রতিটি স্তরে শ্রম কর্ম পেশার প্রতিনিধিত্ব প্রয়োজন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি পরিবর্তন, সংবিধানের ১৩৪ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত, ৪৮/৩ বিলুপ্ত, ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন প্রয়োজন। ’২৪-এর

কাছে প্রত্যাশা-তারা যেন রাষ্ট্রের সংবিধান থেকে ফ্যাসিবাদের সহযোগী আইন সংশোধনের জন্য দাবি তোলে। লেখক : চেয়ারম্যান, বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র ট্রাস্ট।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
‘ওই নূতনের কেতন ওড়ে’ হাদির জন্য কাঁদছে পুরো বাংলাদেশ রাজধানীতে চলন্ত বাসে আগুন ৪০ টাকার পেঁয়াজ ১৫০ টাকায় বিক্রি! মেট্রোরেল চলাচল শুরু বৈশ্বিকভাবে নেতিবাচক পরিস্থিতিতে ব্যাংক খাত ২০২৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে নতুন নির্দেশনা রোজা শুরু হতে আর কতদিন বাকি? বিশ্ববাজারে ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম, নতুন রেকর্ড রুপায় যুক্তরাজ্যে জাদুঘর থেকে ৬০০-র বেশি নিদর্শন চুরি ভারতসহ এশীয় দেশগুলোর ওপর ৫০% শুল্ক আরোপ করল মেক্সিকো রজনীকান্তের প্রথম পছন্দ ছিলেন ঐশ্বরিয়া মেসির সঙ্গে দেখা করবেন বলিউড বাদশাহ ১৯ রান খরচে ৭ উইকেট শিকার করে রেকর্ড মালয়েশিয়ায় সঞ্চয় স্কিমে ১৩ লাখ বিদেশি কর্মীর নিবন্ধন নিউ ইয়র্কে উৎসবের ঝলমল প্রস্তুতি, রকেফেলারে ক্রিসমাস ট্রি স্থায়ী বসবাসের সুযোগ দিতে গোল্ড কার্ড ভিসা বিক্রি শুরুর ঘোষণা ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ সিনেট, স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বাড়ার ঝুঁকি নিউ জার্সিতে নৃশংস বন্দুক হামলা, বালকসহ ৩জন নিহত নয়া বন্দোবস্তঃ মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী পুরনো ষড়যন্ত্র