সুদখোরের দেশে রিকশাচালকের মৃত্যু : যে লোক নোবেল পেয়েছিল গরিবের রক্ত চুষে – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আপডেটঃ ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫
     ৭:০২ পূর্বাহ্ণ

সুদখোরের দেশে রিকশাচালকের মৃত্যু : যে লোক নোবেল পেয়েছিল গরিবের রক্ত চুষে

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ | ৭:০২ 17 ভিউ
চাঁদপুরের শাহতলী গ্রামের সুলতান মাহমুদ রুবেল বিষপান করে মারা গেছে। খবরটা পড়ে কারো চোখে পানি এসেছে কিনা জানি না, কিন্তু যারা এ দেশে ক্ষুদ্রঋণের নামে সুদখোরি ব্যবসা দাঁড় করিয়েছে, তাদের চোখে এই মৃত্যু নিশ্চয়ই কোনো সংখ্যার বেশি কিছু না। ৩৮ বছরের একজন রিকশাচালক, চার সন্তানের বাবা, যার স্ত্রী ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালায়, সেই মানুষটা দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর চিকিৎসার জন্য এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছিল। তারপর কী হলো? সেই ঋণের কিস্তি দিতে না পারায় এলাকার মানুষ আর এনজিওর লোকেরা তাকে এমন অপমান করলো যে নিজের বাড়িতে থাকতে পারলো না। শহরে ভাড়া বাসায় উঠতে হলো, সন্তানদের নানাবাড়িতে রেখে আসতে হলো। শেষমেশ

অপমানের বোঝা বইতে না পেরে বিষ খেয়ে প্রাণ দিলো। এই ঘটনা একবার ভেবে দেখুন। মানুষটা অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার জন্য ঋণ নিলো, সেই ঋণ শোধ করতে গিয়ে তার স্ত্রীকে বাসাবাড়িতে কাজ করতে হলো, নিজে অসুস্থ শরীর নিয়ে রিকশা চালালো, তারপরও ঋণ শোধ হলো না। কারণ এই ঋণ এমনভাবে সাজানো যে সাধারণ মানুষের পক্ষে সেটা শোধ করা প্রায় অসম্ভব। সুদের হার এত বেশি, কিস্তির চাপ এত ভারী যে একজন রিকশাচালক বা একজন ঝিয়ে কাজ করা মহিলার আয় দিয়ে সেটা কখনোই মেটানো যায় না। আর যখন কিস্তি বাকি পড়ে, তখন শুরু হয় অপমান। এনজিওর কর্মীরা বাড়িতে গিয়ে জনসম্মুখে অপমান করে, পাড়া-প্রতিবেশীদের সামনে হেনস্তা করে,

এমনকি শারীরিক নির্যাতনও করে। রুবেলের স্ত্রী জানিয়েছেন যে তার স্বামীকে নিজের বাড়িতে গিয়ে মারধরও করা হয়েছিল। এই অবস্থায় একজন মানুষ আত্মহত্যা করবে না তো কী করবে? এবার আসি মূল কথায়। এই যে ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসা, এই যে সুদের জালে সাধারণ মানুষকে আটকে ফেলে তাদের জীবন থেকে শেষ ফোঁটা রক্ত পর্যন্ত চুষে নেওয়ার ব্যবস্থা, এই জিনিসটা এ দেশে কে শুরু করেছিল? মুহাম্মদ ইউনুস। ১৯৭৬ সালে জোবরা গ্রামে ২৭ ডলার ধার দিয়ে যাত্রা শুরু, তারপর ১৯৮৩ সালে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা, আর ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার। পুরো বিশ্ব তাকে দরিদ্র মানুষের ত্রাণকর্তা হিসেবে প্রচার করলো। কিন্তু মাঠের বাস্তবতা কী ছিল? গ্রামীণ ব্যাংক আর তার

মতো অসংখ্য এনজিও এই দেশের গ্রামে গ্রামে গিয়ে দরিদ্র মানুষদের, বিশেষ করে মহিলাদের কাছে ঋণ দিতে শুরু করলো। বলা হলো এই ঋণ দিয়ে তারা ছোট ব্যবসা করবে, স্বাবলম্বী হবে। কিন্তু বাস্তবে যা হলো তা হচ্ছে এই মানুষগুলো এমন একটা ঋণের ফাঁদে পা দিলো যেখান থেকে বের হওয়া তাদের জন্য প্রায় অসম্ভব হয়ে গেলো। গ্রামীণ ব্যাংক আর এনজিওগুলো বলে তারা সুদ নেয় না, তারা নেয় সার্ভিস চার্জ। কিন্তু এই সার্ভিস চার্জ আসলে সুদেরই আরেক নাম। সমতল হিসাব (ফ্ল্যাট রেট) পদ্ধতিতে সুদ নেওয়া হয় বলে দেখতে মনে হয় হার কম, কিন্তু আসল হিসাব করলে দেখা যায় কার্যকর সুদের হার ২০ থেকে ৩০ শতাংশ

বা তারও বেশি। একজন রিকশাচালক বা একজন ঝিয়ে কাজ করা মহিলা দিনে হয়তো ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা রোজগার করে, তার মধ্যে থেকে সংসার চালাতে হয়, বাচ্চাদের খাওয়াতে হয়, বাড়ি ভাড়া দিতে হয়, আর তার ওপর প্রতি সপ্তাহে বা মাসে ঋণের কিস্তি দিতে হয়। কিস্তি বাকি পড়লে শুরু হয় অপমান আর হয়রানি। এনজিওর কর্মীরা বাড়িতে গিয়ে চিৎকার করে, পাড়ার মানুষদের সামনে হেনস্তা করে, এমনকি অনেক সময় শারীরিক নির্যাতনও করে। অনেক নারীকে এই ঋণ শোধ করতে গিয়ে আরেকটি এনজিও থেকে ঋণ নিতে হয়। একটা ঋণ শোধ করতে গিয়ে আরেকটা ঋণের বোঝা মাথায় নেওয়া, এই চক্রে আটকে গিয়ে অনেক মানুষ আত্মহত্যা করেছে। রুবেল

তাদের মধ্যে একজন মাত্র। এই ব্যবস্থা দিয়ে ইউনুস আন্তর্জাতিক খ্যাতি পেয়েছেন, নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল পেয়েছেন, প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম পেয়েছেন। পশ্চিমা বিশ্ব তাকে দারিদ্র্য বিমোচনের নায়ক বলে মহিমান্বিত করেছে। কিন্তু মাঠে যারা আছে, যারা প্রতিদিন এনজিওর ঋণের বোঝা বইছে, তারা জানে এই ব্যবস্থার আসল চেহারা কী। ২০১০ সালে নরওয়ের একটি তদন্তে দেখা গেছে যে গ্রামীণ ব্যাংক নরওয়ের সরকার থেকে পাওয়া অনুদান ভুল খাতে ব্যয় করেছে। ২০১১ সালে বাংলাদেশ সরকার ইউনুসকে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে অপসারণ করে বয়সের কারণ দেখিয়ে, কিন্তু আসল কারণ ছিল অনিয়ম আর আর্থিক স্বচ্ছতার অভাব। তারপরও পশ্চিমা মিডিয়া আর বিভিন্ন সংস্থা ইউনুসকে নিপীড়িত

নায়ক হিসেবে উপস্থাপন করেছে। আর এই মানুষটাই এখন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সহিংস দাঙ্গার মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করা হলো। রাস্তায় মানুষ মারা গেলো, পুলিশ সদস্যরা খুন হলো, সরকারি ভবন পুড়ে গেলো, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর লুটপাট হলো। আর এই বিশৃঙ্খলার পর ক্ষমতায় বসলো মুহাম্মদ ইউনুস। কোনো নির্বাচন ছাড়াই, জনগণের ভোট ছাড়াই। সামরিক বাহিনীর সমর্থন পেয়ে, ইসলামিক জঙ্গিগোষ্ঠী আর ছাত্র সংগঠনের মদদে, আর বিদেশি শক্তির আশীর্বাদ নিয়ে ইউনুস ক্ষমতায় বসেছেন। এটা একটা সামরিক অভ্যুত্থান, একটা ক্যু, যেটাকে তথাকথিত গণআন্দোলনের মোড়কে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এবার ভাবুন, যে মানুষটা সারাজীবন গরিব মানুষের ঘাড়ে চেপে ব্যবসা করেছে, যার তৈরি ব্যবস্থায় রুবেলের মতো হাজারো মানুষ আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে, সেই মানুষটাই এখন দেশ চালাচ্ছে। তার শাসনামলে দেশের অবস্থা কী হবে সেটা কি আর বুঝতে বাকি আছে? যে ব্যবস্থা সুদের নামে শোষণ করে, যে ব্যবস্থা গরিব মানুষকে ঋণের জালে আটকে ফেলে, সেই ব্যবস্থার প্রবর্তক যখন ক্ষমতায় বসে, তখন সাধারণ মানুষের জীবন আরও দুর্বিষহ হবে এটাই স্বাভাবিক। রুবেলের মৃত্যু এই নতুন ব্যবস্থার প্রথম শিকার নয়, আর শেষ শিকারও হবে না। ইউনুসের শাসনামলে আরও অনেক রুবেল আত্মহত্যা করবে, কারণ যে ব্যবস্থা তিনি তৈরি করেছেন, সেই ব্যবস্থা গরিব মানুষের জন্য মরণফাঁদ। এ দেশের মানুষ এখন দেখছে যে গণতন্ত্রের নামে ক্ষমতা দখল করে একজন সুদখোর ব্যবসায়ীকে দেশের কর্তা বানানো হয়েছে। যার কোনো রাজনৈতিক ম্যান্ডেট নেই, জনগণের কাছ থেকে কোনো ভোট নেই, তিনি দেশ চালাচ্ছেন সামরিক বাহিনীর ছত্রছায়ায়। আর এই অবস্থায় রুবেলের মতো সাধারণ মানুষ আত্মহত্যা করছে কারণ তারা জানে এই ব্যবস্থায় তাদের বাঁচার কোনো পথ নেই। হালিমা বেগম এখন চারটা সন্তান নিয়ে কীভাবে বাঁচবে? কে দেখবে তার সন্তানদের? কে দেবে তাদের শিক্ষার খরচ, চিকিৎসার খরচ? ইউনুসের গ্রামীণ ব্যাংক আর এনজিওগুলো কি এসে দায়িত্ব নেবে? নাকি তারা আবার হালিমা বেগমের কাছেও ঋণের কিস্তির দাবি নিয়ে হাজির হবে? এই মৃত্যুর দায় এড়ানোর কোনো উপায় নেই। যে ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে ক্ষুদ্রঋণের নামে, সেই ব্যবস্থার স্থপতি এখন ক্ষমতায়। আর দেশের মানুষ দেখছে তাদের ভাগ্যে কী আছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
বিজয়ের মাস ডিসেম্বর ছয় বছরের শান্তি, মাত্র ছয় মাসেই নরক : নোবেলজয়ী ইউনুস সরকারের আরেকটি অর্জন সুন্দরবনে! সুদখোরের দেশে রিকশাচালকের মৃত্যু : যে লোক নোবেল পেয়েছিল গরিবের রক্ত চুষে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতৃত্বকে দুর্বল করতে পরিকল্পিত আগুন–সন্ত্রাস? জামায়েতকে ভোট না দিলে পিঠের চামড়া থাকবে না —ভোটারদের হুমকি দিচ্ছেন প্রার্থীরা বহুদিন ধরে বিএনপি–জামায়াত এবং সুশীল সমাজের একটি অংশ ২০১৩ সালের ৫ মে আওয়ামী লীগ রাজধানীর মোহাম্মদপুরে দিনেদুপুরে মা মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা GSOMIA এবং ACSA চুক্তি সরাসরি নাকচ, ফলে আমেরিকার সাথে পূর্ণ দ্বৈরথ শেখ হাসিনার! ‘দেশ ধ্বংস করে ফেলছে এই স্টুপিড জেনারেশন’—জুলাই থেকে চলমান অরাজকতায় অতিষ্ঠ জনতা, ভাইরাল নারীর ক্ষোভ ঢাকার ডেমরায় ইউপি চেয়ারম্যানের ছোট ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা মাইকিং নিষিদ্ধ, রাতের আঁধারে তড়িঘড়ি দাফন: তবুও দমানো গেল না যুবলীগ নেতা রেজাউলের জানাজার জনস্রোত ৮ ডিসেম্বর ১৯৭১ দেশে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলে অবসর নেবেন সাকিব, কাজ করতে চান মানুষের জন্য দুর্নীতির বরপুত্র’র মুখে নীতি কথা শীতের ভরা মৌসুমেও অসহনীয় সবজির দাম মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক দুবাইয়ের চাকরির প্রলোভনে পাকিস্তানে জঙ্গি প্রশিক্ষণ ঐতিহাসিক অডিওতে জিয়ার স্বীকারোক্তি: বঙ্গবন্ধুর নামেই স্বাধীনতার ঘোষণা, স্লোগান ছিল ‘জয় বাংলা’ ‘ভুয়া তথ্যে চাকরি, ধরা পড়ে পায়ে ধরে কান্না’: শাহরিয়ার কবিরের জালিয়াতির মুখোশ উন্মোচন করলেন ব্যারিস্টার জিন্নাত আলী চৌধুরী