ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর
মিরাজ নেই, আছে তাঁর রক্তমাখা শার্ট
ছেলের হাজারো স্মৃতির ভিড়ে একটিই এখন প্রশান্তির অবলম্বন। সেটি জড়িয়েই দিন কাটে মা মমতাজ বেগম ও বাবা আব্দুর রবের। তারা আশাবাদী, বর্তমান সরকার ছেলে হত্যার বিচার করবে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ৫ আগস্ট বিকেলে ছাত্র-জনতার বিজয় মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে মারা যান এ দম্পতির বড় ছেলে মিরাজ হোসেন পাপ্পু। অনার্স শেষে ফ্রিল্যান্সিং করে তিনি সংসারের হাল ধরেছিলেন।
পাপ্পু ডেমরা মধুবাগের ফার্ম মোড়ের ২১/২ নম্বর বাসার নিচতলায় ভাড়া বাসায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিন বাসায় তাঁর পড়ার টেবিলে ল্যাপটপ ও হাতঘড়ি পাওয়া যায়। গত ৩৭ দিনে এর ওপর জমেছে ধুলোবালি। মা-বাবা ইচ্ছে করেই এসব পরিষ্কার করেন না। যেমন পাপ্পুর পরিধান ও ব্যবহারের সবকিছুই
রেখে দিয়েছেন যত্নে। মনে পড়লেই মমতাজ বেগম রক্তজড়ানো সাদা চেক শার্ট বুকে জড়িয়ে চোখের পানি ফেলেন। পাপ্পুর বাসার গলিতে চোখ আটকে যায় ‘শহীদ মিরাজ হোসেন পাপ্পুর মৃত্যুর জন্য একমাত্র পুলিশই দায়ী’ দেয়াল লিখনে। বাসায় আলাপকালে মিরাজের ছোট ভাই পাভেল জানান, ভাইয়ার কক্ষে আগের মতো মা-বাবা যান না। গুলিতে নিহতের সময়ে যে শার্ট গায়ে ছিল, সেটি যত্নে রেখে দিয়েছেন। প্রায় প্রতিদিনই শার্টটি বুকে জড়িয়ে ধরেন। নাকের কাছে নিয়ে ঘ্রাণ নেন। বাবাও একই কাজ করেন। তিনি আরও জানান, সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে অনার্স করার পর টাকার অভাবে ভাইয়া মাস্টার্স করেননি। বন্ধুরা মিলে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করতেন। বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। পুরো পরিবার তাঁর আয়ে চলত।
তাঁকে হারিয়ে আমাদের এখন পথে বসার অবস্থা। পুলিশের নির্বিচার গুলির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে দেখা যায়, পুলিশের এলোপাতাড়ি গুলিতে ১০-১২ জনের লাশ পড়ে রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভিডিওটি যাত্রাবাড়ী থানা এলাকার। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর বিকেলে বিজয় মিছিলে প্রকাশ্যে গুলি চালায় পুলিশ। সেখানে নিহতদের একজন হতভাগ্য পাপ্পু। গত ২৪ আগস্ট পাপ্পুর বাবা ছয়জনের নামে ও অজ্ঞাতপরিচয় অন্তত ২০০ জনকে আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ছেলের প্রসঙ্গ উঠতেই সেই শার্ট এনে দেখালেন পাপ্পুর বাবা। কান্নাজড়ি কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনে যাচ্ছে কখনও পরিবারকে বুঝতে দিত না। মৃত্যুর পর
পাপ্পুর বন্ধুদের কাছে শুনেছি– প্রায় প্রতিদিনই মে আন্দোলনে যেত। বাসায় এ নিয়ে আলোচনা হলে সে চুপ থাকত। ৫ আগস্টও সকালে কিছু না বলে সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। বিকেলে শুনি, আমার ছেলে আর নেই।’ ছেলের নানা স্মৃতি হাতড়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা মমতাজ বেগম। তিনি বলেন, ঘটনার দিন সকাল ৮টার দিকে ওঠে নাশতা সেরে বেরিয়ে যায়। কোথায় যাও, জানতে চাইলে বলে– মা আন্দোলনের কী অবস্থা দেখে আসি। আমি নিষেধ করার সাহস পাইনি। বুক চাপড়ে মমতাজ বলতে থাকেন, আমি কেন তাকে যেতে দিলাম? নিষেধ করলে আমার বুক খালি হতো না। দেশ স্বাধীন হলো, সবাই ঘরে ফিরল, আমার পাপ্পু এলো কফিনে। সরকারের কাছে
আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই। খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখে যেতে চাই। আন্দোলনে অংশ নেওয়া পাপ্পুর বন্ধু শাওন আল মাহমুদ বলেন, পুলিশ গুলি ছুড়লে সবাই দৌড় দেন। পাপ্পু শুয়ে পড়ে আমাদের বলতে থাকে, ভয়ে দৌড় দিলে আন্দোলন কীভাবে সফল হবে? তিনি বলেন, সকাল থেকে অনেকবার চেষ্টা করেও মিছিল নিয়ে এগোতে পারিনি। এক পর্যায়ে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে জানতে পেরে বিজয় মিছিল নিয়ে বেলা পৌনে ৩টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে পৌঁছলে ভবনের ওপর থেকে গুলি করে পুলিশ। পরে থানার ভেতর থেকে ২৫-৩০ পুলিশ গুলি ছুড়তে ছুড়তে বেরিয়ে আসে। পাপ্পু হানিফ ফ্লাইওভারের পিলারের আড়ালে লুকায়। পুলিশ সদস্যরা রাস্তা পার হয়ে এসে মিরাজসহ ১০-১২ জনকে
গুলিকে হত্যা করে।
রেখে দিয়েছেন যত্নে। মনে পড়লেই মমতাজ বেগম রক্তজড়ানো সাদা চেক শার্ট বুকে জড়িয়ে চোখের পানি ফেলেন। পাপ্পুর বাসার গলিতে চোখ আটকে যায় ‘শহীদ মিরাজ হোসেন পাপ্পুর মৃত্যুর জন্য একমাত্র পুলিশই দায়ী’ দেয়াল লিখনে। বাসায় আলাপকালে মিরাজের ছোট ভাই পাভেল জানান, ভাইয়ার কক্ষে আগের মতো মা-বাবা যান না। গুলিতে নিহতের সময়ে যে শার্ট গায়ে ছিল, সেটি যত্নে রেখে দিয়েছেন। প্রায় প্রতিদিনই শার্টটি বুকে জড়িয়ে ধরেন। নাকের কাছে নিয়ে ঘ্রাণ নেন। বাবাও একই কাজ করেন। তিনি আরও জানান, সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে অনার্স করার পর টাকার অভাবে ভাইয়া মাস্টার্স করেননি। বন্ধুরা মিলে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করতেন। বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। পুরো পরিবার তাঁর আয়ে চলত।
তাঁকে হারিয়ে আমাদের এখন পথে বসার অবস্থা। পুলিশের নির্বিচার গুলির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে দেখা যায়, পুলিশের এলোপাতাড়ি গুলিতে ১০-১২ জনের লাশ পড়ে রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভিডিওটি যাত্রাবাড়ী থানা এলাকার। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর বিকেলে বিজয় মিছিলে প্রকাশ্যে গুলি চালায় পুলিশ। সেখানে নিহতদের একজন হতভাগ্য পাপ্পু। গত ২৪ আগস্ট পাপ্পুর বাবা ছয়জনের নামে ও অজ্ঞাতপরিচয় অন্তত ২০০ জনকে আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ছেলের প্রসঙ্গ উঠতেই সেই শার্ট এনে দেখালেন পাপ্পুর বাবা। কান্নাজড়ি কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনে যাচ্ছে কখনও পরিবারকে বুঝতে দিত না। মৃত্যুর পর
পাপ্পুর বন্ধুদের কাছে শুনেছি– প্রায় প্রতিদিনই মে আন্দোলনে যেত। বাসায় এ নিয়ে আলোচনা হলে সে চুপ থাকত। ৫ আগস্টও সকালে কিছু না বলে সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। বিকেলে শুনি, আমার ছেলে আর নেই।’ ছেলের নানা স্মৃতি হাতড়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা মমতাজ বেগম। তিনি বলেন, ঘটনার দিন সকাল ৮টার দিকে ওঠে নাশতা সেরে বেরিয়ে যায়। কোথায় যাও, জানতে চাইলে বলে– মা আন্দোলনের কী অবস্থা দেখে আসি। আমি নিষেধ করার সাহস পাইনি। বুক চাপড়ে মমতাজ বলতে থাকেন, আমি কেন তাকে যেতে দিলাম? নিষেধ করলে আমার বুক খালি হতো না। দেশ স্বাধীন হলো, সবাই ঘরে ফিরল, আমার পাপ্পু এলো কফিনে। সরকারের কাছে
আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই। খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখে যেতে চাই। আন্দোলনে অংশ নেওয়া পাপ্পুর বন্ধু শাওন আল মাহমুদ বলেন, পুলিশ গুলি ছুড়লে সবাই দৌড় দেন। পাপ্পু শুয়ে পড়ে আমাদের বলতে থাকে, ভয়ে দৌড় দিলে আন্দোলন কীভাবে সফল হবে? তিনি বলেন, সকাল থেকে অনেকবার চেষ্টা করেও মিছিল নিয়ে এগোতে পারিনি। এক পর্যায়ে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে জানতে পেরে বিজয় মিছিল নিয়ে বেলা পৌনে ৩টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে পৌঁছলে ভবনের ওপর থেকে গুলি করে পুলিশ। পরে থানার ভেতর থেকে ২৫-৩০ পুলিশ গুলি ছুড়তে ছুড়তে বেরিয়ে আসে। পাপ্পু হানিফ ফ্লাইওভারের পিলারের আড়ালে লুকায়। পুলিশ সদস্যরা রাস্তা পার হয়ে এসে মিরাজসহ ১০-১২ জনকে
গুলিকে হত্যা করে।