ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর
আইনশৃঙ্খলার অজুহাতে আবহমান বাংলার সংস্কৃতির ওপর পরিকল্পিত আঘাত—ফরিদপুরে বন্ধ ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ি উৎসব!
আওয়ামী লীগবিহীন নির্বাচন, একটি আত্মঘাতী রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত
রাঙ্গুনিয়ায় সংখ্যালঘুদের বসতঘরে বাইরে থেকে দরজা আটকে আগুন: ঘটনাস্থল থেকে ব্যানার উদ্ধার
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শেখ হাসিনার শোক
রাজনৈতিক শিষ্টাচারের অনন্য নজির: খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন সজীব ওয়াজেদ জয়
চরমোন্তাজে এসআই রাতুলের ঘুষ বাণিজ্যের রামরাজত্ব: জিম্মি আ.লীগ পরিবার, রেহাই পাচ্ছে না নারীরাও
ক্ষমতার দাবার চালে অসুস্থ খালেদা জিয়া: মানবিকতার চেয়ে যখন রাজনৈতিক স্বার্থই মুখ্য!
মহাজন ইউনুসের গণতন্ত্র : ১২২টি ফাঁদ ও একটি ভোট
অন্তর্বর্তী সরকারের তথাকথিত গণভোটের প্রস্তাব নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা চলছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি কোনো গণভোট নয়, বরং জনগণের মতামতকে পাশ কাটিয়ে একটি পূর্বনির্ধারিত এজেন্ডা চাপিয়ে দেওয়ার সুপরিকল্পিত চেষ্টা। যে সরকার সুদের ব্যবসা করে জাতীয় অর্থনীতিকে শোষণ করেছে, যে সরকার বিদেশি প্রভুদের ইশারায় ক্ষমতায় এসেছে, সেই সরকার এখন গণতন্ত্রের নামে আরেকটি প্রতারণার জাল বিছাচ্ছে।
প্রথম আলোয় প্রকাশিত বিশ্লেষণটি পড়ে স্পষ্ট হয় যে এই তথাকথিত গণভোট আসলে একটি সাংবিধানিক প্রতারণা। ১২২টি জটিল বিষয়ে জনগণকে একটি মাত্র হ্যাঁ বা না বলার সুযোগ দিয়ে বলা হচ্ছে এটাই গণতন্ত্র। এর চেয়ে বড় অপমান জনগণের বোধশক্তি ও গণতান্ত্রিক অধিকারের আর কী হতে পারে? যে সরকার জনগণের ভোটে আসেনি,
যাদের কোনো নির্বাচনী ম্যান্ডেট নেই, তারা কী করে এত বড় সাংবিধানিক পরিবর্তনের উদ্যোগ নিতে পারে? জুলাই সনদ নামের এই দলিলটির পুরো প্রক্রিয়াই প্রশ্নবিদ্ধ। ৩৩টি দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনা করা হলেও সবাই স্বাক্ষর করেনি। এমনকি যে বিষয়গুলোকে ঐকমত্যের বিষয় বলে দাবি করা হচ্ছে, সেগুলোর অধিকাংশেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ রয়েছে। কোনো একটি বিষয়েও সব দল একমত হতে পারেনি। তাহলে এগুলোকে জাতীয় সনদ বলার সাহস কোথা থেকে আসছে? যে গণভোট প্রশ্নটি তৈরি করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করলে মাথা ঘুরে যায়। একটি প্রশ্নের ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে তিনটি অধ্যাদেশ, জুলাই সনদের ৮৪টি বিষয় এবং আরও অসংখ্য জটিল সাংবিধানিক প্রস্তাব। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার থেকে শুরু
করে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগ, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের গঠন পদ্ধতি, স্থানীয় সরকারের ক্ষমতা, নারী আসন সংরক্ষণ এমনকি রাষ্ট্রভাষা পর্যন্ত সবকিছু ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে একটি মাত্র প্রশ্নে। এগুলোর প্রতিটি আলাদা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যার জন্য দীর্ঘ আলোচনা ও পৃথক সিদ্ধান্তের প্রয়োজন। আরও মজার ব্যাপার হলো, এই ১২২টি বিষয়ের মধ্যে অনেকগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর স্পষ্ট বিরোধিতা রয়েছে। অথচ সেগুলোকেও ঐকমত্যের তালিকায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনো কোনো বিষয়ে মাত্র ২৩টি দল সমর্থন দিয়েছে, কিন্তু সেটাকেও জাতীয় ঐকমত্য বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এর চেয়ে বড় প্রতারণা আর কী হতে পারে? বিশ্বের কোথাও এভাবে গণভোট হয় না। আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, লিথুয়ানিয়া বা অন্য যেসব দেশে গণভোট হয়েছে,
সেখানে প্রতিটি প্রশ্নের জন্য আলাদা আলাদা ভোটের সুযোগ ছিল। কোনো দেশে ১২২টি বিষয়কে একসঙ্গে গুঁজে দিয়ে একটি মাত্র উত্তরের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এমনকি যেসব দেশে সংসদে দ্বিতীয় কক্ষ যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেখানে শুধু এই একটি বিষয়ে বছরের পর বছর সংসদে আলোচনা হয়েছে। আর আমাদের দেশে একসঙ্গে শতাধিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হচ্ছে। এই গণভোটের সবচেয়ে বিপজ্জনক দিক হলো এর আইনি কাঠামো। অধ্যাদেশের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে। জুলাই সনদকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার বিধান রাখা হয়েছে। সংবিধান সংস্কার পরিষদের নামে আগামী সংসদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব গুরুতর বিষয় জনগণের কাছে পরিষ্কার করে বলা হচ্ছে না, অথচ গণভোটে
হ্যাঁ ভোট দিলে এসব বিষয়েও সম্মতি দেওয়া হয়ে যাবে। ইউনুস সরকার যেভাবে ক্ষমতায় এসেছে, তার কোনো নৈতিক বা সাংবিধানিক ভিত্তি নেই। জুলাই মাসে যে সহিংসতা ঘটানো হয়েছিল, তাতে ইসলামি জঙ্গি সংগঠনগুলোর সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। বিদেশি শক্তির মদদে একটি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করা হয়েছে। এখন সেই অবৈধ সরকার সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছে। এর চেয়ে বড় ঔদ্ধত্য আর কী হতে পারে? যে সরকারের নিজের কোনো জনসমর্থন নেই, যাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো বৈধতা নেই, তারা জনগণকে ১২২টি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলছে একটি মাত্র ভোটের মাধ্যমে। এটা গণতন্ত্রের চরম অবমাননা। জনগণের বুদ্ধিমত্তাকে অপমান করা। এই তথাকথিত গণভোটের মাধ্যমে আসলে একটি পূর্বনির্ধারিত
রাজনৈতিক এজেন্ডাকে জনসমর্থনের মোড়কে মুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত ছিল যত দ্রুত সম্ভব একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। সংবিধান সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্বাচিত সংসদেই আলোচনা হওয়া উচিত। প্রতিটি বিষয়ে আলাদা আলাদা বিতর্ক হওয়া উচিত। জনগণের প্রকৃত মতামত জানার জন্য প্রয়োজনে একাধিক গণভোট হতে পারে, যেখানে প্রতিটি বিষয়ে পৃথক সিদ্ধান্তের সুযোগ থাকবে। কিন্তু ইউনুস সরকার সেই পথে যাচ্ছে না। তারা জানে যে সাধারণ জনগণ এত জটিল বিষয়গুলো বুঝতে পারবে না। তারা আশা করছে মানুষ হ্যাঁ বা না চাপ দিয়ে তাদের দায়িত্ব শেষ করবে, আর সরকার তাদের ইচ্ছামতো এই ফলাফলকে ব্যবহার করবে। এটা গণতন্ত্রের নামে
প্রতারণা, জনগণের অধিকারের নামে ষড়যন্ত্র। এই গণভোট যদি সত্যিই অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকারে তলিয়ে যাবে। একটি অবৈধ সরকার যদি এভাবে সংবিধান পরিবর্তন করে ফেলতে পারে, তাহলে আইনের শাসন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, জনগণের সার্বভৌমত্ব সবকিছুই প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আগামী প্রজন্মের জন্য আমরা একটি বিপজ্জনক নজির রেখে যাব। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, এই পুরো প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার কোনো চিহ্ন নেই। জনগণকে পূর্ণ তথ্য দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিটি বিষয়ের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হচ্ছে না। বরং তাড়াহুড়ো করে একটি প্রহসনের আয়োজন করা হচ্ছে। এর পেছনে কোন স্বার্থ কাজ করছে, কারা লাভবান হবে, জনগণের কী ক্ষতি হতে পারে, এসব প্রশ্নের জবাব কেউ দিচ্ছে না। যে সরকার মাইক্রোক্রেডিটের নামে দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে চড়া সুদ আদায় করে বিলিয়ন ডলারের সাম্রাজ্য গড়েছে, যে সরকারের প্রধান নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দারিদ্র্য বিমোচনের নামে দরিদ্রদের শোষণ করে, সেই সরকারের কাছ থেকে জনগণ কী আশা করতে পারে? তারা যদি নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থে দরিদ্র মানুষকে শোষণ করতে পারে, তাহলে রাজনৈতিক স্বার্থে সংবিধানকে বিকৃত করতেও দ্বিধা করবে না। এই তথাকথিত গণভোট বাতিল করা উচিত। যত দ্রুত সম্ভব একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করা উচিত। সংবিধান সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ নির্বাচিত সংসদে করা উচিত, যেখানে জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধিরা থাকবেন। প্রতিটি প্রস্তাব নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা, বিতর্ক এবং পর্যালোচনা হওয়া উচিত। সত্যিকারের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। দেশের সাধারণ মানুষকে বুঝতে হবে যে এই গণভোট তাদের জন্য নয়, এটা একটি রাজনৈতিক ফাঁদ। এর মাধ্যমে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। ১২২টি জটিল বিষয়ে একটি মাত্র উত্তরের সুযোগ দিয়ে বলা হচ্ছে এটাই গণতন্ত্র। এর চেয়ে বড় প্রতারণা আর কিছু হতে পারে না। জনগণের এই খেলা বুঝে নেওয়া দরকার এবং তাদের প্রকৃত গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবি জানানো প্রয়োজন।
যাদের কোনো নির্বাচনী ম্যান্ডেট নেই, তারা কী করে এত বড় সাংবিধানিক পরিবর্তনের উদ্যোগ নিতে পারে? জুলাই সনদ নামের এই দলিলটির পুরো প্রক্রিয়াই প্রশ্নবিদ্ধ। ৩৩টি দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনা করা হলেও সবাই স্বাক্ষর করেনি। এমনকি যে বিষয়গুলোকে ঐকমত্যের বিষয় বলে দাবি করা হচ্ছে, সেগুলোর অধিকাংশেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ রয়েছে। কোনো একটি বিষয়েও সব দল একমত হতে পারেনি। তাহলে এগুলোকে জাতীয় সনদ বলার সাহস কোথা থেকে আসছে? যে গণভোট প্রশ্নটি তৈরি করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করলে মাথা ঘুরে যায়। একটি প্রশ্নের ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে তিনটি অধ্যাদেশ, জুলাই সনদের ৮৪টি বিষয় এবং আরও অসংখ্য জটিল সাংবিধানিক প্রস্তাব। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার থেকে শুরু
করে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগ, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের গঠন পদ্ধতি, স্থানীয় সরকারের ক্ষমতা, নারী আসন সংরক্ষণ এমনকি রাষ্ট্রভাষা পর্যন্ত সবকিছু ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে একটি মাত্র প্রশ্নে। এগুলোর প্রতিটি আলাদা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যার জন্য দীর্ঘ আলোচনা ও পৃথক সিদ্ধান্তের প্রয়োজন। আরও মজার ব্যাপার হলো, এই ১২২টি বিষয়ের মধ্যে অনেকগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর স্পষ্ট বিরোধিতা রয়েছে। অথচ সেগুলোকেও ঐকমত্যের তালিকায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনো কোনো বিষয়ে মাত্র ২৩টি দল সমর্থন দিয়েছে, কিন্তু সেটাকেও জাতীয় ঐকমত্য বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এর চেয়ে বড় প্রতারণা আর কী হতে পারে? বিশ্বের কোথাও এভাবে গণভোট হয় না। আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, লিথুয়ানিয়া বা অন্য যেসব দেশে গণভোট হয়েছে,
সেখানে প্রতিটি প্রশ্নের জন্য আলাদা আলাদা ভোটের সুযোগ ছিল। কোনো দেশে ১২২টি বিষয়কে একসঙ্গে গুঁজে দিয়ে একটি মাত্র উত্তরের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এমনকি যেসব দেশে সংসদে দ্বিতীয় কক্ষ যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেখানে শুধু এই একটি বিষয়ে বছরের পর বছর সংসদে আলোচনা হয়েছে। আর আমাদের দেশে একসঙ্গে শতাধিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হচ্ছে। এই গণভোটের সবচেয়ে বিপজ্জনক দিক হলো এর আইনি কাঠামো। অধ্যাদেশের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে। জুলাই সনদকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার বিধান রাখা হয়েছে। সংবিধান সংস্কার পরিষদের নামে আগামী সংসদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব গুরুতর বিষয় জনগণের কাছে পরিষ্কার করে বলা হচ্ছে না, অথচ গণভোটে
হ্যাঁ ভোট দিলে এসব বিষয়েও সম্মতি দেওয়া হয়ে যাবে। ইউনুস সরকার যেভাবে ক্ষমতায় এসেছে, তার কোনো নৈতিক বা সাংবিধানিক ভিত্তি নেই। জুলাই মাসে যে সহিংসতা ঘটানো হয়েছিল, তাতে ইসলামি জঙ্গি সংগঠনগুলোর সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। বিদেশি শক্তির মদদে একটি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করা হয়েছে। এখন সেই অবৈধ সরকার সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছে। এর চেয়ে বড় ঔদ্ধত্য আর কী হতে পারে? যে সরকারের নিজের কোনো জনসমর্থন নেই, যাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো বৈধতা নেই, তারা জনগণকে ১২২টি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলছে একটি মাত্র ভোটের মাধ্যমে। এটা গণতন্ত্রের চরম অবমাননা। জনগণের বুদ্ধিমত্তাকে অপমান করা। এই তথাকথিত গণভোটের মাধ্যমে আসলে একটি পূর্বনির্ধারিত
রাজনৈতিক এজেন্ডাকে জনসমর্থনের মোড়কে মুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত ছিল যত দ্রুত সম্ভব একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। সংবিধান সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্বাচিত সংসদেই আলোচনা হওয়া উচিত। প্রতিটি বিষয়ে আলাদা আলাদা বিতর্ক হওয়া উচিত। জনগণের প্রকৃত মতামত জানার জন্য প্রয়োজনে একাধিক গণভোট হতে পারে, যেখানে প্রতিটি বিষয়ে পৃথক সিদ্ধান্তের সুযোগ থাকবে। কিন্তু ইউনুস সরকার সেই পথে যাচ্ছে না। তারা জানে যে সাধারণ জনগণ এত জটিল বিষয়গুলো বুঝতে পারবে না। তারা আশা করছে মানুষ হ্যাঁ বা না চাপ দিয়ে তাদের দায়িত্ব শেষ করবে, আর সরকার তাদের ইচ্ছামতো এই ফলাফলকে ব্যবহার করবে। এটা গণতন্ত্রের নামে
প্রতারণা, জনগণের অধিকারের নামে ষড়যন্ত্র। এই গণভোট যদি সত্যিই অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকারে তলিয়ে যাবে। একটি অবৈধ সরকার যদি এভাবে সংবিধান পরিবর্তন করে ফেলতে পারে, তাহলে আইনের শাসন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, জনগণের সার্বভৌমত্ব সবকিছুই প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আগামী প্রজন্মের জন্য আমরা একটি বিপজ্জনক নজির রেখে যাব। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, এই পুরো প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার কোনো চিহ্ন নেই। জনগণকে পূর্ণ তথ্য দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিটি বিষয়ের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হচ্ছে না। বরং তাড়াহুড়ো করে একটি প্রহসনের আয়োজন করা হচ্ছে। এর পেছনে কোন স্বার্থ কাজ করছে, কারা লাভবান হবে, জনগণের কী ক্ষতি হতে পারে, এসব প্রশ্নের জবাব কেউ দিচ্ছে না। যে সরকার মাইক্রোক্রেডিটের নামে দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে চড়া সুদ আদায় করে বিলিয়ন ডলারের সাম্রাজ্য গড়েছে, যে সরকারের প্রধান নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দারিদ্র্য বিমোচনের নামে দরিদ্রদের শোষণ করে, সেই সরকারের কাছ থেকে জনগণ কী আশা করতে পারে? তারা যদি নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থে দরিদ্র মানুষকে শোষণ করতে পারে, তাহলে রাজনৈতিক স্বার্থে সংবিধানকে বিকৃত করতেও দ্বিধা করবে না। এই তথাকথিত গণভোট বাতিল করা উচিত। যত দ্রুত সম্ভব একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করা উচিত। সংবিধান সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ নির্বাচিত সংসদে করা উচিত, যেখানে জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধিরা থাকবেন। প্রতিটি প্রস্তাব নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা, বিতর্ক এবং পর্যালোচনা হওয়া উচিত। সত্যিকারের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। দেশের সাধারণ মানুষকে বুঝতে হবে যে এই গণভোট তাদের জন্য নয়, এটা একটি রাজনৈতিক ফাঁদ। এর মাধ্যমে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। ১২২টি জটিল বিষয়ে একটি মাত্র উত্তরের সুযোগ দিয়ে বলা হচ্ছে এটাই গণতন্ত্র। এর চেয়ে বড় প্রতারণা আর কিছু হতে পারে না। জনগণের এই খেলা বুঝে নেওয়া দরকার এবং তাদের প্রকৃত গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবি জানানো প্রয়োজন।



