
ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর

এবার দুদকের মামলায় খালাস গোল্ডেন মনির

ড. ইউনূস, আলী রীয়াজ ও আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে মিশিগান কোর্টে মামলা

মব পেল বৈধতা, ইউনূসের নেতৃত্বে রক্তাক্ত বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ঢাকা

কমপ্লিট শাটডাউনে আখাউড়া স্থলবন্দরে প্রভাব পড়েনি

এনবিআরে কমপ্লিট শাট ডাউন : সারাদেশে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

ছায়ানট কমিটির পুনর্বিন্যাস, সভাপতি ডা. সারওয়ার আলী
নতুন পাইপলাইন প্রকল্পে ট্যাংকার শিল্পে বিপর্যয়

নতুন পাইপলাইন প্রকল্প অর্থ ও সময় সাশ্রয়ের লক্ষ্যে চালু হলেও এটি ট্যাংকার শিল্প সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের জন্য একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল সরবরাহ শুরু হওয়ায়, ট্যাংকার জাহাজগুলো এখন অনেকটা অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ট্যাংকার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলছেন, পাইপলাইনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল সরবরাহ শুরু হয়েছে। এতে নৌপথে তেল পরিবহণ কার্যক্রম পুরোপুরি স্থবির হতে পারে। বিদ্যমান ১২০টি আন্তর্জাতিক মানের ট্যাংকার বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে বেকার হতে পারেন এই খাতে কাজ করা হাজারো শ্রমিক।
তবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) কর্মকর্তারা দাবি করছেন, ঢাকায় পাইপলাইনে তেল সরবরাহের মাধ্যমে পরিবহণ ব্যয় কমার পাশাপাশি সময়েরও সাশ্রয় হবে। কমবে তেল
চুরিসহ সিস্টেম লস। গত সপ্তাহ থেকে পাইপলাইনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল সরবরাহ শুরু হয়েছে। ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ শুরুর প্রায় ৬ বছর পর পাম্পিংয়ের মাধ্যমে তেল সরবরাহ শুরু হয়। এই পাইপলাইন দিয়ে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারি থেকে ঢাকার নারায়ণগঞ্জের ডিপোতে প্রতিদিন পাঠানো হচ্ছে ৬ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেল। পর্যায়ক্রমে বিপিসি সহযোগী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল, মেঘনা পেট্রোলিয়াম ও যমুনা অয়েলকে এই পাইপলাইন দিয়ে তেল সরবরাহ করা হবে। জানা যায়, ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম-ঢাকা পাইপলাইনের কাজটি ২ হাজার ৮৬১ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে গৃহীত হয়। প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে ফেনী, কুমিল্লা, চাঁদপুর ও মুন্সীগঞ্জ হয়ে নারায়ণগঞ্জের গোদলাইন
ও ফতুল্লা পর্যন্ত ২৫০ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ পাইপলাইন স্থাপনের কাজ শুরু হয়। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জমি অধিগ্রহণসহ নানা জটিলতায় এবং করোনাকালে কাজ বন্ধ রাখতে হয়। এর মধ্যে প্রকল্প ব্যয়ও অনেক বেড়ে যায়। বাড়ে জমি অধিগ্রহণ খরচও। ব্যয় দাঁড়ায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বরে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের পরিচালক আমিনুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকায় এবার পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল সরবরাহ শুরু হওয়া সত্যিই দেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। এই উদ্যোগ দেশের অর্থ ও সময় দুটোই সাশ্রয়ের পাশাপাশি সেক্টরটিকে ঝুঁকিমুক্ত করেছে, যা বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বড় অর্জন। তবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ট্যাংকার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা
জানান, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাহাজ মালিকরা এখন মারাত্মক সমস্যায় পড়েছেন। তারা বলছেন, বিপিসির আমদানি করা সিংহভাগ জ্বালানি তেল যদি চট্টগ্রাম-ঢাকা পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়, তাহলে নৌপথে জ্বালানি তেল পরিবহণ সেক্টরটি একটি মৃতপ্রায় সেক্টরে পরিণত হবে। ৪৪ বছরের জন্য পরিকল্পিত জাহাজগুলো খুব অল্প সময়েই-মাত্র ৩৬ বছরে ‘স্পষ্ট কারণে’ আউট-অফ-সার্ভিস হয়ে যাবে। এটি শুধু নৌপথে নয়, পুরো শিল্পে নির্ভরযোগ্যতার সংকট তৈরি করবে। সংগঠনটির নেতাকর্মীদের দাবি, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নিজেদের স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে এসব জাহাজ নিয়ে আসে যেখানে ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগই সবচেয়ে বেশি। সংগঠনটি বলছে, জ্বালানি তেল পরিবহণে চট্টগ্রাম-ঢাকা পাইপলাইন চালুর কারণে এই অ্যাসোসিয়েশনের অন্তর্ভুক্ত জাহাজগুলোর মাধ্যমে জ্বালানি তেল পরিবহণের জন্য বিপিসিতে
বাৎসরিক ১৫৮ কোটি টাকা ব্যয় করতে হতো। এর বিপরীতে ওই পাইপলাইন নির্মাণে বিপিসি কর্তৃক এরই মধ্যে খরচ করা হয়েছে ৩ হাজার ৬শ কোটি টাকা। আর এটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিপিসিকে বছরে খরচ করতে হবে ৭৭৩ কোটি টাকা। যা জাহাজে পরিবহণ খরচের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। এই বিপুল পরিমাণ ব্যয়ে নির্মিত পাইপলাইন প্রকল্পটি দেশের জন্য কোনোভাবেই ব্যয় সাশ্রয়ী নয় উল্লেখ করে সংগঠনের নেতারা বলেন, বিপিসির অভিযোগ, জাহাজের মাধ্যমে তেল পরিবহণ করা হলে তেলের পরিমাণ ঠিকভাবে বুঝে পায় না। এতে বিপিসির ঘাটতিজনিত আর্থিক ক্ষতি হয়, যা মোটেই ঠিক নয়। জাহাজের মাধ্যমে তেল লোডের সময় যে পরিমাণ তেল লোড করা হয় সমপরিমাণ তেল আনলোডের সময় বিপিসিকে
বুঝিয়ে দেওয়া হয়। যে কোনো পরিমাণ তেল ঘাটতির আর্থিক মূল্য তেল পরিবহণের বিল বাবদ সমন্বয় করে রাখা হয় বলেও দাবি করেন তারা। সংগঠনটির দাবি, বিশ্বের যেসব উন্নত দেশে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হয় তার সবগুলোতেই বছরব্যাপী দুর্ঘটনা লেগে থাকে। এতে মানবসম্পদ, অর্থসম্পদসহ পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়। দুর্ঘটনার কারণ-পাইপলাইনে ক্রমশ প্রাকৃতিক ক্ষয়, বন্যার কারণে জমি সরে গিয়ে পাইপে ফাটল, নির্মাণ ত্রুটি, চুরির উদ্দেশ্যে পাইপলাইনে আঘাত, নাশকতা ইত্যাদি। সম্পদশালী দেশ হওয়ায় সেসব দেশ এমন বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পারলেও বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতির জন্য এই বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা খুব কঠিন। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ট্যাংকার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, প্রতিটি ট্যাংকার
তৈরি করতে প্রায় ১৩.৫০ থেকে ১৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে। এতে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। কিন্তু জাহাজগুলোতে প্রত্যাশিত ট্রিপ না পাওয়ায় অনেক জাহাজ মালিকই ব্যাংক ও ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে খেলাপি ও দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছেন। তার ওপর মেয়াদোত্তীর্ণ জাহাজ বয়সগত কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই সংগঠন শ্রমিকদের নিয়োগ দানের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এতে বেশ বড় রকমের আর্থিক চাপ জাহাজ মালিকদের ওপর পড়ছে। তিনি বলেন, এসব কারণে জাহাজ মালিকরা যখন মারাত্মক সমস্যায় জর্জরিত, সেই সময় বিপিসির আমদানি করা সিংহভাগ জ্বালানি তেল যদি চট্টগ্রাম-ঢাকা পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিবাহিত হয় তবে নৌপথে জ্বালানি তেল পরিবহণ সেক্টরটি মুখ থুবড়ে পড়বে। হাজার কোটি টাকার ঋণে নির্মিত ট্যাংকার জাহাজগুলো একযোগে বন্ধ হয়ে এ সেক্টরটি সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হবে। শত শত ট্যাংকার জাহাজে নিয়োজিত কয়েক হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বে। বিপিসির চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান ব্যবসায়ীদের কিছুটা ক্ষতি হবে স্বীকার করে বলেন, পাইপলাইনে বর্তমানে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ তেল সরবরাহ করা হচ্ছে। শতাংশের হিসাবে ৪০টি জাহাজ হলেও বন্ধ হবে। কিন্তু এটা মেনে নিতে হবে। সাগরে আমাদের জাহাজের অনেক চাহিদা। তারা অন্য কোনো ব্যবসায় নিজেদের নিয়োজিত করবে। এ ছাড়া তো আর কোনো উপায় নেই। পাইপলাইনের কারণে জাহাজে তেল পরিবহণ বন্ধ হবে কিনা এমন প্রশ্নে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান বলেন, সরকার এ বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। হঠাৎ করে সব ট্যাংকার বন্ধ করা সম্ভব নয়, বরং একে ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে। কোনো খাত যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সরকার তাই চাইবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষদের সঙ্গে আলোচনা করে সবার জন্য সর্বোত্তম একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
চুরিসহ সিস্টেম লস। গত সপ্তাহ থেকে পাইপলাইনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল সরবরাহ শুরু হয়েছে। ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ শুরুর প্রায় ৬ বছর পর পাম্পিংয়ের মাধ্যমে তেল সরবরাহ শুরু হয়। এই পাইপলাইন দিয়ে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারি থেকে ঢাকার নারায়ণগঞ্জের ডিপোতে প্রতিদিন পাঠানো হচ্ছে ৬ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেল। পর্যায়ক্রমে বিপিসি সহযোগী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল, মেঘনা পেট্রোলিয়াম ও যমুনা অয়েলকে এই পাইপলাইন দিয়ে তেল সরবরাহ করা হবে। জানা যায়, ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম-ঢাকা পাইপলাইনের কাজটি ২ হাজার ৮৬১ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে গৃহীত হয়। প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে ফেনী, কুমিল্লা, চাঁদপুর ও মুন্সীগঞ্জ হয়ে নারায়ণগঞ্জের গোদলাইন
ও ফতুল্লা পর্যন্ত ২৫০ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ পাইপলাইন স্থাপনের কাজ শুরু হয়। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জমি অধিগ্রহণসহ নানা জটিলতায় এবং করোনাকালে কাজ বন্ধ রাখতে হয়। এর মধ্যে প্রকল্প ব্যয়ও অনেক বেড়ে যায়। বাড়ে জমি অধিগ্রহণ খরচও। ব্যয় দাঁড়ায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বরে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের পরিচালক আমিনুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকায় এবার পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল সরবরাহ শুরু হওয়া সত্যিই দেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। এই উদ্যোগ দেশের অর্থ ও সময় দুটোই সাশ্রয়ের পাশাপাশি সেক্টরটিকে ঝুঁকিমুক্ত করেছে, যা বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বড় অর্জন। তবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ট্যাংকার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা
জানান, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাহাজ মালিকরা এখন মারাত্মক সমস্যায় পড়েছেন। তারা বলছেন, বিপিসির আমদানি করা সিংহভাগ জ্বালানি তেল যদি চট্টগ্রাম-ঢাকা পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়, তাহলে নৌপথে জ্বালানি তেল পরিবহণ সেক্টরটি একটি মৃতপ্রায় সেক্টরে পরিণত হবে। ৪৪ বছরের জন্য পরিকল্পিত জাহাজগুলো খুব অল্প সময়েই-মাত্র ৩৬ বছরে ‘স্পষ্ট কারণে’ আউট-অফ-সার্ভিস হয়ে যাবে। এটি শুধু নৌপথে নয়, পুরো শিল্পে নির্ভরযোগ্যতার সংকট তৈরি করবে। সংগঠনটির নেতাকর্মীদের দাবি, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নিজেদের স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে এসব জাহাজ নিয়ে আসে যেখানে ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগই সবচেয়ে বেশি। সংগঠনটি বলছে, জ্বালানি তেল পরিবহণে চট্টগ্রাম-ঢাকা পাইপলাইন চালুর কারণে এই অ্যাসোসিয়েশনের অন্তর্ভুক্ত জাহাজগুলোর মাধ্যমে জ্বালানি তেল পরিবহণের জন্য বিপিসিতে
বাৎসরিক ১৫৮ কোটি টাকা ব্যয় করতে হতো। এর বিপরীতে ওই পাইপলাইন নির্মাণে বিপিসি কর্তৃক এরই মধ্যে খরচ করা হয়েছে ৩ হাজার ৬শ কোটি টাকা। আর এটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিপিসিকে বছরে খরচ করতে হবে ৭৭৩ কোটি টাকা। যা জাহাজে পরিবহণ খরচের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। এই বিপুল পরিমাণ ব্যয়ে নির্মিত পাইপলাইন প্রকল্পটি দেশের জন্য কোনোভাবেই ব্যয় সাশ্রয়ী নয় উল্লেখ করে সংগঠনের নেতারা বলেন, বিপিসির অভিযোগ, জাহাজের মাধ্যমে তেল পরিবহণ করা হলে তেলের পরিমাণ ঠিকভাবে বুঝে পায় না। এতে বিপিসির ঘাটতিজনিত আর্থিক ক্ষতি হয়, যা মোটেই ঠিক নয়। জাহাজের মাধ্যমে তেল লোডের সময় যে পরিমাণ তেল লোড করা হয় সমপরিমাণ তেল আনলোডের সময় বিপিসিকে
বুঝিয়ে দেওয়া হয়। যে কোনো পরিমাণ তেল ঘাটতির আর্থিক মূল্য তেল পরিবহণের বিল বাবদ সমন্বয় করে রাখা হয় বলেও দাবি করেন তারা। সংগঠনটির দাবি, বিশ্বের যেসব উন্নত দেশে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হয় তার সবগুলোতেই বছরব্যাপী দুর্ঘটনা লেগে থাকে। এতে মানবসম্পদ, অর্থসম্পদসহ পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়। দুর্ঘটনার কারণ-পাইপলাইনে ক্রমশ প্রাকৃতিক ক্ষয়, বন্যার কারণে জমি সরে গিয়ে পাইপে ফাটল, নির্মাণ ত্রুটি, চুরির উদ্দেশ্যে পাইপলাইনে আঘাত, নাশকতা ইত্যাদি। সম্পদশালী দেশ হওয়ায় সেসব দেশ এমন বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পারলেও বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতির জন্য এই বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা খুব কঠিন। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ট্যাংকার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, প্রতিটি ট্যাংকার
তৈরি করতে প্রায় ১৩.৫০ থেকে ১৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে। এতে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। কিন্তু জাহাজগুলোতে প্রত্যাশিত ট্রিপ না পাওয়ায় অনেক জাহাজ মালিকই ব্যাংক ও ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে খেলাপি ও দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছেন। তার ওপর মেয়াদোত্তীর্ণ জাহাজ বয়সগত কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই সংগঠন শ্রমিকদের নিয়োগ দানের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এতে বেশ বড় রকমের আর্থিক চাপ জাহাজ মালিকদের ওপর পড়ছে। তিনি বলেন, এসব কারণে জাহাজ মালিকরা যখন মারাত্মক সমস্যায় জর্জরিত, সেই সময় বিপিসির আমদানি করা সিংহভাগ জ্বালানি তেল যদি চট্টগ্রাম-ঢাকা পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিবাহিত হয় তবে নৌপথে জ্বালানি তেল পরিবহণ সেক্টরটি মুখ থুবড়ে পড়বে। হাজার কোটি টাকার ঋণে নির্মিত ট্যাংকার জাহাজগুলো একযোগে বন্ধ হয়ে এ সেক্টরটি সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হবে। শত শত ট্যাংকার জাহাজে নিয়োজিত কয়েক হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বে। বিপিসির চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান ব্যবসায়ীদের কিছুটা ক্ষতি হবে স্বীকার করে বলেন, পাইপলাইনে বর্তমানে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ তেল সরবরাহ করা হচ্ছে। শতাংশের হিসাবে ৪০টি জাহাজ হলেও বন্ধ হবে। কিন্তু এটা মেনে নিতে হবে। সাগরে আমাদের জাহাজের অনেক চাহিদা। তারা অন্য কোনো ব্যবসায় নিজেদের নিয়োজিত করবে। এ ছাড়া তো আর কোনো উপায় নেই। পাইপলাইনের কারণে জাহাজে তেল পরিবহণ বন্ধ হবে কিনা এমন প্রশ্নে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান বলেন, সরকার এ বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। হঠাৎ করে সব ট্যাংকার বন্ধ করা সম্ভব নয়, বরং একে ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে। কোনো খাত যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সরকার তাই চাইবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষদের সঙ্গে আলোচনা করে সবার জন্য সর্বোত্তম একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।