সংঘাত মোড় নিতে পারে যেসব দিকে – ইউ এস বাংলা নিউজ




সংঘাত মোড় নিতে পারে যেসব দিকে

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৫ জুন, ২০২৫ | ৫:৫১ 34 ভিউ
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ সবেমাত্র শুরু। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেছেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে দুর্বল করে তুলতে ও তার সামরিক বাহিনীকে ধ্বংস করতে ইসরায়েল ‘যতদিন সময় লাগে’ (সম্ভবত কয়েক সপ্তাহ) হামলা চালিয়ে যাবে। ইরান ইতোমধ্যেই ইসরায়েলে ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। সীমিত হলেও প্রতিশোধমূলক হামলার সুযোগ আছে। এতে আরও রক্তপাতের শঙ্কা বাড়বে। হয়তো এটা অনেকটা অনিবার্য। উত্তেজনা হ্রাস বা এ যুদ্ধের অবসান খুব তাড়াতাড়ি হবে– এমনটা ভাবার সময় এখনও আসেনি। তথাপি কয়েকটি দিকে এ সংঘাত মোড় নিতে পারে। ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে গতকাল শনিবার ওয়াশিংটনভিত্তিক সাময়িকী ফরেন পলিসির বিশ্লেষণে এসব কথা উল্লেখ করা হয়। এতে যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাব্য কয়েকটি পথ নিয়ে

আলোচনা করা হয়। প্রথমত, ইরান ইসরায়েলের ওপর বেশ কয়েকটি উচ্চ দৃশ্যমান সামরিক হামলা চালিয়ে তার নিজস্ব জনগণের কাছে দাবি করবে, তারা ইসরায়েলিদের পাল্টা আঘাত ও রক্তাক্ত করেছে। কিন্তু সেই সঙ্গে তারা দ্রুত যুদ্ধবিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। সংক্ষেপে বললে, মুখ রক্ষার জন্য একটি অনিচ্ছুক আত্মসমর্পণ। মূলত, ইরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র লেবাননভিত্তিক হিজবুল্লাহ গত সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযানের পর এ পথেই হেঁটেছিল। প্রকৃত পক্ষে, ইরানে ইসরায়েলের চলমান অভিযানের সঙ্গে এর অনেক মিল রয়েছে। যেমন– সামরিক অবকাঠামোর ওপর বিধ্বংসী হামলা, অসংখ্য হত্যাকাণ্ড ও নেতৃত্বের ওপর হামলা, যা ইসরায়েলের প্রতিপক্ষের পুঙ্খানুপুঙ্খ গোয়েন্দা অনুপ্রবেশের প্রমাণ দেয়। হিজবুল্লাহ, যার বিশাল রকেট অস্ত্রাগার ও হাজার

হাজার অস্ত্রধারী যোদ্ধা ছিল, কার্যকর পাল্টা আক্রমণ শুরু না করেই মূলত ইসরায়েলের শর্তে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। ২০২৪ সালের হিজবুল্লাহর মতোই ইরানের অবস্থা হতে পারে। তখন ইসরায়েলের ওপর তাদের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ব্যর্থ হয়। ইসরায়েলের আক্রমণ ইরানের নেতৃত্বকে বিশৃঙ্খলার মধ্যে ফেলতে পারে। ফলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সমন্বয় করা বা বাস্তব সময়ে মৌলিক সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। যদিও তেহরান ঘোষণা করেছে, তারা দ্রুত শীর্ষ কমান্ডারদের প্রতিস্থাপন করছে। চলমান সংঘাতের সময় এ নতুন নেতৃত্বের কার্যকারিতা অস্পষ্ট। ইসরায়েল সম্ভবত প্রতিস্থাপনকারীদেরও ওপর আঘাত করবে। অবশ্যই, ইরান আক্রমণের মুখে আত্মসমর্পণ করতে চায় না। তবে তারা ক্রমাগত আঘাত সহ্যের চেয়ে আরও এক দিন বেঁচে থাকা ও লড়াইয়ের

চেষ্টা করতে পারে। দ্বিতীয় সম্ভাবনা হলো, যুদ্ধ থামানোর জন্য ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ তৈরির পাশাপাশি ইরান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কয়েকটি আঘাত হানতে পারে। এটা হতে পারে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ভেদ করা ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে বা অন্য কোনো উপায়ে। সেই সঙ্গে ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ তৈরির চেষ্টাও থাকবে। নাতাঞ্জ ও অন্যান্য স্থানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কিন্তু ইরান তুলনামূলকভাবে দ্রুত মেরামত করতে সক্ষম। সাধারণত ইসরায়েল যখন কারও ওপর হামলা চালায়, তখন যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের স্বল্পমেয়াদি সমর্থন পায়। কিন্তু ইরানের ক্ষেত্রে এ দেশগুলো দ্রুত শত্রুতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যেই উত্তেজনা হ্রাসের আহ্বান জানিয়েছে। ইসরায়েল হয়তো ইউরোপীয়দের মতামতের প্রতি খুব একটা গুরুত্ব দেয়

না। তারা গাজায় হামলা বন্ধের আহ্বান জানালেও পাত্তা দেয়নি। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতামত নিয়ে বেশি চিন্তিত। যদি তিনি নেতানিয়াহুর ওপর প্রকৃত চাপ দেন, তাহলে ইসরায়েল অভিযান কমিয়ে আনতে পারে। তবে পরিস্থিতি ফলপ্রসূ কূটনীতির দিকে পরিচালিত হবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়। ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার জন্য একটি চুক্তিতে চাপ দিচ্ছে। ইরান আলোচনাকে গুরুত্বসহকারে নিচ্ছিল। দেশটির শীর্ষ নেতাদের স্পষ্ট সমর্থনও ছিল। তবু ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ নিয়ে উত্তেজনা চলছিল। ট্রাম্প এরই মধ্যে ইরানকে আলোচনায় ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন। এ ধরনের আলোচনা তেহরানের জন্য একটি নির্দিষ্ট আবেদন রাখে। দেশটির অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। এ কারণে নিষেধাজ্ঞা হ্রাসের প্রতিশ্রুতি আকর্ষণীয়। তবে ইসরায়েলের ধ্বংসাত্মক অভিযানের পর

ইরান টেবিলে সহজে বসবে না। পাশাপাশি রাজনৈতিক সমাধানও কঠিন হবে। ট্রাম্প যে কোনো ছাড়ের ব্যাপারে তর্কাতর্কি করবেন এবং ইরানকে মনে হবে যেন তারা চাপের মুখে নতিস্বীকার করছে, যা বিষয়টিকে জটিল করে তুলবে। আরও অন্ধকার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। সম্ভবত এটার শঙ্কাই বেশি। ইসরায়েল-ইরান লড়াই আঞ্চলিক যুদ্ধে পরিণত হবে। ইসরায়েলের হামলার আগে ইরান মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন স্থাপনাগুলোতে আক্রমণের হুমকি দিয়েছিল– এমন আক্রমণ হলে যুক্তরাষ্ট্র হামলায় যোগ দেওয়ার শঙ্কা বাড়বে। হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র নিজস্ব কারণে আরও উস্কানি দিতে পারে। মার্কিন কর্মকর্তারা হয়তো মনে করছেন, ইসরায়েল অর্ধেক কাজ ইতোমধ্যে শেষ করেছে, বাকি কাজটুকু তাদের। ভূপৃষ্ঠ ভেদ করে অনেক গভীর প্রবেশ করতে পারে– এমন বোমার ব্যবহার

হতে পারে। অথবা ইসরায়েলের প্রাথমিক আক্রমণের পর যা অবশিষ্ট রয়েছে, সেটা তারা করতে পারে। আপাতত অসম্ভব মনে হলেও মার্কিন আরব মিত্ররা এ লড়াইয়ে জড়িত হতে পারে। জর্ডানের সশস্ত্র বাহিনী ইতোমধ্যেই ১৩ জুন তাদের আকাশসীমায় প্রবেশ করা ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ধ্বংসের কথা জানিয়েছে। চূড়ান্ত আশঙ্কা হলো, যুদ্ধ কখনও শেষ হবে না। অন্তত আনুষ্ঠানিক অর্থে নয়। যদিও ইসরায়েলিদের বিশাল হামলার ঢেউ এক পর্যায়ে থামতে পারে। তবে আগামী কয়েক মাস ধরে নিম্ন স্তরের সংঘাত অব্যাহত থাকতে পারে। ইসরায়েল ইরানের ওপর মাঝে মাঝে ক্ষেপণাস্ত্র বা বিমান হামলা চালাতে পারে, সেই সঙ্গে ইরানে হত্যাকাণ্ড ও নাশকতাও ঘটতে পারে। ইরান সময়ে সময়ে ইসরায়েলের ওপর হামলা চালাবে। এটি সম্পূর্ণ যুদ্ধ নয়, তবে শান্তিও নয়; একটি অস্বস্তিকর অবস্থা। ক্রমাগত আক্রমণ ও প্রতিক্রিয়ার মধ্যে ইরান অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিশ্রুতি ও আন্তর্জাতিক পরিদর্শনের বাইরে একটি গোপন পারমাণবিক কর্মসূচি গড়ে তুলতে পারে– ইসরায়েলের হামলাকে যুক্তি হিসেবে ব্যবহার করে। যদি ইসরায়েল তিনটি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম সংরক্ষণাগারে আঘাত না করে, তাহলে তেহরানের জন্য কাজটি কঠিন হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি একটি বৃহত্তর পারমাণবিক চুক্তির দিকে প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে। ইরান হয়তো স্বল্প মেয়াদে এটা মেনে নিতে পারে। তবে প্রতিশোধমূলক হামলা অব্যাহত থাকবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
মোহাম্মদপুরে বুনিয়া সোহেলের আস্তানায় অভিযান ভারতের যুদ্ধবিমান ধ্বংস করা পাইলটদের পুরস্কৃত করল পাকিস্তান বিএনপি চাঁদাবাজের দল: ফয়জুল করীম ওয়েস্টিন: সকালের নাস্তা ৪ হাজার টাকা, রাতের খাবার ৮ হাজার ৪৫০ টাকা খাবারের অভাবে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার পর আত্মহত্যা নদীর পানিতে বন্দি ১৩ পরিবার ‘ভিউ বাণিজ্যের জন্য আর কত নিচে নামবেন’— প্রশ্ন হৃদয়ের রাজধানীতে মুলার কেজি ৮০ টাকা পাইপলাইনে তেল সরবরাহে নতুন যুগে ঢুকছে বাংলাদেশ একাত্তর-পচাত্তর-চব্বিশ একই সুতোয় গাঁথা বাংলাদেশ জাসদ: শেখ হাসিনার রাজনৈতিক অবস্থানের জন্য বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ন্যায্যতা পায় না ডেঙ্গু জ্বর যা জানা দরকার ভোরে নীলা মার্কেটে হাঁসের মাংস খেতে যান আসিফ মাহমুদ, বন্ধ থাকলে যান ওয়েস্টিনে উজানে অতিবৃষ্টি, উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন জেলা প্লাবিত পূজার ছুটির কারণে পেছাল টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি বিপিএল থেকে চিটাগং কিংস বাদ, পাওনার হিসাব দিল বিসিবি ৫ আগস্টের পরে অপুর সঙ্গে আমার দেখা হয়নি: আসিফ মাহমুদ বিয়ের আগেই শর্ত, বিচ্ছেদ হলে জর্জিনাকে মাসে কোটি টাকা দেবেন রোনালদো শচীনের ঘরে বিয়ের শানাই, ছেলে অর্জুনের আংটি বদল সুদানে কলেরার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে, প্রাণহানি অন্তত ৪০