এয়ার ইন্ডিয়ার গর্বের পেছনে মর্মান্তিক ১৩০০ মৃত্যু – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আপডেটঃ ১৩ জুন, ২০২৫
     ১২:৩৯ পূর্বাহ্ণ

আরও খবর

নেদারল্যান্ডের হেগে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের সামনে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ

বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিশ্চিতের আহ্বান ব্রিটিশ এমপি বব ব্ল্যাকম্যানের

দিল্লির লাল কেল্লায় বিস্ফোরণ: তদন্ত চলছে, সীমান্তে সতর্ক ভারতীয় বাহিনী

দিল্লি হামলাকে ‘ষড়যন্ত্র’ আখ্যা মোদির, তদন্তে সন্ত্রাসবিরোধী আইন প্রয়োগ ভারতীয় পুলিশের

যে কোনো দেশের পারমাণবিক পরীক্ষা হলে রাশিয়া ‘সমানভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে’: ল্যাভরভ

পাকিস্তানে টিটিপির হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে আরেক বাংলাদেশী জঙ্গির মৃত্যু

বাংলাদেশকে ঘাঁটি করে ভারতে হামলার ছক হাফিজ সইদের, কাশ্মীরের নামে মহিলা আত্মঘাতী বাহিনী গড়ছে জৈশ

এয়ার ইন্ডিয়ার গর্বের পেছনে মর্মান্তিক ১৩০০ মৃত্যু

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৩ জুন, ২০২৫ | ১২:৩৯ 65 ভিউ
ড্রিমলাইনারটি আকাশে উড়েছিল স্বপ্ন নিয়ে। কিন্তু লন্ডনের গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই তা ছিন্নভিন্ন হয়ে মাটিতে পড়ে জ্বলতে শুরু করে। আহমেদাবাদের মেঘানিনগরের আকাশ আজ যেন নীল নয়, রক্তিম। আর এর ধোঁয়া আমাদের স্মরণ করিয়ে দিলো এয়ার ইন্ডিয়ার সেই সব কালো দিন, যখন বিমানের ডানায় আঁকা সব গল্প থেমে গিয়েছিল মাটিতে ছড়িয়ে পড়া কান্নার মাঝে। চলতি বছরের ১২ জুন এআই ১৭১ এর মর্মান্তিক দুর্ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং, এটি এয়ার ইন্ডিয়ার এক দীর্ঘ, রক্তাক্ত ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি, যেখানে আকাশ মানেই শুধু গন্তব্য নয়, অনেক সময় অনন্ত বিদায়ও। এয়ার ইন্ডিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৩২ সালে। তখন এটি ‘টাটা এয়ারলাইনস’ নামে যাত্রা শুরু করেছিল। এটি ভারতের প্রথম বাণিজ্যিক

বিমানসেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে ওঠে। ১৯৫৩ সালে ভারতীয় সরকার জাতীয়করণ করে এয়ার ইন্ডিয়া নামকরণ করে। প্রতিষ্ঠানটি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন হিসেবে স্বীকৃতি পায় এবং বহু দেশের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করে আসছে। এয়ার ইন্ডিয়া প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতেও অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। এটি প্রথম এশিয়ান এয়ারলাইন যারা বোয়িং ৭৪৭ এবং পরবর্তীতে বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানের ব্যবহার শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটির লোগোতে ব্যবহৃত মোর পাখির প্রতীক ভারতীয় ঐতিহ্যকে প্রতিনিধিত্ব করে। এভাবে এয়ার ইন্ডিয়া দেশের আকাশপথে গর্বের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও, এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী ট্র্যাজেডির কাহিনি। এয়ার ইন্ডিয়া এবং এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ১২টি দুর্ঘটনায় মোট প্রাণহানির সংখ্যা ১ হাজার ৩০০-এর বেশি। রয়টার্সের তথ্য

অনুযায়ী, সর্বশেষ ১২ জুনের দুর্ঘটনায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রায় ২০৪ জনের বেশি নিহত হয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়ার ট্র্যাজেডির ইতিহাস দুঃখজনক সূচনা (১৯৪৭) ১৯৪৭ সালে করাচিতে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন ২৩ জন। অশ্রুর আল্পস (১৯৫০) ১৯৫০ সালের ৩ নভেম্বর ফ্রান্সের মঁ ব্লঁ পর্বতের গায়ে ধাক্কা লেগে ফ্লাইট ২৪৫ মালবার প্রিন্সেস বিধ্বস্ত হয়। প্রাণ হারান ৪৮ জন। শোকের মেঘে ঢাকা (১৯৫০) একই বছর ১৩ ডিসেম্বর কোতায়গিরির কাছে একটি কার্গো বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ২১ জনের মৃত্যু ঘটে। হিমালয়ের কোলে শীতল মৃত্যু (১৯৬৬) ১৯৬৬ সালের ২৪ জানুয়ারি ফ্লাইট এআই ১০১, কাঞ্চনজঙ্ঘা নামের বোয়িং ৭০৭ মডেলের বিমানটি প্যারিস থেকে বোম্বে যাওয়ার পথে ফরাসি আল্পস পর্বতমালায় বিধ্বস্ত হয়। প্রাণ হারান ১১৭ জন।

দুর্ঘটনার কবলে পড়েন ভারতের পরমাণু গবেষণার পথিকৃৎ ড. হোমি জেহাঙ্গির ভাবা। এটি ছিল ভারতের বৈজ্ঞানিক অগ্রযাত্রার জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। আকাশ থেকে সাগরে পতন (১৯৭৮) ১৯৭৮ সালে এআই ৮৫৫ ফ্লাইট, এমপেরিওর অশোক নামের বোয়িং ৭৪৭-২০৯বি মডেলের বিমানটি মুম্বাই থেকে দুবাই যাওয়ার পথে উড্ডয়নের পরপরই আরব সাগরে পড়ে যায়। এতে মৃত্যু হয় ২১৩ জনের। অনেকেই ছিলেন নববর্ষ উদযাপন শেষে দেশে ফেরা ভারতীয় নাগরিক। একটি ইনস্ট্রুমেন্ট ত্রুটি সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে না পারায় ঘটে এই বিপর্যয়। বৃষ্টি ও অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়া জীবন (১৯৮২) ১৯৮২ সালে এআই ৪০৩ ফ্লাইট, বোয়িং ৭০৭ মডেলের বিমানটি ত্রিভানদ্রম থেকে মুম্বাই অভিমুখে যাচ্ছিল। বৈরি আবহাওয়া ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে অবতরণের সময় আগুন ধরে

যায় বিমানে। ১৭ জন নিহত হন, আহত হন অনেকে। কানিষ্কা বিস্ফোরণ (১৯৮৫) ইতিহাসের গভীরতম শোক ১৯৮৫ সালে এআই ১৮২, এমপেরিওর কানিষ্কা নামের বোয়িং ৭৪৭-২৩৭বি মডেলের বিমানটি টরন্টো থেকে দিল্লি অভিমুখে আয়ারল্যান্ড উপকূলের আকাশে বিস্ফোরিত হয়। ৩২৯ জন মারা যান, যার মধ্যে ৮২ জন শিশু। এটি ছিল একটি সন্ত্রাসী হামলা—লাগেজের মধ্যে লুকানো বোমার মাধ্যমে ঘটানো হয়েছিল বিস্ফোরণ। এটি ছিল ভারতের নয়, বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম জঘন্য বিমানবোমা হামলা। আহমেদাবাদের কান্না (১৯৮৮) ১৯৮৮ সালে আহমেদাবাদের কাছে ফ্লাইট ১১৩, বোয়িং ৭৩৭-২০০ মডেলের বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে ১৩৩ জনের মৃত্যু ঘটে। (বিমানের নাম অজানা, এটি তখন ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স দ্বারা পরিচালিত ছিল) টেবিলটপ রানওয়েতে মৃত্যু (২০১০) টেবিলটপ রানওয়ে বলতে এমন এক ধরনের বিমানবন্দর

রানওয়েকে বোঝায় যা একটি মালভূমি, পাহাড় বা টিলার চূড়ায় তৈরি করা হয়। এর এক বা উভয় প্রান্তে খাড়া ঢাল বা গভীর খাদ থাকে। ২০১০ সালে এআই এক্সপ্রেস IX ৮১২, বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের বিমানটি দুবাই থেকে মঙ্গলুরু অভিমুখে আসার সময় রানওয়ে ওভাররান করে একটি উপত্যকায় পড়ে যায়। প্রাণ হারান ১৫৮ জন। রানওয়ের গঠন ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। আবারও সেই টেবিলটপ কাহিনী (২০২০) ২০২০ সালে এআই এক্সপ্রেস IX ১৩৪৪ ফ্লাইট, বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের বিমানটি কেরালার কোঝিকোডে রানওয়ে ওভারশুট করে বিভীষিকাময়ভাবে ভেঙে পড়ে। প্রাণ হারান ২১ জন। ড্রিমলাইনার, দুঃস্বপ্নের নাম (২০২৫) ২০২৫ সালের ১২ জুন। আহমেদাবাদ থেকে উড্ডয়ন করে লন্ডনের পথে যাত্রা শুরু করে এআই ১৭১ ফ্লাইট। মাত্র কয়েক মিনিট

পর পাইলট ‘মেডে’সংকেত পাঠান। বিমানটি দ্রুত নিচে নেমে এসে মেঘানীনগর এলাকায় একটি আবাসিক ভবনের উপর বিধ্বস্ত হয়। এটি ছিল একটি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার—যার এই প্রথম সম্পূর্ণ ধ্বংসের ঘটনা ঘটল। বিমানে ছিলেন ২৪২ জন। রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রায় ২০৪ জনের বেশি নিহত হয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়া ভারতের জন্য গর্বের প্রতীক হলেও, এর দীর্ঘ ইতিহাসে জড়িয়ে আছে অসংখ্য মর্মান্তিক দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানির শোকের গল্প। প্রতিটি দুর্ঘটনা মানব ভুলের, কারিগরি ত্রুটির, অথবা সন্ত্রাসী হামলার ফলস্বরূপ, যা বিমান পরিবহনের নিরাপত্তা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছে। এয়ার ইন্ডিয়ার এই রক্তাক্ত ইতিহাস কেবল একটি বিমান সংস্থার গল্প নয়, এটি প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা, মানব বিপর্যয় এবং সন্ত্রাসের শিকার হওয়া শত শত মানুষের শোকের স্মৃতি বহন করে। তথ্যসূত্র: এয়ার ইন্ডিয়ার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, টাইমস অব ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমস, এনডিটিভি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও আইসিএও রিপোর্টস

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
ইউনুস সরকারের কাউন্টডাউন শুরু, পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে নেদারল্যান্ডের হেগে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের সামনে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ লকডাউন সফল করায় শেখ হাসিনার বিবৃতি “১৬ ও ১৭ নভেম্বর সারাদেশে আওয়ামী লীগের কমপ্লিট শাটডাউন” বাংলাদেশি এমপিদের ‘অধিকার লঙ্ঘন হওয়ায়’ আইপিইউয়ের উদ্বেগ লকডাউন কর্মসূচি সফল ও সার্থক করায় দেশবাসীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার বিবৃতি উগ্রবাদী স্লোগানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগুন দিল শিবির-ইনকিলাব মঞ্চ আওয়ামী লীগকে ফাঁসাতে মেট্রো রেলে সম্ভাব্য নাশকতার পরিকল্পনার গোপন তথ্য ফাঁস ঢাকা লকডাউন: গণপরিবহন সংকটে যাত্রীদের ভোগান্তি রামপুরা থানা যুবলীগের আহ্বায়ক রইজ উদ্দিন আটক – রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ যুবলীগের, ট্রাইব্যুনালকে ব্যবহার করে রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণের প্রতিবাদে ইউনুসের শাসনামলে গণতন্ত্রের নামে সহিংসতা! আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুন, রাষ্ট্রের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন আটক স্কুলছাত্রের বিজয় চিহ্ন: ‘দাবায়া রাখতে পারবা না’ রাজপথের আওয়ামী লীগ অধিক শক্তিশালী ও জনপ্রিয় : রিচি সোলায়মান ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচিতে ভীত ইউনুস সরকার: রাজধানীতে ধরপাকড়, গ্রেফতার আতঙ্কে সাধারণ মানুষ ‘জয় বাংলা’ স্লোগান শুনে আতঙ্কগ্রস্ত এনসিপির মিছিল লীগ আহূত লকডাউনে, পেছানো হলো জাপান অ্যাম্বাসির অনুষ্ঠান ইউনূসের ‘জঙ্গি শাসনের’ বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলুন: শেখ হাসিনা পিটিআইকে শেখ হাসিনা: ‘আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার চাই, কিন্তু ইউনূস সরকারের সৎ সাহস নেই, তারা ভয় পাচ্ছে’ বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিশ্চিতের আহ্বান ব্রিটিশ এমপি বব ব্ল্যাকম্যানের লকডাউন শুরুর আগেই বিএনপি-জামায়াত-এনসিপির ষড়যন্ত্রে অটো সফল হচ্ছে লকডাউন