ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর
পরিবারের বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বললেন জয়
জাহাজে সাত খুন: গ্রেপ্তার ইরফান ৭ দিনের রিমান্ডে
কৃষক ও মিলারের অনীহা, সরকারের ভান্ডার খাঁ খাঁ
খুলনা থেকে পৌনে চার ঘণ্টায় ঢাকায় জাহানাবাদ এক্সপ্রেস
আসামে ১৬ বাংলাদেশি গ্রেফতার
জলবায়ু প্রশমনে নতুন এনডিসিতে ভূমি, বন ও জলাভূমিকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
বৃদ্ধি ভাতা ৫০০০ টাকা প্রত্যাখ্যান, বৈষম্য না মানার প্রত্যয়
প্রকাশ্যে দুর্নীতি কমার সঙ্গে কমেছে কাজের গতিও
জুলাই-আগস্টের পর প্রকাশ্যে দুর্নীতি কমার পাশাপাশি কাজের গতিও কমেছে বলে মন্তব্য করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। তিনি বলেছেন, আমাদের জনপ্রশাসনে ঘাটতি আছে। সার্বিকভাবে পুরো সিস্টেম ব্রোকার সিস্টেমে (দালাল প্রথায়) আটকে আছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) উদ্যোগে গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য আয়োজিত ধারাবাহিক সংলাপে জনপ্রশাসনবিষয়ক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, একটি পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষার ওপর বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে আছে। তাই বড় আঙ্গিকে সংস্কার প্রয়োজন।
সংলাপের শুরুতে সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক সাংবাদিক জিল্লুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ এখন অস্থিরতার মধ্যে আছে। নব্বইয়ের দশকে এবং ২০০৭ সালেও সংস্কারের কথা উঠেছিল। তবে এটি ‘ঘৃণিত’ শব্দে পরিণত হয়েছে। ২০২৪ সালের
অভ্যুত্থানের পর এখন প্রশ্ন আসছে– সংস্কার আগে, না নির্বাচন আগে। যদিও আমরা এখন স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি। তবে এখনও কথা বলতে আমরা ভয়ে থাকি। ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, সংস্কার শব্দটির আরও বিশ্লেষণ দরকার। এর ভেতর অনেক দিক আছে। স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে হবে। স্থানীয় সরকার শক্তিশালী হলে কার্যত জনপ্রশাসনের শক্ত ভিত্তি তৈরি হবে। স্থানীয় সরকারকে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। রাজনৈতিক দল ও আমলারা স্থানীয় সরকারকে চাকর প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করেছে। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান আর স্বায়ত্তশাসিত থাকছে না। এটি একশ্রেণির আমলার পদায়ন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর পদ ধীরে ধীরে প্রশাসন ক্যাডারের অধীনে চলে গেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীনতা না দিলে অর্থনীতির চাকা ঘুরবে না। নির্বাচন
ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ব্রিটিশদের আমলাতন্ত্র সৃষ্টির উদ্দেশ্য ছিল তাদের রাজত্ব এখানে স্থায়ী করা। তাদের শাসন-শোষণ পরিচালনার হাতিয়ার হিসেবে প্রশাসনকে ব্যবহার করেছিল। তাদের উত্তরাধিকার এখনও আমরা দেখতে পাই। আমাদের দেশে যে উদ্দেশ্য নিয়ে জনপ্রশাসন তৈরি করা হয়েছে, তা এখনও পূরণ করতে পারেনি। জনপ্রশাসন জনগণের জন্য কাজ করবে। ২০০৭ সালে যদি সংস্কার হতো, তাহলে আজকে আমাদের এই অবস্থা হতো না। তিনি বলেন, জেলা পর্যায়ে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সফরে গেলে যেভাবে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়, তা খুবই অর্থহীন কাজ। তারা এসব প্রটোকলে ব্যস্ত থাকলে কাজ কখন করেন? কর্মকর্তারা বলেন, প্রটোকল দেওয়াই তাদের কাজ। আমি মনে করি, এসব
হচ্ছে অকাজ। কর্মকর্তাদের এসব ঔপনিবেশিক ব্যবস্থা থেকে বের হয়ে জনগণের জন্য কাজে মনোযোগ দেওয়া উচিত। সচিবালয়ে কর্মকর্তারা বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে যে সোচ্চার হচ্ছেন, এগুলো জনগণের স্বার্থে, নাকি তাদের ব্যক্তিস্বার্থে? প্রশ্ন তুলে বদিউল আলম বলেন, মনে হচ্ছে ২০০৭-০৮ সালের সিনড্রোমে ফিরে যাচ্ছি। তখন সংস্কারের অনেক মুলা আমাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছিল। পরে সংস্কার ইস্যুটা গালি হিসেবে অভিহিত হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে জানাতে হবে যেন তারা সংস্কারের পরিবর্তনগুলো তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে যুক্ত করে। সাবেক সচিব ইব্রাহিম হোসেন খান বলেন, সরকারি প্রশাসনের কাজগুলো ঠিক করে দিতে হবে– তারা কী করতে পারবে বা কী করতে পারবে না। প্রশাসনকে
বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। প্রশাসনে এখনও ভালো মানুষ আছে; সবাই খারাপ না। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমাদের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে জনসেবা মন্ত্রণালয় হিসেবে নামকরণ করা উচিত। আমাদের বিভিন্ন ক্লাব আছে। কিন্তু রাজনীতিবিদদের কোনো ক্লাব নেই। মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমিন বলেন, সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত হলো প্রশাসন, তারপর রাজনীতিবিদ। কেন্দ্রের কোনো নিয়ন্ত্রণ জনপ্রশাসনের ওপর থাকবে না। এই সরকার যদি শক্তভাবে প্রশাসনের এথিকস ঠিক করতে পারে, তাহলে পরিবর্তন আসবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, আমলাতন্ত্রের আত্মসংরক্ষণ ও পরিবর্তনের প্রতি অনীহা বদলাতে হবে। জনগণের সেবা পেতে হলে সেবা তাদের জন্য অ্যাক্সেসিবল হতে হবে। গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী
বলেন, বিসিএসের প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার সংস্কৃতি বাদ দিতে হবে। পরীক্ষার নামে যা হয়, তা বদলানো দরকার। আগস্টের পর অনেক আমলা পালাচ্ছে। তাদের তো পালানোর কথা না। এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বলেন, ২০০৬ থেকে প্রশাসনে রাজনীতিকীকরণ শুরু হয়েছে। সরকারকে ব্যবসা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। প্রশাসনকে জনবান্ধব করতে হবে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সিজিএসের চেয়ার মুনিরা খান, সাবেক সচিব এ কে এম আবদুল আওয়াল মজুমদার, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, সাবেক সচিব সুলতানা আফরোজ, বিডিআরের সাবেক মহাপরিদর্শক মেজর জেনারেল (অব.) ফজলুর রহমান, বিজিএমইএর সাবেক সহসভাপতি আবদুল্লাহ হিল
রাকিব, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, যুগান্তরের সিনিয়র সহকারী সম্পাদক মাহবুব কামাল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তাহমিদ আল মুদাসসির, লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ইফফাহ আসসারিরাহ প্রমুখ।
অভ্যুত্থানের পর এখন প্রশ্ন আসছে– সংস্কার আগে, না নির্বাচন আগে। যদিও আমরা এখন স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি। তবে এখনও কথা বলতে আমরা ভয়ে থাকি। ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, সংস্কার শব্দটির আরও বিশ্লেষণ দরকার। এর ভেতর অনেক দিক আছে। স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে হবে। স্থানীয় সরকার শক্তিশালী হলে কার্যত জনপ্রশাসনের শক্ত ভিত্তি তৈরি হবে। স্থানীয় সরকারকে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। রাজনৈতিক দল ও আমলারা স্থানীয় সরকারকে চাকর প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করেছে। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান আর স্বায়ত্তশাসিত থাকছে না। এটি একশ্রেণির আমলার পদায়ন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর পদ ধীরে ধীরে প্রশাসন ক্যাডারের অধীনে চলে গেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীনতা না দিলে অর্থনীতির চাকা ঘুরবে না। নির্বাচন
ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ব্রিটিশদের আমলাতন্ত্র সৃষ্টির উদ্দেশ্য ছিল তাদের রাজত্ব এখানে স্থায়ী করা। তাদের শাসন-শোষণ পরিচালনার হাতিয়ার হিসেবে প্রশাসনকে ব্যবহার করেছিল। তাদের উত্তরাধিকার এখনও আমরা দেখতে পাই। আমাদের দেশে যে উদ্দেশ্য নিয়ে জনপ্রশাসন তৈরি করা হয়েছে, তা এখনও পূরণ করতে পারেনি। জনপ্রশাসন জনগণের জন্য কাজ করবে। ২০০৭ সালে যদি সংস্কার হতো, তাহলে আজকে আমাদের এই অবস্থা হতো না। তিনি বলেন, জেলা পর্যায়ে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সফরে গেলে যেভাবে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়, তা খুবই অর্থহীন কাজ। তারা এসব প্রটোকলে ব্যস্ত থাকলে কাজ কখন করেন? কর্মকর্তারা বলেন, প্রটোকল দেওয়াই তাদের কাজ। আমি মনে করি, এসব
হচ্ছে অকাজ। কর্মকর্তাদের এসব ঔপনিবেশিক ব্যবস্থা থেকে বের হয়ে জনগণের জন্য কাজে মনোযোগ দেওয়া উচিত। সচিবালয়ে কর্মকর্তারা বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে যে সোচ্চার হচ্ছেন, এগুলো জনগণের স্বার্থে, নাকি তাদের ব্যক্তিস্বার্থে? প্রশ্ন তুলে বদিউল আলম বলেন, মনে হচ্ছে ২০০৭-০৮ সালের সিনড্রোমে ফিরে যাচ্ছি। তখন সংস্কারের অনেক মুলা আমাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছিল। পরে সংস্কার ইস্যুটা গালি হিসেবে অভিহিত হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে জানাতে হবে যেন তারা সংস্কারের পরিবর্তনগুলো তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে যুক্ত করে। সাবেক সচিব ইব্রাহিম হোসেন খান বলেন, সরকারি প্রশাসনের কাজগুলো ঠিক করে দিতে হবে– তারা কী করতে পারবে বা কী করতে পারবে না। প্রশাসনকে
বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। প্রশাসনে এখনও ভালো মানুষ আছে; সবাই খারাপ না। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমাদের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে জনসেবা মন্ত্রণালয় হিসেবে নামকরণ করা উচিত। আমাদের বিভিন্ন ক্লাব আছে। কিন্তু রাজনীতিবিদদের কোনো ক্লাব নেই। মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমিন বলেন, সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত হলো প্রশাসন, তারপর রাজনীতিবিদ। কেন্দ্রের কোনো নিয়ন্ত্রণ জনপ্রশাসনের ওপর থাকবে না। এই সরকার যদি শক্তভাবে প্রশাসনের এথিকস ঠিক করতে পারে, তাহলে পরিবর্তন আসবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, আমলাতন্ত্রের আত্মসংরক্ষণ ও পরিবর্তনের প্রতি অনীহা বদলাতে হবে। জনগণের সেবা পেতে হলে সেবা তাদের জন্য অ্যাক্সেসিবল হতে হবে। গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী
বলেন, বিসিএসের প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার সংস্কৃতি বাদ দিতে হবে। পরীক্ষার নামে যা হয়, তা বদলানো দরকার। আগস্টের পর অনেক আমলা পালাচ্ছে। তাদের তো পালানোর কথা না। এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বলেন, ২০০৬ থেকে প্রশাসনে রাজনীতিকীকরণ শুরু হয়েছে। সরকারকে ব্যবসা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। প্রশাসনকে জনবান্ধব করতে হবে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সিজিএসের চেয়ার মুনিরা খান, সাবেক সচিব এ কে এম আবদুল আওয়াল মজুমদার, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, সাবেক সচিব সুলতানা আফরোজ, বিডিআরের সাবেক মহাপরিদর্শক মেজর জেনারেল (অব.) ফজলুর রহমান, বিজিএমইএর সাবেক সহসভাপতি আবদুল্লাহ হিল
রাকিব, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, যুগান্তরের সিনিয়র সহকারী সম্পাদক মাহবুব কামাল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তাহমিদ আল মুদাসসির, লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ইফফাহ আসসারিরাহ প্রমুখ।