হদিস নেই পুলিশের বিতর্কিত কর্তাদের – ইউ এস বাংলা নিউজ




হদিস নেই পুলিশের বিতর্কিত কর্তাদের

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ১০:৫৭ 45 ভিউ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে প্রথম থেকেই বিতর্কিত ভূমিকায় ছিলেন পুলিশের কিছু শীর্ষ কর্মকর্তা। আন্দোলনকারীদের হয়রানি, সমন্বয়কদের হেফাজতে নিয়ে নির্যাতনসহ নির্বিচারে গুলি করে শতশত ছাত্র-জনতা হত্যার নির্দেশদাতা বিতর্কিত এসব কর্মকর্তা এখন লাপাত্তা। তাদের অবস্থান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নানা গুঞ্জন ছড়াচ্ছে। খোদ পুলিশের মধ্যেই আছে নানা আলোচনা। কেউ বলছেন, তারা একটি বিশেষ বাহিনীর হেফাজতে আছেন। কারও দাবি, তারা প্রশাসনের সহায়তায় দেশ ছেড়েছেন। আবার গণপিটুনি খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন-এমন তথ্যও ছড়ানো হয়েছে। পলাতক এসব কর্মকর্তার মধ্যে আছেন সাবেক এসবি প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার,

অ্যাডিশনাল ডিআইজি প্রলয় কুমার জোয়ারদার, ঢাকা জেলার সাবেক ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম প্রমুখ। প্রকৃত পক্ষে তারা কোথায় আছেন, কেন আইনের আওতায় আসছেন না, সে বিষয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। এসব কর্মকর্তাসহ পুলিশের শীর্ষ অনেকের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলাও হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি অপারেশনস মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘যাদের খুঁজে পাচ্ছি, তাদের গ্রেফতার করছি বা তাদের হেফাজতে নিচ্ছি। বাকিদের (পলাতকদের) অবস্থানের বিষয়ে জানলে তো ধরে ফেলতাম।’ উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক আইজিপি শহীদুল হক ও সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য শীর্ষ কর্তারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। পুলিশ সদর দপ্তর

সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যাওয়া বিভিন্ন পর্যায়ে প্রায় আট শ পুলিশ সদস্য এখনো কাজে যোগদান করেননি। কয়েক দফায় তাদের কাজে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হলেও কোনো হদিস নেই এসব সদস্যের। তারা কোথায় আছেন, সে বিষয়েও কোনো তথ্য নেই পুলিশ সদর দপ্তরের কাছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় পুলিশে একচ্ছত্র প্রভাব ছিল সাবেক এসবিপ্রধান মনিরুল ইসলামের। বিসিএস ১৫তম ব্যাচের এ কর্মকর্তার বাড়ি গোপালগঞ্জের মোকসুদপুরে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হওয়ায় পুলিশে অঘোষিত ডন ছিলেন তিনি। তার কথার বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন না তৎকালীন আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন। অভিযোগ আছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমাতে পুলিশে কট্টর

আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তাদের (কথিত পুলিশ লীগ) নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক ও দিকনির্দেশনা দিতেন মনিরুল ইসলাম। ৫ আগস্ট বিকালে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে শীর্ষ যে কর্মকর্তাদের হেলিকপ্টারে নিরাপদ স্থানে নেওয়া হয়, সেখানে ছিলেন মনিরুল ইসলামও। পরবর্তী সময়ে চাকরিচ্যুত হন তিনি। মনিরুলের বিরুদ্ধে অন্তত ২০টি হত্যা মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু এখনো তাকে আইনের আওতায় আনতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গুঞ্জন রয়েছে, তিনি একটি বাহিনীর নজরদারিতেই আছেন। আবার এমনও শোনা যাচ্ছে, তিনি দেশ ছেড়েছেন। তবে ঘটনার মাস পেরোলেও তার প্রকৃত অবস্থান জানা যায়নি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ছিলেন বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা ডিএমপির সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন-অর-রশীদ। বিসিএস ২০তম ব্যাচের কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের

বাসিন্দা হারুন নিজেকে সাবেক রাষ্ট্রপতির নাতি পরিচয় দিতেন। হারুনের ভাতের হোটেল দেশব্যাপী বহুল সমালোচিত। এ কর্মকর্তা আন্দোলন দমাতে সমন্বয়কদের হেফাজতে নেওয়া, বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার-নির্যাতনে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। সূত্র বলছে, ৫ আগস্ট পুলিশ সদর দপ্তর থেকে দেওয়াল টপকে বের হয়ে লাপাত্তা হন তিনি। তার অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন সময় নানা গুঞ্জন রটেছে। তিনি হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় একটি বাহিনীর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন-এমন তথ্য ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। আবার তিনি সীমান্ত পারি দিয়ে দেশ ছেড়েছে-এমন তথ্যও ফেসবুকে ছড়িয়েছে। তার বিরুদ্ধে অন্তত ৫০টি হত্যা মামলা হয়েছে। কিন্তু তাকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে ঢাকা

মহানগরে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তৎকালীন কমিশনার হাবিবুর রহমানের নির্দেশেই ডিএমপির আটটি বিভাগের দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা নির্বিচারে গুলি চালিয়েছেন। বিসিএস ১৭ ব্যাচের এ কর্মকর্তার বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরে। ৫ আগস্ট বিকালে তিনিও একটি বাহিনীর হেলিকপ্টারে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে নিরাপদ স্থানে যান। এরপর থেকে তারও কোনো হদিস নেই। এরই মধ্যে অর্ধশত হত্যা মামলার আসামি হয়েছেন তিনি। কিন্তু তাকে এখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেফতার করতে পারেনি। ডিএমপির যুগ্মকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারও ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে কঠোর অবস্থান নেন। ২১ ব্যাচের এ কর্মকর্তার বাড়ি কিশোরগঞ্জ সদরে। তিনি ছাত্রজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে তিনি মাঠ পুলিশকে ব্যাপক চাপ দেন বলে অভিযোগ

আছে। পুলিশের এ কর্মকর্তাও ৫ আগস্টের পর থেকে লাপাত্তা। তবে তিনি এরই মধ্যে দেশ ছেড়েছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৩৫টি হত্যা মামলা হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। সাবেক সিটিটিসি প্রধান ডিআইজি মো. আসাদুজ্জামান জঙ্গি দমনে আলোচিত কর্মকর্তা। বিসিএস ১৮ ব্যাচের এ কর্মকর্তার বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনিতে। আওয়ামী লীগের শেষদিকে জামায়াতের অনেক নেতাকর্মীকে আটক করে জঙ্গি বলে চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে সিটিটিসির একাধিক দল অভিযান চালানোর অভিযোগ রয়েছে। এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অন্তত ৫টি হত্যা মামলা রয়েছে। তবে তিনি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। এমন বিতর্কিত অন্তত ২৫ কর্মকর্তা এখনো লাপাত্তা। চাকরিচ্যুত পুলিশের ১৮ কর্মকর্তা : পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ছাত্র আন্দোলন দমাতে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ছাত্র-জনতা হত্যায় বিতর্কিত ভূমিকার কারণে এখন পর্যন্ত ১৮ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। এ তালিকা আরও লম্বা হচ্ছে বলেও জানা গেছে। ৫ আগস্টের পর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয় আইজিপি আব্দুল্লাহ-আল-মামুনের। এছাড়া বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে সাবেক সিআইডিপ্রধান অ্যাডিশনাল আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া, সাবেক এসবিপ্রধান অ্যাডিশনাল আইজিপি মো. মনিরুল ইসলাম, সাবেক ডিএমপি কমিশনার অ্যাডিশনাল আইজিপি হাবিবুর রহমান; অ্যাডিশনাল আইজিপি মো. মাহবুবুর রহমান, মো. আতিকুল ইসলাম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. আব্দুল বাতেন, কৃষ্ণপদ রায়, খন্দকার লুৎফুল কবির ও মীর রেজাউল আলম; ডিআইজি জয়দেব কুমার ভদ্র, মো. আসাদুজ্জামান, মো. মনিরুজ্জামান, মো. মোজাম্মেল হক, সরদার রকিবুল ইসলাম ও মো. ইমাম হোসেন এবং অ্যাডিশনাল ডিআইজি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির। এসব কর্মকর্তার বেশির ভাগই আত্মগোপনে চলে গেছেন। সূত্র বলছে, এসব কর্মকর্তাও একে একে বিচারের মুখোমুখি হবেন। ডিএমপির ২৭ সদস্য পলাতক : আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এখন পর্যন্ত ডিএমপির ২৭ সদস্য পলাতক। তাদের মধ্যে আটজন এএসপি থেকে ডিআইজি পদমর্যাদার কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে আছেন অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ; যুগ্মকমিশনার বিপ্লব সরকার, মেহেদী হাসান, খন্দকার নুরুন্নবী ও সঞ্জিত কুমার রায়সহ দুই সহকারী কমিশনার ও এক অতিরিক্ত উপকমিশনার। অন্যরা কনস্টেবল থেকে ইনস্পেকটর পর্যন্ত। ডিএমপির পলাতক এসব কর্মকর্তার তালিকা হয়েছে সপ্তাহখানেক আগেই। তবে তাদের বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে কোনো উদ্যোগ নেই ডিএমপির।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
ইসকন সমর্থকদের হাতে খুন আলিফ চিরনিদ্রায় শায়িত সোনার দাম বাড়ল অভিনেত্রীর নাম ভাঙিয়ে ‘ভুয়া বেনারসি শাড়ি’ বিক্রি কিছু মানুষ গোটা জাতিকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন: মির্জা ফখরুল গাজায় সংঘর্ষে আরও এক ইসরাইলি সেনা নিহত রক্তপাতের পরিকল্পনা ছিল বুশরা বিবির, যা বললেন তথ্যমন্ত্রী পিটিআইর ‘শেষ ডাক’ শেষ হয়নি, যা বললেন গান্দাপুর ‘স্যাটিন’ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষভাবে কার্যকর পুতিনের ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে সিনেটরদের সমর্থন এরা কারা, কী এদের পরিচয় : ইসকন সম্পর্কে হাইকোর্ট উত্তপ্ত ইসলামাবাদ, দেখামাত্র গুলির নির্দেশ ঢাকায় জিকা ভাইরাস রোগী শনাক্ত খাদ্যের জন্য হাহাকার, দেউলিয়া হওয়ার মুখে শতাধিক দেশ! জামিন পেলেন সাবেক এসপি বাবুল আক্তার আইনজীবী আলিফ হত্যার ভিডিও দেখে ৬ জনকে আটক কর ফাঁকির ২ মামলায় অব্যাহতি পেলেন তারেক রহমান এবার চীন যাচ্ছেন জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের ১০ নেতা চট্টগ্রাম আদালতের ক্লার্ক অফিসের নথিপত্রে আগুন ‘ইসকন’ বিশ্বের যেসব দেশে নিষিদ্ধ অশালীন ভঙ্গিতে ছবি তুলতে রাজি না হওয়ায় নাবালিকা মডেলকে চড়