৯ মাস মহাকাশে: শরীরে যেসব পরিবর্তন হলো নাসার দুই নভোচারীর – ইউ এস বাংলা নিউজ




৯ মাস মহাকাশে: শরীরে যেসব পরিবর্তন হলো নাসার দুই নভোচারীর

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২২ মার্চ, ২০২৫ | ৪:৫২ 6 ভিউ
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) মাত্র ৮ দিনের একটি যাত্রা ছিল নাসার দুই নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস ও ব্যারি উইলমোরের; কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দীর্ঘ ৯ মাস সেখানে তাদের অবস্থান করতে হয়। সম্প্রতি পৃথিবীপৃষ্ঠে ফিরে এসেছেন তারা। তবে এতদিন মহাকাশে থাকার কারণে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে রয়েছেন এই দুই মহাকাশচারী। সুনিতা ও ব্যারি উইলমোর ২০২৪ সালের ৫ জুন বোয়িং স্টারলাইনার ক্যালিপসোতে চড়ে মহাকাশে গিয়েছিলেন; কিন্তু মহাকাশযানটি স্টেশনের দিকে যাওয়ার সময় এর থ্রাস্টারে সমস্যা দেখা দিলে নাসা সিদ্ধান্ত নেয়, তারা আইএসএসতে থেকেই যেন অপেক্ষা করেন যতক্ষণ না নিরাপদে ফিরে আসার ব্যবস্থা করা যায়। এ অপেক্ষা শেষ পর্যন্ত চলে ৯ মাস বা ২৮৮ দিন।

ফলে সুনিতা ও ব্যারি নাসার ইতিহাসে একক মিশনে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় মহাকাশে অবস্থানকারী মহাকাশচারীদের তালিকায় নাম লেখালেন। এর আগে কে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় মহাকাশে ছিলেন? আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন পৃথিবী থেকে ৩৫৪ কিমি (২২০ মাইল) উচ্চতায় কক্ষপথে ঘোরে। এর আগে এতে নাসার ফ্রাঙ্ক রুবিও এক বছরেরও বেশি সময় অবস্থান করে দীর্ঘতম মিশনের রেকর্ড গড়েছেন। সবচেয়ে দীর্ঘ একক মহাকাশ অভিযানের রেকর্ডটি রাশিয়ান মহাকাশচারী ভ্যালেরি পলিয়াকভের। তিনি মির স্পেস স্টেশনে ৪৩৭ দিন কাটিয়েছিলেন। গত মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সুনিতা ও ব্যারিকে বহনকারী স্পেসএক্স ড্রাগন মহাকাশযানটি ফ্লোরিডার উপকূলে স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা ৫৭ মিনিটে সমুদ্রে অবতরণ করে। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে এটি বিচ্ছিন্ন হয়েছিল ০৫:০৫ মিনিটে। অবতরণের সময়

তাদের সঙ্গে ছিলেন রাশিয়ার রোসকসমস মহাকাশচারী আলেক্সান্ডার গর্বুনভ। নাসা স্প্ল্যাশডাউনের আগে পুরো প্রক্রিয়ার সরাসরি সম্প্রচার করে। মহাকাশে থাকার সময় শরীরে কী কী ক্ষতি হয়? মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি বা অতি-নিম্ন মাধ্যাকর্ষণ শরীরের ওপর ব্যাপক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। মাধ্যাকর্ষণের অভাবে শরীরের পেশির ক্ষয় হয়, কারণ মহাকাশে শরীরের ওজন বহন করতে হয় না। দ্রুত হাড় দুর্বল হয়ে যায়। মাসে প্রায় ১% হাড়ের ঘনত্ব কমে, যা পৃথিবীতে এক বছরের বার্ধক্যের সমান। এছাড়া শরীরে তরল পদার্থের স্থানচ্যুত হয়। এর কারণে মুখমণ্ডল ফুলে ওঠে এবং চোখে প্রভাব পড়ে। মহাকাশে রেডিয়েশনে ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। ৬ মাসে পৃথিবীর তুলনায় ১০ গুণ বেশি রেডিয়েশন, যা ক্যান্সার ও মানসিক অবনতির কারণ হতে পারে। এছাড়াও শরীরের ওপর

বেশকিছু প্রভাব পড়ে • শরীরের তরল ও ওজন: মহাকাশে প্রায় শরীরের ২০% তরল এবং ৫% ওজন কমে যায়। • মাংসপেশি: মাইক্রোগ্র্যাভিটির কারণে মাংসপেশি দুর্বল বা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। তবে মহাকাশে প্রতিদিন ২ ঘণ্টা করে সপ্তাহে ৬ দিন ব্যায়াম এবং প্রয়োজনীয় সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের মাধ্যমে এ ক্ষতি অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব। • ত্বক: মহাকাশে ত্বক পাতলা ও ফেটে যায় এবং ক্ষত সারতে সময় লাগে। • চোখ: মাইক্রোগ্র্যাভিটি দৃষ্টিশক্তিতে প্রভাব ফেলে এবং মহাকাশের রেডিয়েশন ছানি পড়ার ঝুঁকি বাড়ায়। • ডিএনএ: পৃথিবীতে ফেরার পর শরীরের অধিকাংশ জিন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলেও প্রায় ৭ শতাংশ জিনে স্থায়ী পরিবর্তন যায়। • মানসিক ও স্নায়ুবিক প্রভাব: মহাকাশের রেডিয়েশন মস্তিষ্কের ক্ষতি করে এবং অ্যালঝেইমার

রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া মহাকাশে ভারসাম্য ও দিশা বুঝতে সমস্যা হয়, ফলে মোশন সিকনেস হতে পারে। • রক্ত সঞ্চালন: রক্তচাপ কমে যায়। রক্তের লোহিতকণিকা হ্রাস পায় এবং হার্টবিট অনিয়মিত হয়। • ইমিউন সিস্টেম: শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। • হাড়: প্রতি মাসে প্রায় ১ শতাংশ হাড় ক্ষয় হয়, ফলে হাড় দুর্বল হয়ে যায় এবং আকৃতি পরিবর্তনের আশঙ্কা থাকে। মহাকাশে থাকাকালীন মেরুদণ্ড প্রসারিত হওয়ার কারণে মহাকাশচারীরা কিছুটা লম্বা হয়ে যান। পৃথিবীতে ফেরার পর শরীর আগের অবস্থায় ফিরতে কত দিন লাগে? পৃথিবীতে ফিরে এলেও শরীরের ওপর মহাকাশের চাপ হঠাৎ করে চলে যায় না। শরীর আগের অবস্থায় ফিরতে অনেক দিন লাগে। • প্রথম দিন: মেরুদণ্ড

আবার স্বাভাবিক হয়, রক্তচাপ ঠিক হয়, গ্যাসের সমস্যা কমে যায়। • এক সপ্তাহ: মাথা ঘোরা ও ভারসাম্য সমস্যাগুলো কমে যায় এবং ঘুম স্বাভাবিক হয়। • দুই সপ্তাহ: শরীরের হারানো তরল ফিরতে শুরু করে, রক্তের লোহিতকণিকা স্বাভাবিক মাত্রায় ফিরে আসে এবং রোগপ্রতিরোধ শক্তি উন্নত হয়। • এক মাস: পেশি গঠন প্রায় আগের মতো হয়ে যায়। • তিন মাস: ত্বক সম্পূর্ণ পুনরায় তৈরি হয়, দৃষ্টিশক্তি আগের অবস্থায় ফিরে আসে, ওজনও স্বাভাবিক হয়। • ছয় মাস: হাড়ের ভঙ্গুরতা থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, ক্যান্সারের ঝুঁকি কিছুটা থাকে। ৯৩% জিন স্বাভাবিক হলেও ৭% পরিবর্তন স্থায়ী হয়ে যায়। সর্বোপরি মহাকাশে দীর্ঘ সময় থাকার কারণে শরীর ও মনে গভীর প্রভাব পড়ে। এর

মধ্যে কিছু দীর্ঘমেয়াদি এবং কিছু কিছু প্রভাব স্থায়ী হয়ে যায়।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
আইপিএলের উদ্বোধনী দিন বৃষ্টিতে ভেসে যাবে না তো? আর মাত্র ৩৫ বছর, বিশ্বের বৃহত্তম ধর্ম হবে ইসলাম সুন্দরবনের কলমতেজী এলাকায় আগুন জনগণের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীকে দাঁড় করানোর ষড়যন্ত্র চলছে: রাশেদ খান প্রবাসীরা ভারতীয়রা কেন ট্রাম্পকে পছন্দ করেন না? বাংলাদেশে এমন কোনো শক্তি নেই যে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারে—এ আরাফাত রেলওয়ের পাঁচটি প্রকল্পের মধ্যে তিনটিতে অর্থায়ন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিলো ভারত বীর বিক্রম ড. কর্নেল অলি আহমদ : দুর্নীতি, ক্ষমতা ও লোভ যাকে কখনই স্পর্শ করেনি কঠোর ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে অনুরোধ জানালেন শবনম ফারিয়া প্রধান উপদেষ্টার কাছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর ডাকাতির সময় মেরিন ড্রাইভে জনতার হাতে ৩জন আটক ৫ কোটি টাকার ইয়াবাসহ রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৪ বাংলাদেশ-মেক্সিকো দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের পরিকল্পনা শুরু হলো নাজাতের দশক ‘কন্যা’ গানের জোয়ারে মেতেছেন চার তারকা ৩০টি নতুন বিমান কিনছে মালয়েশিয়া এমপি হয়েই নেমে পড়েন লুটপাটে বিশ্বের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত কারাগার গাজা সেনাবাহিনী পাশে না দাঁড়ালে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি হতো: নুরুল হক পানিদূষণ, উদ্ভিদ ধ্বংস ভূমিধস বাড়ার শঙ্কা