সমুদ্রের নিচের ভূমিকম্পে বাংলাদেশে সুনামির ঝুঁকি কতটা? – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আপডেটঃ ২৮ নভেম্বর, ২০২৫
     ৬:০৬ অপরাহ্ণ

সমুদ্রের নিচের ভূমিকম্পে বাংলাদেশে সুনামির ঝুঁকি কতটা?

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৮ নভেম্বর, ২০২৫ | ৬:০৬ 16 ভিউ
দেশে গত এক সপ্তাহে বেশ কয়েকবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এর মাঝে বুধবার (২৬ নভেম্বর) রাতে বঙ্গোপসাগরে চার মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ৬ দশমিক ছয় মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে ইন্দোনেশিয়ায়। এর কারণে বড় কোনো সুনামির খবর পাওয়া যায়নি। তবে ইন্দোনেশিয়ায় অথবা আন্দামান নিকবোর দ্বীপের দিকে বড় ভূমিকম্প হলে বাংলাদেশেও সুনামির ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যেমন, ২০০৪ সালে ইন্দোনেশিয়ায় নয় দশমিক এক মাত্রার ভূমিকম্পে যেখানে দুই লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, সেই সুনামি আফ্রিকার দেশগুলো পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। সেই সুনামির ধাক্কা বাংলাদেশেও লেগেছিল এবং তাতে দুইজনের মৃত্যুর খবর জানা যায়। ভূমিকম্প ও সুনামি ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের সহকারী আবহাওয়াবিদ ফারজানা

সুলতানা বলছেন, ‘সাগরে যদি ভূমিকম্প ছয় দশমিক পাঁচ মাত্রার উপরে যায় তারপর সে সুনামি হবে কি না, সুনামি সার্ভিস প্রোভাইডাররা সেটা পর্যবেক্ষণ করেন। কোন জায়গায় কখন হিট করতে পারে, পানির উচ্চতা কতটা হতে পারে, সেটা তারা অ্যালার্ট করেন। এটা আমরা সবময়ই টেস্ট বেসিসে করে আসছি।’ তিনি বলছেন, ‘বাংলাদেশে বঙ্গোপসাগরে প্রায়শই ছোট ছোট ভূমিকম্প হয়, তবে চার মাত্রা বা এর চেয়ে দুর্বল সেসব ভূমিকম্প থেকে বড় পর্যায়ে ক্ষতির শঙ্কা থাকে না।’ আবার অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভূমিতে বড় ভূমিকম্প হলেও উপকূলে সুনামির শঙ্কা থাকে। আমাদের পৃথিবীর ওপরের অংশ বা ভূপৃষ্ঠ বিভিন্ন প্লেটে ভাগ করা। এই প্লেটগুলো সবসময় নড়াচড়া করে। কোথাও প্লেট একে

অপরকে ঠেলে দেয়, কোথাও পাশ কাটিয়ে যায়, আবার কোথাও নিচে ঢুকে যায়। এমন ক্ষেত্রে যেমন ভূমিকম্প হয়, তেমন আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত থেকেও ভূপৃষ্ঠে কম্পন সৃষ্টি হতে পারে। এটি মাটির ওপরে বা পানির নিচে যে কোনো জায়গায় হতে পারে। ২৩ কোটি থেকে ২৮ কোটি বছর আগেও পৃথিবীর সব মহাদেশ মিলে এ রকম একক ভূখণ্ড ছিল বলে তত্ত্ব রয়েছে। এটিকে বলা হয় প্যাঞ্জিয়া। টেকটনিক প্লেটের ক্রমাগত অবস্থান পরিবর্তন থেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে অনেক ভূখণ্ড হয়েছিল বলে জানা যায়। এর সপক্ষে অনেক ধরনের প্রমাণও রয়েছে। এর মাঝে একটি পানির নিচে থাকা দীর্ঘতম পর্বতমালা মিড আটলান্টিক রিজ যেভাবে পৃথিবীকে ভাগ করেছে। এর মাত্র ১০ শতাংশ মাটির ওপরে

যা আইসল্যান্ডে পরিষ্কার দেখা যায়। সুনামি কীভাবে তৈরি হয় সুনামি অনেকটা বিশাল আকারের জলোচ্ছ্বাসের মতো। সাধারণত ভূমিকম্প হলেই সুনামি হয় না। সুনামির জন্য ভূমিকম্প খুব শক্তিশালী হতে হয়। এ ছাড়া মোটামুটি অগভীর সমুদ্রতলে এরকম কম্পন সৃষ্টি হওয়াটাও একটা ফ্যাক্টর হতে পারে। আর এমন কম্পন সমুদ্রের তলদেশকে ওপরে বা নিচে ঠেলে দিলে, বিশাল পরিমাণ পানি সরে গেলে সেটি সুনামি ঘটাতে পারে। এমন বিভিন্ন বিষয়ের সমন্বয় থেকে সুনামি হতে পারে। বাংলাদেশে সুনামির ঝুঁকি কতটা? এমনিতে প্রশান্ত মহাসাগর পৃথিবীতে ভূতাত্ত্বিকভাবে সবচেয়ে সক্রিয় অঞ্চল যেটাকে রিং অফ ফায়ার বলা হয়। এরম বিভিন্ন সক্রিয় অঞ্চল বা সাবডাকশন জোন থাকে। বড় সুনামি সৃষ্টিকারী সাবডাকশন জোনগুলো বাংলাদেশ থেকে বেশ দূরে। বাংলাদেশ

দুইটা বড় টেকটনিক প্লেটের সংযোগস্থলে রয়েছে, যা চট্টগ্রাম-আরাকান থেকে আন্দামানের দিকে চলে গেছে। তবে বাংলাদেশে সুনামির ঝুঁকি নিয়ে অবশ্য ভিন্ন ভিন্ন ধরনের পর্যবেক্ষণ রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, বাংলাদেশের খুব কাছাকাছি, সাগরের নিচে খুব নিকটবর্তী সময়ে বড় ভূমিকম্প এবং তা থেকে সুনামির শঙ্কা নেই। ফারজানা সুলতানা বলেন, ‘নরমালি ভূমিকম্প থেকে ওইরকম সুনামির ঝুঁকি নেই, কিন্তু আন্দামান নিকোবরে হলেও ওটা আমাদের জন্য একটা সোর্স অঞ্চল। আমরা টেস্ট বেসিসে সবসময় রেডি থাকি, এটা হলে যেন আমরা সঙ্গে সঙ্গেই সাবধানতা অবলম্বন করতে পারি।’ অতীতের নানা নথিপত্রের তথ্যানুযায়ী, এই অঞ্চলে ১৯৬২ সালে আরাকান কোস্টে প্রায় সাড়ে আট মাত্রার একটি ভূমিকম্প থেকে বড় সুনামি হয়েছিল। বিবিসির এর আগের একটি প্রতিবেদনে

ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলছিলেন, এই প্লেটে ভূমিকম্প হলে অবশ্যই বড় সুনামির আশঙ্কা রয়েছে। তবে এখানে খুব তাড়াতাড়ি এই বড় ধরনের ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সে সময়কার তথ্যে জানা যায়, তখন বড় ধরনের সুনামির তৈরি হয়েছি, যা উপকূল থেকে অনেকদূর পর্যন্ত ভেতরে এসে পৌঁছেছিল। যদিও তখন মানুষ কম ছিল বলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হয়তো তত বেশি হয়নি। তবে ঢাকায় নদীর পানি বেড়ে গিয়ে পাঁচশ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল বলে জানা যায়। সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, ‘এরপর আর এই অঞ্চলে এত বড় ভূমিকম্প বা সুনামির তথ্য পাওয়া যায় না। আমাদের হিসাবে, একবার ভূমিকম্প হওয়ার পর ওই প্লেটে শক্তি সঞ্চয় হয়ে পরবর্তী

ভূমিকম্প হতে আরও ৫০০-৯০০ বছর লেগে যায়। সেই হিসাবে এখানে ওই প্লেটে (আরাকান প্লেটে) ভূমিকম্প হতে আরও ২০০-২৫০ বছর বাকি আছে।’ ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশ ‘ফানেল শেপ’ অবস্থায় রয়েছে অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে সমুদ্র দক্ষিণ দিকে প্রসারিত হয়ে গেছে। সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেছিলেন, ‘আন্দামান বা ভারত মহাসাগরে যদি বড় সুনামি তৈরি হয়, ফানেল শেপ হওয়ার কারণে তার প্রভাব কিছুটা বাংলাদেশে এসেও লাগবে। যদিও সেটা হয়তো ইন্দোনেশিয়ার মতো অতটা ভয়ানক হবে না। ভূমিকম্প সম্পর্কে খুব আগেভাগে সতর্ক করা সম্ভব না হলেও যেহেতু ভূমিকম্পের পরে পানিতে সুনামির সৃষ্টি হয়, ফলে সুনামি সম্পর্কে আগেভাগে সতর্ক করা যায়।’ তবে বাংলাদেশের জন্য সমুদ্রে ভূমিকম্পের চেয়ে ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে যে ভূমিকম্পের যে ঝুঁকি রয়েছে, সেটিই এখন বেশি শঙ্কার জায়গা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্র : বিবিসি

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
সংকটে দীপিকার স্কিন কেয়ার ব্র্যান্ড জাতিসংঘের পরবর্তী মহাসচিব নির্বাচনে প্রার্থী যারা বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়াহ’ , সমুদ্রবন্দরে হুঁশিয়ারি সংকেত আরও ৩৯ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো থেকে স্থায়ীভাবে অভিবাসন বন্ধের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ বাড়লেও কমছে না সবজির দাম সমুদ্রের নিচের ভূমিকম্পে বাংলাদেশে সুনামির ঝুঁকি কতটা? শক্তি বাড়িয়ে ৮৮ কিলোমিটার বেগে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়াহ’ টঙ্গীতে ৫ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা শুরু মাটি খননের সময় বেরিয়ে এলো মর্টার শেল ফের ঊর্ধ্বমুখী স্বর্ণের দাম, শুক্রবার কততে বিক্রি হচ্ছে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো থেকে স্থায়ীভাবে অভিবাসন বন্ধের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের ইয়ামির বিস্ফোরক মন্তব্য রিয়ার সহজ স্বীকারোক্তি কারাগারে মৃত্যুর মিছিল থামছেই না দুই হত্যা, দুই বিশ্ববিদ্যালয়, এক নিস্ক্রিয় সরকার : বিচার পাবে কবে? গম থেকে চাল, সবই সিঙ্গাপুর দিয়ে : ইউনুস সরকারের ক্রয়ে কার স্বার্থ? প্রতারণাপূর্ণ অপকৌশলের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সততা ও নিষ্ঠা প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না মর্মে আওয়ামী লীগের বিবৃতি Mobocracy in robes: How Yunus regime’s farcical tribunal ordered Sheikh Hasina’s judicial assassination সাম্প্রতিক ভিত্তিহীন ও মিথ্যা দুর্নীতির মামলা সাজিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের সম্মানহানির অপচেষ্টা করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ