শ্রীমঙ্গলে বিলুপ্তির পথে মহারাজার ‘কাছারি বাড়ি’ – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আপডেটঃ ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
     ৮:৩১ পূর্বাহ্ণ

শ্রীমঙ্গলে বিলুপ্তির পথে মহারাজার ‘কাছারি বাড়ি’

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৮:৩১ 124 ভিউ
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে রক্ষণাবেক্ষণ আর সংস্কারের অভাবে কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে ত্রিপুরা মহারাজার স্মৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক ত্রিপুরা মহারাজার ‘কাছারি বাড়ি’। শতাব্দীর প্রাচীন নির্দশন এই ভবনটি এক সময় লোকে লোকারণ্য ছিল । দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন এখানে খাজনা দিতে আসতেন। সেই খাজনাযুগের অবসান হয়েছে বহু বছর আগে। এখন খাজনাযুগের স্মৃতি ধারণ করে নীরবে ভগ্ন অবস্থায় ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে ভবনটি। কালের সাক্ষী এ বাড়িটিকে সম্প্রতি ঝুকিপূর্ণ ঘোষণা করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে কর্র্র্তৃপক্ষ। শ্রীমঙ্গল শহরের প্রাণকেন্দ্র হবিগঞ্জ রোড (ঢাকা-সিলেট) মহাসড়কের পাশে অবস্থিত ত্রিপুরা মহারাজার স্থাপনা কাছারি বাড়িটি ১৮৯৭ সালে ত্রিপুরা মহারাজা প্রতিষ্ঠা করেন। ইতিহাস পর্যালোচনায় জানা যায়, ১৮৯৮ সালে তৎকালীন ত্রিপুরা মহারাজা কর্তৃক এতদঞ্চলের

প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায়ের জন্য শহরের মধ্যভাগে প্রায় দেড় বিঘা জমির ওপরে চুন-সুরকি দিয়ে ঐতিহাসিক এই কাছারি বাড়িটি নির্মাণ করা হয়। ছবি: খোলা কাগজ ছবি: খোলা কাগজ শ্রীমঙ্গল উপজেলা ভূমি অফিসের সীমানার ভেতরে অবস্থিত এই কাছারি বাড়িটির পাশেই রয়েছে শ্রীমঙ্গল উপজেলা ভূমি অফিস ও শান বাঁধানো ঘাটসহ একটি বিশাল পুকুর। কাছারি বাড়ির নাম অনুসারে নির্মিত হয়েছে কাছারি জামে মসজিদ। শতাধিক বছরের পুরোনো কাছারি বাড়িটি ১ দশমিক ৬৭ একর জায়গার ওপর নির্মিত। একতলা কাচারি বাড়িটি প্রস্থে ৩০ফুট ও দৈর্ঘ্যে ২০ ফুট লম্বা, এর রয়েছে ৩টি কক্ষ, ৮টি দরজা ও ৯টি জানালা। প্রতিটি দেয়াল ১২ ইঞ্চি চওড়া ও চুন-সুরকি দ্বারা নির্মিত। কারুকাজও রয়েছে চোখে

পড়ার মতো। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এই কাঁচারি বাড়ির পাশ দিয়ে চলা রাস্তাায় ধরে হাঁটছেন ভূমি সংক্রান্ত কাজে আসা লোকজন। অযত্নে, অবহেলায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে কাছারি বাড়িটি। বাড়ির ছাদের পলেস্তরা ভেঙে ভেঙে পড়ছে। দেয়ালের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল। ঘরের মেঝেতে আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। মুল রঙের ছিটেফোটাও নেই। ভবনের একাধিক স্থানে সাইনবোর্ড লাগানো আছে। লেখা রয়েছে, ‘ভবণটি ঝুকিপূর্ণ, কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত শুটিং/যেকোনো ধরণের ভিডিও ধারণ নিষেধ, আদেশক্রমে-কর্তৃপক্ষ’। এখানে দেখা হয় শ্রীমঙ্গল আইডিয়াল স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক আশিকুর রহমান চৌধুরী এর সাথে। তিনি খোলা কাগজকে জানান, ত্রিপুরা মহারাজার তৈরী এই কাচারি বাড়িটি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের

অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এর কাঠামো অক্ষুন্ন রেখে কাছারি বাড়িটির সংস্কার সাধন করলে সংরক্ষিত থাকতো এ ঐতিহ্য। পুরনো ঐতিহ্যের ইতিহাস সমৃদ্ধ তথ্যটি যদি সকলের দৃষ্টিগোচরের জন্য রাখা হলে ইতিহাস পিপাসুরা সহজে ইতিহাস জানতে পারবেন। এটি প্রত্মতাত্তিক নিদর্শন হতে পারে। শ্যামল দেববর্মা বলেন, শ্রীঙ্গল একসময় ত্রিপুরার অধীনে ছিলো। তখন ত্রিপুরীদের সংখ্যা ছিলো অনেক। ১৯৪৭ এর দেশ ভাগের পর বেশির ভাগই ভারত চলে গেছে। ত্রিপুরা মহারাজার কাঁচারী বাড়িটিতে বসে অষ্টাদশ শতকের ত্রিপুরা মহারাজ কৃষ্ণ মাণিক্য প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করতেন। পরবর্তীতে আধুনিক ত্রিপুরার সুচনালগ্নে মহারাজ মানিক্য বাহাদুর দেববর্মা ঊনবিংশ শতাব্দিতে সমস্ত প্রশাসনিক কার্যক্রম আগরতলাতে শুরু করেন। ত্রিপুরা মহারাজার

স্মৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক এবং তার রাজত্বকালে নির্মিত কালের সাক্ষী এই ভবনটিকে রক্ষা করলে তা নতুন প্রজন্মের নিকট কালের স্বাক্ষীর স্মৃতি ধরে রাখবে। পরিত্যক্ত ত্রিপুরা মহারাজা কাছারি বাড়িটি সংরক্ষণ করে ত্রিপুরা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য দাবি করছে বৃহত্তর সিলেট ত্রিপুরা উন্নয়ন পরিষদ। জানা যায়, এ ব্যাপারে বিগত বছরে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে একটি লিখিত আবেদন করা হয়। এতে সিলেট অঞ্জলের ১৬ টি ত্রিপুরা পল্লীর ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, সংস্কৃতি ও উন্নয়ন, ভূমি সমস্যা ও সমাধানসহ কাছারিবাড়ি সংরক্ষণ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের জন্য আহ্বান করা হয়। সুমন দেববর্মা জানান, ২০১৬ জুন মাসে তৎসময়ের শ্রীমঙ্গল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নুরুল হুদা এই

কাছারি বাড়িটি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ নিয়ে ভবনটিতে নতুন করে রঙের কাজ করান। কিন্তু পরবর্তীতে এই কাজের আর কোন অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়নি। স্থানীয়রা জানান, শ্রীমঙ্গল উপজেলা একটি পর্যটন নগরী। ইতোমধ্যেই পর্যটন নগরী হিসেবে এই উপজেলার সুনাম দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় শতবছরের ঐতিহ্যবাহী ত্রিপুরা মহারাজার কাছাঁরি বাড়িটি সংস্কার করলে নতুন প্রজন্মও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ভ্রমণপিপপাসুরা এটি দেখতে পারবে এবং এর ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারবে। শ্রীমঙ্গল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, আমি নতুন এসিছ, খোঁজ নিয়ে দেখবো এ ব্যাপারে আমার পূর্ববর্তী সহকারী কমিশনার (ভূমি) কোনো পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য উচ্চ পর্যায়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন কিনা। এরপর সংরক্ষণ বা

পুনঃসংস্কারের বিষয়ে জানাতে পারবো। শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, এটি সংরক্ষণ বা পুনঃসংস্কারের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
ভাঙ্গায় ৩ দিন মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধের ঘোষণা সহকারী শিক্ষকদের জন্য মাউশির নতুন নির্দেশনা ফিলিস্তিনের পক্ষে জাতিসংঘে ভোট দিল ভারত শূন্য রানে দুই ওপেনারকে হারাল বাংলাদেশ এইচএসসির ফল প্রকাশ নিয়ে যা জানা গেল ৪ জেলায় বন্যার আশঙ্কা ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু মার্কস অলরাউন্ডার ২০২৫ শুরু হলো সারা দেশে! ঋণের দায়ে চার মৃত্যু, ধার করে চল্লিশা সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন মারা গেছেন দেশের ৬৪ জেলায় হবে ‘মডেল মন্দির’ মধ্যপ্রাচ্য কাঁপাচ্ছে ইসরায়েল, বড় দ্বিধায় সৌদি-আমিরাত নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রীর স্বামী ১৯৭৩ সালে বিমান ছিনতাই করেছিলেন ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড কীভাবে সহ্য করছে আমিরাত? শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল রাশিয়ার পূর্ব উপকূল মেট্রোরেলের টিকিট ব্যবস্থাপনায় ঠিকাদার নিয়োগে নয়ছয় সাবেক ডিআইজি নাহিদুল ইসলাম গ্রেপ্তার সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে যেসব অঞ্চলে জাকসু নির্বাচনে আরেক কমিশনারের পদত্যাগ সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ১০ জনকে হস্তান্তর করল বিএসএফ