রামগতি-কমলনগরে তীব্র লোডশেডিং, দুর্ভোগে গ্রাহকরা

লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগরে পল্লী বিদ্যুতের অবর্ণনীয় লোডশেডিংয়ের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে স্থানীয় অন্তত ১ লাখ ১৬ হাজার গ্রাহক। এরমধ্যে কমলনগরে ৫৬ হাজার ও রামগতিতে ৬০ হাজার গ্রাহক রয়েছে।
দুইটি উপজেলায় নিয়ম করে দৈনিক ৮ থেকে ১০ বার লোডশেডিংয়ের ফলে দিনে-রাতে অন্তত ১৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকার অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। বাকি সময় নামমাত্র বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া হলেও লো-ভোল্টেজের কারণে সিলিং ফ্যান-এসি-মোটর ও ফ্রিজের কম্প্রেশারসহ বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রিক পণ্য পুড়ে ছাই হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।
মোটাদাগে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজ সরবরাহের কারণে ফ্রিজে ঈদুল আজহার (কুরবানির) সংরক্ষিত মাংস পচে যাওয়ার দুশ্চিন্তায় পড়েছেন গ্রাহকরা। এছাড়া বিদ্যুৎবিহীন ভ্যাপসা গরমে শিশু কিশোর ও বয়স্করা
অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অসহনীয় লোডশেডিংয়ের কারণে রাতে ঘুমহীন বিষাদে কাটছে জনজীবন। ব্যবসা-বাণিজ্যেও স্থবিরতা দেখা দেওয়াসহ লেখাপড়ার অমনোযোগী হয়ে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। তবে লো-ভোল্টেজ সরবরাহের কথা স্বীকার করে উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএম নিতীশ শাহা জানালেন, ইচ্ছে করে লোডশেডিং করছেন না বরং লো-ভোল্টেজ সরবরাহের কারণে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং হচ্ছে। এদিকে তীব্র লোডশেডিংয়ের ফলে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে গ্রাহকদের মাঝে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করারও হুমকি দিয়েছেন অনেকে। ইতোমধ্যে রামগতি উপজেলার বড়খেরী ইউনিয়নের একটি সাবস্টেশন অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছেন বিক্ষুব্ধ গ্রাহক ও সাধারণ জনতা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঈদের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দেশের সব ধরণের শিল্পকারখানা ও অফিস-আদালত
বন্ধ থাকা সত্ত্বেও পল্লী বিদ্যুৎ সেবার মান নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যেখানে বিদ্যুতের স্বাভাবিক সরবরাহ থাকার কথা সেখানে অবর্ণনীয় লোডশেডিং চলছে। এতে করে এবারের ঈদের আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে। অন্যদিকে ফ্রিজে সংরক্ষণ করা গ্রাহকের অন্তত শতকোটি টাকার কুরবানির মাংস পচে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। চরম পর্যায়ে অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ। তারা অবিলম্বে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন। জানা গেছে, কমলনগর উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের ৫৬ হাজারেরও অধিক গ্রাহক রয়েছে। এজন্য প্রতিদিন গড়ে ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। ঈদের ছুটিতে অফিস ও শিল্পকারখানা বন্ধ থাকায় বিদ্যুতের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে চলছে অতিরিক্ত লোডশেডিং।
অন্যদিকে রামগতি উপজেলায় ৬০ হাজার গ্রাহকেরও একই অবস্থা। চাঁদরাত থেকেই দিনে রাতে অন্তত ১৫ ঘণ্টা করে লোডশেডিং থাকছে এই উপজেলায়। বিশেষ করে ঈদ উপলক্ষে শহর ছেড়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে গ্রামে এসেছেন অনেকে। বেড়াতে এসে তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। ঈদের ছুটিতে পরিবারসহ ঢাকা থেকে গ্রামে বেড়াতে আসা চাকরিজীবী রায়হান কবির বলেন, অতীতের কোনো ঈদে এবারের মতো এমন খারাপ পরিস্থিতি হয়নি। শহরের সব মিল কারখানা বন্ধ। এ সময় পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার কথা অথচ বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে শিশুসন্তান নিয়ে পুরোদমে বিপাকে পড়েছি। করইতলা বাজারের চা দোকানি ইউসুফ বলেন, দিন ও রাতের বেশিরভাগ সময়ই বিদ্যুৎ থাকে না। মাঝে মাঝে অল্প সময়ের জন্য বিদ্যুৎ
আসে। লো-ভোল্টেজের কারণে হঠাৎ আমার ফ্রিজের কম্প্রেশার পুড়ে গেছে। এতে আট হাজার টাকার ক্ষতির মধ্যে পড়েছি। একইভাবে আরেক গ্রাহক বুলবুল ও তার স্ত্রী নাসিমা জানান, নিজেদের কুরবানির মাংসসহ আরও তিনজন আত্মীয়ের মাংসও তাদের ফ্রিজে সংরক্ষণ করেছেন। বারবার লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজের কারণে হঠাৎ ফ্রিজ বন্ধ হয়ে গেছে। মিস্ত্রি দেখানোর পরে জানতে পারেন স্টাবিলাইজার পুড়ে গেছে। এখন মেরামত করতে আড়াই হাজার টাকা খরচ হবে। তবে মেরামতের আগ পর্যন্ত মাংসগুলো ভালো থাকবে কিনা এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমলনগর উপজেলার ডিজিএম নিতীশ শাহা বলেন, আমাদের লোডশেডিং নাই। লো-ভোল্টেজের কারণে সব ফিডারে একসঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারি না। তাই বিকল্প হিসেবে এক লাইনের
ফিডার বন্ধ করে আরেক লাইন চালু করতে হয়। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে এই প্রতিবেদক পল্লী বিদ্যুৎ রামগতি জোনাল অফিসের ডিজিএমের মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে তিনি ছুটিতে আছেন জানিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এজিএম আনোয়ার হোসাইন অতিমাত্রায় লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রাহকের সীমাহীন কষ্টের কথা স্বীকার করে বলেন, নোয়াখালীর চৌমুহনী থেকে ৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ পল্লী বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনটি জেলার চন্দ্রগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর সদর, ভবানীগঞ্জ এবং কমলনগর হয়ে রামগতিতে সরবরাহকালে ৩৩ হাজার (৩৩ কেবি) ভোল্টেজের স্থলে ১৮ থেকে ২০ কেবিতে এসে সরবরাহ দুর্বল হয়ে পড়ে। মূলত ৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ সঞ্চালন লাইনের কারণে এমনটা হয়। এতে লো-ভোল্টেজ এবং ঘনঘন লোডশেডিং হচ্ছে। তবে আশার কথা
হলো- নোয়াখালীর মান্নাননগর গ্রিড থেকে নতুন একটি সঞ্চালন লাইন রামগতিতে যুক্ত করার জোর চেষ্টা চলছে। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে লাইনটি চালু করা গেলে এ সমস্যা আর থাকবে না বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লক্ষ্মীপুর জেলা জিএম দিলীপ চন্দ্র বর্মণ জানান, বিদ্যুৎ এখন যেখান থেকে উৎপাদন হচ্ছে সেখান থেকে এখানকার দূরত্ব হচ্ছে ৭২ কিলোমিটার। এ দূরত্বের কারণেই লো-ভোল্টেজ হচ্ছে। লক্ষ্মীপুরের গ্রিডটি চালু হলে এমন সমস্যা আর থাকবে না। এই গ্রিডটি দ্রুত চালু হবে বলে তিনি জানান।
অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অসহনীয় লোডশেডিংয়ের কারণে রাতে ঘুমহীন বিষাদে কাটছে জনজীবন। ব্যবসা-বাণিজ্যেও স্থবিরতা দেখা দেওয়াসহ লেখাপড়ার অমনোযোগী হয়ে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। তবে লো-ভোল্টেজ সরবরাহের কথা স্বীকার করে উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএম নিতীশ শাহা জানালেন, ইচ্ছে করে লোডশেডিং করছেন না বরং লো-ভোল্টেজ সরবরাহের কারণে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং হচ্ছে। এদিকে তীব্র লোডশেডিংয়ের ফলে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে গ্রাহকদের মাঝে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করারও হুমকি দিয়েছেন অনেকে। ইতোমধ্যে রামগতি উপজেলার বড়খেরী ইউনিয়নের একটি সাবস্টেশন অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছেন বিক্ষুব্ধ গ্রাহক ও সাধারণ জনতা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঈদের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দেশের সব ধরণের শিল্পকারখানা ও অফিস-আদালত
বন্ধ থাকা সত্ত্বেও পল্লী বিদ্যুৎ সেবার মান নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যেখানে বিদ্যুতের স্বাভাবিক সরবরাহ থাকার কথা সেখানে অবর্ণনীয় লোডশেডিং চলছে। এতে করে এবারের ঈদের আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে। অন্যদিকে ফ্রিজে সংরক্ষণ করা গ্রাহকের অন্তত শতকোটি টাকার কুরবানির মাংস পচে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। চরম পর্যায়ে অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ। তারা অবিলম্বে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন। জানা গেছে, কমলনগর উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের ৫৬ হাজারেরও অধিক গ্রাহক রয়েছে। এজন্য প্রতিদিন গড়ে ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। ঈদের ছুটিতে অফিস ও শিল্পকারখানা বন্ধ থাকায় বিদ্যুতের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে চলছে অতিরিক্ত লোডশেডিং।
অন্যদিকে রামগতি উপজেলায় ৬০ হাজার গ্রাহকেরও একই অবস্থা। চাঁদরাত থেকেই দিনে রাতে অন্তত ১৫ ঘণ্টা করে লোডশেডিং থাকছে এই উপজেলায়। বিশেষ করে ঈদ উপলক্ষে শহর ছেড়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে গ্রামে এসেছেন অনেকে। বেড়াতে এসে তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। ঈদের ছুটিতে পরিবারসহ ঢাকা থেকে গ্রামে বেড়াতে আসা চাকরিজীবী রায়হান কবির বলেন, অতীতের কোনো ঈদে এবারের মতো এমন খারাপ পরিস্থিতি হয়নি। শহরের সব মিল কারখানা বন্ধ। এ সময় পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার কথা অথচ বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে শিশুসন্তান নিয়ে পুরোদমে বিপাকে পড়েছি। করইতলা বাজারের চা দোকানি ইউসুফ বলেন, দিন ও রাতের বেশিরভাগ সময়ই বিদ্যুৎ থাকে না। মাঝে মাঝে অল্প সময়ের জন্য বিদ্যুৎ
আসে। লো-ভোল্টেজের কারণে হঠাৎ আমার ফ্রিজের কম্প্রেশার পুড়ে গেছে। এতে আট হাজার টাকার ক্ষতির মধ্যে পড়েছি। একইভাবে আরেক গ্রাহক বুলবুল ও তার স্ত্রী নাসিমা জানান, নিজেদের কুরবানির মাংসসহ আরও তিনজন আত্মীয়ের মাংসও তাদের ফ্রিজে সংরক্ষণ করেছেন। বারবার লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজের কারণে হঠাৎ ফ্রিজ বন্ধ হয়ে গেছে। মিস্ত্রি দেখানোর পরে জানতে পারেন স্টাবিলাইজার পুড়ে গেছে। এখন মেরামত করতে আড়াই হাজার টাকা খরচ হবে। তবে মেরামতের আগ পর্যন্ত মাংসগুলো ভালো থাকবে কিনা এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমলনগর উপজেলার ডিজিএম নিতীশ শাহা বলেন, আমাদের লোডশেডিং নাই। লো-ভোল্টেজের কারণে সব ফিডারে একসঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারি না। তাই বিকল্প হিসেবে এক লাইনের
ফিডার বন্ধ করে আরেক লাইন চালু করতে হয়। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে এই প্রতিবেদক পল্লী বিদ্যুৎ রামগতি জোনাল অফিসের ডিজিএমের মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে তিনি ছুটিতে আছেন জানিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এজিএম আনোয়ার হোসাইন অতিমাত্রায় লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রাহকের সীমাহীন কষ্টের কথা স্বীকার করে বলেন, নোয়াখালীর চৌমুহনী থেকে ৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ পল্লী বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনটি জেলার চন্দ্রগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর সদর, ভবানীগঞ্জ এবং কমলনগর হয়ে রামগতিতে সরবরাহকালে ৩৩ হাজার (৩৩ কেবি) ভোল্টেজের স্থলে ১৮ থেকে ২০ কেবিতে এসে সরবরাহ দুর্বল হয়ে পড়ে। মূলত ৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ সঞ্চালন লাইনের কারণে এমনটা হয়। এতে লো-ভোল্টেজ এবং ঘনঘন লোডশেডিং হচ্ছে। তবে আশার কথা
হলো- নোয়াখালীর মান্নাননগর গ্রিড থেকে নতুন একটি সঞ্চালন লাইন রামগতিতে যুক্ত করার জোর চেষ্টা চলছে। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে লাইনটি চালু করা গেলে এ সমস্যা আর থাকবে না বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লক্ষ্মীপুর জেলা জিএম দিলীপ চন্দ্র বর্মণ জানান, বিদ্যুৎ এখন যেখান থেকে উৎপাদন হচ্ছে সেখান থেকে এখানকার দূরত্ব হচ্ছে ৭২ কিলোমিটার। এ দূরত্বের কারণেই লো-ভোল্টেজ হচ্ছে। লক্ষ্মীপুরের গ্রিডটি চালু হলে এমন সমস্যা আর থাকবে না। এই গ্রিডটি দ্রুত চালু হবে বলে তিনি জানান।