মোদির শাসনে ‘ফিলিস্তিন দশা’ ভারতের মুসলিমদের – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আপডেটঃ ২৭ মার্চ, ২০২৫
     ৮:০৬ পূর্বাহ্ণ

মোদির শাসনে ‘ফিলিস্তিন দশা’ ভারতের মুসলিমদের

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৭ মার্চ, ২০২৫ | ৮:০৬ 75 ভিউ
প্রতিবেশী দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে বরাবরই সরব ভারত সরকার। আগুনে ঘি ঢেলে লংকাকাণ্ডের ফোড়ন ছিটায়। পাশের দেশের যে কোনো রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতেই ‘সংখ্যালঘুরা ভালো নেই’ শিরোনামে হুলুস্থুল কাণ্ড বাধিয়ে দেয় দেশটির হুজুগে কিছু গণমাধ্যমও। অথচ নিজের ঘরেই জাত-বিদ্বেষের কালসাপ! ধর্মনিরপেক্ষ মুখোশের আড়ালে ধর্মান্ধ জাতীয়তার উসকানি। গণতন্ত্র ও মানবতার বুলি আওড়ানো ভারতে কতটা নিরাপদ সংখ্যালঘুরা? মঙ্গলবার ‘জলজ্যান্ত’ সে দৃশ্যই ফুটে উঠেছে কাতারভিত্তিক বার্তা সংস্থা আলজাজিরার আয়নায়। ইসরাইলের মতোই মুসলিমদের বসতি দখল-উৎখাত-লুটপাট-মসজিদ ভাঙায় জড়িয়ে আছে ভারতের নামও। ভূস্বর্গ কাশ্মীর তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। যুগ যুগ ধরে চলছে স্বাধীনতাকামী ওই জনপদে বুট-বুলেটের তাণ্ডব। শুধু কাশ্মীর নয়-কন্যাকুমারী পর্যন্ত প্রায় সব খানেই সব

সময়ই কম-বেশি নির্যাতনের শিকার দেশটির সংখ্যালঘুরা। কট্টর বিজেপি এলেই জোয়ারের মতো বাড়ে সে যন্ত্রণার ফেনা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শাসনামলে রীতিমতো ‘ফিলিস্তিন দশা’ তৈরি হয়েছে সেখানকার মুসলিমদের। সংখ্যালঘুদের ওপর ঘটে যাওয়া দীর্ঘদিনের সে অবিচারের কাহিনিই উঠে এসেছে আলজাজিরার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে। গুজরাট দাঙ্গার ইতিহাস ‘দূর কি বাত’। এক সপ্তাহ (১৭ মার্চ) আগের ঘটনা-উত্তরপ্রদেশের মিরাটের আইআইএমটি বিশ্ববিদ্যালয়ের খোলা জায়গায় নামাজ পড়ার অভিযোগে এক শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ওই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারও করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সংখ্যালঘুদের ওপর ভারতের এ ধর্মীয় আগ্রাসন হরহামেশাই চোখে পড়ে। ইসরাইলের মতো কথায় কথায় বিমান হামলা, কামানের গোলা আর স্থল অভিযানে না গেলেও- সংখ্যালঘু নির্যাতনের বাকি সব বর্ণ-গন্ধের পুরোটাই আছে ভারতের

আস্তিনে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভারতের মধ্যপ্রদেশে মুসলিম সংখ্যালঘুদের সঙ্গে অবর্ণনীয় অবিচার করেছে মোদি সরকার। উজ্জয়িনী শহরের বাড়িঘর, দোকান, প্রাচীন মসজিদসহ প্রায় ২৫০টি অবকাঠামো বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন। এর মাধ্যমে শহরের মুসলিম অধ্যুষিত নিজাউদ্দিন কলোনি খালি করা হয়েছে ২.১ হেক্টর (৫.২৭ একর) বিস্তৃত জমি। প্রশস্ত করা হচ্ছে মহাকাল মন্দির। মূলত এই জমিটি মধ্যপ্রদেশ ওয়াকফ বোর্ডের ছিল। আরবি ভাষা থেকে উদ্ভূত, ‘ওয়াকফ’ বলতে স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি বোঝায়। এর অধীনে ধর্মীয় বা দাতব্য উদ্দেশ্যে মসজিদ, স্কুল, কবরস্থান, এতিমখানা, হাসপাতাল দান করেন মুসলিমরা। ফলে এ ধরনের সম্পত্তি হস্তান্তর করা যায় না। এমনকি জমিগুলো বিক্রয় ও অন্যান্য ব্যবহার্যেও নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু উজ্জয়িনীর

ওয়াকফ জমিটি তথাকথিত ‘মহাকাল করিডর’র জন্য অনুমোদন করা হয়েছিল। মূলত এটি ছিল শহরের বিখ্যাত মহাকালেশ্বর মন্দিরকে ঘিরে ১ বিলিয়ন ডলারের একটি সরকারি প্রকল্প। প্রতিবেদন মতে, ২০ কোটিরও বেশি মুসলিমের আবাসস্থল ভারতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ওয়াকফ সম্পদ রয়েছে। এর অধীনে প্রায় ৪ লাখ ৫ হাজার হেক্টর (১০ লাখ একর) জুড়ে ৮ লাখ ৭২ হাজারেরও বেশি সম্পত্তি রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১৪.২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রতিটি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে থাকা ওয়াকফ বোর্ড এসব সম্পত্তি পরিচালনা করে। সব মিলিয়ে, ওয়াকফ বোর্ডগুলো ভারতের বৃহত্তম শহুরে জমির মালিক। পাশাপাশি দেশটির সেনাবাহিনী ও রেলওয়ের পরে যথাক্রমে তৃতীয় বৃহত্তম। জানা গেছে, কয়েক দশক ধরে

প্রচলিত ওয়াকফ আইনের সংশোধনী নিয়ে ভারতীয় সংসদে চলতি সপ্তাহেই আলোচনা হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে-প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) প্রস্তাবিত এই সংশোধনী বিলটি সরকারকে ওয়াকফ সম্পত্তির ওপর বড় নিয়ন্ত্রণ দিতে পারে। এছাড়াও মুসলিম সংগঠনগুলোর অভিযোগ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে আরও কোণঠাসা করার জন্য সংসদীয় শক্তি ব্যবহার করছে মোদি প্রশাসন। কিছু মানবাধিকারকর্মী এবং আইনজীবী বলছেন, বছরের পর বছর ধরে অব্যবস্থাপনার ফলে এই দখলদারত্ব সৃষ্টি হয়েছে। সংশোধিত আইন বিষয়টি আরও খারাপ করে তুলতে পারে। তবে চলতি বছরই নয় সংখ্যালঘুদের ওপর মধ্যপ্রদেশে এমন দমন-নিপীড়নের ইতিহাস আরও দীর্ঘ। কেননা গত ২২ বছরের বেশিরভাগ সময় ধরে বিজেপির হাতে শাসিত হয়েছে আয়তনের দিক থেকে

দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্যটি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ার পর থেকেই উজ্জয়িনীর বিজেপি রাজনীতিবিদ মোহন যাদব ২০২৮ সালের কুম্ভমেলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শুধু এই মেলা উদযাপনকে কেন্দ্র করে ওয়াকফ সম্পত্তি ধ্বংস করা হয়েছে। মূলত এটি কুম্ভ তীর্থযাত্রার জন্য সরকারের জমি অধিগ্রহণের অংশ হিসাবে দেখা হয়েছে। এছাড়াও রাজ্য কর্মকর্তারা ১৯৮৫ সালের একটি সরকারি নথি উপেক্ষা করেছেন। নথিতে দেখা যায়, উজ্জয়িনী শহরটি একটি মুসলিম কবরস্থান ছিল। এমনকি একটি ঐতিহাসিক মসজিদও ছিল সেখানে। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে বিজেপি আশ্রয়ে থাকা প্রভাবশালী বিল্ডার্সরা ওই স্থানে অবৈধভাবে প্লট বিক্রি করেছে। যার ফলে জানুয়ারিতে ২৫০টিরও বেশি স্থায়ী স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়। এর আগে ২০২১

সালের জানুয়ারিতে, মধ্যপ্রদেশ সরকার ভূপালে ১.২ হেক্টর (২.৮৮ একর) ওয়াকফ জমি অধিগ্রহণের জন্য একটি এনজিওকে অনুমোদন দেয়। মূলত সেখানে ট্রাস্টি হিসাবে নিয়োজিত ছিলেন বিজেপি নেতারা। মুসলিম অধ্যুষিত এলাকার ওই স্থানটিকে রাষ্ট্রীয় রেকর্ডে কবরস্থান হিসাবে মনোনীত করা হয়েছিল। এমনকি সেখানে অর্ধ ডজন কবরও ছিল। একজন ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য বলেন, ‘মধ্যপ্রদেশের পুলিশের সদর দপ্তর, ভূপাল পুলিশ কন্ট্রোল রুম, ট্রাফিক পুলিশ স্টেশন ও অন্যান্য সরকারি অফিস ওয়াকফের মালিকানাধীন জমিতে নির্মিত হয়েছে। রাজ্যের রাজধানীর ১০০ কবরস্থানের কোনো হদিসই নেই।’ এ বিষয়ে মধ্যপ্রদেশ ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং উজ্জয়িনীর বিজেপি নেতা সানাওয়ার প্যাটেলের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল-কেন তিনি দখলের বিরোধিতা করেননি বা ক্ষতিপূরণ দাবি করেননি। উত্তরে প্যাটেল বলেন, ‘দল যা আদেশ করবে আমি তাই করব, কারণ আমি এখানে দলের জন্যই আছি।’ এ বিষয়ে মুসলিমরা বলছেন, উজ্জয়িনীতে দখল কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং মধ্যপ্রদেশ এবং ভারতের অন্যান্য অংশে চলতে থাকা একটি ধারাবাহিক পরিকল্পনার অংশ। তাদের মতে, সরকার এবং এর কর্মকর্তাদের নজরদারির অধীনে ওয়াকফ সম্পত্তির ওপর পদ্ধতিগত এবং ইচ্ছাকৃত লুটপাট চলছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, বছরের পর বছর ধরে সরকারি ও বেসরকারি দখল, দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনার কারণে ওয়াকফের সম্পত্তিগুলো ঝুঁকির মুখে পড়েছে। আর নতুন সংশোধনীর মাধ্যমে ভারত সরকার এখন আইনত সেগুলো দখল করতে চায়।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
অবিনশ্বর বিজয় দিবস ২০২৫ নয় মাস মুক্তিযুদ্ধের পর যেদিন বিজয়ের সূর্য হেসেছিল বাংলার আকাশে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রহসন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, জনগণের রায় ছাড়াই ক্ষমতার বন্দোবস্ত মানবে না দেশ নিয়াজীর আত্মসমর্পণের চুক্তিনামা নিয়ে আসেন ক্যু করে পদচ্যুত করতে ব্যর্থ হয়ে ইউনুসের কাছে রাষ্ট্রপতি এখন অচ্ছুৎ! সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের লুটপাট: জুলাইয়ের খুনিদের আসল চেহারা ফেব্রুয়ারিতে ভোট, নাকি সংঘর্ষ—সংকটময় মোড়ে বাংলাদেশ বিচারের নামে শেখ হাসিনার সাথে চলছে অবিচার, বিশ্বে নিন্দিত বাংলাদেশ ইনিয়ে-বিনিয়ে পাকিস্তানকে মহিমান্বিত করার চেষ্টা, জুতা মেরে বাঙালির জবাব! একটি জাতিকে পঙ্গু করতেই রাও ফরমানের নীলনকশা, বাস্তবায়নে জামাত প্রহসন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, জনগণের রায় ছাড়াই ক্ষমতার বন্দোবস্ত মানবে না দেশ মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বাণী মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ আত্মসমর্পণের আগের সেই মুহূর্তগুলো এক সাগর রক্তের বিনিময়ে, বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা আমরা তোমাদের ভুলবনা। একাত্তরে তাঁদের সাহস, দৃঢ়তা আর সংকল্প আমাদের এনে দিয়েছিল স্বাধীনতা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে আদালতে তোলা হচ্ছে ৭১–কে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্রে ইউনুস সরকার: কুচকাওয়াজ বাতিল ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলা নিয়ে সরব আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম গোয়াইনঘাটে অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার, গ্রেপ্তার নেই প্রকৃত চোরাকারবারি আড়াল করার অভিযোগ বাংলাদেশকে প্রান্তে ঠেলে দেওয়া যাবে না”: শেখ হাসিনা মুহাম্মদ ইউনুস সরকারকে কড়া সমালোচনা