মামার কমিশনে ভাগ্নের নির্দেশনা: গুম কমিশনের ছদ্মবেশে জঙ্গি পুনর্বাসন? – ইউ এস বাংলা নিউজ




মামার কমিশনে ভাগ্নের নির্দেশনা: গুম কমিশনের ছদ্মবেশে জঙ্গি পুনর্বাসন?

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২২ মে, ২০২৫ | ১১:১০ 39 ভিউ
মামার কমিশনে ভাগ্নের নির্দেশনা: গুম কমিশনের ছদ্মবেশে জঙ্গি পুনর্বাসন? Commission of Inquiry Act, 1956-এর আওতায় গঠিত গুম সংক্রান্ত কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। এই কমিশনের লক্ষ্য হলো গুমের ঘটনা তদন্ত করে নিখোঁজদের অবস্থান, বন্দিশালার অভিজ্ঞতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদন প্রস্তুত করা। ১। গুম কমিশনের চেয়ারম‍্যান ও মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গির আত্নীয়তা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার প্রধান মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক (মেজর জিয়া) আন্তর্জাতিকভাবে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ জঙ্গি। মেজর জিয়া ২০১১ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর পালিয়ে যান এবং আত্মগোপনে থেকে ভয়াবহ জঙ্গি কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হন। তার নেতৃত্বেই অভিজিৎ রায়, জুলহাজ

মান্নান, দীপন, রাজীব হায়দারসহ অন্তত আটজন মুক্তমনা ব্লগার, লেখক ও প্রকাশক হত্যার ঘটনা সংগঠিত হয়। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, হত্যা ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ১১টি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে তিনটিতে তার মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। বাংলাদেশ তার সন্ধানদাতার জন‍্য ২০ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষনা করে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার ২০২১ সালে তার খোঁজদাতাকে ৫০ লাখ ডলারের পুরস্কার ঘোষণা করেছে। জঙ্গি মেজর জিয়ার মায়ের নাম জাহানারা বেগম। জাহানারা বেগমের আপন ভাই গুম কমিশনের চেয়ারম্যান মইনুল ইসলাম চৌধুরী অর্থাৎ, মেজর জিয়ার আপন মামা। এই রক্তের সম্পর্ক আরো গভীর হয় ২০০৫ সালে যখন মেজর জিয়া বিচারপতি মইনুল ইসলামের কন্যা ‘লিপি’কে- অর্থাৎ নিজের মামাতো বোনকে বিয়ে করেন। লিপি ২০০৭ সালে ক্যান্সারে

আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এই অল্প সময়েই লিপি হয়ে উঠেছিলেন জঙ্গি হওয়ার পথে হাঁটা এক যুবকের জীবনের অংশীদার। ২। দ্বিতীয় স্ত্রী: সাফা জোহরা লিপির মৃত্যুর পর মেজর জিয়া বিয়ে করেন পটুয়াখালীর শিক্ষক দম্পতির কন্যা সাফা জোহরাকে। মূলধারার পত্রপত্রিকায় কিছু পাওয়া না গেলেও কয়েকটি পত্র- পত্রিকার তথ‍্য অনুযায়ী- ‘সাফা জোহরা সম্পর্কে লিপির খালাতো বোন। লিপির মৃত‍্যুর পর ভাগ্নি সাফা জোহরার সাথে আবার জিয়ার বিয়ে দেন বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী’। তবে জিয়ার বিকৃত মস্তিস্ক ও পরিবার বিচ্ছিন্ন জীবনের বিষয়টি তার শ্বশুর মহাশয় লিপির জীবদ্দশাতেই জেনে গিয়েছিলেন। সেনাবাহিনী থেকেওঅবহিত করা হয়েছিল। ৩। ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার চোখে জঙ্গি জিয়া- শ্বশুর বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী: ২০২১

সালে দৈনিক প্রথম আলো-এর একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে আসে, জঙ্গি মেজর জিয়াউল হককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলাকালে পুলিশ ঢাকায় তার শ্বশুরের সন্ধান পায়- যিনি নিজেকে ‘অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি’ হিসেবে পরিচয় দেন। সেই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি পুলিশকে জানা- ‘জিয়ার একটি ছেলে তার হেফাজতে আছে। জিয়া সন্তানের খোঁজখবর রাখে না। তিনি আদালতের মাধ্যমে নাতির অভিভাবকত্বও গ্রহণ করেছেন’। প্রতিবেদনের বিশ্লেষণে ধারণা করা হয়, যাকে ‘অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি’ বলা হয়েছে, তিনি সম্ভবত জিয়ার মামা ও সাবেক শ্বশুর বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। ২০১৬ সালে এমটিনিউজ২৪ (উৎস: দ্য রিপোর্ট)-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জিয়া প্রথমে বিয়ে করেন তার মামা, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল হকের মেয়ে লিপিকে। অন্যদিকে দৈনিক আজকের পত্রিকা-এর একটি

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর জিয়া দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন এবং সেই সংসারে তার দুটি সন্তান রয়েছে। সেই প্রতিবেদনে তার শ্বশুরকে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ৪। জিয়ার জঙ্গি সম্পৃক্ততায় বিচারপতি মইনুল ইসলামের গ্রীন সিগনাল? ২০১০-এর দশকে মেজর জিয়া আত্মগোপনে যাওয়ার পর, তার প্রথম স্ত্রী লিপি ও শিশুপুত্রকে নিজের হেফাজতে নেন শ্বশুর, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। সমাজে প্রশ্ন না উঠার জন্য তিনি আদালতের মাধ্যমে ছেলের আইনি অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেন এবং জানান, জিয়া সন্তানের খোঁজ নেন না কিংবা কোনো ভরণপোষণ দেন না। কিন্তু গোপন তথ্যে উঠে আসে ভিন্ন চিত্র- জিয়া আত্মগোপনের সময়ও শ্বশুর ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন

এবং জঙ্গি অর্থায়নের বিপুল টাকার একটি বড় অংশ সন্তানের খরচের জন্য পাঠাতেন মইনুল ইসলামের কাছেই। অন্যদিকে, সেনা কর্মকর্তা হিসেবে প্রাপ্ত সরকারি প্লটটি জিয়া দেন তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী সাফা জোহরাকে, যিনি বর্তমানে দুই সন্তানকে নিয়ে সাভারে বসবাস করছেন। ৫। গুম কমিশনের আসল উদ্দেশ্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত গুম তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত করেছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীকে—যিনি শীর্ষ জঙ্গি নেতা মেজর জিয়ার আপন মামা। শুধু রক্তের সম্পর্কেই নয়, ব্যক্তিগত স্নেহের জায়গা থেকেও তিনি জিয়াকে নিজের মেয়ে লিপির সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন। পরে জিয়া আত্মগোপনে গেলে তার শিশুপুত্রকেও হেফাজতে নেন মইনুল ইসলাম চৌধুরী। এমন একজন প্রশ্নবিদ্ধ ব্যক্তিকে, যার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় দেশের

মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি- গুমের মতো স্পর্শকাতর ও জাতীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত একটি কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত করার উদ্দেশ্য কী? এটা কি নিছক কাকতালীয়, নাকি সচেতনভাবে পরিকল্পিত পদক্ষেপ—যার মাধ্যমে গুম কমিশনকে ব্যবহার করে জঙ্গিদের পুরনো শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়া যাবে? অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি মেজর জিয়ার মতো জঙ্গিদের ইশারাতেই গুম কমিশনকে পরিচালনা করছে? ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ঢাকার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালে জিয়া দাবি করেন- তিনি এখন আর সশস্ত্র জঙ্গি নন, বরং রাজনৈতিক পুনর্বাসনের সুযোগ চান। অথচ এই নাটকীয় অবস্থান পরিবর্তনের নেপথ্যে যে কলকাঠি নাড়ছেন তারই মামা/ শবশুর ও গুম কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী- সেটা আর গোপন নেই। মেজর জিয়া এখন ফেসবুকেও বেশ সক্রিয়। তিনি নিয়মিত পোস্ট দিচ্ছেন, রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি নিয়ে মতামত প্রকাশ করছেন। একই সময়ে গুম কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিসও ফেসবুকে গুম ইস্যুতে নিয়মিত লেখালেখি করছেন। সেখানে জঙ্গি মেজর জিয়া ‘আপু’ সম্বোধন করে তার পোস্টে লাইক দেন, কমেন্ট করেন। একটি পোস্টে তো প্রকাশ্যেই লিখেছেন- ‘Great works Dear Sister! Thanks again from all the oppressed people’. প্রশ্ন হলো, দেশের মোস্ট ওয়ান্টেড এক জঙ্গির এমন প্রকাশ্য অনলাইন উপস্থিতি, আর গুম কমিশনের সদস্যের সঙ্গে এভাবে সরাসরি যোগাযোগ- এগুলো কি নিছক কাকতালীয়? নাকি এগুলোর মধ্যেই লুকিয়ে আছে গুম কমিশনের ভেতরে জঙ্গি-সহানুভূতির অশুভ ইঙ্গিত? নাবিলা ইদ্রিস যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ইয়র্ক থেকে সোশ্যাল পলিসিতে পোস্ট গ্রাজুয়েশন এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। শিক্ষাজীবনের এই সময়েই তিনি জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরীরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। কেমব্রিজে অবস্থানকালে তিনি হিজবুত তাহরীরের পাঠচক্র ও দাওয়াতি কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। এর অংশ হিসেবে তিনি কেমব্রিজ ইসলামিক সোসাইটি আয়োজিত ‘মডার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলিম হওয়া’ শীর্ষক সম্মেলনে সঞ্চালকের দায়িত্বও পালন করেন। জঙ্গি নেতা মেজর জিয়া বর্তমানে ‘গুম কমিশন’- এ নিয়মিত ইনপুট দিচ্ছেন, কীভাবে দেশে জঙ্গিবাদ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা যায় এবং তার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ানো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোন ইউনিট ও কোন কোন সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকার পরও জিয়া খুব ভালোভাবেই জানেন- তার কোন অনুসারীকে কখন, কোথায়, কোন বাহিনীর কোন সদস্য গ্রেফতার করেছে কিংবা মামলায় চালান দিয়েছে। এমনকি কোন সম্ভাব্য জঙ্গি হামলা কে ঠেকিয়েছে, কোন ইউনিট বা অফিসার কীভাবে বাধা দিয়েছে- এসব তথ্য তার কাছে পরিষ্কার। জঙ্গিনেতা হিসেবে মেজর জিয়ার প্রতিশোধস্পৃহা তো অস্বাভাবিক নয়- বরং সেটাই স্বাভাবিক। যে অফিসার বা ইউনিট তার জঙ্গিবাদী পরিকল্পনায় বাধা দিয়েছে, অনুসারীদের গ্রেফতার করেছে কিংবা সম্ভাব্য হামলা ঠেকিয়েছে, তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করাই তো তার লক্ষ্য।আর সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের আদর্শ প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে বর্তমান ‘গুম তদন্ত কমিশন’। কারণ এই কমিশনের কাছেই আছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তালিকা- কে কখন কোথায় কোন অভিযানে অংশ নিয়েছেন, কার নামে কী মামলা, কোন সফল অভিযানে কে ছিলেন নেতৃত্বে। তাই প্রশ্ন উঠতেই পারে- এমন একজন ব্যক্তি, যার পরিবারেই লুকিয়ে আছে ভয়ঙ্কর জঙ্গি ইতিহাস, তিনি কীভাবে নিরপেক্ষভাবে গুম কমিশনের চেয়ারম‍্যানের দায়িত্ব পালন করবেন? নাকি সত্যিটা আরও গভীর? অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই কি এই কমিশনকে একটি গোপন প্রকল্পে ব্যবহার করছে- যেখানে জঙ্গিদের মতামত নিয়েই স্থির হচ্ছে, কীভাবে বাংলাদেশকে ধাপে ধাপে একটি জঙ্গি রাষ্ট্রে রূপান্তর করা যায়?

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
সোশ্যাল মিডিয়া ‘টেস্ট’-এ পাস হলে তবেই মিলবে আমেরিকার ভিসা এসএসসি ও সমমান: কমেছে পাসের হার ও জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থী রাজশাহী বোর্ডে কমেছে পাসের হার ও জিপিএ-৫ এসএসসি ও সমমান: ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শুরু শুক্রবার পাসের হারে এবারও এগিয়ে মেয়েরা জুনে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঢাকা বিভাগে শান্তিতে ট্রাম্পের নোবেল প্রাপ্তির সম্ভাবনা কতটা? পানি বাড়ছে তিস্তায়, আতঙ্কে নিম্নাঞ্চলবাসী মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৬৮.০৯ এবার এসএসসিতে জিপিএ-৫ কমল ৪৩ হাজার লাইভ ক্লাসে শিক্ষক-শিক্ষিকার চুম্বনের ভিডিও ভাইরাল পূজায় চমক নিয়ে আসছেন কৌশানী ডিগ্রী পাস ও সার্টিফিকেট কোর্স ২য় বর্ষের বৃহস্পতিবারের পরীক্ষা স্থগিত ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি একুশেই মিলবে স্টার্টআপ ঋণ, সুদ হার মাত্র ৪ শতাংশ আলিম ও কারিগরি এইচএসসির সারাদেশের পরীক্ষা স্থগিত কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের কালকের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্তকারীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র ট্রাম্পের সমালোচনার পর ইউক্রেনে রাশিয়ার রেকর্ড সংখ্যক ড্রোন হামলা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ