বাশার পতনের মাস্টারমাইন্ড কে এই জোলানি – ইউ এস বাংলা নিউজ




বাশার পতনের মাস্টারমাইন্ড কে এই জোলানি

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৯:২৭ 67 ভিউ
সিরিয়ায় শাসক হিসেবে আসাদ পরিবারের আধিপত্য স্থায়ী হয়েছে টানা পাঁচ দশকেরও বেশি। ১৯৭১ সালে দেশটির সামরিক নেতা হাফেজ আল-আসাদ ক্ষমতায় আসেন এবং এরপর প্রায় তিন দশক দেশ পরিচালনা করেন। ২০০০ সালের জুন মাসে তার মৃত্যুর পর পুত্র বাশার আল-আসাদ ক্ষমতা গ্রহণ করেন। বাশার আল-আসাদ সরকারের আধিপত্য পতনের অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছে ইসলামপন্থী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)। এইচটিএসের প্রধান আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি। রোববার ( ৮ ডিসেম্বর) এইচটিএস এক বিবৃতিতে সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের ঘোষণা দেয়। বিবৃতিতে বলা হয়, জালিম শাসক বাশার আল-আসাদ দেশ থেকে পালিয়েছেন। সিরিয়া এখন মুক্ত। এর মধ্য দিয়ে একটি অন্ধকার যুগের সমাপ্তি হলো। আর সূচনা হলো একটি

নতুন যুগের। এইচটিএসের প্রধান জোলানিকে নিয়ে মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। এই বিদ্রোহী নেতার অতীত-বর্তমান নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে তাঁর কার্যক্রমের একাল-সেকাল তুলে ধরেছে। আবু মোহাম্মদ আল-জোলানির আসল নাম আহমেদ হুসাইন আল-শারা। ১৯৮২ সালে তিনি সৌদি আরবের রিয়াদে জন্মগ্রহণ করেন। তখন তাঁর বাবা সেখানে পেট্রোলিয়াম প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করতেন। ১৯৮৯ সালে তাঁর পরিবার সিরিয়ায় ফিরে আসে। দামেস্কের অদূরে বসতি স্থাপন করে। দামেস্কে থাকাকালে জোলানি কী করতেন, তা জানা যায় না। ২০০৩ সালে সিরিয়া থেকে ইরাকে এসে তিনি আল-কায়েদায় যোগ দেন। এই বছরই ইরাকে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। তিনি সেখানে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলনে যোগ দেন। তখন

থেকে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে। ২০০৬ সালে জোলানি যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের হাতে গ্রেপ্তার হন। পাঁচ বছর আটক থাকেন। গণতন্ত্রের দাবিতে ২০১১ সালে সিরিয়ায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভ দমনে বাশার আল-আসাদ সহিংসতার পথ বেছে নেন। এর জেরে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। ২০১১ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় জোলানি ছাড়া পান। এরপর তাঁর নেতৃত্বে সিরিয়ায় আল-কায়েদার শাখা প্রতিষ্ঠা করা হয়, যা আল-নুসরা ফ্রন্ট নামে পরিচিত। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে, বিশেষত ইদলিবে শক্তিশালী হতে থাকে। প্রথম দিকের কয়েক বছর জোলানি আবু বকর আল-বাগদাদির সঙ্গে কাজ করেন। বাগদাদি ছিলেন ইরাকের ইসলামিক স্টেটের (আইএস) প্রধান। এই সশস্ত্র গোষ্ঠী পরে আইএসআইএল (আইএসআইএস) নাম ধারণ করে। ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে

বাগদাদি আকস্মিকভাবে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেন। সিরিয়ায় নিজেদের তৎপরতা বৃদ্ধিতে কাজ শুরু করেন। একটা পর্যায়ে আইএসআইএল আল-নুসরা ফ্রন্টকে বেশ ভালোভাবে নিজেদের সঙ্গে একীভূত করে ফেলে। তখনই আইএসআইএলের জন্ম হয়। জোলানি এ পরিবর্তন প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখেন। এ অবস্থায় ২০১৪ সালে আল-জাজিরাকে প্রথমবারের মতো টেলিভিশন সাক্ষাৎকার দেন জোলানি। এতে তিনি বলেছিলেন, তাঁর গোষ্ঠী ‘ইসলামিক আইনের’ যে ব্যাখ্যা দেবে, সিরিয়া সেই অনুযায়ী শাসিত হবে। তবে কয়েক বছর পর জোলানির মধ্যে পরিবর্তন আসে। তিনি আল-কায়েদার মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোয় ‘বিশ্বব্যাপী খেলাফত’ প্রতিষ্ঠার প্রকল্প থেকে সরে আসেন। এমন কিছুর পরিবর্তে সিরিয়া সীমান্তের ভেতরে নিজের গোষ্ঠীর তৎপরতা সীমাবদ্ধ করেন জোলানি। জোলানির এ পরিবর্তনকে গুরুত্বপূর্ণ

বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। তাঁরা মনে করেন, এর মধ্য দিয়ে জোলানির গোষ্ঠীটি বহুজাতিক বা আন্তদেশীয় গোষ্ঠীর বদলে একটি জাতীয় গোষ্ঠী হিসেবে আবির্ভূত হয়। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে বাশার সরকার আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নেয়। তখন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো ইদলিবের দিকে চলে যায়। সিরিয়ার এ অঞ্চল তখনো বিদ্রোহীদের দখলে। ২০১৬ সালে জোলানি প্রকাশ্যে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করার ঘোষণা দেন। পাশাপাশি আল-নুসরা বিলুপ্ত করেন। গঠন করেন নতুন সংগঠন জাভাত ফাতেহ আল-শাম। ২০১৭ সালের শুরুর দিকে আলেপ্পো থেকে হাজার হাজার যোদ্ধা ইদলিবে পালিয়ে আসেন। এ সময়ে বিদ্রোহীদের ছোট ছোট অনেক গোষ্ঠী ও নিজের জাভাত ফাতেহ আল-শাম নিয়ে এইচটিএস গঠন করেন জোলানি। এইচটিএসের ঘোষিত লক্ষ্যই ছিল বাশার আল-আসাদের স্বৈরাচারী শাসন থেকে সিরিয়াকে

মুক্ত করা। এইচটিএস আজ এই লক্ষ্য অর্জনের ঘোষণা দিল। এইচটিএসের অন্য লক্ষ্যের মধ্যে আছে—সিরিয়ায় ‘ইরানের সব সশস্ত্র গোষ্ঠীকে বিতাড়িত করা’। নিজেদের দেওয়া ‘ইসলামি আইনের’ ব্যাখ্যা অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করা। পর্যবেক্ষকদের মতে, বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘সবচেয়ে কার্যকর’ ভূমিকা পালন করেছে এইচটিএস ও এর প্রধান জোলানি।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
সন্ধ্যার মধ্যে যেসব জেলায় হতে পারে বজ্রবৃষ্টি সরকারকে এক মাসের আলটিমেটাম শিক্ষকদের ৩৩ ওষুধের দাম কমলো, ১১৬ কোটি টাকা সাশ্রয় যতীন সরকার মারা গেছেন ভারতকে পাক সেনাপ্রধানের পরমাণু যুদ্ধের হুমকি, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র এক সেঞ্চুরিতে ৮০ ধাপ উন্নতি ‘বেবি এবির’ ডেঙ্গু আরও ১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৩২৫ চ্যাটজিপিটি-৫ নিয়ে বিতর্ক, নতুন মোডে আসছে ৩ পরিবর্তন ৩ দাবিতে দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসাপ্রত্যাশীদের আন্দোলন সাগরে লঘুচাপ, ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জুলাই সনদ ও সংস্কার মানে সন্ত্রাস, হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাটের রাম রাজত্ব। রাতের আঁধারে চুপিচুপি প্রেমিকার ঘরে ঢুকে ঘুমিয়েই পড়লেন প্রেমিক! ঘুম ভাঙতেই যা ঘটল সচিবালয়ে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধসহ ৭ নির্দেশনা সুপ্রিম কোর্ট-প্রধান বিচারপতির বাসভবনের আশপাশে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ রামগতিতে ট্রলারে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ঘটনায় নিহত বেড়ে ২ নতুন আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন পুতিন, দাবি জেলেনস্কির রিয়া মনির তালাক-নোটিশ পেয়ে জানাজার দিনক্ষণ জানালেন হিরো আলম ‘আপনাকে কে বসিয়েছে তার কলিজা খুলে ফেলব’— শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যানকে বিএনপি নেতার হুমকি ‘চাঁদা তুললে পুরস্কার, ধরা পরলে বহিষ্কার ও ভাইরাল হলে গ্রেপ্তার’ এইবার আর চুপ নয় সমস্ত শক্তি দিয়ে দাঁড়িপাল্লার পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাব: কৃষ্ণা বালা রানী