পাহাড়ে ফলের নতুন ভান্ডার – ইউ এস বাংলা নিউজ




পাহাড়ে ফলের নতুন ভান্ডার

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৬ জুলাই, ২০২৫ | ৯:৫৯ 22 ভিউ
বান্দরবান শহর থেকে নীলগিরির পথে গাড়িতে এগোলে পাহাড়ের ঢালে দেখা মেলে সারি সারি আম, ড্রাগন, লেবু, আপেল কুলসহ নানান ফলের গাছ। একের পর এক আনারসের সারি পাহাড়ের চেনা চেহারায় এনে দিয়েছে রঙিন পরিবর্তন। কেবল পাহাড়ের চূড়া আর খাঁজ নয়, আঁকাবাঁকা পথের ধারে বিক্রির জন্য স্তূপ করে রাখা হয়েছে ফল। উঁচু-নিচু ঢালে এতদিন ধরে কেবল জুমচাষ করে আসা মানুষের চোখে এ যেন বড় বিপ্লব। একসময় যারা পেটে-ভাতে চলতেন, এখন তাদের অনেকেই বছরে আয় করছেন লাখ লাখ টাকা। বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি– তিন পার্বত্য জেলা এখন দেশের অন্যতম ফলভান্ডারে পরিণত হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এই তিন জেলায় ৪০ হাজারের বেশি চাষি

এখন ফল চাষে জড়িত। তাদের হাত ধরে পাহাড়ি এলাকায় আম, কলা, কাঁঠাল, পেঁপে, আনারস, কমলাসহ ৪৪ জাতের ফল উৎপাদন হচ্ছে। উৎপাদিত ফলের পরিমাণ প্রায় ১৯ লাখ টন, যা সারাদেশের মোট উৎপাদনের প্রায় ১৫ শতাংশ। ফল চাষি, কৃষিবিদ, ব্যবসায়ী ও সাধারণ ভোক্তাদের মতে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় পার্বত্য চট্টগ্রামে ফল চাষ বাড়ছে। বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ের ঢালে শত বছরের পুরোনো বসন্ত ম্রোপাড়ার বাসিন্দা তোয়ো ম্রো সনাতন জুমচাষের অভ্যাস পাল্টে দিয়েছেন। এই পাড়ায় তোয়ো ম্রো শুধু নিজেই ফলের বাগান করেননি, আশপাশের কৃষকদেরও উদ্বুদ্ধ করেছেন। চিম্বুক পাহাড়ের ম্রোলাং থেকে থানচি পর্যন্ত প্রায় ৪০টি ম্রোপাড়ায় এখন আম, কাঁঠাল, পেঁপে, কমলা,

আনারস ও ড্রাগনের বাগান। এখানে আগে শতভাগ মানুষ ছিলেন জুমচাষি। এখন তাদের ৭০ শতাংশই ফল বাগানি। স্থানীয় চাষিদের সংগঠন চিম্বুক ফল চাষি সমবায় সমিতির সভাপতি পাসিং ম্রো বললেন, জুমচাষ আর টিকে থাকার উপায় ছিল না। বাগান আমাদের নতুন জীবন দিয়েছে। পাহাড়ি জনপদের কৃষির এই দ্রুত রূপান্তর এখন শুধু স্থানীয় নয়, দেশের বৃহত্তর কৃষির অংশ হয়ে উঠেছে। রাঙামাটির নানিয়ারচরের ঘিলাছড়িতে কমলা বাগান করেছেন নির্মল চাকমা। তিনি ১৮ হাজার কমলার চারা রোপণ করেছেন। খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে ৪০ একরের বাগান করেছেন লাচিমং। তিনি আম, ড্রাগন, আনারস ও মাল্টা চাষ করে পেয়েছেন কৃষি পুরস্কার। বান্দরবান শহরের বাজারে গেলে দেখা মেলে রাস্তার পাশে স্তূপ করে রাখা আনারসের সারি।

সম্প্রতি সেখানেই দেখা মিলল বাগানি এফেন চাকমার। তাঁর বাগানে ১৪ হাজার আনারস গাছ। সেগুলো থেকে ফল তুলে নিয়ে এসেছেন বিক্রির জন্য। ব্যাপারীরা আসেন চট্টগ্রাম থেকে। প্রতি ১০০ আনারস ৮০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বান্দরবানের নীলাচল এলাকায় দেখা গেল বাগান থেকে তোলা ড্রাগন রাস্তার পাশে স্তূপ করছেন চাষি নির্মল চাকমা। ১৮ হাজার চারা লাগিয়েছেন তিনি। এখন ফলন ভালো, বিক্রিও ভালো, লাভও হচ্ছে। খাগড়াছড়ির মহালছড়ির চাষি লাচিমং একসঙ্গে আম, আনারস, ড্রাগন ও মাল্টা চাষ করছেন ৪০ একরের বাগানে। এ বছর তাঁর ড্রাগন ও মাল্টা বাগানে এসেছে প্রচুর ফল। তিনি বলেন, পাহাড়ে প্রতিবছর বাগান যেমন বাড়ছে, তেমনি ফলের বৈচিত্র্যও বাড়ছে। নতুন

নতুন অপ্রচলিত ফলেও আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। শুধু প্রচলিত ফল নয়, পাহাড়ে এখন চাষ হচ্ছে রাম্বুটান, সফেদা, বল সুন্দরী কুল, কাজুবাদাম, কফি, লটকন ও মাল্টা। এ অঞ্চলে উৎপাদিত ফল এখন যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের নানা শহরের বাজারে। এমনকি কিছু ফল বিদেশে রপ্তানিরও উদ্যোগ চলছে। পাহাড়ি মাটি যে এত উর্বর, তা এখন আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে ফলের বাম্পার ফলনে। গত অর্থবছরে তিন জেলায় শুধু কুল উৎপাদন হয়েছে ২১ হাজার টন। আর কাজুবাদাম হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৮৭৪ টন। এই রূপান্তরের পেছনে রয়েছে সরকারের কয়েকটি বড় কৃষি প্রকল্প। ‘কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প’-এর মাধ্যমে এখন কাজুবাদাম চাষ ছড়িয়ে পড়ছে বান্দরবান ও

রাঙামাটিতে। এ ছাড়া বছরব্যাপী ফল উৎপাদন প্রকল্পও গত ১০ বছর পাহাড়ে ফল চাষ সম্প্রসারণে কাজ করেছে। প্রকল্পটি বান্দরবানের বালাঘাটা হর্টিকালচার সেন্টারে স্থাপন করেছে কাজুবাদাম প্রক্রিয়াজাত কারখানা। এই কারখানায় কিষাণঘর এগ্রো নামে একটি প্রতিষ্ঠান বছরে ১০-১২ লাখ টাকার কাজুবাদাম প্রক্রিয়াজাত করে বিক্রি করছে। আরও বড় পরিকল্পনা নিয়ে বান্দরবানে স্থাপন হচ্ছে বিশ্বমানের টিস্যুকালচার ল্যাব। এই ল্যাব থেকে উন্নত ও রোগমুক্ত ফলের চারা সরবরাহ শুরু হলে পাহাড়ি কৃষিতে আরও বৈচিত্র্য ও গতি আসবে বলে আশা কৃষি কর্মকর্তাদের। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, তিন পার্বত্য জেলায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আম ২ লাখ টন, আনারস ২ লাখ টন ও পেঁপে ১ লাখ ৮১ হাজার টন উৎপাদন হয়। গত

অর্থবছরে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি মূল্যের ফল বিক্রি হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বান্দরবানের উপপরিচালক এমএম শাহ্ নেয়াজ বলেন, ফলের উৎপাদন দিন দিন বেড়েই চলছে। পাহাড়ে নিত্যনতুন ফলের আবাদ হচ্ছে। পাহাড়ের মাটি অত্যন্ত উর্বর। যার সুফল পাওয়া যাচ্ছে নানা ধরনের ফল চাষে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
যেভাবে কোলেস্টেরল কমাবেন ঐকমত্য না হওয়ায় সংসদের উচ্চকক্ষই বাদের চিন্তা সকল দায় ঢাকার ওপর চাপাতে চায় জাতিসংঘ ‘কোথায় থাকব, কে আশ্রয় দেবে জানি না’ সিরিজ জয়ে চোখ বাংলাদেশের চাকরি জীবনে একবার গুরুদণ্ড পেলে ওসি হতে পারবেন না পাহাড়ে ফলের নতুন ভান্ডার সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের বাড়ি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ভারতের মোহাম্মদপুরের গ্যাং প্রধানসহ গ্রেপ্তার ৪২ সৌদিতে নারী যাত্রীদের জন্য বিশেষ সেবা আনছে উবার নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে গত মাসে ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে জয়ী হয়েছেন জোহরান মামদানি। এটি শহরটির অনেক মানুষের জন্য আনন্দের খবর হলেও কপালে উদ্বেগের ভাঁজ পড়েছে আবাসন ব্যাবসায়ীদের। তারা ক্ষতির ঝুঁকি দেখছেন। এরই মধ্যে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন খাতসংশ্লিষ্ট অনেকে। তারা বলছেন, পরিবর্তনশীল এ সময়ে গ্রাহকরা ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না; তারা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। নিউইয়র্কে আবাসন ব্যবসার ব্রোকার জে বাত্রা জানান, তাঁর ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ম্যানহাটানে লাখ লাখ ডলারের সম্পত্তির দুই পৃথক ক্লায়েন্ট বাত্রাকে জানিয়েছেন, তারা নিউইয়র্কের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে লেনদেন করতে চান। বাত্রার উদ্ধৃতি দিয়ে গতকাল সোমবার সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক ধনী ও বিলাসবহুল ক্রেতা একটু বেশি সতর্ক হয়ে উঠেছেন। মামদানি যত বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করছেন, ততই তাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। অনেককে বলতে শোনা যাচ্ছে– ‘হায়, শহরটি কোথায় যাচ্ছে!’ ৩৩ বছর বয়সী গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক মামদানি গত জুনের শেষ দিকে নিউইয়র্কের মেয়র প্রাইমারিতে জয়লাভ করেন। এর পর থেকে বেশ কয়েকজন পেশাদার আবাসন ব্যবসায়ী সিএনএনকে জানান, উচ্চস্তরের ক্রেতারা তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ বন্ধ করতে শুরু করেছেন। মামদানির প্রস্তাবিত নীতিগুলোর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে অনিশ্চিত। তারা আরও বলেন, মামদানির জয়ের ফলে তাঁর রাজনীতির সঙ্গে একমত না হওয়া নিউইয়র্কের কিছু ধনী বাসিন্দা শহর ত্যাগের পরিকল্পনা ত্বরান্বিত করেছেন। মামদানি ১০ লাখ ডলারের বেশি আয়কারী নিউইয়র্কের বাসিন্দাদের ওপর ২ শতাংশ হারে কর আরোপের প্রস্তাব করেছেন। তাঁর কাছে আবাসন প্রস্তাবের একটি তালিকাও আছে, যার মধ্যে রয়েছে– ভাড়া স্থির করার প্রতিশ্রুতি, ব্যাপক পাবলিক হাউজিং নির্মাণ ও সংস্কার এবং কঠোর তদারকি। মার্কিন গণমাধ্যমটি বলছে, মামদানি মেয়র হলেও তাঁর প্রস্তাবগুলো বাস্তবে পরিণত নাও হতে পারে। এর অনেক কারণ রয়েছে। তবুও তাঁর প্রাথমিক জয় বাত্রার কিছু ক্লায়েন্টকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। কেউই আসলে তাদের কর বাড়ুক, এমনটা চান না। নিউইয়র্ক সিটি বিশ্বের অন্যতম বিলাসবহুল আবাসন বাজারের আবাসস্থল। এটি এমন একটি জায়গা, যেখানে ঝলমলে বিলাসবহুল টাওয়ারের লোকেরা শ্রমিক শ্রেণির বাসিন্দাদের পাশাপাশি বাস করেন। এ শ্রমজীবী শ্রেণির মানুষ ক্রমবর্ধমান ভাড়া ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে তাল মেলাতে লড়াই করছেন। শহরের আবাসন খাতের অবস্থা চরম। নিউইয়র্ক শহরের আপার ইস্ট সাইড এলাকার বাসিন্দাদের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ যাচাই করে সিএনএন জানাতে পেরেছে, ওই এলাকার বাসিন্দারা বেনামে মামদানির প্রাথমিক জয়ের পর শহর ছেড়ে যাওয়ার সম্ভাব্য পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু এখনও এসব গল্প কাল্পনিক। যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক ফল পছন্দ না হলে স্থানান্তরিত হওয়ার হুমকি দেওয়ার একটি দীর্ঘকালীন ঐতিহ্য রয়েছে। মামদানির আবাসন ও অর্থনৈতিক প্রস্তাবগুলো এমন এক সময়ে এসেছে, যখন নিউইয়র্কের ভাড়া ক্রমাগত বাড়ছে। রিয়েলেটর ডটকমের মতে, এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে শহরে গড় চাওয়া ভাড়া ছিল ৩ হাজার ৩৯৭ ডলার, যা এক বছরের আগের তুলনায় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। এটা ২০২০ সালের শুরু থেকে ১৮ শতাংশ বেশি। বাত্রা জানান, কিছু ক্লায়েন্ট যারা ভাড়া আয়ের জন্য ছোট অ্যাপার্টমেন্ট ভবন কেনার পরিকল্পনা করছিলেন, তারা এখন প্রস্তাবিত ভাড়া স্থগিত করার কারণে পুনর্বিবেচনা করছেন। নিউইয়র্কের এ পরিস্থিতির সুবিধা পেতে পারে যুক্তরাষ্ট্রেরই ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য। সেখানে আবাসন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অনেকে জানিয়েছেন, নিউইয়র্ক ছেড়ে আবারও ফ্লোরিডায় আসতে পারেন অনেকে। এমনটাই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। মামদানির জয়ে নিউইয়র্কের আবাসন খাতে আতঙ্ক ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিতে বিভক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন একই অভিযোগে এনবিআরের আরও ৬ কর্মকর্তা বরখাস্ত শান্তির হ্যাটট্রিকে দুই ভেন্যুর ম্যাচে বাংলাদেশের দুর্দান্ত জয় জবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা দিলেন শিক্ষার্থীরা মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সুখবর কেন ইমাম হুসাইনের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন হিন্দুরা? সরাসরি কাবার ওপর সূর্য, বিরল মহাজাগতিক ঘটনা গাড়ি থামিয়ে ঘুষের অভিযোগ, ওসিসহ ৬ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার