ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর
ক্ষমতার মোহ নয়, সাধারণ মানুষের হৃদয়েই থাকতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু: ড. কামাল হোসেন
৫ ডিসেম্বর ১৯৬৯: ‘পূর্ব পাকিস্তান’ নাম মুছে যেভাবে ‘বাংলাদেশ’ নাম দিলেন বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ইইউ পার্লামেন্ট সদস্যের সাথে ‘হ্যান্ড ইন হ্যান্ড ফাউন্ডেশন’-এর বৈঠক
‘বালের বিজয় দিবস’ মন্তব্যের জেরে ইলিয়াসকে ‘স্টুপিড’, ‘শুয়োরের বাচ্চা’, ‘বেজন্মা’ বললেন আম জনতা দলের তারেক
ক্ষমতার মোহ নয়, সাধারণ মানুষের হৃদয়েই থাকতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু: ড. কামাল হোসেন
শাসক বঙ্গবন্ধু: ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে এক রাষ্ট্রনির্মাতার উপাখ্যান
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড ‘সাংবিধানিক প্রহসন’, সংবিধানের ওপর আঘাত: ফার্স্টপোস্টের প্রতিবেদন
তারেক জিয়ার হাত ধরেই বাংলাদেশে প্রতিহিংসার রাজনীতির উত্থান: একটি অন্ধকার অধ্যায়ের বিশ্লেষণ
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ২০০১ সালকে একটি বড় ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে তা উন্নয়নের জন্য নয়, বরং রাজনীতিতে সহনশীলতার কবর রচনা এবং প্রতিহিংসার রাজনীতির ভয়াবহ উত্থানের জন্য। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর তার জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক জিয়ার প্রত্যক্ষ মদদেই দেশের রাজনীতিতে এক কালো অধ্যায়ের সূচনা হয়। প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার পরিবর্তে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার যে সংস্কৃতি চালু হয়েছিল, তার মূল কারিগর হিসেবে বারবার উঠে এসেছে তারেক জিয়ার নাম।
২০০১ পরবর্তী তান্ডব ও সহনশীলতার পতন
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকার দেশ পরিচালনা করে এবং মেয়াদ শেষে শান্তিপূর্ণভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা
হস্তান্তর করে, যা ছিল দেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে একটি সুন্দর দৃষ্টান্ত। কিন্তু ২০০১ সালের ১লা অক্টোবরি নির্বাচনের পর দৃশ্যপট সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই সারাদেশে বিরোধী দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নেমে আসে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন। তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত বিরোধী মত দমনে যে ‘ক্র্যাকডাউন’ চালানো হয়, তার নেপথ্য নির্দেশদাতা হিসেবে তারেক জিয়ার নাম উঠে আসে। রাজনৈতিক শিষ্টাচার বর্জন করে তিনি রাজনীতিতে ‘প্রতিহিংসা’ ও ‘দমন-পীড়ন’কে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেন। হাওয়া ভবন: ক্ষমতার বিকল্প কেন্দ্রবিন্দু ও দুর্নীতির আখড়া তারেক জিয়ার নেতৃত্বে বনানীর ‘হাওয়া ভবন’ হয়ে ওঠে ক্ষমতার বিকল্প কেন্দ্রবিন্দু। সরকারের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে
রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সব কাজ এখান থেকেই নিয়ন্ত্রিত হতো। তারেক জিয়ার এই ‘ছায়া সরকার’ বা প্যারালাল গভর্নমেন্ট ব্যবস্থা দেশের স্বাভাবিক চেইন অব কমান্ড ভেঙে দেয়। হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। ‘টেন পারসেন্ট কমিশন’ থেকে শুরু করে নিয়োগ বাণিজ্য, বদলি এবং বড় বড় টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুই হতো তারেক জিয়ার ইশারায়। বিদ্যুতের খাম্বা বসিয়ে বিদ্যুৎ না দেওয়া এবং হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা ছিল ওই সময়ের দুর্নীতির প্রতীক। তারেক রহমান ও তার বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগও পরবর্তীতে এফবিআই-এর তদন্তে প্রমাণিত হয়। ২১শে আগস্ট: প্রতিহিংসার রাজনীতির চূড়ান্ত রূপ তারেক জিয়ার প্রতিহিংসার রাজনীতির সবচেয়ে ভয়াবহ ও নৃশংস রূপ দেখা যায় ২০০৪ সালের
২১শে আগস্ট। বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়, যার মূল লক্ষ্য ছিল তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করা এবং আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করা। তদন্তে বেরিয়ে আসে যে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে এই হামলার নীল নকশা তৈরি করা হয়েছিল হাওয়া ভবনে বসেই। জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হত্যা করার এমন নজির বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল। এই হামলায় আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন। আদালত পরবর্তীতে এই মামলায় তারেক জিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং মৃত্যুদণ্ডসহ একাধিক রায় প্রদান করে, যা তার সরাসরি সম্পৃক্ততাকে প্রমাণ করে। বিরোধী নেতা হত্যা ও জঙ্গিবাদের উত্থান শুধু ২১শে আগস্ট নয়, তারেক জিয়ার প্রভাবাধীন সময়েই আহসানউল্লাহ মাস্টার
এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার মতো সজ্জন রাজনীতিবিদদের হত্যা করা হয়। এছাড়া বাংলা ভাই ও শায়খ আবদুর রহমানের মতো জঙ্গি নেতাদের উত্থান ঘটে, যারা প্রকাশ্যে মহড়া দেওয়ার সাহস পেয়েছিল তৎকালীন প্রশাসনের পরোক্ষ মদদে। ১০ ট্রাক অস্ত্র চালানের ঘটনা প্রমাণ করে যে, রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক চোরাচালান ও প্রতিবেশী দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির জঘন্য খেলায় মেতেছিল তৎকালীন ক্ষমতাধররা। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বিতর্কিতকরণ ও বিচার বিভাগ দলীয়করণ ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে এবং একতরফা নির্বাচনের পথ সুগম করতে তারেক জিয়ার পরিকল্পনায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করা হয়। বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা বাড়িয়ে পছন্দসই ব্যক্তিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করার অপচেষ্টা চালানো হয়, যা দেশকে চরম রাজনৈতিক সংকটের
দিকে ঠেলে দেয়। দলীয় বিবেচনায় বিচারক নিয়োগ এবং প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে দলীয়করণের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ রুদ্ধ করা হয়। বিশ্লেষকরা মনে করেন, নব্বইয়ের দশকের শুরুতে এবং পরবর্তীতে ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত রাজনীতিতে যেটুকু পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহনশীলতা ছিল, তা তারেক জিয়ার আগ্রাসী ও নোংরা রাজনীতির কারণে ধ্বংস হয়ে যায়। দুর্নীতি, লুটপাট, রাষ্ট্রীয় মদদে সন্ত্রাস এবং বিরোধী দল নির্মূলের যে মডেল তিনি স্থাপন করেছিলেন, তা বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি করেছে। আজকের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে এটা স্পষ্ট যে, তারেক জিয়ার হাত ধরেই রাজনীতিতে নীতি-নৈতিকতার বিসর্জন ঘটে এবং প্রতিহিংসার দাবানল ছড়িয়ে পড়ে।
হস্তান্তর করে, যা ছিল দেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে একটি সুন্দর দৃষ্টান্ত। কিন্তু ২০০১ সালের ১লা অক্টোবরি নির্বাচনের পর দৃশ্যপট সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই সারাদেশে বিরোধী দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নেমে আসে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন। তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত বিরোধী মত দমনে যে ‘ক্র্যাকডাউন’ চালানো হয়, তার নেপথ্য নির্দেশদাতা হিসেবে তারেক জিয়ার নাম উঠে আসে। রাজনৈতিক শিষ্টাচার বর্জন করে তিনি রাজনীতিতে ‘প্রতিহিংসা’ ও ‘দমন-পীড়ন’কে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেন। হাওয়া ভবন: ক্ষমতার বিকল্প কেন্দ্রবিন্দু ও দুর্নীতির আখড়া তারেক জিয়ার নেতৃত্বে বনানীর ‘হাওয়া ভবন’ হয়ে ওঠে ক্ষমতার বিকল্প কেন্দ্রবিন্দু। সরকারের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে
রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সব কাজ এখান থেকেই নিয়ন্ত্রিত হতো। তারেক জিয়ার এই ‘ছায়া সরকার’ বা প্যারালাল গভর্নমেন্ট ব্যবস্থা দেশের স্বাভাবিক চেইন অব কমান্ড ভেঙে দেয়। হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। ‘টেন পারসেন্ট কমিশন’ থেকে শুরু করে নিয়োগ বাণিজ্য, বদলি এবং বড় বড় টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুই হতো তারেক জিয়ার ইশারায়। বিদ্যুতের খাম্বা বসিয়ে বিদ্যুৎ না দেওয়া এবং হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা ছিল ওই সময়ের দুর্নীতির প্রতীক। তারেক রহমান ও তার বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগও পরবর্তীতে এফবিআই-এর তদন্তে প্রমাণিত হয়। ২১শে আগস্ট: প্রতিহিংসার রাজনীতির চূড়ান্ত রূপ তারেক জিয়ার প্রতিহিংসার রাজনীতির সবচেয়ে ভয়াবহ ও নৃশংস রূপ দেখা যায় ২০০৪ সালের
২১শে আগস্ট। বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়, যার মূল লক্ষ্য ছিল তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করা এবং আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করা। তদন্তে বেরিয়ে আসে যে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে এই হামলার নীল নকশা তৈরি করা হয়েছিল হাওয়া ভবনে বসেই। জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হত্যা করার এমন নজির বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল। এই হামলায় আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন। আদালত পরবর্তীতে এই মামলায় তারেক জিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং মৃত্যুদণ্ডসহ একাধিক রায় প্রদান করে, যা তার সরাসরি সম্পৃক্ততাকে প্রমাণ করে। বিরোধী নেতা হত্যা ও জঙ্গিবাদের উত্থান শুধু ২১শে আগস্ট নয়, তারেক জিয়ার প্রভাবাধীন সময়েই আহসানউল্লাহ মাস্টার
এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার মতো সজ্জন রাজনীতিবিদদের হত্যা করা হয়। এছাড়া বাংলা ভাই ও শায়খ আবদুর রহমানের মতো জঙ্গি নেতাদের উত্থান ঘটে, যারা প্রকাশ্যে মহড়া দেওয়ার সাহস পেয়েছিল তৎকালীন প্রশাসনের পরোক্ষ মদদে। ১০ ট্রাক অস্ত্র চালানের ঘটনা প্রমাণ করে যে, রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক চোরাচালান ও প্রতিবেশী দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির জঘন্য খেলায় মেতেছিল তৎকালীন ক্ষমতাধররা। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বিতর্কিতকরণ ও বিচার বিভাগ দলীয়করণ ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে এবং একতরফা নির্বাচনের পথ সুগম করতে তারেক জিয়ার পরিকল্পনায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করা হয়। বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা বাড়িয়ে পছন্দসই ব্যক্তিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করার অপচেষ্টা চালানো হয়, যা দেশকে চরম রাজনৈতিক সংকটের
দিকে ঠেলে দেয়। দলীয় বিবেচনায় বিচারক নিয়োগ এবং প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে দলীয়করণের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ রুদ্ধ করা হয়। বিশ্লেষকরা মনে করেন, নব্বইয়ের দশকের শুরুতে এবং পরবর্তীতে ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত রাজনীতিতে যেটুকু পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহনশীলতা ছিল, তা তারেক জিয়ার আগ্রাসী ও নোংরা রাজনীতির কারণে ধ্বংস হয়ে যায়। দুর্নীতি, লুটপাট, রাষ্ট্রীয় মদদে সন্ত্রাস এবং বিরোধী দল নির্মূলের যে মডেল তিনি স্থাপন করেছিলেন, তা বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি করেছে। আজকের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে এটা স্পষ্ট যে, তারেক জিয়ার হাত ধরেই রাজনীতিতে নীতি-নৈতিকতার বিসর্জন ঘটে এবং প্রতিহিংসার দাবানল ছড়িয়ে পড়ে।



