ট্রাম্পের শুল্কে ওলটপালটের শঙ্কা বিশ্ব অর্থনীতির – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আপডেটঃ ৪ এপ্রিল, ২০২৫
     ৯:১০ পূর্বাহ্ণ

ট্রাম্পের শুল্কে ওলটপালটের শঙ্কা বিশ্ব অর্থনীতির

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৪ এপ্রিল, ২০২৫ | ৯:১০ 70 ভিউ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটিতে আমদানি করা সমস্ত পণ্যের ওপর নতুন করে ব্যাপক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। গত বুধবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, সব বাণিজ্যিক অংশীদার দেশের ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্কারোপ করা হয়েছে, যা কিছু ক্ষেত্রে আরও বেশি হতে পারে। অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত বিশ্ববাজারে অস্থিরতা তৈরি করবে এবং বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলবে। এমনকি, বিশ্বব্যাপী কয়েক দশক ধরে চলে আসা মুক্ত বাণিজ্যের যুগের সমাপ্তিও দেখতে পাচ্ছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এখনও করোনা মহামারীপরবর্তী মূল্যস্ফীতির ধাক্কা সামলে পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বিশ^ অর্থনীতি, সেখানে এই শুল্ক আরোপ বিশ^ব্যাপী মূল্যস্ফীতিকে আরও উসকে দেবে এবং মন্দার

আশঙ্কাও বাড়িয়ে তুলবে। ফিচ রেটিংসের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্পের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের কার্যকর আমদানি করের হার ২০২৪ সালের মাত্র ২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ২২ শতাংশে পৌঁছেছে, যা শেষবার ১৯১০ সালের আশপাশে দেখা গিয়েছিল। বিনিয়োগকারীরা এই ঘোষণার পর শেয়ারবাজারে ব্যাপক ধস দেখেছেন; বিশেষ করে বেইজিং, টোকিও ও ইউরোপীয় বাজারে বড় পতন লক্ষ করা গেছে। জার্মানি, যা ইউরোপের অন্যতম প্রধান রপ্তানিকারক, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে এবং পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ওপর ৫৪ শতাংশ শুল্কের মুখোমুখি হওয়া বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতি চীনের। ইইউ প্রধান উরসুলা ভন ডার লেয়েন বলেছেন, এর পরিণতি

বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের জন্য ভয়াবহ হতে পারে। ২৭ সদস্যের এই জোট যদি ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনায় ব্যর্থ হয়, তবে তারা পাল্টা ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্ররাও এই নীতির বিরোধিতা করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর ২০ শতাংশ, জাপানের ওপর ২৪ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর ২৫ শতাংশ এবং তাইওয়ানের ওপর ৩২ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে। এমনকি কিছু ছোট অঞ্চল ও জনবসতিহীন দ্বীপও এই শুল্কের আওতায় পড়েছে। এর আগে ট্রাম্প ২৫ শতাংশ হারে গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশের ওপর শুল্ক নিশ্চিত করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, ‘এটি বন্ধুত্বপূর্ণ কোনো পদক্ষেপ নয়। এই নীতির কোনো যুক্তিসঙ্গত ভিত্তি নেই এবং এটি আমাদের অংশীদারত্বের মূল

নীতির পরিপন্থি।’ তবে ট্রাম্প দাবি করেছেন, নতুন শুল্ক দেশীয় উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিভিন্ন দেশ দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘লুট’ করেছে। অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেছেন যে, এই শুল্কনীতি বৈশ্বিক অর্থনীতির গতি কমিয়ে দিতে পারে এবং গড় আমেরিকান পরিবারের জীবনযাত্রার ব্যয় কয়েক হাজার ডলার পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের দুটি বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার কানাডা ও মেক্সিকো ইতোমধ্যে অনেক পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কের সম্মুখীন হয়েছে। যদিও গত বুধবারের ঘোষণার ফলে তাদের ওপর নতুন করে কোনো শুল্ক আরোপ করা হয়নি। দে’ভেরে গ্রুপের সিইও নাইজেল গ্রিন বলেছেন, ‘এভাবে আপনি বিশ্ব অর্থনীতির ইঞ্জিন ধ্বংস করছেন, অথচ দাবি করছেন যে এটিকে আরও

গতিশীল করবেন। এই শুল্কনীতি অসংখ্য নিত্যপণ্যের মূল্য বাড়াবে এবং মূল্যস্ফীতিও আরও বাড়াবে।’ হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, কিছু নির্দিষ্ট পণ্য, যেমন- তামা, ওষুধ, সেমিকন্ডাক্টর, কাঠ, স্বর্ণ ও জ্বালানি এই শুল্কের আওতামুক্ত থাকবে। তবে চীন থেকে আসা কম মূল্যমানের পণ্যের ক্ষেত্রে ‘ডি মিনিমিস’ নীতির আওতায় থাকা শুল্কমুক্ত সুবিধা ২ মে থেকে বাতিল করা হবে। এই নীতির আওতায় চীন থেকে কম মূল্যমানের পণ্য (যেগুলোর দাম ৮০০ ডলার বা তার কম) শুল্কমুক্তভাবে পাঠানো যেত। বিশ্বব্যাপী এই শুল্কনীতি কার্যকর হওয়ার ফলে উৎপাদন কার্যক্রম মন্থর হয়ে যেতে পারে এবং সরবরাহ শৃঙ্খল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভোক্তারা মূল্য বৃদ্ধির আশঙ্কায় গাড়ি ও অন্যান্য আমদানি করা পণ্য কেনার জন্য তাড়াহুড়া করছেন। ফলে ব্যবসায়ীরা

নতুন কৌশল নির্ধারণ করতে বাধ্য হবেন, যদিও ভোক্তাদের জন্য তা বিশেষ সুবিধাজনক হবে না। ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরু বলেন, ‘এটি ইউরোপের জন্য বিরাট সংকট এবং আমি মনে করি, এটি যুক্তরাষ্ট্র ও আমেরিকান নাগরিকদের জন্যও একটি বিপর্যয়।’ বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হতে পারে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র যে মুক্তবাণিজ্য ব্যবস্থার নেতৃত্ব দিয়েছে, ট্রাম্পের নীতি সেটির স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে। নোমুরা রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান অর্থনীতিবিদ তাকাহিদে কিউচি বলেন, এই নীতির ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি অনিশ্চয়তা তৈরি হবে। মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়ে পড়বে। আগামী কয়েক মাসে ট্রাম্পের ঘোষিত শুল্কনীতির বাস্তব প্রভাব সরাসরি

মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রকাশ পাবে, যা ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এখনই বৈশ্বিক মন্দার আশঙ্কা না করলেও তারা ২০২৫ সালের বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস সামান্য কমিয়ে (৩ দশমিক ৩ শতাংশ) সংশোধন করতে পারে বলে জানিয়েছে। নতুন শুল্কের প্রভাব বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে এক রকম হবে না। কারণ শুল্কহার দেশভেদে আলাদা। যেমন- যুক্তরাজ্যের জন্য এটি ১০ শতাংশ এবং কম্বোডিয়ার জন্য ৪৯ শতাংশ। যদি এর ফলে বড় পরিসরে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়, তবে এটি উৎপাদনশীল দেশগুলোর জন্য সমস্যার কারণ হতে পারে, বিশেষত চীনের জন্য। ক্রেতাদের চাহিদা কমে গেলে চীনকে নতুন বাজার খুঁজতে হতে পারে। আর যদি এই শুল্কনীতি যুক্তরাষ্ট্রকে মন্দার দিকে ঠেলে দেয়, তবে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপরও এর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। কারণ তাদের অর্থনীতি বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির সঙ্গে নিবিড়ভাবে সংযুক্ত। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারগুলোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। দীর্ঘকাল ধরে যে সরবরাহ শৃঙ্খল বিশ্বব্যাপী ভোক্তাদের জন্য মূল্য নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল, তা ভেঙে পড়বে। এর ফলে মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি থাকতে পারে, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকারদের জন্য কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। বিশেষ করে, জাপান এই অবস্থায় একটি জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে। কারণ তাদের একদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ মোকাবিলা করতে সুদের হার বাড়ানোর প্রয়োজন হবে, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের কারণে তাদের রপ্তানিভিত্তিক অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশ্ব অর্থনীতির দুর্বল প্রবৃদ্ধির ফলে সরকারগুলোর জন্য রেকর্ড পরিমাণ বৈশ্বিক ঋণ পরিশোধ করাও কঠিন হয়ে উঠতে পারে। পাশাপাশি প্রতিরক্ষা ব্যয়, জলবায়ু কর্মসূচি এবং সামাজিক সুরক্ষা খাতে অর্থায়নও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
অবৈধ আইসিটি ট্রাইব্যুনালের প্রহসনমূলক বিচারের রায় প্রত্যাখ্যান করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ১৮ নভেম্বর : সারা দেশে সর্বাত্মক শাটডাউন The political Lens By RP Station মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ক্যাঙ্গারু কোর্টের রায় প্রত্যাখ্যান ও দখলদার ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকারের পদত্যাগ অবধি দুর্বার আন্দোলনের ঘোষণা স্বেচ্ছাসেবক লীগের। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও প্রহসনমূলক মামলার সাজানো রায় প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০১ প্রগতিশীল শিক্ষকবৃন্দ আইসিটির দেওয়া রায় প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিবৃতি অবৈধ ট্রাইব্যুনালকে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ ঘৃণাভরে তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। ওয়ার্কার্স পার্টির কার্যালয় দখলের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিবৃতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দের বিবৃতি তথাকথিত বেআইনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) কর্তৃক প্রদত্ত রায় প্রত্যাখ্যান করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিবৃতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘প্রহসনমূলক’ বিচার : বিদেশে অবস্থানরত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের চিকিৎসকদের তীব্র নিন্দা ১০২ জন সাংবাদিকের যৌথ বিবৃতি প্রেস বিজ্ঞপ্তি বাংলাদেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চলমান প্রহসনমূলক বিচার এর প্রেক্ষিতে দেশে বিদেশে অবস্থানরত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ১০০ জন চিকিৎসকের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ ইউনুসের পুলিশের হাতে খুন হলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নতুন বাংলাদেশের অসহায় বাস্তবতা রাতেও ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বিক্ষোভ ধানমন্ডি ২৭-এ পরপর দুটি ককটেল বিস্ফোরণ শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়: মিষ্টি বিতরণ নিয়ে বরিশালে ছাত্রদলের দুপক্ষের সংঘর্ষ, নিহত ১ শেখ হাসিনার প্রহসনমূলক বিচারের প্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ১০১ প্রকৌশলীর প্রতিবাদ রায় প্রত্যাখ্যান করল আওয়ামী লীগ, সারা দেশে শাটডাউনের ডাক শেখ হাসিনার প্রহসনমূলক বিচারের প্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ১০০ জন চিকিৎসকের প্রতিবাদ