খেলাপি ঋণ ব্যাংক খাতের প্রধান চ্যালেঞ্জ – ইউ এস বাংলা নিউজ




খেলাপি ঋণ ব্যাংক খাতের প্রধান চ্যালেঞ্জ

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১১ এপ্রিল, ২০২৫ | ৯:২৭ 15 ভিউ
বর্তমানে ব্যাংক খাতের জন্য অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে খেলাপি ঋণের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি। গত বছরের আগস্টে দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে। খেলাপি ঋণের সমস্যার সমাধান করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসাবে কিছু ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়াসহ আর্থিক খাত সংস্কারের জন্য টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশের সার্বিক হালনাগাদ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এতে ব্যাংক খাতের সার্বিক চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ডিসেম্বর শেষে তফশিলি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে,

যা মোট ঋণের ২০ দশমিক ২ শতাংশ। সেপ্টেম্বর শেষে ছিল ২ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১৭ শতাংশ। জুনে ছিল ২ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা, যা ছিল মোট ঋণের ১২ শতাংশ। জুন থেকে ডিসেম্বর-এ ছয় মাসে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার কোটি টাকা। সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ব্যাংক দখল করে নজিরবিহীন লুটপাট করা হয়েছে। লুটপাটের টাকার একটি বড় অংশ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। ফলে ওইসব ঋণ এখন আদায় হচ্ছে না। আদায় না হওয়ার কারণে ব্যাংক সেগুলোকে খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করছে। এতে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাচ্ছে। খেলাপি ঋণের এ বৃদ্ধিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ও আইএমএফ উদ্বেগজনক হিসাবে চিহ্নিত করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের সমস্যা এখন অন্যতম একটি প্রধান চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য যেসব ব্যাংকে বেশি জালজালিয়াতি হয়েছে, ওইসব ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি ব্যাংক খাতের জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। ওই টাস্কফোর্স ব্যাংক খাতকে পুনরুদ্ধার করতে কাজ করছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে চলমান সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও কয়েকটি ব্যাংকে সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থবছরের শুরুর দিকে ব্যাংকব্যবস্থায় ব্যাপক তারল্য চাপ ছিল। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত নানাবিধ পদক্ষেপ এবং বিশেষ তারল্য সহায়তার কারণে ব্যাংক খাতের সার্বিক তারল্য পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি দেখা যাচ্ছে। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, জানুয়ারি

শেষে ব্যাংকগুলোর তারল্য পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়ে অতিরিক্ত তরল সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ লাখ ৩৪ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকায়, যা সেপ্টেম্বরে ১ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকায় নেমে এসেছিল। সংকোচনমুখী মুদ্রানীতির কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী সুদের হার বাড়ানো হয়েছে। এর প্রভাবে ব্যাংক খাতে সব ধরনের আমানত ও ঋণের সুদের হারও বেড়েছে। ঋণের সুদের হার বাড়ায় এবং সংকোচনমুখী মুদ্রানীতির কারণে একদিকে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা কমেছে। অন্যদিকে আমানতের সুদের হার বাড়ায় গ্রাহকরা ব্যাংকে সঞ্চয় করতে উৎসাহিত হচ্ছেন। এছাড়া ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও জালজালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে ব্যাংক খাতের প্রতি গ্রাহকদের আস্থা কিছুটা বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেও

তারল্যের জোগান বাড়ানো হয়েছে। এসব মিলে ব্যাংক খাতে তারল্যের সংকট ধীরে ধীরে কমে আসছে। প্রতিবেদনে মূল্যস্ফীতির হার বাড়ার জন্য উচ্চ খাদ্যমূল্য, পণ্যের সরবরাহ চেইন বাধাগ্রস্ত হওয়া এবং অভ্যন্তরীণ অসম্পূর্ণ বাজার কাঠামোকে দায়ী করা হয়েছে। এসব সমস্যা উচ্চ মূল্যস্ফীতির অন্যতম প্রভাবক হিসাবে কাজ করছে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশের সার্বিক অর্থনীতি প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, অর্থনীতির উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জগুলো সামনে রেখে মাঝারি মাত্রার মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখতে কাজ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ বাজারমূল্য বিশেষত খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রেখে পণ্যমূল্যের স্তরে স্থিতিশীলতা আনয়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জরুরি ও প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন করছে। সেগুলো বাস্তবায়নের জন্যও কাজ করছে। ফলে

আগামী জুনের মধ্যে এ হার ৮ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনা সম্ভব বলে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে। এদিকে বুধবার প্রকাশিত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ডবল ডিজিটে অর্থাৎ ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন আঞ্চলিক সংঘাত, সম্ভাবনা ও সংরক্ষণবাদী বাণিজ্যব্যবস্থা দেশের অগ্রাধিকার খাতগুলোর বিকাশ বাধাগ্রস্ত করছে। এর মধ্যে রয়েছে কৃষি, রপ্তানিমুখী শিল্প, আমদানি বিকল্প শিল্প এবং কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (সিএমএসএমই) খাত। এসব খাতের বিকাশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ঋণপ্রবাহ বাড়ানোর পদক্ষপ নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে খেলাপি ঋণের ঊর্ধ্বগতির লাগাম টানার পাশাপাশি বর্তমান খেলাপি ঋণের মাত্রা হ্রাসে কার্যকর পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

এছাড়াও ব্যাংক খাতে তারল্য পরিস্থিতি স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে ফিরিয়ে আনা এবং আমানতকারীদের স্বার্থসুরক্ষা ও আস্থা পুনরুদ্ধারসহ আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের সঙ্গে সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
টিকিটে দুর্নীতি বিসিবিতে দুদকের অভিযান আজ ঢাকায় আসছে মার্কিন উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল ইরানকে পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ সম্পূর্ণভাবে বাতিল করতে হবে: মার্কিন বিশেষ দূত মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বাজেট ৫০ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা ট্রাম্পের কমছে বাজেটের আকার আতঙ্কে চলন্ত ট্রেন থেকে দম্পতির লাফ, কোলে থাকা শিশুর মৃত্যু এলডিপিতে যোগ দিচ্ছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী কেনাকাটার কুতুবরা রেলে এখনো সদর্পে স্বজনের মনমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক আয়োজনে মন ছুঁয়ে যায় দর্শকদের কৃষি গুচ্ছের ফল প্রকাশ জিলাপি খেতে চাওয়া সেই ওসি প্রত্যাহার গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, বাবা-মা ও ছেলে দগ্ধ এজলাসেই পুলিশকে মারধর, বিএনপির ৬ নেতাকর্মী আটক কুয়েট ভিসির পদত্যাগে এক দফা দাবি ঘোষণা শিক্ষার্থীদের প্রতি লিটার বোতল সয়াবিন ১৮৯ ও খোলা সয়াবিন ১৬৯ টাকা নির্ধারণ জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা… দৌলতপুরে অস্ত্রসহ ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার ভূট্টা ক্ষেতে পড়েছিল শিশুর লাশ, পরিবারের দাবি হত্যা আল-আকসা ভেঙে ‘থার্ড টেম্পল’ নির্মাণে ‘লাল গরু’ জবাই শুরু পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব ঢাকা আসছেন বুধবার, যেসব বিষয়ে আলোচনা হতে পারে