আমার ছেলে হত্যার বিচার করবে কে – ইউ এস বাংলা নিউজ




আমার ছেলে হত্যার বিচার করবে কে

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ৭:০৮ 90 ভিউ
‘আমার ছেলে যোগ দিয়েছিল ছাত্র-জনতার আন্দোলনে। তার কোনো অপরাধ ছিল না, সে অপরাধীও নয়। সবার ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সে আন্দোলন করছিল। কিন্তু পুলিশ আমার নির্দোষ ছেলেকে নির্মমভাবে গুলি করে মেরেছে। আমার ছেলে হত্যার বিচার করবে কে? কে দেবে ক্ষতিপূরণ?’ ছেলের ছবি বুকে নিয়ে আর্তনাদ করে জানতে চান শেখ রাকিবের (২৩) মা সুইটি আক্তার। বৃহস্পতিবার ছেলের একটি ছবি নিয়ে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন সন্তানহারা অসহায় মা সুইটি আক্তার। তিনি বলেন, ‘১৯ জুলাই যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের রাস্তায় ছাত্র-জনতার মিছিলে রাকিবও যোগ দিয়েছিল। তখন বিকাল ৫টা। দুপুরের দিকে রাকিব ফোন করে বলেছিল, মা আন্দোলনে যাচ্ছি, চিন্তা করিও না-মরব না, বীরের মতো

বাঁচব।’ কিন্তু বিকাল ৫টার পর পরিবারের কেউ আর রাকিবের খোঁজ পাচ্ছিলেন না। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল। বুক চাপড়ে মা বলেন, ‘আমার সন্তানসহ লাখ লাখ ছাত্র-জনতা অধিকার আদায়ে লড়াই করেছে। সেই লড়াইয়ে পাখির মতো গুলি করে তাদের মারা হয়েছে। আমার বুক খালি করা হয়েছে। আমার শূন্য বুক কে পূরণ করবে?’ এমন সব মায়ের আর্ত চিৎকারকে সম্বল করে বাংলাদেশের তরুণ কবি সাহাত হোসাইন লিখেছেন, ‘যে মায়ের চোখ, সমুদ্র শোক, কন্যার শ্বাস... সে মায়ের কোল, শূন্য আঁচল, ভরে যাবে কীসে?’ শেখ রাকিব রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোডস্থ যমুনা-বসুন্ধরা সড়কের পাশের একটি ওয়েল্ডিংয়ের দোকানে শ্রমিকের কাজ করতেন। তার গ্রামের বাড়ি ঢাকার নবাবগঞ্জের কামারখোলা চুড়াইন গ্রামে। তার বাবার নাম মো.

হুমায়ুন কবি ওরফে মিজানুর রহমান। অভাবের সংসারে রাকিব ছিলেন অন্যতম অবলম্বন। শ্রমিকের কাজ করে তিনি পরিবারকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করতেন। এখন রাকিব নেই, আর্থিক টানাপড়েনে চলছে তাদের সংসার। সুইটি আক্তার বলেন, ‘২৩ বছরের ছেলে আমার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে আন্দোলনে শহিদ হয়েছে। কিন্তু ছেলেকে কি এ দেশ, দেশের মানুষ মনে রাখবে? রাকিবের গলায়-বুকে একাধিক গুলি করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর বন্ধু-পথচারীরা মিলে তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়েছে। হাসপাতালে নেওয়ার কিছুক্ষণ পরই প্রাণ হারায় রাকিব। ওই দিন কিছুতেই রাকিবের লাশ পাওয়া গেল না। এক রকম জোর করেই তারা লাশ মর্গে ঢুকিয়ে ফেলে।’ তিনি বলেন, ‘একদিকে ছেলের লাশ পড়ে আছে মর্গে। অন্যদিকে রাজধানীজুড়ে আন্দোলন চলছে।

সেই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছিল হাসিনা সরকার।’ ছেলের লাশ কিছুতেই দিচ্ছিল না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ছেলের লাশ পেতে দিশেহারা হয়ে পড়েন মাসহ পরিবারের লোকজন। কোনো উপায় না পেয়ে অবশেষে তারা লাশ পেতে যোগাযোগ করেন যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান সাবেক মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের সঙ্গে। পারিবারিক জীবনে যে কোনো আপদ-বিপদে পড়লে-তার সঙ্গেই তারা যোগাযোগ করেন। রাকিবের ভাই শেখ সাকিব বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে যখন আমরা কোনোভাবেই লাশ বের করতে পারছিলাম না-তখন আমাদের এমপি অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম ম্যাডামের সঙ্গে যোগাযোগ করি। ওই সময় ম্যাডামসহ তার বড় মেয়ে দ্রুত কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক এবং ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশকে বলে দেন। পরে ওই

দিনই রাকিবের লাশ দ্রুত সময়ের মধ্যে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য নেওয়া হয়। ওই হাসপাতাল মর্গ থেকে রাকিরের লাশ হস্তান্তর করে ২২ জুলাই।’ মা সুইটি আক্তার বললেন, ‘ছেলেকে সারা জীবনের মতো আমার বুক থেকে কেড়ে নিয়েছে খুনিরা। আমার মতো শত শত মা-বাবা সন্তানহারা হয়েছেন। অপেক্ষায় আছি, হয়তো কোনো এক ভোরে কোনো উপদেষ্টা বা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কেউ ডেকে বলবে, ‘শহিদ রাকিবের মা কি ঘরে আছেন-আমরা এসেছি।’ নতুন সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলের হত্যাকারীকে যেন ফাঁসি দেওয়া হয়।’ ছেলে হত্যার জন্য তিনি যথাযথ ক্ষতিপূরণও দাবি করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
আরো একবার চীনের কূটনৈতিক বার্তা: আসল হুমকি কে? স্থলপথে বাংলাদেশী কাপড়-পাট-সুতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা ভারতের ছাত্র সংগঠনের অফিসে প্রেম নিবেদন, রাজি না হওয়ায় ধর্ষণ নেতার বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে ৬৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত তিন দিনে গাজায় ১৫ ইসরাইলি সেনা নিহত খামেনিকে ‘হত্যার পরিকল্পনা’র কথা স্বীকার ইসরাইলের হলুদের ঝলক: সোশ্যাল মিডিয়ায় সোনালি আলোর নতুন ট্রেন্ড হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার নিষিদ্ধ করলো বিমান মিয়ানমার সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে যুবকের পা বিচ্ছিন্ন আজ ঐতিহাসিক পলাশী ট্র্যাজেডি দিবস ডিভোর্সের গুঞ্জনে মুখ খুললেন ঐশ্বরিয়া বাংলাদেশ থেকে ৩ পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করল ভারত ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে জিতল কে? আগামী ৩ দিনের বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের নতুন বার্তা অস্থায়ী মণ্ডপ অপসারণের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা গাজার ত্রাণ সংস্থায় কেন এত বড় সহযোগিতা যুক্তরাষ্ট্রের ২৪ ঘণ্টায় করোনায় একজনের মৃত্যু এশিয়ায় বাড়ছে উত্তাপ, হুমকির মুখে মানুষ-প্রকৃতি সাগর পর্যন্ত শুকিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তানকে টার্গেট করে পূর্ণ প্রস্তুতিতে ছিল ভারতের বাহিনী