ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর
বিজয়ের দিনে মামলা ছাড়াই যুবলীগ নেতা গ্রেফতার জুড়ীতে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া
ব্রিটিশ সংসদে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা অবাধ নির্বাচন ও সংখ্যালঘু নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ
সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাংবাদিক আনিস আলমগীরের গ্রেপ্তার: মুক্তির আহ্বান অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের
পদত্যাগের পর রাষ্ট্রীয় সুবিধা ভোগের ঘটনায় চাপের মুখে প্রশাসন, ব্যাখ্যা নেই দুই সাবেক উপদেষ্টার !
‘ভ্যালুলেস সোনাদিয়া-সেন্টমার্টিনের গুরুত্ব বাড়িয়েছে মালাক্কা প্রণালী’ চৌধুরী মুজাহিদুল হক সৌরভ
খুনের ৭ মামলায় ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীর জামিন স্থগিত
নিরাপত্তা শঙ্কায় ঢাকায় ইন্ডিয়া ভিসা সেন্টার সাময়িক বন্ধ
বাংলাদেশ কি ঋণের ফাঁদে? সংখ্যার ভেতরে লুকিয়ে থাকা অস্বস্তিকর বাস্তবতা
বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন এমন এক সময় পার করছে, যেখান থেকে বাইরে তাকালে উন্নয়নের ব্যস্ত দৃশ্য দেখা যায়। মেগা প্রকল্প, অবকাঠামো, সেতু, বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিদেশি সহায়তা সবই চলছে। কিন্তু ভেতরের হিসাবের খাতা খুললেই বেরিয়ে আসে অন্য ছবি। ঋণ দ্রুত বাড়ছে, রাজস্ব সেই গতিতে বাড়ছে না, আর ঋণ পরিশোধেই গিলে খাচ্ছে বাজেটের বড় অংশ। এই বাস্তবতাতেই দেশের শীর্ষ অর্থনীতিবিদ থেকে শুরু করে সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান পর্যন্ত সরাসরি বলছেন বাংলাদেশ এখন “ঋণের ফাঁদে” ঢুকে পড়ছে। এক বছরে দায় বেড়েছে ১৪ শতাংশ সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে সরকারের মোট দায়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২১ দশমিক ৪৪ ট্রিলিয়ন টাকা। মাত্র এক বছরেই
এই অঙ্ক বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। এর বড় অংশই বিদেশি ঋণ। বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ঋণ প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ প্রায় ৪২ শতাংশ বেড়েছে। উন্নয়ন প্রকল্প, অবকাঠামো নির্মাণ এবং বাজেট ঘাটতি সামলাতে ঋণের ওপর নির্ভরতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কিন্তু সমস্যা হলো, ঋণ বাড়ার বিপরীতে সরকারের আয় বাড়ছে খুব ধীরগতিতে। ট্যাক্স–টু–জিডিপি অনুপাত দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেরই সবচেয়ে কম, মাত্র সাত শতাংশের কাছাকাছি। অর্থাৎ দেশের মোট আয়ের তুলনায় সরকারের কর আদায় খুবই দুর্বল। ফলে বাজেট ঘাটতি মানেই আবার ঋণ। ঋণ শোধ করতে গিয়ে আটকে যাচ্ছে উন্নয়ন বিদেশি ঋণ বাড়ার মানে শুধু বড় অঙ্কের টাকা আসা নয়, পাশাপাশি বড় অঙ্কের
টাকা ফেরত দেওয়ার চাপও বাড়া। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৫–২৬ অর্থবছরের শুরুতেই সুদ ও মূল ঋণ পরিশোধে বিপুল অর্থ ব্যয় হচ্ছে। বাজেটের একটি বড় অংশ চলে যাচ্ছে কেবল ঋণ শোধ করতেই। অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা, এই প্রবণতা চলতে থাকলে উন্নয়ন ব্যয় ও সামাজিক সুরক্ষা খাত সরাসরি চাপে পড়বে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি বা কর্মসংস্থান তৈরি করার জন্য যে অর্থের দরকার, সেটিই সংকুচিত হয়ে যাবে। প্রশ্ন উঠছে, ঋণ পরিশোধেই যদি বড় অংশের বাজেট শেষ হয়ে যায়, তাহলে ভবিষ্যতের বিনিয়োগ হবে কোথা থেকে? কেন ‘ঋণের ফাঁদ’ শব্দটি উঠে আসছে ঋণের ফাঁদ বলতে সাধারণভাবে বোঝানো হয়, যখন কোনো দেশ পুরোনো ঋণ শোধ করতেই আবার নতুন ঋণ নিতে বাধ্য হয়।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটা সেদিকেই যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। রাজস্ব কম, ব্যয় বেশি, আর ঘাটতি পূরণের প্রধান পথ হচ্ছে নতুন ঋণ। ফলে সরকার বাধ্য হচ্ছে এমন ঋণ নিতে, যার বড় অংশই যাচ্ছে চলতি খরচ মেটাতে, নতুন উৎপাদন বা আয় তৈরির খাতে নয়। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে বিদেশি ঋণের শর্ত। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বাজেট সহায়তার সঙ্গে থাকে করনীতি সংস্কার, ব্যয় সংকোচন, জ্বালানি ও ভর্তুকি সমন্বয়ের চাপ। এসব সিদ্ধান্ত সরাসরি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলে এবং রাজনৈতিকভাবেও তৈরি করে চাপ। দীর্ঘমেয়াদে ঝুঁকি কোথায় এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে প্রথম বড় ঝুঁকি তৈরি হবে বাজেট কাঠামোতেই। ঋণ পরিষদের খরচ বাড়তে থাকলে উন্নয়ন ব্যয় সঙ্কুচিত হবে। এর প্রভাব
পড়বে ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির ওপর। সামাজিক সুরক্ষার বরাদ্দ কমলে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আরেকটি বড় ঝুঁকি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে। বিদেশি ঋণ শোধ করতে ডলারের চাহিদা বাড়বে। রপ্তানি বা রেমিট্যান্সে সামান্য ধাক্কা লাগলেই তখন রিজার্ভ চাপে পড়বে। এতে মুদ্রাবাজার অস্থির হওয়ার শঙ্কাও বেড়ে যায়। অর্থনীতিবিদরা একবাক্যে বলছেন, এই সংকট থেকে বেরোতে গেলে সবচেয়ে আগে কর আদায় বাড়াতে হবে। করভিত্তি বিস্তৃত করা, কর ফাঁকি কমানো, কর প্রশাসন আধুনিক করা ছাড়া বিকল্প নেই। সরকারের নিজের আয়ের ভিত্তি শক্ত না হলে ঋণনির্ভরতা কমবে না। একই সঙ্গে বড় প্রকল্প অনুমোদনের আগে লাভ-ক্ষতির হিসাব আরও কঠোরভাবে মূল্যায়ন করা জরুরি। কোন প্রকল্প ভবিষ্যতে রাজস্ব বা
উৎপাদন বাড়াবে, আর কোনটি শুধু ঋণের বোঝা বাড়াবে, সেটি স্পষ্টভাবে বাছাই করতে হবে। রপ্তানি খাতের বৈচিত্র্যও এখন সময়ের দাবি। তৈরি পোশাকের ওপর একক নির্ভরতা রেখে অর্থনীতিকে নিরাপদ রাখা সম্ভব নয়। প্রযুক্তি, ওষুধ, কৃষিভিত্তিক প্রক্রিয়াজাত পণ্যসহ নতুন খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ এখনো সরাসরি কোনো আর্থিক বিপর্যয়ে পড়েনি। কিন্তু সংখ্যা যেদিকে ইঙ্গিত করছে, তাতে ঝুঁকির ঘণ্টা বাজছে স্পষ্টভাবে। ঋণ নিজে খারাপ নয়, যদি সেই ঋণ ভবিষ্যতে আয় তৈরি করে। কিন্তু আয় না বাড়িয়ে কেবল ব্যয় মেটাতে ঋণ নেওয়া হলে সেটাই ভবিষ্যতের সবচেয়ে বড় বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। নীতিনির্ধারকদের সামনে এখন কঠিন পরীক্ষা। ঋণ ব্যবস্থাপনা শক্ত করা, রাজস্ব ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো এবং প্রকল্প বাছাইয়ে বাস্তববাদী হওয়া
ছাড়া সামনে এগোনোর পথ খুব একটা নেই। আজকের সিদ্ধান্তই নির্ধারণ করবে বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়নের পথে থাকবে, নাকি ধীরে ধীরে গভীর ঋণের চাপে পড়বে।
এই অঙ্ক বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। এর বড় অংশই বিদেশি ঋণ। বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ঋণ প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ প্রায় ৪২ শতাংশ বেড়েছে। উন্নয়ন প্রকল্প, অবকাঠামো নির্মাণ এবং বাজেট ঘাটতি সামলাতে ঋণের ওপর নির্ভরতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কিন্তু সমস্যা হলো, ঋণ বাড়ার বিপরীতে সরকারের আয় বাড়ছে খুব ধীরগতিতে। ট্যাক্স–টু–জিডিপি অনুপাত দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেরই সবচেয়ে কম, মাত্র সাত শতাংশের কাছাকাছি। অর্থাৎ দেশের মোট আয়ের তুলনায় সরকারের কর আদায় খুবই দুর্বল। ফলে বাজেট ঘাটতি মানেই আবার ঋণ। ঋণ শোধ করতে গিয়ে আটকে যাচ্ছে উন্নয়ন বিদেশি ঋণ বাড়ার মানে শুধু বড় অঙ্কের টাকা আসা নয়, পাশাপাশি বড় অঙ্কের
টাকা ফেরত দেওয়ার চাপও বাড়া। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৫–২৬ অর্থবছরের শুরুতেই সুদ ও মূল ঋণ পরিশোধে বিপুল অর্থ ব্যয় হচ্ছে। বাজেটের একটি বড় অংশ চলে যাচ্ছে কেবল ঋণ শোধ করতেই। অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা, এই প্রবণতা চলতে থাকলে উন্নয়ন ব্যয় ও সামাজিক সুরক্ষা খাত সরাসরি চাপে পড়বে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি বা কর্মসংস্থান তৈরি করার জন্য যে অর্থের দরকার, সেটিই সংকুচিত হয়ে যাবে। প্রশ্ন উঠছে, ঋণ পরিশোধেই যদি বড় অংশের বাজেট শেষ হয়ে যায়, তাহলে ভবিষ্যতের বিনিয়োগ হবে কোথা থেকে? কেন ‘ঋণের ফাঁদ’ শব্দটি উঠে আসছে ঋণের ফাঁদ বলতে সাধারণভাবে বোঝানো হয়, যখন কোনো দেশ পুরোনো ঋণ শোধ করতেই আবার নতুন ঋণ নিতে বাধ্য হয়।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটা সেদিকেই যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। রাজস্ব কম, ব্যয় বেশি, আর ঘাটতি পূরণের প্রধান পথ হচ্ছে নতুন ঋণ। ফলে সরকার বাধ্য হচ্ছে এমন ঋণ নিতে, যার বড় অংশই যাচ্ছে চলতি খরচ মেটাতে, নতুন উৎপাদন বা আয় তৈরির খাতে নয়। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে বিদেশি ঋণের শর্ত। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বাজেট সহায়তার সঙ্গে থাকে করনীতি সংস্কার, ব্যয় সংকোচন, জ্বালানি ও ভর্তুকি সমন্বয়ের চাপ। এসব সিদ্ধান্ত সরাসরি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলে এবং রাজনৈতিকভাবেও তৈরি করে চাপ। দীর্ঘমেয়াদে ঝুঁকি কোথায় এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে প্রথম বড় ঝুঁকি তৈরি হবে বাজেট কাঠামোতেই। ঋণ পরিষদের খরচ বাড়তে থাকলে উন্নয়ন ব্যয় সঙ্কুচিত হবে। এর প্রভাব
পড়বে ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির ওপর। সামাজিক সুরক্ষার বরাদ্দ কমলে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আরেকটি বড় ঝুঁকি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে। বিদেশি ঋণ শোধ করতে ডলারের চাহিদা বাড়বে। রপ্তানি বা রেমিট্যান্সে সামান্য ধাক্কা লাগলেই তখন রিজার্ভ চাপে পড়বে। এতে মুদ্রাবাজার অস্থির হওয়ার শঙ্কাও বেড়ে যায়। অর্থনীতিবিদরা একবাক্যে বলছেন, এই সংকট থেকে বেরোতে গেলে সবচেয়ে আগে কর আদায় বাড়াতে হবে। করভিত্তি বিস্তৃত করা, কর ফাঁকি কমানো, কর প্রশাসন আধুনিক করা ছাড়া বিকল্প নেই। সরকারের নিজের আয়ের ভিত্তি শক্ত না হলে ঋণনির্ভরতা কমবে না। একই সঙ্গে বড় প্রকল্প অনুমোদনের আগে লাভ-ক্ষতির হিসাব আরও কঠোরভাবে মূল্যায়ন করা জরুরি। কোন প্রকল্প ভবিষ্যতে রাজস্ব বা
উৎপাদন বাড়াবে, আর কোনটি শুধু ঋণের বোঝা বাড়াবে, সেটি স্পষ্টভাবে বাছাই করতে হবে। রপ্তানি খাতের বৈচিত্র্যও এখন সময়ের দাবি। তৈরি পোশাকের ওপর একক নির্ভরতা রেখে অর্থনীতিকে নিরাপদ রাখা সম্ভব নয়। প্রযুক্তি, ওষুধ, কৃষিভিত্তিক প্রক্রিয়াজাত পণ্যসহ নতুন খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ এখনো সরাসরি কোনো আর্থিক বিপর্যয়ে পড়েনি। কিন্তু সংখ্যা যেদিকে ইঙ্গিত করছে, তাতে ঝুঁকির ঘণ্টা বাজছে স্পষ্টভাবে। ঋণ নিজে খারাপ নয়, যদি সেই ঋণ ভবিষ্যতে আয় তৈরি করে। কিন্তু আয় না বাড়িয়ে কেবল ব্যয় মেটাতে ঋণ নেওয়া হলে সেটাই ভবিষ্যতের সবচেয়ে বড় বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। নীতিনির্ধারকদের সামনে এখন কঠিন পরীক্ষা। ঋণ ব্যবস্থাপনা শক্ত করা, রাজস্ব ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো এবং প্রকল্প বাছাইয়ে বাস্তববাদী হওয়া
ছাড়া সামনে এগোনোর পথ খুব একটা নেই। আজকের সিদ্ধান্তই নির্ধারণ করবে বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়নের পথে থাকবে, নাকি ধীরে ধীরে গভীর ঋণের চাপে পড়বে।



