ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স                            
                        আরও খবর
                                সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (FDI) নিয়ে ড. ইউনূসের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে বিতর্ক: তথ্য বিকৃতি ও বিভ্রান্তির অভিযোগ
                                ইউনূসকে রেফারির ভূমিকায় চায় ধর্মভিত্তিক ৮ দল
                                নতুন পে স্কেলে গ্রেড কমানোর প্রস্তাব, সর্বনিম্ন বেতন কত হতে পারে
                                মেট্রোরেলের রক্ষণাবেক্ষণে নেই বরাদ্দ, দুর্ঘটনার দায় ঠিকাদারদের ঘাড়ে চাপালেন এমডি
                                নিরাপত্তাহীনতার কারণে একে একে বাতিল হচ্ছে ক্রয়াদেশ, আরও অসংখ্য কারখানা বন্ধের শঙ্কা
                                বিএনপির নয়নকে ‘বুড়িগঙ্গার পানি’ দিয়ে ধোয়ার মন্তব্যে ঝড়, এনসিপির পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা
                                জামায়াত কি আদৌ মওদুদীর ‘বিকৃত আকিদা’ ঝেড়ে ফেলতে পেরেছে? নাকি আগের পথেই আছে?
প্রধান উপদেষ্টার তত্ত্বাবধানে পদোন্নতির নামে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কোরামপ্রীতি: বঞ্চিত ৮৭৯ চিকিৎসক
                             
                                               
                    
                         স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতি ও বদলির নামে চলছে অবাধ দুর্নীতি ও কোরামপ্রীতি। গত ১৫ বছর ধরে নিয়মানুসারে চলছিল চিকিৎসকদের পদোন্নতি, কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষমতায় আসার পর মাত্র তিন মাসে প্রায় ১৪০০ চিকিৎসককে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, যাতে বাংলাদেশ সার্ভিস রুলসের নিয়ম ভঙ্গ করে ৮৭৯ জন চিকিৎসককে বঞ্চিত করা হয়। এর মধ্যে ৪৯০ জন নারী চিকিৎসক, যা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মতে রাজনৈতিক স্বার্থে নির্ধারিত। এই ঘটনা স্বাস্থ্য খাতের সংস্কারের নামে চলা ‘পরিবর্তনের’ মুখোশ খুলে দিয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে জানা যায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি) এবং বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটির মাধ্যমে সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপক পদে ২০১৭ সাল থেকে পদোন্নতি 
প্রদান করা হতো। এসব পদোন্নতিতে বিসিএস সিনিয়রিটি ও মেধাক্রম অনুসারে দলমত নির্বিশেষে চিকিৎসকদের অন্তর্ভুক্ত করা হতো। এমনকি বিএনপি-জামায়াত পন্থী চিকিৎসক সংগঠনের সদস্যদেরও যথানিয়মে পদোন্নতি দেওয়া হয়। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে এই নিয়ম ভেঙে রাজনৈতিক অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে তালিকা তৈরি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা, যিনি পদোন্নতি প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিলেন, গোপনীয়তার শর্তে বলেন, “আমরা নিয়মমতো সব প্রস্তুতি নিয়ে তালিকা জমা দিয়েছি। কিন্তু প্রত্যেকবার আদেশে স্বাক্ষরের আগে একটি ৬ সদস্যের চিকিৎসক প্রতিনিধি দল তালিকা পর্যালোচনা করে। তারা আওয়ামী লীগ পন্থী চিকিৎসক সংগঠনের সদস্যদের চিহ্নিত করে বাদ দিয়ে দেন। এই ৬ জনের মধ্যে ২ জন জামায়াত, ৩ জন বিএনপি এবং ১ জন এনসিপি চিকিৎসক সংগঠনের
মনোনীত। ফলে মেধাবী চিকিৎসকরা বঞ্চিত হচ্ছেন।” পদোন্নতির এই অসংগতি বিভিন্ন প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে। ১৭ জুলাই ২০২৫-এর প্রজ্ঞাপনে ১৩টি বিষয়ে ২১৮ জন, ২৯ জুলাইয়ের প্রজ্ঞাপনে ২৫টি বিষয়ে ২১৭ জন, ১ সেপ্টেম্বরের প্রজ্ঞাপনে ৯টি বিষয়ে ১৬৩ জন এবং ২ সেপ্টেম্বরের প্রজ্ঞাপনে ২৪টি বিষয়ে ৫৬ জন চিকিৎসককে পদোন্নতি বঞ্চিত করা হয়। সবচেয়ে বড় ধাক্কা পড়েছে ২৩ অক্টোবরের প্রজ্ঞাপনে, যাতে ১টি বিষয়ে ২৮৫ জন নারী চিকিৎসককে কোনো চাকরি বিধি বা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বাদ দেওয়া হয়। এই বঞ্চিত চিকিৎসকদের মধ্যে অনেকেই রিটায়ার করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যা স্বাস্থ্যসেবায় অভিজ্ঞতার ঘাটতি তৈরি করবে। এই পদোন্নতির পেছনে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ভূমিকাও সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.
সাইদুর রহমান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের সাথে কয়েক দফা অনুরোধ করেন যে, নারী চিকিৎসকদের বঞ্চিত করে অর্ডার তিনি স্বাক্ষর করতে চান না। কিন্তু পরবর্তীতে প্রধান উপদেষ্টা নিজে ফোন করে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কথা মেনে অর্ডার করতে নির্দেশ দেন। এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ‘সংস্কার’ প্রক্রিয়ায় কলংকিত রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের প্রমাণ। স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার কমিশন গঠনের পর সরকারি ওয়েবসাইটে পদোন্নতি বঞ্চিত বিষয়ে প্রতিকারের উল্লেখ থাকলেও, বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন কোরামপ্রীতি স্বাস্থ্যসেবার মান কমিয়ে দেবে এবং দুর্নীতির চক্রকে আরও শক্তিশালী করবে। বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের কনভেনর ডা. আহমেদ মুস্তাক রাজা চৌধুরী বলেন, “স্বাস্থ্য খাত এতটা অনিয়ন্ত্রিত কখনই ছিল না। আগে অন্তত সবাই যোগ্যতা ও
মেঘার ভিত্তিতে প্রমোশনটা পেতো। এখন তো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারের নামে, স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে এটাকে আরো বেশী কুলষিত করেছে। আগে আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণ ছিল, এখন বিএনপি-জামায়াত পন্থীদের। মেধার পরিবর্তে দলীয় লয়ালটির ভিত্তিতে পদোন্নতি চলছে।” পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তাদের বেশীরভাগ-ই রিট করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পদোন্নিতে বঞ্চিত এক নারী চিকিৎসক বলেন, “আমরা ১৫ বছর ধরে নিয়ম মেনে চাকরি করেছি, কিন্তু রাজনীতির শিকার হয়েছি। এতে স্বাস্থ্যসেবা কে পাবে?” মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করছেন যে, এই অভিযোগ তদন্ত করে ন্যায়বিচার করা হবে। কিন্তু এই দুর্নীতির চিত্র অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ‘পরিবর্তনের’ প্রতিশ্রুতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই অবস্থা দেশের স্বাস্থ্যসেবাকে কোথায় নিয়ে যাবে, তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। সরকারের কাছে এখন
সময়—নাকি এটিও রাজনৈতিক খেলার অংশ?
                    
                                                          
                    
                    
                                    প্রদান করা হতো। এসব পদোন্নতিতে বিসিএস সিনিয়রিটি ও মেধাক্রম অনুসারে দলমত নির্বিশেষে চিকিৎসকদের অন্তর্ভুক্ত করা হতো। এমনকি বিএনপি-জামায়াত পন্থী চিকিৎসক সংগঠনের সদস্যদেরও যথানিয়মে পদোন্নতি দেওয়া হয়। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে এই নিয়ম ভেঙে রাজনৈতিক অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে তালিকা তৈরি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা, যিনি পদোন্নতি প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিলেন, গোপনীয়তার শর্তে বলেন, “আমরা নিয়মমতো সব প্রস্তুতি নিয়ে তালিকা জমা দিয়েছি। কিন্তু প্রত্যেকবার আদেশে স্বাক্ষরের আগে একটি ৬ সদস্যের চিকিৎসক প্রতিনিধি দল তালিকা পর্যালোচনা করে। তারা আওয়ামী লীগ পন্থী চিকিৎসক সংগঠনের সদস্যদের চিহ্নিত করে বাদ দিয়ে দেন। এই ৬ জনের মধ্যে ২ জন জামায়াত, ৩ জন বিএনপি এবং ১ জন এনসিপি চিকিৎসক সংগঠনের
মনোনীত। ফলে মেধাবী চিকিৎসকরা বঞ্চিত হচ্ছেন।” পদোন্নতির এই অসংগতি বিভিন্ন প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে। ১৭ জুলাই ২০২৫-এর প্রজ্ঞাপনে ১৩টি বিষয়ে ২১৮ জন, ২৯ জুলাইয়ের প্রজ্ঞাপনে ২৫টি বিষয়ে ২১৭ জন, ১ সেপ্টেম্বরের প্রজ্ঞাপনে ৯টি বিষয়ে ১৬৩ জন এবং ২ সেপ্টেম্বরের প্রজ্ঞাপনে ২৪টি বিষয়ে ৫৬ জন চিকিৎসককে পদোন্নতি বঞ্চিত করা হয়। সবচেয়ে বড় ধাক্কা পড়েছে ২৩ অক্টোবরের প্রজ্ঞাপনে, যাতে ১টি বিষয়ে ২৮৫ জন নারী চিকিৎসককে কোনো চাকরি বিধি বা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বাদ দেওয়া হয়। এই বঞ্চিত চিকিৎসকদের মধ্যে অনেকেই রিটায়ার করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যা স্বাস্থ্যসেবায় অভিজ্ঞতার ঘাটতি তৈরি করবে। এই পদোন্নতির পেছনে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ভূমিকাও সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.
সাইদুর রহমান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের সাথে কয়েক দফা অনুরোধ করেন যে, নারী চিকিৎসকদের বঞ্চিত করে অর্ডার তিনি স্বাক্ষর করতে চান না। কিন্তু পরবর্তীতে প্রধান উপদেষ্টা নিজে ফোন করে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কথা মেনে অর্ডার করতে নির্দেশ দেন। এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ‘সংস্কার’ প্রক্রিয়ায় কলংকিত রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের প্রমাণ। স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার কমিশন গঠনের পর সরকারি ওয়েবসাইটে পদোন্নতি বঞ্চিত বিষয়ে প্রতিকারের উল্লেখ থাকলেও, বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন কোরামপ্রীতি স্বাস্থ্যসেবার মান কমিয়ে দেবে এবং দুর্নীতির চক্রকে আরও শক্তিশালী করবে। বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের কনভেনর ডা. আহমেদ মুস্তাক রাজা চৌধুরী বলেন, “স্বাস্থ্য খাত এতটা অনিয়ন্ত্রিত কখনই ছিল না। আগে অন্তত সবাই যোগ্যতা ও
মেঘার ভিত্তিতে প্রমোশনটা পেতো। এখন তো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারের নামে, স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে এটাকে আরো বেশী কুলষিত করেছে। আগে আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণ ছিল, এখন বিএনপি-জামায়াত পন্থীদের। মেধার পরিবর্তে দলীয় লয়ালটির ভিত্তিতে পদোন্নতি চলছে।” পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তাদের বেশীরভাগ-ই রিট করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পদোন্নিতে বঞ্চিত এক নারী চিকিৎসক বলেন, “আমরা ১৫ বছর ধরে নিয়ম মেনে চাকরি করেছি, কিন্তু রাজনীতির শিকার হয়েছি। এতে স্বাস্থ্যসেবা কে পাবে?” মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করছেন যে, এই অভিযোগ তদন্ত করে ন্যায়বিচার করা হবে। কিন্তু এই দুর্নীতির চিত্র অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ‘পরিবর্তনের’ প্রতিশ্রুতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই অবস্থা দেশের স্বাস্থ্যসেবাকে কোথায় নিয়ে যাবে, তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। সরকারের কাছে এখন
সময়—নাকি এটিও রাজনৈতিক খেলার অংশ?



