৩৮৯ বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক – ইউ এস বাংলা নিউজ




৩৮৯ বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ৭:২৫ 49 ভিউ
রাজশাহীতে সংকটে পড়েছে প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা। জেলার এক-তৃতীয়াংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়েই নেই প্রধান শিক্ষক। দীর্ঘসময় ধরে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকদের দিয়ে এসব বিদ্যালয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। এ কারণে বিদ্যালয় পরিচালনায় দেখা দিয়েছে প্রশাসনিক জটিলতা। ভেঙে পড়েছে প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে শিক্ষার্থীদের আচার-আচরণে পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব। ব্যাহত হচ্ছে মানসম্মত পাঠদান। প্রধান শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীর বিপরীতে কমেছে শিক্ষকের সংখ্যা। সবমিলিয়ে সংকুচিত হচ্ছে শিশু শিক্ষার্থীদের যথাযথ মেধার বিকাশ। রাজশাহী জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা এক হাজার ৫৭টি। এর মধ্যে ৩৮৯টি বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। ভুক্তভোগীরা বলছেন, মামলা, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে প্রশাসনিক জটিলতা, নিয়োগ পরীক্ষায় দেরি, পদোন্নতিতে ধীরগতিসহ আরও কিছু কারণে এ সংকট ক্রমান্বয়ে দীর্ঘ হচ্ছে। প্রধান শিক্ষকরা

বিদ্যালয়ের শ্রেণি পাঠদান পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান, শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ ও মডেল শিক্ষক হিসাবেও কাজ করেন। তাই এ সংকট নিরসনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী সিটি করপোরেশনসহ (রাসিক) জেলার ৯টি উপজেলাতেই রয়েছে প্রধান শিক্ষকের সংকট। এর মধ্যে ৬১টি পদ নিয়ে মামলা থাকায় প্রধান শিক্ষক নিয়োগ আটকে আছে। বাকি ৩২৮টি বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ ও পদোন্নতি কার্যক্রম বন্ধ। এসব বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত ও চলতি দায়িত্বে প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের প্রশাসনিক ক্ষমতা সীমিত থাকায় শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। জেলার বাগমারা উপজেলায় প্রধান শিক্ষক সংকট সবচেয়ে বেশি। এ উপজেলার ৯৭টি

বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। গোদাগাড়ী উপজেলার ৭১ বিদ্যালয়, তানোরে ৬২, চারঘাটের ৩৮, পুঠিয়ার ২৭, বাঘার ২২, পবার ২১, দুর্গাপুরের ২১, মোহনপুরে ২০ এবং রাসিকের বোয়ালিয়া থানার ১০টি বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন থেকে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। বাগমারা উপজেলার বারুইপাড়া-১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোকুল চন্দ্র বলেন, একটি আদর্শ এবং নীতি-নৈতিকতা বোধসম্পন্ন জাতি গঠনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক শিক্ষা। তবে দীর্ঘসময় প্রধান শিক্ষক না থাকার কারণে সুষ্ঠু স্বাভাবিক পাঠদানে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে শিক্ষার প্রথম ধাপটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক না থাকার কারণে প্রশাসনিক জটিলতাও দেখা দিয়েছে। পবা উপজেলার ভালাম ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নফুরা খাতুন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।

তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক নেই। সহকারী শিক্ষক হলেও আমাকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে। খুব কষ্ট করে ক্লাস ম্যানেজ করতে হচ্ছে। আমাদের ক্ষমতা সীমিত। তাই অনেক জটিলতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। অনেক বিষয়েই সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। ফলে বিদ্যালয়ের পরিবেশ, শৃঙ্খলা, শিক্ষার্থীদের আচরণ-সবকিছুতেই নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। প্রধান শিক্ষক সংকট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অভিভাবকরাও। গোদাগাড়ী উপজেলার মাছমারা এলাকার বাসিন্দা আজমল হক বলেন, আমার ছেলে মাছমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। আমি স্বল্প শিক্ষিত মানুষ। আমার প্রত্যাশা, ছেলে উচ্চশিক্ষিত হয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখবে। কিন্তু স্কুলে প্রধান শিক্ষক নেই। ফলে পড়াশোনাও নেই। এ অবস্থায় আমরা

অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন। রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক এবং গোদাগাড়ী উপজেলার ডোমকুলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষক হলেন একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভিভাবক। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরা সহকারী শিক্ষক। এ কারণে প্রশাসনিক জটিলতা দেখা দেয়। চেইন অব কমান্ড নষ্ট হয়। ২০১০ সালের পর প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। ২০১৮ সালে কিছু সহকারী শিক্ষককে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাদের অনেকেই অবসরে গেছেন। ফলে সংকট না কমে আরও বেড়েছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে পূর্ণকালীন প্রধান শিক্ষক থাকা অপরিহার্য। তা না হলে শিক্ষার গুণগত মান ধরে রাখা অসম্ভব। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. খালেদুজ্জমান বলেন, প্রধান শিক্ষক হলেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের লিডার। তিনিই প্রশাসনিক

এবং ব্যবস্থাপনার দায়িত্বটি পালন করেন। প্রধান শিক্ষক না থাকলে বিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা থাকবে না। অন্যান্য শিক্ষকরা সময়মতো যাওয়া-আসা করবেন না। সঠিক মনিটরিং থাকবে না। শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দুর্বল হবে। সংকুচিত হবে শিশু শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ। নীতি-নৈতিকতা সম্পন্ন জাতি গঠনে বিরূপ প্রভাব পড়বে। রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষকের সংকট দেশব্যাপী। রাজশাহীতে প্রধান শিক্ষকের সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। নানা সংকটের মধ্যেও আমরা শিক্ষা কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার চেষ্টা করছি। আমাদের শিক্ষকরা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
এবার ইসরাইলি কূটনীতিককে তলব করল স্পেন দরপত্র ছাড়াই ২ কোটি ৬৬ লাখ টাকার কাজ সম্পন্ন সেই অধ্যক্ষ লুটে নিলেন ৫ কোটি টাকা ৩৮৯ বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক মূল্যস্ফীতি সহনীয় মাত্রায় আনতে তিন চ্যালেঞ্জ চট্টগ্রামে দখল চাঁদাবাজি নিয়ে খুনোখুনি বাড়ছে দখলদাররা গিলে খাচ্ছে কীর্তনখোলা নদী ছাত্র-জনতাকে জড়িয়ে ধরে অঝোরে কাঁদলেন ইউএনও ১০ দিনের চীন সফরে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জারদারি ইসলাম ও মহানবিকে (সা.) কটূক্তি করেছিলেন ট্রাম্পের মিত্র চার্লি কার্ক লন্ডনে মাহফুজ আলমের ওপর আ.লীগ নেতাকর্মীদের হামলার চেষ্টা ফ্যাসিস্ট ইউনূসকে যুক্তরাষ্ট্রে অবাঞ্ছিত ঘোষণা আওয়ামী লীগের হার্ট ভালো রাখতে খাবেন যে ৭ খাবার নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হলেন সুশীলা কার্কি সরকারি ডাক্তারদের ৮ নির্দেশনা দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে উচ্চপর্যায়ের নৈশভোজ নেপালের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী, কে এই সুশীলা ‘আমরা সবাই জানি বাংলাদেশ দুর্দান্ত ফর্মে আছে’ ভারত-পাক ম্যাচের টিকিট বিক্রিই হচ্ছে না, জানা গেল কারণ নেপালে যেভাবে এগোচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পথ