
ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর

ভিকারুননিসায় হিজাব পরায় ছাত্রীদের বের করে দেওয়ার সত্যতা মিলেছে

২০২৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষার সময়

নিরাপদ ক্যাম্পাসের প্রতিশ্রুতি প্রার্থীদের

ঢাকা কলেজ-সিটি কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ২

ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, যা বলছে পুলিশ

১৯ ভোটারে একজন প্রার্থী

৪১ হাজার শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশের ফল প্রকাশ, জানা যাবে যেভাবে
ভোটযুদ্ধে প্রাণবন্ত ক্যাম্পাস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের ভোটযুদ্ধে প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে গোটা ক্যাম্পাস। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক প্রচারণার প্রথম দিনে প্রার্থীদের পদচারণা ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রতিটি প্যানেল বৈচিত্র্যময় থিমকে প্রাধান্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে টানার চেষ্টা চালাচ্ছে। এবারের ডাকসু নির্বাচনে ৪৭১ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছেন। এর মধ্যে ভিপি পদে ৪৫, জিএস ১৯ ও এজিএস পদে ২৫ জন লড়বেন। নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে নির্বাচনের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি ভোটকেন্দ্রে তিন স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে এবং হলগুলোয় বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। এছাড়াও নির্বাচনে ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসাবে থাকবে সেনাবাহিনী। এদিকে নির্বাচনি প্রচারণা উপলক্ষ্যে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট কর্তৃক চারুকলায়
স্থাপিত দুটি ব্যানার ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত প্রচারণা চালাতে পারবেন প্রার্থীরা। তবে ছাত্রী হলে রাত ১০টার পর প্রচারণায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। প্রচারণা চালানোর ক্ষেত্রে মানতে হবে কড়া আচরণবিধি। ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে প্রচারণা এবং ভোট হবে ৯ সেপ্টেম্বর। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে সর্বপ্রথম প্রচারণা শুরু করে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ সমর্থিত সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ। এরপর সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ নামে একটি স্বতন্ত্র প্যানেল সকালে ক্যাম্পাস এলাকায় গণসংযোগ শুরু করে। মো. জামাল উদ্দীন খালিদ এই প্যানেল থেকে ভিপি প্রার্থী। বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিরোধ পর্ষদের ভিপি প্রার্থী শেখ
তাসনিম আফরোজ ইমি, জিএস প্রার্থী মেঘমল্লার বসু এবং এজিএস প্রার্থী মো. জাবির আহমেদ জুবেলের নেতৃত্বে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে পর্ষদের নির্বাচনি প্রচারণার কার্যক্রমের সূচনা হয়। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রতিরোধ পর্ষদের প্রার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে নির্বাচনি জনসংযোগ করেন। সমাজবিজ্ঞান অনুষদের পর কার্জন হল এলাকায় জনসংযোগ করেন। দুপুরের দিকে জগন্নাথ হলের বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্রচারণা কার্যক্রম শুরু করে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা, জিএস প্রার্থী আল সাদী ভূঁইয়াসহ অন্য সদস্যরা। এরপর বেলা ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেল। এ সময় ভিপি
পদপ্রার্থী আবু সাদিক কায়েম বলেন, ‘কেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিনির্মাণ করতে চাই, সেটা সবারই পেশ করা উচিত। যদি আগের কায়দায় বুলিং, ট্যাগিং ও প্রোপাগান্ডার রাজনীতি করি, তাহলে শিক্ষার্থীরা এটিকে প্রতিরোধ করবে। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি পলিটিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে একাডেমিক ইনস্টিটিউটে পরিণত করতে চাই।’ বেলা সাড়ে ৩টায় ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে মহান একাত্তরের শহীদদের স্মৃতিফলক ‘স্মৃতি চিরন্তনে’ শ্রদ্ধা জানিয়ে কার্যক্রম শুরু করে। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ছাত্রদলের ভিপিপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা প্রতিশ্রুতির রাজনীতি নয়, বরং পরিবর্তনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আগামী ডাকসু বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সব সময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করি। একইভাবে
জুলাই আন্দোলনকেও ধারণ করি। প্যানেল ঘোষণার পর সর্বপ্রথম আমরা জুরাইন কবরস্থানে গিয়ে জুলাই শহীদ আনাসের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করেছি। আজ মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে আমাদের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করছি।’ এদিকে বিকাল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া এলাকা থেকে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেল তাদের প্রচারণা শুরু করে। এ সময় প্যানেলের ভিপি আব্দুল কাদের, জিএস আবু বাকের মজুমদার এবং এজিএস আশরেফা খাতুনসহ বাকি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় আব্দুল কাদের বলেন, বিগত সময়ে শিক্ষার্থীরা একটা ট্রমার মধ্য দিয়ে গেছে। হলে হলে দখলদারি চালানো হয়েছে। একটি সিটের জন্য শিক্ষার্থীদের ছাত্রনেতাদের দাসত্ব করতে হয়। শিক্ষার্থীদের মানবিক মর্যাদার যে
জায়গা, অর্থাৎ আবাসন, খাবারসহ শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই। এছাড়া সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে থেকে কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী ডাকসু নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করেন দুপুরের দিকে। তাদের মধ্য ছিলেন স্বতন্ত্র এজিএস প্রার্থী তাহমীদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী, স্বতন্ত্র ক্রীড়া সম্পাদক প্রার্থী জহিন ফেরদৌস জামি এবং স্বতন্ত্র সদস্য প্রার্থী সরদার নাদিম মাহমুদ শুভ। এদিকে সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাম সমর্থিত প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেল থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মোজাম্মেল হক বলেন, ‘ফুলবাড়ী ‘অভ্যুত্থান দিবস’ ছিল, তাই আমরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানালাম। এরপর আমরা সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের সামনে গেছি। বিকালে ভিসি চত্বর এবং রোকেয়া হলের সামনে থাকব। শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে আমরা
বেশ ভালো রেসপন্স পাচ্ছি।’ এদিকে দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা বলেন, প্রচার-প্রচারণা এমনভাবে করব, যেন শিক্ষার্থীদের নিয়মিত কার্যক্রমে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে। অনেক প্রার্থী ১০-১৫ দিন আগে থেকেই অলিখিতভাবে প্রচারণা করেছেন। আমরা বারবার বললেও প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা আশা করব, যে বিধিমালা তারা দিয়েছেন, সেখানে যেন প্রশাসন থাকে। ডাকসুতে যত প্রার্থী : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এই নির্বাচনে মোট ৪৭১ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছেন। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ১৯, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ২৫, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক ১৭; কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক ১১; আন্তর্জাতিক সম্পাদক ১৪ এবং সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ১৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়াও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ১২, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক ৯, ক্রীড়া সম্পাদক ১৩, ছাত্র পরিবহণ সম্পাদক ১২, সমাজসেবা সম্পাদক ১৭, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক ১৫, মানবাধিকার ও আইনবিষয়ক সম্পাদক ১১, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক ১৫ এবং সদস্য পদে ২১৭ জন চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছেন। জানা যায়, যাচাই-বাছাই শেষে ৪৭১ জনকে চূড়ান্ত প্রার্থী মনোনীত করা হয়েছে। তাছাড়া মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন ২৮ জন। আর মনোনয়নপত্র বাতিলের পর ১০ জন আপিল করেননি, যে কারণে ওই ১০ জনের প্রার্থিতাও বাতিল করা হয়েছে। এর আগে ৫০৯ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এবারের ডাকসু নির্বাচনে ৯টি প্যানেল রয়েছে আলোচনায়। এসব প্যানেলের মধ্যে ছাত্রদলের প্যানেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আবিদুল ইসলাম খানকে সহসভাপতি (ভিপি), কবি জসীমউদ্দীন হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শেখ তানভীর বারী হামিমকে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক তানভীর আল হাদী মায়েদকে সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী করা হয়েছে। উমামা ফাতেমার নেতৃত্বে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’র প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা, জিএস প্রার্থী আল সাদী ভূঁইয়া এবং এজিএস পদে জায়েদ রহমান। গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের প্যানেল থেকে ভিপি পদে লড়ছেন আহ্বায়ক আব্দুল কাদের। জিএস পদে আবু বাকের মজুমদার। এছাড়া এজিএস পদে প্রার্থী হয়েছেন সংগঠনটির মুখপাত্র আশরেফা খাতুন। এছাড়া বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভিপি হিসাবে কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ঢাবি শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাদিক কায়েম এবং জিএস পদে ঢাবি শাখার বর্তমান সভাপতি এসএম ফরহাদ মনোনয়ন পেয়েছেন। এজিএস পদে ঢাবি শাখার সেক্রেটারি মহিউদ্দিন খান নির্বাচন করবেন। এছাড়া ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ নামে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে বাম সংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট। ঘোষিত প্যানেলে সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন মেঘমল্লার বসু। সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন জাবির আহমেদ জুবেল। ‘ডাকসু ফর চেঞ্জ’ নামে প্যানেল ঘোষণা করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদ। সংগঠনটি থেকে ভিপি পদে কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, জিএস পদে সাবিনা ইয়াসমিন মনোনয়ন পেয়েছেন। এজিএস পদে নাম ঘোষণা করা হয়েছে ঢাবি শাখার সদস্য সচিব রাকিবুল ইসলামের। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরা হলেন ইয়াছিন আরাফাত (ভিপি), খায়রুল আহসান মারজান (জিএস), সাইফ মোহাম্মদ আলাউদ্দিন (এজিএস); ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলে সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী হিসাবে স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংসদের জামালুদ্দিন মুহাম্মাদ খালিদ ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে মো. আবু সায়াদ বিন মাহিন সরকারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও এই প্যানেল থেকে সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ফাতেহা শারমিন অ্যানি। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএল সমর্থিত তিন বাম সংগঠনের যৌথ প্যানেল ঘোষণা করেছে সংগঠনগুলো। তাদের প্যানেলের নাম দেওয়া হয়েছে অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪। যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের শিক্ষার্থী মো. নাইম হাসান হৃদয়কে ভিপি (সহসভাপতি) এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এনামুল হাসান অনয়কে জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী অদিতি ইসলামকে এজিএস (সহসাধারণ সম্পাদক) পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা : ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫ উপলক্ষ্যে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি ভোটকেন্দ্রে তিন স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে এবং হলে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। মঙ্গলবার নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ডাকসু ও হল পর্যায়ের ভিপি, জিএস ও এজিএস প্রার্থীদের সঙ্গে চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তাদের শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন। এ সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী, অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা, অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. এসএম শামীম রেজা, অধ্যাপক ড. তারিক মনজুর, সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীরসহ হলগুলোর অন্যান্য রিটার্নিং কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বরাতে জানানো হয়, নির্বাচনের দিন নিরাপত্তার প্রথম স্তরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি সদস্য ও প্রক্টরিয়াল টিম, দ্বিতীয় স্তরে পুলিশ বাহিনী এবং তৃতীয় স্তরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি প্রবেশমুখে সেনাবাহিনী ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসাবে মোতায়েন থাকবে। প্রয়োজন অনুযায়ী সেনাবাহিনী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবে এবং ভোট শেষে ফলাফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত ভোটকেন্দ্র ঘেরাও করে রাখবে। ভোট গণনার সময় অনুমোদিত ব্যক্তিদের বাইরে অন্য কারও প্রবেশের সুযোগ থাকবে না। আর নির্বাচনের সাত দিন আগে থেকে আবাসিক হলে কোনো বহিরাগত থাকতে পারবে না। নিয়মিত টহলের মাধ্যমে এ ব্যবস্থা কার্যকর করা হবে। তবে ছাত্রীদের হলে বহিরাগতদের কখনোই থাকার সুযোগ নেই। নির্বাচনের আগের দিন এবং নির্বাচনের দিন মেট্রোরেলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন বন্ধ থাকবে। ওইদিন পুরো ক্যাম্পাস সিলগালা থাকবে এবং শুধু বৈধ শিক্ষার্থী, অনুমোদিত সাংবাদিক ও নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাই প্রবেশ করতে পারবেন। ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের ভোটদানের সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন রুটে অতিরিক্ত বাস ট্রিপের ব্যবস্থা করবে। এসব বাস নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করতে পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে। সভায় উপস্থিত সব প্রার্থী নিরাপত্তা সংক্রান্ত এসব সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং কেউ কোনো আপত্তি তোলেননি।
স্থাপিত দুটি ব্যানার ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত প্রচারণা চালাতে পারবেন প্রার্থীরা। তবে ছাত্রী হলে রাত ১০টার পর প্রচারণায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। প্রচারণা চালানোর ক্ষেত্রে মানতে হবে কড়া আচরণবিধি। ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে প্রচারণা এবং ভোট হবে ৯ সেপ্টেম্বর। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে সর্বপ্রথম প্রচারণা শুরু করে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ সমর্থিত সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ। এরপর সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ নামে একটি স্বতন্ত্র প্যানেল সকালে ক্যাম্পাস এলাকায় গণসংযোগ শুরু করে। মো. জামাল উদ্দীন খালিদ এই প্যানেল থেকে ভিপি প্রার্থী। বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিরোধ পর্ষদের ভিপি প্রার্থী শেখ
তাসনিম আফরোজ ইমি, জিএস প্রার্থী মেঘমল্লার বসু এবং এজিএস প্রার্থী মো. জাবির আহমেদ জুবেলের নেতৃত্বে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে পর্ষদের নির্বাচনি প্রচারণার কার্যক্রমের সূচনা হয়। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রতিরোধ পর্ষদের প্রার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে নির্বাচনি জনসংযোগ করেন। সমাজবিজ্ঞান অনুষদের পর কার্জন হল এলাকায় জনসংযোগ করেন। দুপুরের দিকে জগন্নাথ হলের বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্রচারণা কার্যক্রম শুরু করে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা, জিএস প্রার্থী আল সাদী ভূঁইয়াসহ অন্য সদস্যরা। এরপর বেলা ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেল। এ সময় ভিপি
পদপ্রার্থী আবু সাদিক কায়েম বলেন, ‘কেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিনির্মাণ করতে চাই, সেটা সবারই পেশ করা উচিত। যদি আগের কায়দায় বুলিং, ট্যাগিং ও প্রোপাগান্ডার রাজনীতি করি, তাহলে শিক্ষার্থীরা এটিকে প্রতিরোধ করবে। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি পলিটিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে একাডেমিক ইনস্টিটিউটে পরিণত করতে চাই।’ বেলা সাড়ে ৩টায় ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে মহান একাত্তরের শহীদদের স্মৃতিফলক ‘স্মৃতি চিরন্তনে’ শ্রদ্ধা জানিয়ে কার্যক্রম শুরু করে। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ছাত্রদলের ভিপিপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা প্রতিশ্রুতির রাজনীতি নয়, বরং পরিবর্তনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আগামী ডাকসু বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সব সময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করি। একইভাবে
জুলাই আন্দোলনকেও ধারণ করি। প্যানেল ঘোষণার পর সর্বপ্রথম আমরা জুরাইন কবরস্থানে গিয়ে জুলাই শহীদ আনাসের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করেছি। আজ মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে আমাদের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করছি।’ এদিকে বিকাল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া এলাকা থেকে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেল তাদের প্রচারণা শুরু করে। এ সময় প্যানেলের ভিপি আব্দুল কাদের, জিএস আবু বাকের মজুমদার এবং এজিএস আশরেফা খাতুনসহ বাকি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় আব্দুল কাদের বলেন, বিগত সময়ে শিক্ষার্থীরা একটা ট্রমার মধ্য দিয়ে গেছে। হলে হলে দখলদারি চালানো হয়েছে। একটি সিটের জন্য শিক্ষার্থীদের ছাত্রনেতাদের দাসত্ব করতে হয়। শিক্ষার্থীদের মানবিক মর্যাদার যে
জায়গা, অর্থাৎ আবাসন, খাবারসহ শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই। এছাড়া সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে থেকে কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী ডাকসু নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করেন দুপুরের দিকে। তাদের মধ্য ছিলেন স্বতন্ত্র এজিএস প্রার্থী তাহমীদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী, স্বতন্ত্র ক্রীড়া সম্পাদক প্রার্থী জহিন ফেরদৌস জামি এবং স্বতন্ত্র সদস্য প্রার্থী সরদার নাদিম মাহমুদ শুভ। এদিকে সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাম সমর্থিত প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেল থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মোজাম্মেল হক বলেন, ‘ফুলবাড়ী ‘অভ্যুত্থান দিবস’ ছিল, তাই আমরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানালাম। এরপর আমরা সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের সামনে গেছি। বিকালে ভিসি চত্বর এবং রোকেয়া হলের সামনে থাকব। শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে আমরা
বেশ ভালো রেসপন্স পাচ্ছি।’ এদিকে দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা বলেন, প্রচার-প্রচারণা এমনভাবে করব, যেন শিক্ষার্থীদের নিয়মিত কার্যক্রমে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে। অনেক প্রার্থী ১০-১৫ দিন আগে থেকেই অলিখিতভাবে প্রচারণা করেছেন। আমরা বারবার বললেও প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা আশা করব, যে বিধিমালা তারা দিয়েছেন, সেখানে যেন প্রশাসন থাকে। ডাকসুতে যত প্রার্থী : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এই নির্বাচনে মোট ৪৭১ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছেন। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ১৯, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ২৫, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক ১৭; কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক ১১; আন্তর্জাতিক সম্পাদক ১৪ এবং সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ১৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়াও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ১২, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক ৯, ক্রীড়া সম্পাদক ১৩, ছাত্র পরিবহণ সম্পাদক ১২, সমাজসেবা সম্পাদক ১৭, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক ১৫, মানবাধিকার ও আইনবিষয়ক সম্পাদক ১১, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক ১৫ এবং সদস্য পদে ২১৭ জন চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছেন। জানা যায়, যাচাই-বাছাই শেষে ৪৭১ জনকে চূড়ান্ত প্রার্থী মনোনীত করা হয়েছে। তাছাড়া মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন ২৮ জন। আর মনোনয়নপত্র বাতিলের পর ১০ জন আপিল করেননি, যে কারণে ওই ১০ জনের প্রার্থিতাও বাতিল করা হয়েছে। এর আগে ৫০৯ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এবারের ডাকসু নির্বাচনে ৯টি প্যানেল রয়েছে আলোচনায়। এসব প্যানেলের মধ্যে ছাত্রদলের প্যানেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আবিদুল ইসলাম খানকে সহসভাপতি (ভিপি), কবি জসীমউদ্দীন হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শেখ তানভীর বারী হামিমকে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক তানভীর আল হাদী মায়েদকে সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী করা হয়েছে। উমামা ফাতেমার নেতৃত্বে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’র প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা, জিএস প্রার্থী আল সাদী ভূঁইয়া এবং এজিএস পদে জায়েদ রহমান। গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের প্যানেল থেকে ভিপি পদে লড়ছেন আহ্বায়ক আব্দুল কাদের। জিএস পদে আবু বাকের মজুমদার। এছাড়া এজিএস পদে প্রার্থী হয়েছেন সংগঠনটির মুখপাত্র আশরেফা খাতুন। এছাড়া বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভিপি হিসাবে কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ঢাবি শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাদিক কায়েম এবং জিএস পদে ঢাবি শাখার বর্তমান সভাপতি এসএম ফরহাদ মনোনয়ন পেয়েছেন। এজিএস পদে ঢাবি শাখার সেক্রেটারি মহিউদ্দিন খান নির্বাচন করবেন। এছাড়া ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ নামে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে বাম সংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট। ঘোষিত প্যানেলে সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন মেঘমল্লার বসু। সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন জাবির আহমেদ জুবেল। ‘ডাকসু ফর চেঞ্জ’ নামে প্যানেল ঘোষণা করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদ। সংগঠনটি থেকে ভিপি পদে কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, জিএস পদে সাবিনা ইয়াসমিন মনোনয়ন পেয়েছেন। এজিএস পদে নাম ঘোষণা করা হয়েছে ঢাবি শাখার সদস্য সচিব রাকিবুল ইসলামের। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরা হলেন ইয়াছিন আরাফাত (ভিপি), খায়রুল আহসান মারজান (জিএস), সাইফ মোহাম্মদ আলাউদ্দিন (এজিএস); ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলে সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী হিসাবে স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংসদের জামালুদ্দিন মুহাম্মাদ খালিদ ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে মো. আবু সায়াদ বিন মাহিন সরকারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও এই প্যানেল থেকে সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ফাতেহা শারমিন অ্যানি। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএল সমর্থিত তিন বাম সংগঠনের যৌথ প্যানেল ঘোষণা করেছে সংগঠনগুলো। তাদের প্যানেলের নাম দেওয়া হয়েছে অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪। যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের শিক্ষার্থী মো. নাইম হাসান হৃদয়কে ভিপি (সহসভাপতি) এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এনামুল হাসান অনয়কে জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী অদিতি ইসলামকে এজিএস (সহসাধারণ সম্পাদক) পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা : ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫ উপলক্ষ্যে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি ভোটকেন্দ্রে তিন স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে এবং হলে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। মঙ্গলবার নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ডাকসু ও হল পর্যায়ের ভিপি, জিএস ও এজিএস প্রার্থীদের সঙ্গে চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তাদের শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন। এ সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী, অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা, অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. এসএম শামীম রেজা, অধ্যাপক ড. তারিক মনজুর, সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীরসহ হলগুলোর অন্যান্য রিটার্নিং কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বরাতে জানানো হয়, নির্বাচনের দিন নিরাপত্তার প্রথম স্তরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি সদস্য ও প্রক্টরিয়াল টিম, দ্বিতীয় স্তরে পুলিশ বাহিনী এবং তৃতীয় স্তরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি প্রবেশমুখে সেনাবাহিনী ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসাবে মোতায়েন থাকবে। প্রয়োজন অনুযায়ী সেনাবাহিনী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবে এবং ভোট শেষে ফলাফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত ভোটকেন্দ্র ঘেরাও করে রাখবে। ভোট গণনার সময় অনুমোদিত ব্যক্তিদের বাইরে অন্য কারও প্রবেশের সুযোগ থাকবে না। আর নির্বাচনের সাত দিন আগে থেকে আবাসিক হলে কোনো বহিরাগত থাকতে পারবে না। নিয়মিত টহলের মাধ্যমে এ ব্যবস্থা কার্যকর করা হবে। তবে ছাত্রীদের হলে বহিরাগতদের কখনোই থাকার সুযোগ নেই। নির্বাচনের আগের দিন এবং নির্বাচনের দিন মেট্রোরেলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন বন্ধ থাকবে। ওইদিন পুরো ক্যাম্পাস সিলগালা থাকবে এবং শুধু বৈধ শিক্ষার্থী, অনুমোদিত সাংবাদিক ও নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাই প্রবেশ করতে পারবেন। ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের ভোটদানের সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন রুটে অতিরিক্ত বাস ট্রিপের ব্যবস্থা করবে। এসব বাস নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করতে পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে। সভায় উপস্থিত সব প্রার্থী নিরাপত্তা সংক্রান্ত এসব সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং কেউ কোনো আপত্তি তোলেননি।