শুল্কের দরকষাকষিতে যুক্ত হয়েছে শ্রমিক অধিকার – ইউ এস বাংলা নিউজ




শুল্কের দরকষাকষিতে যুক্ত হয়েছে শ্রমিক অধিকার

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৯ জুলাই, ২০২৫ | ১০:৩৬ 83 ভিউ
যুক্তরাষ্ট্র প্রায় দুই দশক ধরে বাংলাদেশের শ্রম খাতের কার্যকর সংস্কারের তাগিদ দিয়ে আসছে। পোশাক তৈরির প্রতিষ্ঠান তাজরীন ফ্যাশন্সে অগ্নিকাণ্ড ও রানাপ্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বাতিল করে দেশটি। এই সুবিধা ফিরে পাওয়ার জন্য নানা চেষ্টাও করেছে বাংলাদেশ। এবার শুল্কহার নির্ধারণ নিয়ে চলমান আলোচনায় শ্রম খাতকেও যুক্ত করেছে ওয়াশিংটন। দরকষাকষিতে শ্রমিকের স্বার্থ সুরক্ষা জোর দিয়ে মালিকপক্ষের জরিমানার পরিমাণ বাড়ানোর শর্ত জুড়ে দিয়েছে তারা। আলোচনায় অংশ নেওয়া ঢাকা ও ওয়াশিংটন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সম্প্রতি তিন দিনব‍্যাপী বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনা ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে দুই দেশের মধ‍্যে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বাণিজ‍্যের গতি-প্রকৃতি কেমন হবে, সেসব বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়।

বেশ কিছু বিষয়ে দুই দেশ মোটামুটিভাবে একমত হয়েছে। শুল্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ন্যায‍্যতা প্রত‍্যাশা করে। কিছু বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে। ফলে আবারও দুই দেশ আলোচনায় বসবে। সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র চাইছে বাংলাদেশে এমন কোনো আইন থাকুক, যাতে করে কোনো দেশে জোরপূর্বক বা বাধ্যতামূলক শ্রমের মাধ্যমে তৈরি করা পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করা যায়। একে যুক্তরাষ্ট্রের ১৯৩০ সালের শুল্ক আইনে সংশ্লিষ্ট ধারার আদলে কার্যকর করার শর্ত দিয়েছে তারা। বাংলাদেশের শ্রম আইনে দরকষাকষি ও সমাবেশ করার স্বাধীনতাকে সুরক্ষা দিতে শ্রম আইন সংশোধন করতে বলেছে দেশটি। এ জন্য শ্রম ইউনিয়ন নিবন্ধনে ২০ শতাংশ শ্রমিকের অংশগ্রহণের যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তা কমাতে বলেছে তারা। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলএ)

সুপারিশ রয়েছে ১৫ শতাংশ। সে সঙ্গে ইউনিয়ন নিবন্ধনে শ্রমিকদের কারখানা ও জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মসনদ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা শিথিল করার শর্ত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি শ্রমিক ইউনিয়নবিরোধী কাজ ও অন্যায্য শ্রমচর্চা রোধে জরিমানার পরিমাণ এমন পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে; যাতে মালিকপক্ষ এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকে। শ্রমিকদের কালো তালিকাভুক্ত করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সেই সঙ্গে শ্রমিক এবং ইউনিয়নকে অন্যায্য শ্রমচর্চার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করার সুযোগ দিতে হবে। শ্রমিকদের ধর্মঘট করার অধিকার দিতে হবে। শ্রমিকরা অবৈধ ধর্মঘট করলেও তাদের জেল-জরিমানা করা যাবে না। সরকারের উচ্চপর্যায়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বাইডেন প্রশাসনের অগ্রাধিকার ছিল শ্রম অধিকার, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র।

ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হলে এ বিষয়গুলোতে যুক্তরাষ্ট্র আগের মতো কঠোর থাকবে না বলে ধারণা করা হয়েছিল। ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক আলোচনায় সম্ভাব্য সব হাতিয়ারই ব্যবহার করছে। শ্রম অধিকারও এ থেকে বাদ যায়নি। ওই কর্মকর্তা বলেন, শ্রম অধিকার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশকে আরও অনেক কাজ করতে হবে– এ বিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই। এ জন্য বাংলাদেশ আইএলওর পথনকশা অনুসরণ করছে। যুক্তরাষ্ট্র আগে আইএলওর পথনকশা অনুসরণের কথা বললেও এখন আর তা বলছে না। নিজেরাই শর্ত জুড়ে দিচ্ছে। সূত্র জানায়, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) যাতে শ্রমিকরা ইউনিয়ন করার সুযোগ পায়, সে জন্য সেখানে শ্রম আইন কার্যকর করার কথা বলা হচ্ছে। এটি করা না গেলে ইপিজেডের জন্য এমন

আইন করতে হবে, যাতে শ্রমিকরা সেখানে ইউনিয়ন করতে পারে। শ্রমিকদের ইপিজেডে ধর্মঘট করার অধিকারও দিতে হবে। ইপিজেডে শ্রমিকরা অবৈধভাবে ধর্মঘট করলেও তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। ২০২৩ সালের ন্যূনতম মজুরি আন্দোলনসহ বৈধ শ্রম ইউনিয়ন ও আন্দোলনে যুক্ত থাকার কারণে শ্রমিক নেতা ও তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের বিরুদ্ধে থাকা ফৌজদারি মামলাগুলো হয় সমাধান করতে হবে, না হয় বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশকে একটি স্বচ্ছ ও নিয়মিত মজুরি পর্যালোচনা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যাতে প্রতি তিন বছর পরপর শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করতে পারে। শ্রমিকদের কার্যকরভাবে সমাবেশ ও সংগঠন করার অধিকার নিশ্চিত করতে ৫৫ দিনের মধ্যে আদেবনকৃত শ্রম ইউনিয়নের নিবন্ধন প্রক্রিয়া নিষ্পত্তি করতে

হবে। সেই সঙ্গে আবেদনগুলো কোন পর্যায়ে রয়েছে, তা অনলাইনে প্রকাশ করতে হবে। নিবন্ধনের প্রক্রিয়া সংশোধিত শ্রম আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হতে হবে। শ্রম আইনের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে শ্রম পরিদর্শক বাড়ানো, এ খাতে অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো এবং পরিদর্শকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে জোরপূর্বক এবং শিশুশ্রমসহ শ্রম আইন লঙ্ঘনের কারণে ঘোষণা ছাড়াই ইপিজেডসহ বাংলাদেশের যে কোনো কারখানা পরিদর্শন এবং প্রয়োজনে আইনি নিষেধাজ্ঞার ক্ষমতা পরিদর্শকদের দিতে হবে। ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যর্থতার কারণে জরিমানাসহ অন্যান্য শাস্তির পরিমাণ বাড়ানোর মতো শর্ত শুল্ক নিয়ে দরকষাকষিতে বাংলাদেশকে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, শ্রমসংক্রান্ত শর্তেও যুক্তরাষ্ট্রে লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে চীন আছে। জোরপূর্বক বা বাধ্যতামূলক

শ্রমের বিষয়ে চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ পুরোনো। এখন যুক্তরাষ্ট্রের এই শর্ত মেনে নিলে চীনের নিষেধাজ্ঞায় থাকা প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য আমদানি করতে পারবে না বাংলাদেশ।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
তিন খানকে এক সুতোয় গাঁথছেন আরিয়ান? স্বর্ণের দাম আরও বাড়ল দেশের আকাশে রক্তলাল চন্দ্রগ্রহণ থাকবে যতক্ষণ, দেখা যাবে ২ গ্রহ রাশিয়ার ক্যানসার ভ্যাকসিন ট্রায়ালে সফল আ.লীগের ঝটিকা মিছিল স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকে কুপিয়ে জখম, গণঅধিকার পরিষদ নেতার বিরুদ্ধে মামলা ছিনতাইকারী সন্দেহে প্রতিবন্ধী যুবককে পিটিয়ে হত্যা রাশিয়ার ক্যানসার ভ্যাকসিন ট্রায়ালে সফল অবৈধ ইসরাইলি বসতিতে কুদস ব্রিগেডের রকেট হামলা ২০২৬ সালে ৪৭ মিলিয়ন পর্যটকের স্বপ্নে মালয়েশিয়া মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাস বিকৃতকারী বদরুদ্দীন উমর আর নেই গড় কমলেও আগস্টে বেড়েছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দুদকের উপপরিচালক মাহবুবুল আলম বরখাস্ত কেন পুরস্কার গ্রহণ করতেন না বদরুদ্দীন উমর? রাশিয়া-ইউক্রেনের বাফার জোনে সেনা পাঠাবে বাংলাদেশ ও সৌদি? বাগেরহাটে ৩ দিনের হরতালের ঘোষণা দুই মহাসড়ক অবরোধ যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের সামনে বিক্ষোভ, গ্রেপ্তার ৪ শতাধিক গাজা থেকে ইসরায়েলে রকেট হামলা সৌদি-ইরানের থেকেও বেশি তেল ভেনেজুয়েলায়, তারপরও লাভে নেই