দাঙ্গা না বাঁধলে কোনো তাজা গুলি ব্যবহার নয়: হাইকোর্ট – ইউ এস বাংলা নিউজ




দাঙ্গা না বাঁধলে কোনো তাজা গুলি ব্যবহার নয়: হাইকোর্ট

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৬ মার্চ, ২০২৫ | ৮:০৪ 4 ভিউ
মিছিল-সমাবেশে গুলি চালানোর বিষয়ে সাত দফা নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত বছরের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হেফাজতে থাকা ছয় ছাত্র সমন্বয়কের মুক্তির দাবিতে এবং মিছিল, সমাবেশ ও জনসভায় তাজা গুলির ব্যবহার বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের রায়ে এমন নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত বছরের ৪ আগস্ট বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এসএম মাসুদ হোসাইন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। সম্প্রতি ওই রায়ের অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। রায়ে শান্তিপূর্ণ মিছিল, সমাবেশ ও জনসভায় অংশগ্রহণের অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকবে উল্লেখ করে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি সাত দফা নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায়ে বলা হয়েছে, এ রিট আবেদনে জীবন ও স্বাধীনতার অধিকারের বিষয়টি

জড়িত, যা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সে কারণে রিট আবেদনটি গ্রহণযোগ্য (মেইনটেনেবল) হতে পারে। আমাদের দৃষ্টিতে ও পূর্বোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এবং রিটকারীদের আইনজীবী কর্তৃক দাখিল করা নির্দেশিকা অনুসরণ করা যেতে পারে। তাই আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা নিুলিখিত নির্দেশনা অনুসরণ করার চেষ্টা করবে। সেগুলো হলো- ১. বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ মিছিল, সমাবেশ ও জনসভায় অংশগ্রহণের অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকবে। ২. মানুষের জীবন সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মানুষের জীবন ও জীবনের মর্যাদা সমুন্নত রাখাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে। ৩. আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো তাদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে যখন কঠোরভাবে প্রয়োজন শুধু তখনই প্রয়োজনীয় পরিমাণে বলপ্রয়োগ করতে পারে। ৪. দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো মানুষকে সম্মান করবে, মানুষের মর্যাদা

রক্ষা করবে এবং সব ব্যক্তির মানবাধিকার সমুন্নত ও বজায় রাখবে। ৫. বৈষম্যহীন : শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা প্রত্যেক নাগরিক সমানভাবে উপভোগ করবে এবং কর্তৃপক্ষের কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা সংস্থার বিরুদ্ধে কোনো কারণে বৈষম্য করা উচিত নয়। ৬. সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে (আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা) অবশ্যই তাদের আইনগত বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে হবে এবং তা পালনে ব্যর্থতার জন্য তাদের পদ্ধতিগত বা আইনগতভাবে দায়বদ্ধ হতে হবে। ৭. একটি সাধারণ সমাবেশ বা মিছিল যখন বেআইনি সমাবেশে পরিণত হয় তখন পুলিশ কী করবে-পুলিশ বেআইনি সমাবেশ, দাঙ্গা ও জনস্বাস্থ্যের বিরুদ্ধে অন্যান্য অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে আমাদের দেশের সংবিধানের সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ, দণ্ডবিধি এবং প্রচলিত আইনের প্রয়োগ চালিয়ে যাবে। এ পরিস্থিতিতে পুলিশ সংবিধানের প্রাসঙ্গিক অনুচ্ছেদের

পাশাপাশি প্রচলিত আইন অনুসরণ করবে। রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট উল্লেখ করেন, কেউ আইন লঙ্ঘন করলে পুলিশ বা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ব্যবহারের পর তাজা গুলি ব্যবহার করতে পারে। যদি কোনো আইন লঙ্ঘন না হয় বা কোনো দাঙ্গা না হয়, তাহলে কোনো তাজা বুলেট ব্যবহার করা যাবে না। তাই একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে, আইনের সব দিক এবং নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ভিন্নমত ও গণতন্ত্র যেন হাতে-কলমে চলে এবং আইনের শাসন যেন অবশ্যই প্রাধান্য পায় সেদিকে খেয়াল রেখে পুলিশের কাজ করা অত্যাবশ্যক। এটা বলা যথেষ্ট যে, ছয়জন সমন্বয়ককে তাদের স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল এবং কোনো আইনগত কর্তৃত্ব ছাড়াই তাদের অবৈধ হেফাজতে রাখা

হয়েছিল। তবে ইতোমধ্যে ছয় সমন্বয়ককে অবৈধ হেফাজত থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যেহেতু রিট পিটিশনের প্রার্থনার দ্বিতীয় অংশ এখন অকার্যকর হয়ে পড়েছে। তবে এ আদালতের অভিমত যে, এ বিষয়ে আর কোনো আদেশের প্রয়োজন নেই। তবে উপরে বর্ণিত বিষয়টি প্রাসঙ্গিক কারণ, অ্যাটর্নি জেনারেলের দাখিল করা বিষয়বস্তু (আইন ও বিধি) বিবেচনা করে এবং হাইকোর্টের রুলস অনুযায়ী এ আবেদনটি দায়ের না করায় তা খারিজ করা হলো। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন, তবারক হোসেন, জেডআই খান পান্না, ব্যারিস্টার অনীক আর হক, মো. ওমর ফারুক, আইনজীবী মানজুর-আল-মতিন ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর, শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ,

মেহেদী হাসান চৌধুরী, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সেলিম আজাদ, আনিস-উল মাওয়া ও নাজমা আফরিন। এছাড়া ওই রিটের শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসূফ হোসেন হুমায়ুন, নুরুল ইসলাম সুজন, আজহার উল্লাহ ভূঁইয়া, শাহ মঞ্জরুল হক, মোতাহার হোসেন সাজু, মো. শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া। এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন স্থানে অংশ নেওয়া আন্দোলনকারীদের ওপর তাজা গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে গত বছরের ২৯ জুলাই হাইকোর্টে রিট করা হয়। রিটে ‘কথিত আটক’ ছয় সমন্বয়ককে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশনাও চাওয়া হয়। সুপ্রিমকোর্টের দুই আইনজীবী মানজুর-আল-মতিন ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা আবেদনকারী হয়ে ওই রিটটি দায়ের করেন। রিটে আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব,

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছিল। এরপর কয়েকটি নির্দেশনা দিয়ে গত বছরের ৪ আগস্ট রিট আবেদনটি পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
রাশিয়া-ইউক্রেনের পাল্টা বিমান হামলা চলছেই স্বামীকে আটকে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৫ ধর্ষণ নিয়ে ডিএমপি কমিশনারের মন্তব্যের নিন্দা সরকারের গতি বাড়াতে নতুন রান আপের চেষ্টা তানজিমের যশোরে চার বছরের শিশুকে জিম্মি করে মাকে ধর্ষণচেষ্টা ‘ভুল চিকিৎসায়’ রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতালে স্বজনদের ভাঙচুর সুদ-ঘুষের বয়ানকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, থানা ঘেরাও চট্টগ্রামে টেরিবাজারে কাপড়ের গুদামে আগুন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশির মৃত্যু বাংলাদেশিকে নির্যাতনের পর মৃত ভেবে সীমান্তে ফেলে গেল বিএসএফ মনপুরায় রাতভর সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, দুই যুবক গ্রেফতার অনিন্দ্য শিকারি মাছরাঙা অতিরিক্ত খেলাপি ঋণে বিপর্যস্ত ৫ ব্যাংক দিল্লিতে মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসি, আলোচনা হবে বাংলাদেশ নিয়েও ইয়েমেনে প্রায় ৫ লাখ মাইন ও বিস্ফোরক অপসারণ করেছে সৌদি আরব ট্রাম্পের হুমকির জবাবে ইরানের হুঁশিয়ারি রোমে বাংলাদেশিদের জন্য পৃথক মুসলিম কবরস্থানের উদ্যোগ সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের বাসায় অভিযান মালয়েশিয়ায় দুই শিশুসহ ৩৫ অবৈধ অভিবাসী গ্রেফতার অতিরিক্ত খেলাপি ঋণে বিপর্যস্ত ৫ ব্যাংক