ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর
বহুজাতিক সমাজে ইসলামিক শিক্ষাদানে এলহাম একাডেমির প্রশংসা
আলবেনিতে বিজয়ের অনুষ্ঠান ‘হৃদয়ের গভীরে ভালোবাসায় আঁকা প্রিয় বাংলাদেশ প্রিয় আমেরিকা’
নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে “আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০২৪” ও “জাতীয় প্রবাসী দিবস-২০২৪”
মইনুল-আসাদ নেতৃত্বাধীন জালালাবাদ এসোসিয়েশনের বিজয় দিবস পালন
নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে মহান বিজয় দিবস উদযাপন
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে মহান বিজয় দিবস-২০২৪ উদযাপন
নিউইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটির অভিষেক উৎসবে ভুয়া ভুয়া স্লোগানে তুলকালাম কাণ্ড
আলবেনিতে বিজয়ের অনুষ্ঠান ‘হৃদয়ের গভীরে ভালোবাসায় আঁকা প্রিয় বাংলাদেশ প্রিয় আমেরিকা’
‘বাংলাদেশী আমেরিকান ফাউন্ডেশন অব আলবেনী’ (বাফা), নিউইয়র্ক স্টেটের রাজধানী আলবেনীর ‘লেথাম রিজ স্কুল’ চত্বর এবং অডিটরিয়ামে ২১ ডিসেম্বর শনিবার দিনব্যাপী বিজয় দিবস’র অনুষ্ঠানটি বিপুলসংখ্যক বাঙালির উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে উদযাপিত হয়। আবহাওয়ার প্রতিকুলতা উপেক্ষা করেই সকাল থেকে সংগঠনের নারী-পুরুষ এবং শিশুদের লাল-সবুজ পোষাকে আগমন, নিবন্ধন, কুশল বিনিময়, আলোকচিত্র ধারণ, বিভিন্ন স্টলে কেনাবেচা এবং সাজসজ্জার ব্যস্ততায় যেন এক টুকরো লাল-সবুজের বাংলাদেশ প্রজ্জ্বলিত হয়ে উঠেছিল। সাথে ছিলেন এলাকার উৎফুল্ল প্রবাসীরাও। সকাল গড়িয়ে দুপুর ভর করতেই চত্বরটি আলবেনীর বাঙালিদের একটি বিশাল মিলনমেলায় পরিণত হয়।
বাফা স্বেচ্ছাসেবক দলের সুশৃঙ্খলভাবে বিজয় দিবসের খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থাপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। মিষ্টান্ন থেকে কোমল পানীয়, চা, কফি কোনো কিছুরই কমতি
ছিল না। খাবার পর্ব শেষ করে পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী সবাই অডিটরিয়ামে নিজ নিজ আসন গ্রহণের পর বিকেল ৩.০০ টায় শুরু হলো বিজয় দিবস উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা। অনুষ্ঠানটি চার পর্বে বিভক্ত ছিল। প্রথম পর্বে শুধুমাত্র শিশু- কিশোরদের পরিবেশনা ‘হৃদয়ের গভীরে ভালোবাসায় আঁকা প্রিয় বাংলাদেশ প্রিয় আমেরিকা’ পর্বটিতে বাংলাদেশ এবং আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন রহিম বাদশাহ। পরবর্তীতে দেশাত্মবোধক গানের সাথে নৃত্য পরিবেশিত হয়, কোরিওগ্রাফার ছিলেন তানিয়া মানির। প্রথম পর্বে অংশ গ্রহণকারী শিশুরা ছিল আফিজা চৌধুরী, আলিশা হক, আরিবা তারিক, আরমীণ ভুঁইয়া, ফাইজা ফরহাদ, ফারিয়া হক, মাহাদ তারিক, মাহ্রাস কাজী, মুয়াদ আহমেদ, নাজিয়া হুদা, নিহাল মাসুদ, রাযিন রাইসা, রিহান বাদশাহ,
সাফা জামান, সিফান আহমেদ, সঞ্জিতা শিকদার, শাহান রাকিন আনোয়ার, সুমায়রা রাহা আহমেদ, তাসকিন আরেফিন, তাজমীন জামান, জাহিন হোসেন, জাহিয়া জামান, এবং জারিয়া আহমেদ। দ্বিতীয় পর্বে ছিল বিজয় দিবসের আলোচনা এবং স্পন্সর পরিচিতি পর্ব। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাফার চেয়ারম্যান ড. হুমায়ুন কবির এবং প্রেসিডেন্ট সোহেল আহমেদ। বক্তাগণ স্বাধীনতা আন্দোলনের সকল মহান নেতৃত্ব, সংগঠক, ৩০ লক্ষ শহীদ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখা সকল স্তরের বাঙালিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং তাঁদের ত্যাগের কথা স্মরণ করে গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাঁরা বাংলা সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে বাফা পরিবারের আগ্রহকে সাধুবাদ জানান। বিশেষত নতুন প্রজন্মের আমেরিকান-বাঙালি শিশুদের মনে মা-বাবার শেকড়ের প্রতি সম্মান এবং
শ্রদ্ধা জ্ঞাপনে বাঙালি সংস্কৃতিকে লালন করার জন্য পিতা-মাতার অব্যাহত প্রচেষ্টাকে অভিনন্দিত করেন। অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনদের ভেতর আরও ছিলেন ক্লিফটন পার্কের টাউন সুপারভাইজার এবং ‘চেয়ার অব দা স্যারাটোগা কাউন্টি বোর্ড’র সুপারভাইজার ফিল ব্যারেট ও ক্লিফটন পার্ক টাউন জজ রবার্ট রাইবেক। তাঁরা উভয়েই অনুষ্ঠানের সবগুলো পর্ব উপভোগ করেন এবং অনুষ্ঠান শেষে শিল্পীদের অভিনন্দিত করেন। আয়োজনের অন্যতম পৃষ্টপোষক নিউইয়র্ক লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানটির ফাইন্যান্সিয়াল প্ল্যানার এবং সাংবাদিক সুলতানা রহমান পুতুল ও অফিস পার্টনার ব্র্যানডন কার্ল । এসময় তাঁরা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কীভাবে মানুষের নিরাপত্তার অন্যতম ভিত্তি হিসেবে কাজ করতে পারে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। পুরো আয়োজনে আরো সহযোগিতা করেছেন মোঃ আহসানুল হক
(রিয়্যালটি ওয়ান গ্রুপ) এবং আলাদীন হালাল গ্রুপ। তৃতীয় পর্বে বাফা সদস্যদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হয় গীতি-নৃত্যাল্লেখ্য ‘সবকটা জানালা খুলে দাও না’ । ১৭৫৭ সালের পলাশির প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্ত যাওয়ার পর থেকে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন পর্যন্ত এক সুদীর্ঘ সময়ের অব্যাহত আন্দোলন, সংগ্রাম, আত্ম-উৎসর্গ আর ত্যাগের মহিমান্বিত উপাখ্যানের আলোকে গীতিনৃত্যাল্লেখ্যটির স্ক্রীপ্ট, গ্রন্থনা, পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় ছিলেন আবৃত্তি শিল্পী আনোয়ারুল হক লাভলু। বাফা আলবেনীর সঙ্গীত, নৃত্য এবং আবৃত্তির একত্রিশ জন শিল্পীর অংশগ্রহণে পরিবেশিত গীতিনৃত্যাল্লেখ্যটিতে যে সব কবি এবং লেখকদের গান, কবিতা এবং লেখা সংযোজিত হয়েছে তারা হচ্ছেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, মুকুন্দ দাস, মোহিনী চৌধুরী, আব্দুল
গাফ্ফার চৌধূরী, আব্দুল লতিফ, গৌরী প্রসন্ন মজুমদার, গিরীন চক্রবর্তী, শামসুর রাহমান, সিকান্দার আবু জাফর, সৈয়দ শামসুল হক, প্রতুল মুখোপধ্যায়, ফজল শাহাবুদ্দীন, নির্মলেন্দু গুণ, মহাদেব সাহা, নঈম গওহর, নজরুল ইসলাম বাবু, আনোয়ার হোসেন রনি, আনোয়ারুল হক লাভলু এবং কবি বেনজির শিকদার। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক আনিকা সুবাহ আহমদ উপমা কবি বেনজির শিকদারের ‘বিজয় উৎসব’ কবিতা আবৃত্তির মধ্যদিয়ে পর্বটির সূচনা করেন এবং আবৃত্তিশিল্পী আনোয়ারুল হক লাভলুর ইতিহাস কথনের মধ্যদিয়ে দর্শকবৃন্দ গীতিনৃত্যাল্লেখ্য ‘সবকটা জানালা খুলে দাও না’ এর মুল পর্বে প্রবেশ করেন। পিন পতন নিরবতায় ইতিহাস, কথা, কবিতা, নৃত্য এবং সঙ্গীতের মূর্ছনায় সেই বৃটিশ বিরোধী সংগ্রাম থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের বীরগাথার বর্ণনায় হলভর্তি দর্শকের অনেকেই ফিরে যান
একাত্তরের ৭ মার্চে, ফিরে যান একাত্তরে, ফিরে যান মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে। কেউবা শেকড়ের গৌরবগাথায় বারবার শিহরিত হতে থাকেন। এমনকি এসময় অনেক দর্শক অশ্রুসজল হড়ে পড়েন। ‘বিজয় উৎসব’ কবিতার শেষ লাইনটি “শোক নয় শোক নয় হোক উৎসব” সকল শিল্পীর কণ্ঠে সমবেত উচ্চারণের মধ্যদিয়ে গীতিনৃত্যাল্লেখ্য ‘সবকটা জানালা খুলে দাও না’র পরিবেশনা শেষ করা হয় । সঙ্গীতে অংশগ্রহণ করেছেন শিল্পী শর্মী রহমান খান, এলিজা সাত্তার লিসা, সুমিতা দে, সোমা পাল, নুরুন্নাহার বিউটি, প্রিংকা সাহা, মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান, আব্দুল্লাহ খান তুষার এবং রহিম বাদশাহ। আবৃত্তিতে অংশগ্রহণ করেছেন জান্নাতুল ফেরদৌস আরা জলি, ফারহানা পলি, জয়া সাহা, জাবেদ মনির, মিজানুর রহমান প্রধান এবং আনোয়ারুল হক লাভলু । নৃত্যে অংশগ্রহণ করেছেন জারিয়া আহমেদ ,রাযিন রাইসা, মাহাদ তারিক, নিহাল মাসুদ, রাবাব আহসান, তাজমিরা তামান্না, ফারহানা ইসলাম , সাদিয়া শামস, রাকিবা আহমেদ এবং নৃত্য শিল্পী তানিয়া মানির। নৃত্যের সাথে চরিত্র রূপায়ণ করেছেন রকিবুল আনোয়ার, আসিফ আহমেদ এবং দিলরুবা কলি। সঙ্গীত পরিচালনা করেন সঙ্গীতশিল্পী শর্মী খাঁন, তবলায় সঙ্গত করেছেন- শিল্পী খশবু আলম, কিবোর্ড মিউজিকে ছিলেন মোস্তফা জামান। কোরিওগ্রাফ, নৃত্যের পোষাক পরিকল্পনা এবং নৃত্য পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন নৃত্যশিল্পী এলিজা সাত্তার। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক আনিকা সুবাহ আহমদ উপমা এবং মিজানুর রহমান প্রধান সকল শিল্পীকে পরিচয় করিয়ে দেন এবং অনুষ্ঠানের নির্দেশক আনোয়ারুল হক লাভলুকে শুভেচ্ছা প্রদানের আমন্ত্রণ জানান। নির্দেশক লাভলু বক্তব্যের শেষ অংশে উল্লেখ করেন, “বৃটিশ শাসন আমল থেকে বাঙালির মুক্তির জন্য যাঁরা সংগ্রাম করেছেন, স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, জীবন উৎসর্গ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব বলে আমি মনে করি। কারন স্বাধীনতা না পেলে, স্বাধীনজাতি হিসেবে পরিচিত হতে না পেলে বাংলাদেশী বাঙালি হিসেবে পৃথিবীর বুকে কখনোই আমরা এমন প্রতিষ্ঠা পেতাম না। সেই সম্মান এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করাই ছিল আমাদের আজকের “সবকটা জানালা খুলে দাও না” গীতিনৃত্যাল্লেখ্য’র মূল মন্ত্র”। নির্দেশকের শুভেচ্ছা বক্তব্েযর পর তুমুল করতালির মাধ্যমে দর্শকবৃন্দ শিল্পী, কলাকুশলী এবং নির্দেশক আবৃত্তিশিল্পী আনোয়ারুল হক লাভলুকে অভিনন্দিত করেন। বাফার প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য মিজানুর রহমান প্রধানের পরিচালনায় শেষপর্বটি অর্থাৎ র্যাফেল ড্র আয়োজনটি অত্যন্ত আনন্দ উল্লাসের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
ছিল না। খাবার পর্ব শেষ করে পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী সবাই অডিটরিয়ামে নিজ নিজ আসন গ্রহণের পর বিকেল ৩.০০ টায় শুরু হলো বিজয় দিবস উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা। অনুষ্ঠানটি চার পর্বে বিভক্ত ছিল। প্রথম পর্বে শুধুমাত্র শিশু- কিশোরদের পরিবেশনা ‘হৃদয়ের গভীরে ভালোবাসায় আঁকা প্রিয় বাংলাদেশ প্রিয় আমেরিকা’ পর্বটিতে বাংলাদেশ এবং আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন রহিম বাদশাহ। পরবর্তীতে দেশাত্মবোধক গানের সাথে নৃত্য পরিবেশিত হয়, কোরিওগ্রাফার ছিলেন তানিয়া মানির। প্রথম পর্বে অংশ গ্রহণকারী শিশুরা ছিল আফিজা চৌধুরী, আলিশা হক, আরিবা তারিক, আরমীণ ভুঁইয়া, ফাইজা ফরহাদ, ফারিয়া হক, মাহাদ তারিক, মাহ্রাস কাজী, মুয়াদ আহমেদ, নাজিয়া হুদা, নিহাল মাসুদ, রাযিন রাইসা, রিহান বাদশাহ,
সাফা জামান, সিফান আহমেদ, সঞ্জিতা শিকদার, শাহান রাকিন আনোয়ার, সুমায়রা রাহা আহমেদ, তাসকিন আরেফিন, তাজমীন জামান, জাহিন হোসেন, জাহিয়া জামান, এবং জারিয়া আহমেদ। দ্বিতীয় পর্বে ছিল বিজয় দিবসের আলোচনা এবং স্পন্সর পরিচিতি পর্ব। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাফার চেয়ারম্যান ড. হুমায়ুন কবির এবং প্রেসিডেন্ট সোহেল আহমেদ। বক্তাগণ স্বাধীনতা আন্দোলনের সকল মহান নেতৃত্ব, সংগঠক, ৩০ লক্ষ শহীদ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখা সকল স্তরের বাঙালিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং তাঁদের ত্যাগের কথা স্মরণ করে গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাঁরা বাংলা সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে বাফা পরিবারের আগ্রহকে সাধুবাদ জানান। বিশেষত নতুন প্রজন্মের আমেরিকান-বাঙালি শিশুদের মনে মা-বাবার শেকড়ের প্রতি সম্মান এবং
শ্রদ্ধা জ্ঞাপনে বাঙালি সংস্কৃতিকে লালন করার জন্য পিতা-মাতার অব্যাহত প্রচেষ্টাকে অভিনন্দিত করেন। অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনদের ভেতর আরও ছিলেন ক্লিফটন পার্কের টাউন সুপারভাইজার এবং ‘চেয়ার অব দা স্যারাটোগা কাউন্টি বোর্ড’র সুপারভাইজার ফিল ব্যারেট ও ক্লিফটন পার্ক টাউন জজ রবার্ট রাইবেক। তাঁরা উভয়েই অনুষ্ঠানের সবগুলো পর্ব উপভোগ করেন এবং অনুষ্ঠান শেষে শিল্পীদের অভিনন্দিত করেন। আয়োজনের অন্যতম পৃষ্টপোষক নিউইয়র্ক লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানটির ফাইন্যান্সিয়াল প্ল্যানার এবং সাংবাদিক সুলতানা রহমান পুতুল ও অফিস পার্টনার ব্র্যানডন কার্ল । এসময় তাঁরা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কীভাবে মানুষের নিরাপত্তার অন্যতম ভিত্তি হিসেবে কাজ করতে পারে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। পুরো আয়োজনে আরো সহযোগিতা করেছেন মোঃ আহসানুল হক
(রিয়্যালটি ওয়ান গ্রুপ) এবং আলাদীন হালাল গ্রুপ। তৃতীয় পর্বে বাফা সদস্যদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হয় গীতি-নৃত্যাল্লেখ্য ‘সবকটা জানালা খুলে দাও না’ । ১৭৫৭ সালের পলাশির প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্ত যাওয়ার পর থেকে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন পর্যন্ত এক সুদীর্ঘ সময়ের অব্যাহত আন্দোলন, সংগ্রাম, আত্ম-উৎসর্গ আর ত্যাগের মহিমান্বিত উপাখ্যানের আলোকে গীতিনৃত্যাল্লেখ্যটির স্ক্রীপ্ট, গ্রন্থনা, পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় ছিলেন আবৃত্তি শিল্পী আনোয়ারুল হক লাভলু। বাফা আলবেনীর সঙ্গীত, নৃত্য এবং আবৃত্তির একত্রিশ জন শিল্পীর অংশগ্রহণে পরিবেশিত গীতিনৃত্যাল্লেখ্যটিতে যে সব কবি এবং লেখকদের গান, কবিতা এবং লেখা সংযোজিত হয়েছে তারা হচ্ছেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, মুকুন্দ দাস, মোহিনী চৌধুরী, আব্দুল
গাফ্ফার চৌধূরী, আব্দুল লতিফ, গৌরী প্রসন্ন মজুমদার, গিরীন চক্রবর্তী, শামসুর রাহমান, সিকান্দার আবু জাফর, সৈয়দ শামসুল হক, প্রতুল মুখোপধ্যায়, ফজল শাহাবুদ্দীন, নির্মলেন্দু গুণ, মহাদেব সাহা, নঈম গওহর, নজরুল ইসলাম বাবু, আনোয়ার হোসেন রনি, আনোয়ারুল হক লাভলু এবং কবি বেনজির শিকদার। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক আনিকা সুবাহ আহমদ উপমা কবি বেনজির শিকদারের ‘বিজয় উৎসব’ কবিতা আবৃত্তির মধ্যদিয়ে পর্বটির সূচনা করেন এবং আবৃত্তিশিল্পী আনোয়ারুল হক লাভলুর ইতিহাস কথনের মধ্যদিয়ে দর্শকবৃন্দ গীতিনৃত্যাল্লেখ্য ‘সবকটা জানালা খুলে দাও না’ এর মুল পর্বে প্রবেশ করেন। পিন পতন নিরবতায় ইতিহাস, কথা, কবিতা, নৃত্য এবং সঙ্গীতের মূর্ছনায় সেই বৃটিশ বিরোধী সংগ্রাম থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের বীরগাথার বর্ণনায় হলভর্তি দর্শকের অনেকেই ফিরে যান
একাত্তরের ৭ মার্চে, ফিরে যান একাত্তরে, ফিরে যান মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে। কেউবা শেকড়ের গৌরবগাথায় বারবার শিহরিত হতে থাকেন। এমনকি এসময় অনেক দর্শক অশ্রুসজল হড়ে পড়েন। ‘বিজয় উৎসব’ কবিতার শেষ লাইনটি “শোক নয় শোক নয় হোক উৎসব” সকল শিল্পীর কণ্ঠে সমবেত উচ্চারণের মধ্যদিয়ে গীতিনৃত্যাল্লেখ্য ‘সবকটা জানালা খুলে দাও না’র পরিবেশনা শেষ করা হয় । সঙ্গীতে অংশগ্রহণ করেছেন শিল্পী শর্মী রহমান খান, এলিজা সাত্তার লিসা, সুমিতা দে, সোমা পাল, নুরুন্নাহার বিউটি, প্রিংকা সাহা, মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান, আব্দুল্লাহ খান তুষার এবং রহিম বাদশাহ। আবৃত্তিতে অংশগ্রহণ করেছেন জান্নাতুল ফেরদৌস আরা জলি, ফারহানা পলি, জয়া সাহা, জাবেদ মনির, মিজানুর রহমান প্রধান এবং আনোয়ারুল হক লাভলু । নৃত্যে অংশগ্রহণ করেছেন জারিয়া আহমেদ ,রাযিন রাইসা, মাহাদ তারিক, নিহাল মাসুদ, রাবাব আহসান, তাজমিরা তামান্না, ফারহানা ইসলাম , সাদিয়া শামস, রাকিবা আহমেদ এবং নৃত্য শিল্পী তানিয়া মানির। নৃত্যের সাথে চরিত্র রূপায়ণ করেছেন রকিবুল আনোয়ার, আসিফ আহমেদ এবং দিলরুবা কলি। সঙ্গীত পরিচালনা করেন সঙ্গীতশিল্পী শর্মী খাঁন, তবলায় সঙ্গত করেছেন- শিল্পী খশবু আলম, কিবোর্ড মিউজিকে ছিলেন মোস্তফা জামান। কোরিওগ্রাফ, নৃত্যের পোষাক পরিকল্পনা এবং নৃত্য পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন নৃত্যশিল্পী এলিজা সাত্তার। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক আনিকা সুবাহ আহমদ উপমা এবং মিজানুর রহমান প্রধান সকল শিল্পীকে পরিচয় করিয়ে দেন এবং অনুষ্ঠানের নির্দেশক আনোয়ারুল হক লাভলুকে শুভেচ্ছা প্রদানের আমন্ত্রণ জানান। নির্দেশক লাভলু বক্তব্যের শেষ অংশে উল্লেখ করেন, “বৃটিশ শাসন আমল থেকে বাঙালির মুক্তির জন্য যাঁরা সংগ্রাম করেছেন, স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, জীবন উৎসর্গ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব বলে আমি মনে করি। কারন স্বাধীনতা না পেলে, স্বাধীনজাতি হিসেবে পরিচিত হতে না পেলে বাংলাদেশী বাঙালি হিসেবে পৃথিবীর বুকে কখনোই আমরা এমন প্রতিষ্ঠা পেতাম না। সেই সম্মান এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করাই ছিল আমাদের আজকের “সবকটা জানালা খুলে দাও না” গীতিনৃত্যাল্লেখ্য’র মূল মন্ত্র”। নির্দেশকের শুভেচ্ছা বক্তব্েযর পর তুমুল করতালির মাধ্যমে দর্শকবৃন্দ শিল্পী, কলাকুশলী এবং নির্দেশক আবৃত্তিশিল্পী আনোয়ারুল হক লাভলুকে অভিনন্দিত করেন। বাফার প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য মিজানুর রহমান প্রধানের পরিচালনায় শেষপর্বটি অর্থাৎ র্যাফেল ড্র আয়োজনটি অত্যন্ত আনন্দ উল্লাসের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।