
ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর

৪১ হাজার শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশের ফল প্রকাশ, জানা যাবে যেভাবে

ডাকসু: ২২ ভোটারে একজন প্রার্থী

‘মব’ সৃষ্টি করে ফজিলাতুন্নেছা হলে মনোনয়নপত্র সংগ্রহে বাধার অভিযোগ

এনটিআরসিএ: সুপারিশ পাচ্ছেন ৪১ হাজারের বেশি প্রার্থী

চবির ভিসি ও প্রো-ভিসি অবরুদ্ধ

ঢাবি থেকে পৃথক হলো অধিভুক্ত ৭ কলেজ

সরকারকে এক মাসের আলটিমেটাম শিক্ষকদের
১৯ ভোটারে একজন প্রার্থী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫ এ সর্বমোট মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ২ হাজার ৮৫ জন শিক্ষার্থী। এটিই ডাকসুর ইতিহাসের সর্বোচ্চ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এর আগে কোনো নির্বাচনেই এত প্রার্থী আগ্রহ দেখাননি। ২০১৯ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদে ২৩৭ জন ও ১৮টি হল সংসদের ১৩টি পদে ৫৯৪ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এবার তা দাঁড়িয়েছে তার দ্বিগুণেরও বেশি।
নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, স্মরণকালের রেকর্ডসংখ্যক শিক্ষার্থী এবার ডাকসু ও হল সংসদে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। প্রায় ৪০ হাজার ভোটারের মধ্যে ২ হাজারের বেশিই প্রার্থী। আমি মনে করি, এটি ডাকসুতে ইতিহাস। একটা সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ
বজায় থাকায় এত বেশি শিক্ষার্থী স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। গতকাল মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র সংগ্রহের বর্ধিত সময়ে ডাকসুর কেন্দ্রীয় সংসদে বিভিন্ন পদে ৯৩ প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এ নিয়ে মোট প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল ৬৫৮ জনে। এ ছাড়া ১৮টি হল থেকে হল সংসদ নির্বাচনে মোট ১ হাজার ৪২৭ প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। সর্বমোট প্রার্থীর সংখ্যা ২ হাজার ৮৫ জন। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন। সে হিসাবে প্রতি ১৯ ভোটারের বিপরীতে একজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তবে কোনো কোনো প্রার্থী একাধিক পদে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন বলেও জানা গেছে। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, একজন প্রার্থী একাধিক মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন। তবে একজন
প্রার্থী কেবল একটি পদেই নির্বাচন করার সুযোগ পাবেন। কোন হলে কত প্রার্থী: হলভিত্তিক মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলে সর্বাধিক ১১২টি এবং বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে সর্বনিম্ন ৩৩টি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ৭৩টি, জগন্নাথ হলে ৭৪টি, ফজলুল হক মুসলিম হলে ৮৬টি, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ১০০টি, রোকেয়া হলে ৫৩টি, সূর্য সেন হলে ৯৫টি, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে ৮০টি, শামসুন নাহার হলে ৪২টি, কবি জসীমউদদীন হলে ১০৬টি, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ৯৮টি, শেখ মুজিবুর রহমান হলে ৭৯টি, শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলে ৩৯টি, অমর একুশে হলে ৯১টি, কবি সুফিয়া কামাল হলে ৮৮টি, বিজয় একাত্তর হলে
৯৬টি এবং স্যার এ এফ রহমান হলে ৮২টি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের প্রেস ব্রিফিং মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সময়সীমা বৃদ্ধির কারণ প্রসঙ্গে গতকাল বিকেলে সিনেট ভবনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, শেষ দিনে ব্যাপক ভিড় থাকায় অনেক শিক্ষার্থী ফরম সংগ্রহ করতে পারেনি। তাই শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিতে সময় বাড়ানো হয়েছে। তবে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছে, ছাত্রদলকে সুবিধা দিতেই সময় বাড়ানো হয়েছে। এ অভিযোগ নাকচ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, এ নির্বাচনে কোনো দলীয় প্রতীক নেই। সবাই শিক্ষার্থী, আর সবার জন্যই সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে। এ পর্যন্ত কোনো ধরনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো ঘটনা ঘটেনি
বলেও উল্লেখ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক জসীম উদ্দিন। তপশিল অনুযায়ী, ডাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর। আজ বুধবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময়। আগামীকাল বৃহস্পতিবার যাচাই-বাছাই শেষে প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। তপশিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন ২৫ আগস্ট। প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৬ আগস্ট। ছাত্রদল ও বাগছাস প্যানেল দিতে পারে আজ: গতকাল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এবং বাগছাস নিজেদের প্যানেল ঘোষণা করার কথা থাকলেও এদিন তা হয়নি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমার নেতৃত্বে স্বতন্ত্র প্যানেলেরও ঘোষণা আসেনি। তবে ছাত্রশিবিরের প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ এর সব প্রার্থীই তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া এদিন বামজোটের চূড়ান্ত
প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। ছাত্রদল এখনো তাদের প্যানেল ঘোষণা না দিলেও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। শেষ দিনে এসেও দলটির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তবে তাদের কেউ এখনো ফরম জমা দেননি। সংগঠন সূত্রে জানা যায়, এখনো প্যানেল নিয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি দলটির হাইকমান্ড। বিশেষ করে ভিপি, জিএস এবং এজিএস শীর্ষ এই তিন পদে কাকে রাখা হবে, তা নিয়ে চলছে দফায় দফায় বৈঠক। সবাই তাকিয়ে আছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিকে। তার নির্দেশনা পেলেই সংগঠনটির চূড়ান্ত প্যানেল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘ডাকসুর প্যানেল নিয়ে আমরা আলোচনায় বসেছি। শিগগির
প্যানেল চূড়ান্ত হবে। আগামীকাল (আজ) পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করা হবে।’ এদিকে চরম অন্তঃকোন্দলে পড়েছে বাগছাস সংগঠনটির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ভিপি এবং জিএস পদ চূড়ান্ত হলেও এজিএস নিয়ে এখনো চলছে দরকষাকষি। কে হবেন এজিএস, তা নিয়ে বিভিন্ন স্তরে কয়েকদিন ধরে দফায় দফায় আলোচনায় বসেন দলটির শীর্ষ নেতারা। পরবর্তী সময়ে মুখপাত্র আশরেফা খাতুনকে এই পদে চূড়ান্ত করা হয় বলে সংগঠন সূত্রে জানা যায়। কিন্তু এটা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। সংগঠনটির একটি অংশ বেশ আলোচনায় থাকা মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মোদাসসিরকে বাদ দেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ্যেই সমালোচনা করতে দেখা যায়। তাহমিদকেই এজিএস পদে মনোনয়ন দিতে এখনো দাবি জানাচ্ছেন অনেকেই। তাই এই পদ নিয়ে বিপাকে পড়েছে সংগঠনটি। যার ফলে গতকাল প্যানেল ঘোষণা করার কথা থাকলেও সেটি পারেনি তারা। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব জাহিদ আহসান বলেন, ‘আমাদের ভিপি পদে আব্দুল কাদের এবং জিএস পদে আবু বাকের মজুমদার আগে থেকেই চূড়ান্ত। এজিএস পদ নিয়ে এখনো আলাপ চলছে। আগামীকাল (আজ) সংবাদ সম্মেলন করে আমরা প্যানেল ঘোষণা দেব।’ ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা: এদিকে ডাকসুর জন্য ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর সম্মিলিত জোট। সেখানে ২০১৯ সালের ডাকসুর শামসুন নাহার হল সংসদের ভিপি শেখ তাসনীম আফরোজ ইমিকে ভিপি ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) ঢাবি শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসুকে জিএস প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেল এই প্যানেল থেকে এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে ২৮ সদস্যের ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ প্যানেলের পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকা তুলে ধরেন জুবেল। তিনি বলেন, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, ছাত্র কাউন্সিল, ছাত্র যুব আন্দোলন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও গণতান্ত্রিক ছাত্র মঞ্চ নিয়ে তাদের প্যানেল ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’। অবশ্য শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি সরাসরি কোনো বাম সংগঠনের সঙ্গে ছিলেন না। প্রতিরোধ পর্ষদের অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক পদে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক; কমন রুম, রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে নূজিয়া হাসিন (রাশা); মানবাধিকার ও আইনবিষয়ক সম্পাদক পদে আকাশ আলী; ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদে লিটন ত্রিপুরা; সমাজসেবা সম্পাদক পদে আবু মুজাহিদ; পরিবহন সম্পাদক পদে নিনাদ খান; আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক সম্পাদক পদে নাঈম উদ্দীন; সাহিত্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক পদে ফারিয়া মতিন (ইলা); ক্রীড়া সম্পাদক পদে মালিহা তাবাসসুম; স্বাস্থ্য ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক পদে শেখ তাসনুভা সৃষ্টি; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে ফাতিন ইশরাক এবং গবেষণা ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক পদে আমানত ইমরান।
বজায় থাকায় এত বেশি শিক্ষার্থী স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। গতকাল মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র সংগ্রহের বর্ধিত সময়ে ডাকসুর কেন্দ্রীয় সংসদে বিভিন্ন পদে ৯৩ প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এ নিয়ে মোট প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল ৬৫৮ জনে। এ ছাড়া ১৮টি হল থেকে হল সংসদ নির্বাচনে মোট ১ হাজার ৪২৭ প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। সর্বমোট প্রার্থীর সংখ্যা ২ হাজার ৮৫ জন। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন। সে হিসাবে প্রতি ১৯ ভোটারের বিপরীতে একজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তবে কোনো কোনো প্রার্থী একাধিক পদে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন বলেও জানা গেছে। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, একজন প্রার্থী একাধিক মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন। তবে একজন
প্রার্থী কেবল একটি পদেই নির্বাচন করার সুযোগ পাবেন। কোন হলে কত প্রার্থী: হলভিত্তিক মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলে সর্বাধিক ১১২টি এবং বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে সর্বনিম্ন ৩৩টি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ৭৩টি, জগন্নাথ হলে ৭৪টি, ফজলুল হক মুসলিম হলে ৮৬টি, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ১০০টি, রোকেয়া হলে ৫৩টি, সূর্য সেন হলে ৯৫টি, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে ৮০টি, শামসুন নাহার হলে ৪২টি, কবি জসীমউদদীন হলে ১০৬টি, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ৯৮টি, শেখ মুজিবুর রহমান হলে ৭৯টি, শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলে ৩৯টি, অমর একুশে হলে ৯১টি, কবি সুফিয়া কামাল হলে ৮৮টি, বিজয় একাত্তর হলে
৯৬টি এবং স্যার এ এফ রহমান হলে ৮২টি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের প্রেস ব্রিফিং মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সময়সীমা বৃদ্ধির কারণ প্রসঙ্গে গতকাল বিকেলে সিনেট ভবনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, শেষ দিনে ব্যাপক ভিড় থাকায় অনেক শিক্ষার্থী ফরম সংগ্রহ করতে পারেনি। তাই শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিতে সময় বাড়ানো হয়েছে। তবে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছে, ছাত্রদলকে সুবিধা দিতেই সময় বাড়ানো হয়েছে। এ অভিযোগ নাকচ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, এ নির্বাচনে কোনো দলীয় প্রতীক নেই। সবাই শিক্ষার্থী, আর সবার জন্যই সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে। এ পর্যন্ত কোনো ধরনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো ঘটনা ঘটেনি
বলেও উল্লেখ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক জসীম উদ্দিন। তপশিল অনুযায়ী, ডাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর। আজ বুধবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময়। আগামীকাল বৃহস্পতিবার যাচাই-বাছাই শেষে প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। তপশিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন ২৫ আগস্ট। প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৬ আগস্ট। ছাত্রদল ও বাগছাস প্যানেল দিতে পারে আজ: গতকাল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এবং বাগছাস নিজেদের প্যানেল ঘোষণা করার কথা থাকলেও এদিন তা হয়নি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমার নেতৃত্বে স্বতন্ত্র প্যানেলেরও ঘোষণা আসেনি। তবে ছাত্রশিবিরের প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ এর সব প্রার্থীই তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া এদিন বামজোটের চূড়ান্ত
প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। ছাত্রদল এখনো তাদের প্যানেল ঘোষণা না দিলেও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। শেষ দিনে এসেও দলটির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তবে তাদের কেউ এখনো ফরম জমা দেননি। সংগঠন সূত্রে জানা যায়, এখনো প্যানেল নিয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি দলটির হাইকমান্ড। বিশেষ করে ভিপি, জিএস এবং এজিএস শীর্ষ এই তিন পদে কাকে রাখা হবে, তা নিয়ে চলছে দফায় দফায় বৈঠক। সবাই তাকিয়ে আছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিকে। তার নির্দেশনা পেলেই সংগঠনটির চূড়ান্ত প্যানেল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘ডাকসুর প্যানেল নিয়ে আমরা আলোচনায় বসেছি। শিগগির
প্যানেল চূড়ান্ত হবে। আগামীকাল (আজ) পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করা হবে।’ এদিকে চরম অন্তঃকোন্দলে পড়েছে বাগছাস সংগঠনটির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ভিপি এবং জিএস পদ চূড়ান্ত হলেও এজিএস নিয়ে এখনো চলছে দরকষাকষি। কে হবেন এজিএস, তা নিয়ে বিভিন্ন স্তরে কয়েকদিন ধরে দফায় দফায় আলোচনায় বসেন দলটির শীর্ষ নেতারা। পরবর্তী সময়ে মুখপাত্র আশরেফা খাতুনকে এই পদে চূড়ান্ত করা হয় বলে সংগঠন সূত্রে জানা যায়। কিন্তু এটা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। সংগঠনটির একটি অংশ বেশ আলোচনায় থাকা মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মোদাসসিরকে বাদ দেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ্যেই সমালোচনা করতে দেখা যায়। তাহমিদকেই এজিএস পদে মনোনয়ন দিতে এখনো দাবি জানাচ্ছেন অনেকেই। তাই এই পদ নিয়ে বিপাকে পড়েছে সংগঠনটি। যার ফলে গতকাল প্যানেল ঘোষণা করার কথা থাকলেও সেটি পারেনি তারা। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব জাহিদ আহসান বলেন, ‘আমাদের ভিপি পদে আব্দুল কাদের এবং জিএস পদে আবু বাকের মজুমদার আগে থেকেই চূড়ান্ত। এজিএস পদ নিয়ে এখনো আলাপ চলছে। আগামীকাল (আজ) সংবাদ সম্মেলন করে আমরা প্যানেল ঘোষণা দেব।’ ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা: এদিকে ডাকসুর জন্য ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর সম্মিলিত জোট। সেখানে ২০১৯ সালের ডাকসুর শামসুন নাহার হল সংসদের ভিপি শেখ তাসনীম আফরোজ ইমিকে ভিপি ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) ঢাবি শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসুকে জিএস প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেল এই প্যানেল থেকে এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে ২৮ সদস্যের ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ প্যানেলের পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকা তুলে ধরেন জুবেল। তিনি বলেন, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, ছাত্র কাউন্সিল, ছাত্র যুব আন্দোলন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও গণতান্ত্রিক ছাত্র মঞ্চ নিয়ে তাদের প্যানেল ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’। অবশ্য শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি সরাসরি কোনো বাম সংগঠনের সঙ্গে ছিলেন না। প্রতিরোধ পর্ষদের অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক পদে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক; কমন রুম, রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে নূজিয়া হাসিন (রাশা); মানবাধিকার ও আইনবিষয়ক সম্পাদক পদে আকাশ আলী; ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদে লিটন ত্রিপুরা; সমাজসেবা সম্পাদক পদে আবু মুজাহিদ; পরিবহন সম্পাদক পদে নিনাদ খান; আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক সম্পাদক পদে নাঈম উদ্দীন; সাহিত্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক পদে ফারিয়া মতিন (ইলা); ক্রীড়া সম্পাদক পদে মালিহা তাবাসসুম; স্বাস্থ্য ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক পদে শেখ তাসনুভা সৃষ্টি; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে ফাতিন ইশরাক এবং গবেষণা ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক পদে আমানত ইমরান।