
ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
সস্তা শ্রমের তিন খাতই অর্থনীতির মেরুদণ্ড

দেশে বিনিয়োগ আকর্ষণে দীর্ঘদিন থেকে দুটি বিষয়কে গর্বের সঙ্গে প্রচার করে আসছেন নীতিনির্ধারকরা। একদিকে বলা হচ্ছে-দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে সস্তা শ্রম। অর্থাৎ অর্থনীতি শক্তিশালী হলেও শ্রমিকরা এর সুবিধা কম পাচ্ছেন। দেশের অর্থনীতির তিন চালিকাশক্তি হচ্ছে-কৃষি, গার্মেন্ট ও রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। সস্তা শ্রমের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা এ খাতগুলোকেই অর্থনীতির মেরুদণ্ড বলা হয়। তিন খাতের সঙ্গেই শ্রমিকদের সম্পর্ক বেশি। অর্থাৎ শ্রমিকরাই অর্থনীতি টিকিয়ে রেখেছেন। কিন্তু আজ সেই শ্রমিকরা ভালো নেই। কম মজুরি, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার অভাব, স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি এবং ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য অন্যতম সমস্যা। দিন দিন বৈষম্য দানবীয় রূপ ধারণ করছে। এসব সমস্যা নিরসনে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। কিন্তু প্রতিবছর মে দিবস
এলেই শ্রমিকদের বিষয়টি আলোচনায় আসে। এরপর সবাই ভুলে যায়। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। জানা গেছে, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও জাতীয় মজুরি কমিশন গঠিত হয়নি। সবকিছু মিলে শ্রমিকরা যে টাকা আয় করছেন, তা দিয়ে সংসার একেবারেই চলছে না। এছাড়া কাঙ্ক্ষিত কর্মসংস্থানের অভাব এবং দেশের অর্থনৈতিক নানা সংকটে তারা প্রতিনিয়ত কাজ হারাচ্ছেন। ফলে বাড়ছে বেকারত্ব। পণ্যমূল্য যেভাবে বাড়ছে, তাতে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকাই বড় চ্যালেঞ্জ। ১৪২টি খাত-উপখাতের মধ্যে ৮৪টিতেই ন্যূনতম মজুরি নেই। অন্যদিকে করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মধ্যপ্রাচ্যে সংকটের প্রভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। এতে দুর্দিন যাচ্ছে প্রবাসী শ্রমিকদেরও। অর্থাৎ আগামীতে ভালো দিন আসছে, এ ধরনের কোনো
সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশের মতো শ্রমঘন শিল্পপ্রধান দেশে বেকারত্ব বাড়ছে। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার হিসাবে দেশে সাড়ে ৪ কোটি মানুষ বেকার। কিন্তু সরকার বলছে, বেকার মাত্র ২৬ লাখ। পর্যায়ক্রমে আরও কমছে। শ্রম আইন ২০০৬ সালের ২(৬৫) ধারায় বলা হয়েছে, শ্রমিক হলো ওই ব্যক্তি, যিনি তার চাকরির শর্ত পালন করে কোনো প্রতিষ্ঠানে বা শিল্পে সরাসরি কাজে নিযুক্ত। এছাড়া ঠিকাদারের মাধ্যমে মজুরি বা অর্থের বিনিময়ে দক্ষ, অদক্ষ, কায়িক, কারিগরি, ব্যবসা উন্নয়নমূলক অথবা কেরানিগিরির কাজে নিয়োজিতদেরও শ্রমিক বলা যাবে। মূলত শ্রমিকদের দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এগুলো হলো-অনানুষ্ঠানিক (ইনফরমাল) যেমন : দোকানপাট, ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কৃষিকাজ ইত্যাদিকে বিবিএস চিহ্নিত করেছে। আর আনুষ্ঠানিক (ফরমাল) ক্ষেত্র
হলো-সরকারি অফিস-আদালত, বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান, সেবা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি। জানা গেছে, দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশিই শ্রমিক। প্রতিবছর ২২ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে আসছেন। শ্রমিকের ওপর ভর করেই শক্তিশালী হচ্ছে অর্থনীতি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশের অর্থনীতির আকার বড় হলেও আয়বৈষম্য ব্যাপক। এ বৈষম্য কমাতে উদ্যোগ নিতে হবে। না হলে জনশক্তি বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। এদিকে সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক এক প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশে এ বছর আরও ৩০ লাখ মানুষ ‘অতিদরিদ্র’ হতে পারে। গত বছর ২০২৪ সালে অতিদরিদ্রের হার ছিল ৭ দশমিক ৭ শতাংশ। চলতি বছরে এটি বেড়ে ৯ দশমিক ৩ শতাংশ হবে। সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুসারে ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ২০২৫ সালে দরিদ্র মানুষ হতে পারে ৩ কোটি
৯০ লাখ। এর মধ্যে অতিদরিদ্র্য হবে ১ কোটি ৫৮ লাখ। যা বর্তমান সংখ্যার চেয়ে প্রায় ৩০ লাখ বেশি। প্রতিবেদনে বলা হয়, মূলত তিন কারণে দরিদ্রের হার বাড়বে। এর মধ্যে আছে-মানুষের প্রকৃত আয় কমে যাওয়া, দুর্বল শ্রমবাজার এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের নিম্নগতি। জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, অর্থনীতির যে হিসাব ছিল, করোনা, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যে সংকট এবং দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সবকিছুই পালটে দিয়েছে। শ্রমিকদের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে। তার মতে, দেশের অর্থনীতির মূল শক্তি হলো বেশির ভাগ মানুষ কর্মক্ষম। এদের মজুরিও প্রতিযোগী দেশের তুলনায় কম। তবে সামগ্রিকভাবে বিচার করলে শ্রমিকদের দক্ষতার অভাব রয়েছে।
জনশক্তি এখনো সম্পদে পরিণত হয়নি। ফলে শ্রমিকদের যে সম্ভাবনা আছে, তা কাজে লাগানো যায়নি। তিনি বলেন, দেশে শিক্ষার হার বাড়ছে। কিন্তু শিক্ষার মান বাড়ছে না। এ কারণে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যাই বেশি। এ অবস্থার উত্তরণে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। পাশাপাশি বিশাল বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে না পারলে এ জনশক্তি বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের অর্থ সম্পাদক কাজী মো. রুহুল আমিন বলেন, ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রার মধ্যেও কৃষি শ্রমিকরা কাজ করে ফসল উৎপাদন করছেন। কিন্তু তারা অধিকার থেকে বঞ্চিত। শিল্প খাতের শ্রমিকরাও নানাভাবে বঞ্চিত। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও জাতীয় মজুরি
কমিশন গঠন করা হয়নি। অধিকাংশ শ্রম খাতে ন্যূনতম মজুরি নেই। শ্রমিকরা যা বেতন পান, তা দিয়ে সংসার চলে না। তাদের কর্মস্থলে নিরাপত্তা নেই। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের ৪টি দাবি। এগুলো হলো-শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন, শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৩০ হাজার টাকা করা, আইএলও কনভেনশন অনুসারে শ্রম আইনের সংশোধন এবং শ্রমিকদের জন্য সর্বজনীন রেশনের ব্যবস্থা করা। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা অনুসারে দেশের মোট শ্রমিকের ৮৫ শতাংশই অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে। তাদের নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়নি। সংস্থাটির মতে, অধিকাংশ খাতে এখনো কোনো ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয়নি। সেসব খাতের শ্রমিকের জন্য কোনো আইনি সুরক্ষাও নেই। এদিকে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত শ্রম সংস্কার কমিশন সম্প্রতি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ওই প্রতিবেদনে শ্রমিকদের কল্যাণে ২৫টি সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে-শ্রমিকের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন উপযোগী জাতীয় ন্যূনতম মজুরি কাঠামো নির্ধারণ, মজুরি নির্ধারণ পদ্ধতি উন্নয়ন, বোর্ডের সক্ষমতা বাড়ানো এবং খাতভিত্তিক মজুরি তিন বছর পরপর মূল্যায়ন। প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কোনো পেশায় জাতীয় মজুরি নেই। প্রাতিষ্ঠানিক খাতের ৫৮টি পেশায় ন্যূনতম মজুরি কাঠামো রয়েছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকরা মূলত রিকশাচালক, কৃষি শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক, হকার, ভাঙ্গারি সংগ্রহকারী, পরিবহণ শ্রমিক এবং খণ্ডকালীন গৃহকর্মী প্রভৃতি। বাকি ১৩ শতাংশ শ্রমিক কাজ করেন আনুষ্ঠানিক ক্ষেত্রে। পেশার দিক থেকে কৃষক, মৎস্যজীবীর সংখ্যাই বেশি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তির জরিপ অনুসারে বর্তমানে দেশে মোট শ্রমশক্তি ৭ কোটি ৩৪ লাখ ১০ হাজার। এর মধ্যে পুরুষ ৪ কোটি ৭৪ লাখ ৮ হাজার এবং নারী ২ কোটি ৫৯ লাখ ৩ হাজার। গত ৮ বছরে দেশে বেকারের সংখ্যা কমে ২৬ লাখ ৩০ হাজারে নেমেছে। ২০১৬ সালে যা ছিল ২৭ লাখ। এসব ব্যক্তি সপ্তাহে এক ঘণ্টাও কাজ পাননি। তবে ১৫ বা তদূর্ধ্ব বয়সি শ্রমশক্তির বাইরে রয়েছে এমন জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৪ কোটি ৬৯ লাখ। দেশের বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার মতে, এ মানুষগুলো বেকার। কিন্তু এদের বেকার বলতে রাজি নয় বিবিএস। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মানদণ্ড অনুযায়ী, সপ্তাহে ১ ঘণ্টা কাজ না করলে ওই ব্যক্তিকে বেকার হিসাবে ধরা হয়। সংস্থাটির তথ্য অনুসারে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও বেকারত্ব বাড়ছে। করোনাসহ বিভিন্ন কারণে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘের এই সংস্থার তথ্য বলছে, শ্রমিকরা বর্তমানে সবচেয়ে সংকটে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির হিসাবে প্রতিবছর ২২ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে আসছে। কিন্তু আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক মিলিয়ে ৬ লাখ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে। অর্থাৎ নতুন শ্রমিকদের বড় অংশই বেকার থেকে যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরে (২০২৪-২৫) বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার ৫৫ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে সেবা খাতের অবদান ৫৬ শতাংশ, শিল্পের ৩৩ এবং কৃষি খাতের ১৩ শতাংশ। আবার জিডিপির সঙ্গে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স যোগ করলে হয় জাতীয় আয়। বর্তমানে দেশে মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৮৪ মার্কিন ডলার। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে যা নিম্নমধ্যম আয়ের দেশের পর্যায়ে পড়ে। অর্থনীতির এ অর্জনের পেছনে শ্রমিকদের অবদান সবচেয়ে বেশি। দেশের শ্রমশক্তিতে যোগ হচ্ছে নতুন কর্মশক্তি। বাংলাদেশের অর্থনীতির তিনটি মৌলিক শক্তির মধ্যে রয়েছে কৃষি, রেমিট্যান্স এবং গার্মেন্ট। তিনটি শক্তির সঙ্গে শ্রমিকদের সম্পর্ক সবচেয়ে বেশি। তৈরি পোশাক, কৃষি, শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে প্রতিদিনই নতুন শ্রমশক্তি আসছে। তারাই তাদের মেধা ও কঠোর পরিশ্রম দিয়ে অর্থনীতি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তারা সেভাবে মজুরি পাচ্ছেন না। ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের গেজেট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, একটি খাত থেকে আরেকটি খাতের মজুরির বিশাল পার্থক্য। কোনো খাতের মজুরি ২ হাজার টাকা, আবার কোনো খাতে ১৬ হাজার টাকার বেশি। তৈরি পোশাক খাতে সর্বনিম্ন মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা। জানতে চাইলে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমই) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক পরস্পর পরিপূরক। কারণ শ্রমিক ছাড়া শিল্প বাঁচবে না। এজন্য তাদের অধিকারের প্রতি আমরা সব সময় শ্রদ্ধাশীল। ট্রেড ইউনিয়ন থেকে শ্রমিকদের জন্য রেশনের দাবি আসছে। আমি মনে করি রেশনের এই দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক। এ ব্যাপারে সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। দ্বিতীয় বিষয় হলো বিকেএমই সব সময় দায়িত্বশীল ট্রেড ইউনিয়নের পক্ষে। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি আদায়ে যারা কাজ করে, আমরা তাদের সহায়তা করি। তবে দাবি অন্যায্য ও অযৌক্তিক হলে আমরা তার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকব। শ্রম সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট অনুসারে গত এক দশকে ৮ হাজার ২৯৮ জন কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। নির্যাতনে মারা গেছেন ১১৩ জন। আহত শ্রমিকের সংখ্যা ৫ হাজার ৬১৭। নিহত শ্রমিকদের মধ্যে ২০২৪ সালেই কর্মক্ষেত্রে ৮২০ শ্রমিক মারা গেছেন। এছাড়া ১৯৯০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তৈরি পোশাক কারখানায় ৩৩টি বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এদের অধিকাংশই প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ পায়নি। শ্রম সংস্কার কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়, বর্তমানে দেশের আয় বৈষম্য ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। এই বৈষম্যের পরিমাপককে গিনি সহগ বলা হয়। সর্বশেষ ২০২১ সালের জরিপ অনুসারে দেশের সবচেয়ে ধনী ১০ শতাংশ মানুষের আয় মোট জাতীয় আয়ের ৪৪ শতাংশ। এর মধ্যে শীর্ষ ১ শতাংশের আয় ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ। ৫ শতাংশ ধনীর আয় ৩০ শতাংশ। অন্যদিকে পিছিয়ে থাকা ৫০ শতাংশ মানুষের আয় ১৭ দশমিক ১ শতাংশ। ওই রিপোর্ট বলছে, দেশের তিন ভাগের দুই ভাগ আয় যাচ্ছে দেশের ধনী ৩০ শতাংশ মানুষের হাতে। জানতে চাইলে উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক মোস্তফা কে মুজেরী বলেন, আমরা জনশক্তি বোনাস পেয়েছি। এটি ইতিবাচক দিক। কিন্তু মূল কথা হলো, জনশক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। ফলে নতুন কর্মসংস্থান দরকার। পাশাপাশি দক্ষ করে তুলতে হবে জনশক্তিকে।
এলেই শ্রমিকদের বিষয়টি আলোচনায় আসে। এরপর সবাই ভুলে যায়। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। জানা গেছে, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও জাতীয় মজুরি কমিশন গঠিত হয়নি। সবকিছু মিলে শ্রমিকরা যে টাকা আয় করছেন, তা দিয়ে সংসার একেবারেই চলছে না। এছাড়া কাঙ্ক্ষিত কর্মসংস্থানের অভাব এবং দেশের অর্থনৈতিক নানা সংকটে তারা প্রতিনিয়ত কাজ হারাচ্ছেন। ফলে বাড়ছে বেকারত্ব। পণ্যমূল্য যেভাবে বাড়ছে, তাতে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকাই বড় চ্যালেঞ্জ। ১৪২টি খাত-উপখাতের মধ্যে ৮৪টিতেই ন্যূনতম মজুরি নেই। অন্যদিকে করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মধ্যপ্রাচ্যে সংকটের প্রভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। এতে দুর্দিন যাচ্ছে প্রবাসী শ্রমিকদেরও। অর্থাৎ আগামীতে ভালো দিন আসছে, এ ধরনের কোনো
সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশের মতো শ্রমঘন শিল্পপ্রধান দেশে বেকারত্ব বাড়ছে। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার হিসাবে দেশে সাড়ে ৪ কোটি মানুষ বেকার। কিন্তু সরকার বলছে, বেকার মাত্র ২৬ লাখ। পর্যায়ক্রমে আরও কমছে। শ্রম আইন ২০০৬ সালের ২(৬৫) ধারায় বলা হয়েছে, শ্রমিক হলো ওই ব্যক্তি, যিনি তার চাকরির শর্ত পালন করে কোনো প্রতিষ্ঠানে বা শিল্পে সরাসরি কাজে নিযুক্ত। এছাড়া ঠিকাদারের মাধ্যমে মজুরি বা অর্থের বিনিময়ে দক্ষ, অদক্ষ, কায়িক, কারিগরি, ব্যবসা উন্নয়নমূলক অথবা কেরানিগিরির কাজে নিয়োজিতদেরও শ্রমিক বলা যাবে। মূলত শ্রমিকদের দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এগুলো হলো-অনানুষ্ঠানিক (ইনফরমাল) যেমন : দোকানপাট, ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কৃষিকাজ ইত্যাদিকে বিবিএস চিহ্নিত করেছে। আর আনুষ্ঠানিক (ফরমাল) ক্ষেত্র
হলো-সরকারি অফিস-আদালত, বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান, সেবা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি। জানা গেছে, দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশিই শ্রমিক। প্রতিবছর ২২ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে আসছেন। শ্রমিকের ওপর ভর করেই শক্তিশালী হচ্ছে অর্থনীতি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশের অর্থনীতির আকার বড় হলেও আয়বৈষম্য ব্যাপক। এ বৈষম্য কমাতে উদ্যোগ নিতে হবে। না হলে জনশক্তি বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। এদিকে সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক এক প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশে এ বছর আরও ৩০ লাখ মানুষ ‘অতিদরিদ্র’ হতে পারে। গত বছর ২০২৪ সালে অতিদরিদ্রের হার ছিল ৭ দশমিক ৭ শতাংশ। চলতি বছরে এটি বেড়ে ৯ দশমিক ৩ শতাংশ হবে। সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুসারে ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ২০২৫ সালে দরিদ্র মানুষ হতে পারে ৩ কোটি
৯০ লাখ। এর মধ্যে অতিদরিদ্র্য হবে ১ কোটি ৫৮ লাখ। যা বর্তমান সংখ্যার চেয়ে প্রায় ৩০ লাখ বেশি। প্রতিবেদনে বলা হয়, মূলত তিন কারণে দরিদ্রের হার বাড়বে। এর মধ্যে আছে-মানুষের প্রকৃত আয় কমে যাওয়া, দুর্বল শ্রমবাজার এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের নিম্নগতি। জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, অর্থনীতির যে হিসাব ছিল, করোনা, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যে সংকট এবং দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সবকিছুই পালটে দিয়েছে। শ্রমিকদের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে। তার মতে, দেশের অর্থনীতির মূল শক্তি হলো বেশির ভাগ মানুষ কর্মক্ষম। এদের মজুরিও প্রতিযোগী দেশের তুলনায় কম। তবে সামগ্রিকভাবে বিচার করলে শ্রমিকদের দক্ষতার অভাব রয়েছে।
জনশক্তি এখনো সম্পদে পরিণত হয়নি। ফলে শ্রমিকদের যে সম্ভাবনা আছে, তা কাজে লাগানো যায়নি। তিনি বলেন, দেশে শিক্ষার হার বাড়ছে। কিন্তু শিক্ষার মান বাড়ছে না। এ কারণে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যাই বেশি। এ অবস্থার উত্তরণে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। পাশাপাশি বিশাল বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে না পারলে এ জনশক্তি বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের অর্থ সম্পাদক কাজী মো. রুহুল আমিন বলেন, ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রার মধ্যেও কৃষি শ্রমিকরা কাজ করে ফসল উৎপাদন করছেন। কিন্তু তারা অধিকার থেকে বঞ্চিত। শিল্প খাতের শ্রমিকরাও নানাভাবে বঞ্চিত। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও জাতীয় মজুরি
কমিশন গঠন করা হয়নি। অধিকাংশ শ্রম খাতে ন্যূনতম মজুরি নেই। শ্রমিকরা যা বেতন পান, তা দিয়ে সংসার চলে না। তাদের কর্মস্থলে নিরাপত্তা নেই। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের ৪টি দাবি। এগুলো হলো-শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন, শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৩০ হাজার টাকা করা, আইএলও কনভেনশন অনুসারে শ্রম আইনের সংশোধন এবং শ্রমিকদের জন্য সর্বজনীন রেশনের ব্যবস্থা করা। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা অনুসারে দেশের মোট শ্রমিকের ৮৫ শতাংশই অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে। তাদের নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়নি। সংস্থাটির মতে, অধিকাংশ খাতে এখনো কোনো ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয়নি। সেসব খাতের শ্রমিকের জন্য কোনো আইনি সুরক্ষাও নেই। এদিকে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত শ্রম সংস্কার কমিশন সম্প্রতি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ওই প্রতিবেদনে শ্রমিকদের কল্যাণে ২৫টি সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে-শ্রমিকের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন উপযোগী জাতীয় ন্যূনতম মজুরি কাঠামো নির্ধারণ, মজুরি নির্ধারণ পদ্ধতি উন্নয়ন, বোর্ডের সক্ষমতা বাড়ানো এবং খাতভিত্তিক মজুরি তিন বছর পরপর মূল্যায়ন। প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কোনো পেশায় জাতীয় মজুরি নেই। প্রাতিষ্ঠানিক খাতের ৫৮টি পেশায় ন্যূনতম মজুরি কাঠামো রয়েছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকরা মূলত রিকশাচালক, কৃষি শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক, হকার, ভাঙ্গারি সংগ্রহকারী, পরিবহণ শ্রমিক এবং খণ্ডকালীন গৃহকর্মী প্রভৃতি। বাকি ১৩ শতাংশ শ্রমিক কাজ করেন আনুষ্ঠানিক ক্ষেত্রে। পেশার দিক থেকে কৃষক, মৎস্যজীবীর সংখ্যাই বেশি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তির জরিপ অনুসারে বর্তমানে দেশে মোট শ্রমশক্তি ৭ কোটি ৩৪ লাখ ১০ হাজার। এর মধ্যে পুরুষ ৪ কোটি ৭৪ লাখ ৮ হাজার এবং নারী ২ কোটি ৫৯ লাখ ৩ হাজার। গত ৮ বছরে দেশে বেকারের সংখ্যা কমে ২৬ লাখ ৩০ হাজারে নেমেছে। ২০১৬ সালে যা ছিল ২৭ লাখ। এসব ব্যক্তি সপ্তাহে এক ঘণ্টাও কাজ পাননি। তবে ১৫ বা তদূর্ধ্ব বয়সি শ্রমশক্তির বাইরে রয়েছে এমন জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৪ কোটি ৬৯ লাখ। দেশের বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার মতে, এ মানুষগুলো বেকার। কিন্তু এদের বেকার বলতে রাজি নয় বিবিএস। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মানদণ্ড অনুযায়ী, সপ্তাহে ১ ঘণ্টা কাজ না করলে ওই ব্যক্তিকে বেকার হিসাবে ধরা হয়। সংস্থাটির তথ্য অনুসারে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও বেকারত্ব বাড়ছে। করোনাসহ বিভিন্ন কারণে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘের এই সংস্থার তথ্য বলছে, শ্রমিকরা বর্তমানে সবচেয়ে সংকটে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির হিসাবে প্রতিবছর ২২ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে আসছে। কিন্তু আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক মিলিয়ে ৬ লাখ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে। অর্থাৎ নতুন শ্রমিকদের বড় অংশই বেকার থেকে যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরে (২০২৪-২৫) বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার ৫৫ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে সেবা খাতের অবদান ৫৬ শতাংশ, শিল্পের ৩৩ এবং কৃষি খাতের ১৩ শতাংশ। আবার জিডিপির সঙ্গে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স যোগ করলে হয় জাতীয় আয়। বর্তমানে দেশে মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৮৪ মার্কিন ডলার। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে যা নিম্নমধ্যম আয়ের দেশের পর্যায়ে পড়ে। অর্থনীতির এ অর্জনের পেছনে শ্রমিকদের অবদান সবচেয়ে বেশি। দেশের শ্রমশক্তিতে যোগ হচ্ছে নতুন কর্মশক্তি। বাংলাদেশের অর্থনীতির তিনটি মৌলিক শক্তির মধ্যে রয়েছে কৃষি, রেমিট্যান্স এবং গার্মেন্ট। তিনটি শক্তির সঙ্গে শ্রমিকদের সম্পর্ক সবচেয়ে বেশি। তৈরি পোশাক, কৃষি, শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে প্রতিদিনই নতুন শ্রমশক্তি আসছে। তারাই তাদের মেধা ও কঠোর পরিশ্রম দিয়ে অর্থনীতি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তারা সেভাবে মজুরি পাচ্ছেন না। ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের গেজেট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, একটি খাত থেকে আরেকটি খাতের মজুরির বিশাল পার্থক্য। কোনো খাতের মজুরি ২ হাজার টাকা, আবার কোনো খাতে ১৬ হাজার টাকার বেশি। তৈরি পোশাক খাতে সর্বনিম্ন মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা। জানতে চাইলে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমই) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক পরস্পর পরিপূরক। কারণ শ্রমিক ছাড়া শিল্প বাঁচবে না। এজন্য তাদের অধিকারের প্রতি আমরা সব সময় শ্রদ্ধাশীল। ট্রেড ইউনিয়ন থেকে শ্রমিকদের জন্য রেশনের দাবি আসছে। আমি মনে করি রেশনের এই দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক। এ ব্যাপারে সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। দ্বিতীয় বিষয় হলো বিকেএমই সব সময় দায়িত্বশীল ট্রেড ইউনিয়নের পক্ষে। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি আদায়ে যারা কাজ করে, আমরা তাদের সহায়তা করি। তবে দাবি অন্যায্য ও অযৌক্তিক হলে আমরা তার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকব। শ্রম সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট অনুসারে গত এক দশকে ৮ হাজার ২৯৮ জন কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। নির্যাতনে মারা গেছেন ১১৩ জন। আহত শ্রমিকের সংখ্যা ৫ হাজার ৬১৭। নিহত শ্রমিকদের মধ্যে ২০২৪ সালেই কর্মক্ষেত্রে ৮২০ শ্রমিক মারা গেছেন। এছাড়া ১৯৯০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তৈরি পোশাক কারখানায় ৩৩টি বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এদের অধিকাংশই প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ পায়নি। শ্রম সংস্কার কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়, বর্তমানে দেশের আয় বৈষম্য ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। এই বৈষম্যের পরিমাপককে গিনি সহগ বলা হয়। সর্বশেষ ২০২১ সালের জরিপ অনুসারে দেশের সবচেয়ে ধনী ১০ শতাংশ মানুষের আয় মোট জাতীয় আয়ের ৪৪ শতাংশ। এর মধ্যে শীর্ষ ১ শতাংশের আয় ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ। ৫ শতাংশ ধনীর আয় ৩০ শতাংশ। অন্যদিকে পিছিয়ে থাকা ৫০ শতাংশ মানুষের আয় ১৭ দশমিক ১ শতাংশ। ওই রিপোর্ট বলছে, দেশের তিন ভাগের দুই ভাগ আয় যাচ্ছে দেশের ধনী ৩০ শতাংশ মানুষের হাতে। জানতে চাইলে উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক মোস্তফা কে মুজেরী বলেন, আমরা জনশক্তি বোনাস পেয়েছি। এটি ইতিবাচক দিক। কিন্তু মূল কথা হলো, জনশক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। ফলে নতুন কর্মসংস্থান দরকার। পাশাপাশি দক্ষ করে তুলতে হবে জনশক্তিকে।