ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর
বেগম খালেদা জিয়ার স্ট্রোকের খবর ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’: স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া বিজ্ঞপ্তি প্রচারের অভিযোগ বিএনপির
জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও স্বতন্ত্র এমপি জাহেদী চান বিএনপির মনোনয়ন
সকল নেতাকর্মীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করলো যুবলীগ
অপহরণের নাটক সাজানোর কথা স্বীকার করলেন মুফতি মুহিব্বুল্লাহ!
বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, ‘খুনি-ফ্যাসিস্ট ইউনূস গং-এর’ পতন নিশ্চিতের নির্দেশ
সম্রাটসহ বহিষ্কৃতদের শর্তসাপেক্ষ সাধারণ ক্ষমা, ‘খুনি-ফ্যাসিস্ট ইউনূস গং-এর’ পতন নিশ্চিতের নির্দেশ যুবলীগের
পাকিস্তানের আগ্রাসনে আফগানিস্তান ভারতমুখী- এস এম সাদ্দাম হোসাইন
লগি-বইঠার অগ্নিশপথ থেকে প্রতিরোধ-পর্ব: আওয়ামী লীগের নীরবতা নয়, এ এক নতুন রণহুঙ্কার
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংগ্রামী ইতিহাস রক্ত, ঘাম আর চরম প্রতিবাদের গাঁথা। এই ইতিহাসের পাতায় ২৮ অক্টোবর, ২০০৬ একটি বিধ্বংসী দিন হিসেবে চিরস্থায়ী আসন করে নিয়েছে। সেদিন আওয়ামী লীগ শুধু ক্ষমতার বাইরে থাকা একটি রাজনৈতিক দল ছিল না; তারা ছিল রাজপথের অপ্রতিরোধ্য শক্তি, যারা লগি-বইঠার প্রতীকী হাতিয়ার হাতে প্রমাণ করেছিল—জনগণের শক্তির কাছে রাষ্ট্রযন্ত্রের সশস্ত্র শক্তিও পরাভূত হতে পারে।
এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের বিশ্লেষণ আজ অত্যন্ত জরুরি, যখন আমাদের দলের উপর চলছে ইতিহাসের জঘন্যতম নিপীড়ন। ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগ দেখিয়েছিল, রাজপথের দখল তাদের জন্মগত অধিকারের শামিল। সেই লগি-বইঠা ছিল সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের শ্রমজীবী শক্তির প্রতীক। এই প্রতীক সামরিক শক্তির বিপরীতে গণশক্তির শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা
করেছিল। সেদিন শেখ হাসিনার কর্মীরা সরাসরি সংঘাতে নেমে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ভীত ধ্বসিয়ে দিতে মুখ্য ভূমিকা রাখে। ওই দিনের সংঘাত ছিল কেবল শারীরিক নয়, প্রতিপক্ষের ছিল মনস্তাত্ত্বিক পরাজয়। পুলিশ, বিএনপি এবং জামায়াতের সম্মিলিত শক্তি সেদিন লগি-বইঠার কাছে কেবল পরাস্ত হয়নি, জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা চরম অসম্মানের প্রতীক হিসেবে প্যান্ট খুলে জীবন নিয়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিল। এই পরাজয়ের ক্ষত জামায়াতকে আজও রাজপথে আওয়ামী লীগের শক্তি ভুলতে দেয়নি। ২৮ অক্টোবরের ঘটনা ক্ষমতা থেকে ক্ষমতাসীন জোটকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করেছিল। এই ঘটনাই আওয়ামী লীগকে ‘রাজপথের রাজা’ উপাধিতে সুপ্রতিষ্ঠিত করে। সেদিন আমরা বুঝিয়ে দিয়েছিলাম, আমরা কোনোভাবেই দমনযোগ্য নই; বরং দমনের চেষ্টা করলে আরও বিধ্বংসী হয়ে
উঠব। আগস্ট ট্র্যাজেডি: অস্তিত্বের উপর আঘাত অথচ আজ, দীর্ঘ ১৫ বছর দেশ পরিচালনার পর, আমরা এক গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশি-বিদেশি চক্রান্তে শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করা হয়। কিন্তু ষড়যন্ত্র সেখানেই থামেনি; শুরু হয়েছে আওয়ামী লীগের সামগ্রিক অস্তিত্ব বিনাশের এক পরিকল্পিত নীলনকশা। আজ আমাদের দলের কর্মীদের মনে প্রশ্ন জাগে, সেই লগি-বইঠার অদম্য শক্তি আজ কোথায়? কেন আমরা নিষিদ্ধ? প্রথম আঘাত আসে আমাদের মূল সাংগঠনিক শক্তির উপর। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবি ও সরকারের প্রতিশোধমূলক মনোভাবের ফলস্বরূপ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরপর চরম অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে স্বয়ং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনগুলোকে
নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যে দলটি রাজপথের শ্রেষ্ঠত্বে বিশ্বাসী, তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম আজ আইনের চোখে অবৈধ। এই নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি চলছে গণ-গ্রেফতার ও বিচারিক নিপীড়ন। সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ আজ আমাদের আড়াই লাখ নেতাকর্মী কারারুদ্ধ। পঞ্চাশ লাখের বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে, এবং প্রায় দুই কোটি মানুষ আজ ঘরছাড়া। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে গণহত্যা এবং আদালত অবমাননার মতো ভিত্তিহীন অভিযোগে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এই বিচারিক প্রক্রিয়া রাজনৈতিক প্রতিশোধের চরম রূপ। সবচেয়ে বেদনাদায়ক আঘাত এসেছে আমাদের ঐতিহাসিক চেতনার উপর। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি জাদুঘরকে প্রথমে আগুনে পুড়িয়ে এবং পরবর্তীতে বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এই বর্বরতা
কেবল একটি বাড়ি ভাঙা নয়, এটি ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক ভিত্তি এবং চেতনাকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার চরম রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। এই নীরবতা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলের জন্য এক অগ্নিপরীক্ষা। এই নীরবতা পরাজয় নয়, কৌশলগত প্রতিরোধ অনেকে এই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের আপাত নীরবতাকে দুর্বলতা হিসেবে দেখতে পারে। কিন্তু যারা আমাদের রাজনৈতিক দর্শন বোঝেন না, তারা জানেন না—আওয়ামী লীগ জানে, কখন রক্ষকের ভূমিকায় থাকতে হয়, আর কখন বিধ্বংসীর ভূমিকায় নামতে হয়। ২০০৬ সালে আমরা রাজপথ দখলে ছিলাম, তাই লগি-বইঠা ছিল আমাদের হাতিয়ার। আজ যখন আমাদের হাত আইনিভাবে বেঁধে দেওয়া হয়েছে, তখন আমাদের কৌশলও পাল্টে গেছে। এই মুহূর্তে আমাদের দ্বৈত চরিত্রে কাজ করতে হচ্ছে: প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা
মোকাবিলা করা এবং কর্মীদের মনোবল অক্ষুণ্ন রাখা। প্রথমত, সাংগঠনিক শক্তি বাঁচিয়ে রাখা: আমাদের প্রধান কাজ হলো—ব্যাপক ধরপাকড় ও মামলার মুখেও সংগঠনের ভিতরের শক্তিকে সুরক্ষিত রাখা। আড়াই লাখ কর্মী জেলে থাকার পরেও আমাদের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো মিলে সারা দেশে ১২০০-এর বেশি ছোট ছোট মিছিল বা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে। এটিই আমাদের অদম্য মনোবল ও ঐক্যের প্রতীক। রাজপথে আমাদের উপস্থিতি শূন্যের কোঠায় নামানো গেলেও আমাদের সাংগঠনিক হৃদস্পন্দন বন্ধ করা যায়নি। দ্বিতীয়ত, ডিজিটাল প্রতিরোধ: ঐতিহ্যবাহী গণমাধ্যম থেকে আমাদের দূরে সরিয়ে রাখা হলেও, আমরা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে আমাদের বার্তা প্রচার করছি। এই ডিজিটাল রণক্ষেত্রে নেতাকর্মীরা নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে এবং
আমাদের বিরুদ্ধে হওয়া অপপ্রচারের মোকাবিলা করছে। তৃতীয়ত, রণকৌশল ঝালিয়ে নেওয়া: বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের পুরনো বিরোধী দলের চরিত্রকে আরও শক্তিশালী করছে। ক্ষমতা থেকে কিভাবে টেনেহিঁচড়ে নামাতে হয়, সেই দক্ষতা আওয়ামী লীগের নখদর্পণে রয়েছে। আমাদের নেতারা হুঙ্কার দিচ্ছেন, আরেকটি ২৮ অক্টোবরের জন্য 'প্লটও তৈরি হচ্ছে'। এবার আগের চেয়েও শক্তিশালী, সুসংগঠিত আওয়ামী লীগ মাঠে নামবে। এই হুমকিকে বিরোধীদের মধ্যে চরম ভীতি সঞ্চারের কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। পুনরুত্থানের চূড়ান্ত বার্তা আওয়ামী লীগ রাজপথে কোনো ধরনের ছাড় দিতে প্রস্তুত নয়। আমরা জানি, এই নির্যাতন আমাদের কর্মীদের মনে বিদ্রোহের আগুন আরও তীব্র করেছে। প্রতিটি মামলা, প্রতিটি গ্রেফতার এবং বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ভাঙার প্রতিটি দৃশ্য—আমাদের কর্মীদের লগি-বইঠার সেই শক্তিকে নতুন রূপে জাগিয়ে তুলছে। যদি বিরোধী দল অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করে, তবে অতীতের চেয়েও সুসংগঠিতভাবে, আরও ভয়ংকররূপে আমরা মাঠে নামব। এই রাজনৈতিক প্রস্তুতি দেশের রাজনীতিতে চরম সংঘাতের ইঙ্গিত দিচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ এখন আরেকটি লগি-বইঠার ডাকের অপেক্ষায় আছে। আর সেই ডাক আসবেই। কারণ, আমরা আমাদের প্রতিপক্ষকে স্পষ্ট বার্তা দিতে বদ্ধপরিকর: আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে নামতে নয়, বরং এই অবৈধ ক্ষমতাকে টেনেহিঁচড়ে নামানোর জন্য প্রস্তুত। রাজপথের শ্রেষ্ঠত্ব ছিল আমাদের, আছে আমাদের, এবং তা পুনরুদ্ধারের আগ পর্যন্ত এই সংগ্রাম থামবে না। লগি-বইঠার অগ্নিশপথ আমাদের অদম্য মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে চলুক—এই আমাদের অঙ্গীকার। মনির হোসাইন উপ-দপ্তর সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ
করেছিল। সেদিন শেখ হাসিনার কর্মীরা সরাসরি সংঘাতে নেমে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ভীত ধ্বসিয়ে দিতে মুখ্য ভূমিকা রাখে। ওই দিনের সংঘাত ছিল কেবল শারীরিক নয়, প্রতিপক্ষের ছিল মনস্তাত্ত্বিক পরাজয়। পুলিশ, বিএনপি এবং জামায়াতের সম্মিলিত শক্তি সেদিন লগি-বইঠার কাছে কেবল পরাস্ত হয়নি, জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা চরম অসম্মানের প্রতীক হিসেবে প্যান্ট খুলে জীবন নিয়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিল। এই পরাজয়ের ক্ষত জামায়াতকে আজও রাজপথে আওয়ামী লীগের শক্তি ভুলতে দেয়নি। ২৮ অক্টোবরের ঘটনা ক্ষমতা থেকে ক্ষমতাসীন জোটকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করেছিল। এই ঘটনাই আওয়ামী লীগকে ‘রাজপথের রাজা’ উপাধিতে সুপ্রতিষ্ঠিত করে। সেদিন আমরা বুঝিয়ে দিয়েছিলাম, আমরা কোনোভাবেই দমনযোগ্য নই; বরং দমনের চেষ্টা করলে আরও বিধ্বংসী হয়ে
উঠব। আগস্ট ট্র্যাজেডি: অস্তিত্বের উপর আঘাত অথচ আজ, দীর্ঘ ১৫ বছর দেশ পরিচালনার পর, আমরা এক গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশি-বিদেশি চক্রান্তে শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করা হয়। কিন্তু ষড়যন্ত্র সেখানেই থামেনি; শুরু হয়েছে আওয়ামী লীগের সামগ্রিক অস্তিত্ব বিনাশের এক পরিকল্পিত নীলনকশা। আজ আমাদের দলের কর্মীদের মনে প্রশ্ন জাগে, সেই লগি-বইঠার অদম্য শক্তি আজ কোথায়? কেন আমরা নিষিদ্ধ? প্রথম আঘাত আসে আমাদের মূল সাংগঠনিক শক্তির উপর। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবি ও সরকারের প্রতিশোধমূলক মনোভাবের ফলস্বরূপ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরপর চরম অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে স্বয়ং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনগুলোকে
নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যে দলটি রাজপথের শ্রেষ্ঠত্বে বিশ্বাসী, তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম আজ আইনের চোখে অবৈধ। এই নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি চলছে গণ-গ্রেফতার ও বিচারিক নিপীড়ন। সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ আজ আমাদের আড়াই লাখ নেতাকর্মী কারারুদ্ধ। পঞ্চাশ লাখের বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে, এবং প্রায় দুই কোটি মানুষ আজ ঘরছাড়া। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে গণহত্যা এবং আদালত অবমাননার মতো ভিত্তিহীন অভিযোগে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এই বিচারিক প্রক্রিয়া রাজনৈতিক প্রতিশোধের চরম রূপ। সবচেয়ে বেদনাদায়ক আঘাত এসেছে আমাদের ঐতিহাসিক চেতনার উপর। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি জাদুঘরকে প্রথমে আগুনে পুড়িয়ে এবং পরবর্তীতে বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এই বর্বরতা
কেবল একটি বাড়ি ভাঙা নয়, এটি ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক ভিত্তি এবং চেতনাকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার চরম রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। এই নীরবতা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলের জন্য এক অগ্নিপরীক্ষা। এই নীরবতা পরাজয় নয়, কৌশলগত প্রতিরোধ অনেকে এই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের আপাত নীরবতাকে দুর্বলতা হিসেবে দেখতে পারে। কিন্তু যারা আমাদের রাজনৈতিক দর্শন বোঝেন না, তারা জানেন না—আওয়ামী লীগ জানে, কখন রক্ষকের ভূমিকায় থাকতে হয়, আর কখন বিধ্বংসীর ভূমিকায় নামতে হয়। ২০০৬ সালে আমরা রাজপথ দখলে ছিলাম, তাই লগি-বইঠা ছিল আমাদের হাতিয়ার। আজ যখন আমাদের হাত আইনিভাবে বেঁধে দেওয়া হয়েছে, তখন আমাদের কৌশলও পাল্টে গেছে। এই মুহূর্তে আমাদের দ্বৈত চরিত্রে কাজ করতে হচ্ছে: প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা
মোকাবিলা করা এবং কর্মীদের মনোবল অক্ষুণ্ন রাখা। প্রথমত, সাংগঠনিক শক্তি বাঁচিয়ে রাখা: আমাদের প্রধান কাজ হলো—ব্যাপক ধরপাকড় ও মামলার মুখেও সংগঠনের ভিতরের শক্তিকে সুরক্ষিত রাখা। আড়াই লাখ কর্মী জেলে থাকার পরেও আমাদের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো মিলে সারা দেশে ১২০০-এর বেশি ছোট ছোট মিছিল বা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে। এটিই আমাদের অদম্য মনোবল ও ঐক্যের প্রতীক। রাজপথে আমাদের উপস্থিতি শূন্যের কোঠায় নামানো গেলেও আমাদের সাংগঠনিক হৃদস্পন্দন বন্ধ করা যায়নি। দ্বিতীয়ত, ডিজিটাল প্রতিরোধ: ঐতিহ্যবাহী গণমাধ্যম থেকে আমাদের দূরে সরিয়ে রাখা হলেও, আমরা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে আমাদের বার্তা প্রচার করছি। এই ডিজিটাল রণক্ষেত্রে নেতাকর্মীরা নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে এবং
আমাদের বিরুদ্ধে হওয়া অপপ্রচারের মোকাবিলা করছে। তৃতীয়ত, রণকৌশল ঝালিয়ে নেওয়া: বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের পুরনো বিরোধী দলের চরিত্রকে আরও শক্তিশালী করছে। ক্ষমতা থেকে কিভাবে টেনেহিঁচড়ে নামাতে হয়, সেই দক্ষতা আওয়ামী লীগের নখদর্পণে রয়েছে। আমাদের নেতারা হুঙ্কার দিচ্ছেন, আরেকটি ২৮ অক্টোবরের জন্য 'প্লটও তৈরি হচ্ছে'। এবার আগের চেয়েও শক্তিশালী, সুসংগঠিত আওয়ামী লীগ মাঠে নামবে। এই হুমকিকে বিরোধীদের মধ্যে চরম ভীতি সঞ্চারের কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। পুনরুত্থানের চূড়ান্ত বার্তা আওয়ামী লীগ রাজপথে কোনো ধরনের ছাড় দিতে প্রস্তুত নয়। আমরা জানি, এই নির্যাতন আমাদের কর্মীদের মনে বিদ্রোহের আগুন আরও তীব্র করেছে। প্রতিটি মামলা, প্রতিটি গ্রেফতার এবং বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ভাঙার প্রতিটি দৃশ্য—আমাদের কর্মীদের লগি-বইঠার সেই শক্তিকে নতুন রূপে জাগিয়ে তুলছে। যদি বিরোধী দল অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করে, তবে অতীতের চেয়েও সুসংগঠিতভাবে, আরও ভয়ংকররূপে আমরা মাঠে নামব। এই রাজনৈতিক প্রস্তুতি দেশের রাজনীতিতে চরম সংঘাতের ইঙ্গিত দিচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ এখন আরেকটি লগি-বইঠার ডাকের অপেক্ষায় আছে। আর সেই ডাক আসবেই। কারণ, আমরা আমাদের প্রতিপক্ষকে স্পষ্ট বার্তা দিতে বদ্ধপরিকর: আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে নামতে নয়, বরং এই অবৈধ ক্ষমতাকে টেনেহিঁচড়ে নামানোর জন্য প্রস্তুত। রাজপথের শ্রেষ্ঠত্ব ছিল আমাদের, আছে আমাদের, এবং তা পুনরুদ্ধারের আগ পর্যন্ত এই সংগ্রাম থামবে না। লগি-বইঠার অগ্নিশপথ আমাদের অদম্য মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে চলুক—এই আমাদের অঙ্গীকার। মনির হোসাইন উপ-দপ্তর সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ



