রিজিক বৃদ্ধি ও সচ্ছলতা লাভের ১০ আমল – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আপডেটঃ ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
     ১০:৫০ অপরাহ্ণ

রিজিক বৃদ্ধি ও সচ্ছলতা লাভের ১০ আমল

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১০:৫০ 121 ভিউ
মানুষ বলতেই সবাই সচ্ছল হতে চায়। চায় সে জীবনের অতীব ঘনিষ্ঠ প্রসঙ্গ জীবিকার ব্যাপারে ভাবনামুক্ত হতে। আল্লাহ তায়ালা মুমিনের প্রাত্যহিক জীবনাচারেরই কিছু কর্মকাণ্ডের মধ্যে এমন বৈশিষ্ট্য রেখেছেন যে, সেগুলোর সুষ্ঠু অনুসরণের ফলে জীবিকার চেষ্টায় নিয়ত গলদগর্ম হতে মুক্তি পেতে পারে। দুনিয়ার জীবনে আল্লাহর দেওয়া সব ধরনের জীবন-উপকরণ ও নেয়ামতকে রিজিক বলা হয়। রিজিক শুধু খাবার-পানীয় নয়, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষাসহ জীবনে টিকে থাকার অন্যান্য সহায়ক মাধ্যম ও সুবিধাগুলোও রিজিক। সহজে সচ্ছলতা লাভের ১০টি উপায় এখানে আলোচনা করা হল। ১. তওবা-ইস্তেগফার: আল্লাহ প্রদত্ত জীবিকা লাভের অন্যতম মাধ্যম হল তওবা-ইস্তেগফার ও ক্ষমা প্রার্থনা করা। হজরত নূহ (আ.) স্বীয় কওমকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার

কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের ওপর অজস্র বৃষ্টিধারা বর্ষণ করবেন, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি বৃদ্ধি করে দেবেন, তোমাদের জন্য উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্য নদী-নালা প্রবাহিত করবেন। (সূরা নূহ, আয়াত : ১০-১২) আয়াতটিতে আল্লাহ পরিষ্কার বলেছেন, তওবা-ইস্তেগফারের মাধ্যমে তিনি ধন-সম্পদ বাড়িয়ে দেবেন। সুতরাং জীবিকার সচ্ছলতা প্রত্যাশীদের জন্য অধিক পরিমাণে তওবা ও ইস্তেগফার করতে থাকা উচিত। ২. তাকওয়া ও খোদাভীতি: তাকওয়া ও খোদাভীতি যে জীবিকা লাভের অন্যতম একটি উপায়, এ প্রসঙ্গে মহান রাব্বুল আলামিন এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য নিষ্কৃতির পথ বের করে দেবেন। এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিজিক দেবেন। (সূরা

তালাক, অয়াত : ২-৩) হাফেজ ইবনে কাসির (রহ.) উপরোক্ত আয়াত দুটির তাফসির প্রসঙ্গে বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ পাকের নির্দেশাবলী পালন করে এবং তার নিষিদ্ধ কার্যাবলী হতে বিরত থেকে তাকওয়া অবলম্বন করে, আল্লাহ পাক তার জন্য সব বিপদাপদ হতে মুক্ত হওয়ার পথ করে দেবেন, যেখান থেকে রিজিক লাভ করার কথা সে স্বপ্নেও চিন্তা করে না। (তাফসিরে ইবনে কাসির ৪/৪০০) ৩. আল্লাহর ওপর ভরসা: যে সব উপায় অবলম্বনের মাধ্যমে জীবিকায় সচ্ছলতা লাভ করা যায়, তন্মধ্যে অন্যতম হল, মহান আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল বা ভরসা করা। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) এরশাদ করেছেন, আল্লাহ পাকের ওপর যেমন ভরসা করা উচিত তোমরা যদি

তার ওপর তেমন ভরসা কর, তাহলে পাখিদেরকে যেভাবে রিজিক প্রদান করা হয়, অর্থাৎ সকালে তারা শূন্য উদরে বেরিয়ে যায় আর সন্ধ্যায় পূর্ণ উদরে ফিরে আসে, তোমাদেরকেও ঠিক এভাবে রিজিক প্রদান করা হবে। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৩৪৪) তবে তাওয়াক্কুল অর্থ জীবিকা লাভের জন্য চেষ্টা-পরিশ্রম ত্যাগ করে হাতগুঁটিয়ে বসে থাকা নয়। বরং যথারীতি মেহনতের পাশাপাশি ভরসা রাখতে হবে মহান আল্লাহর ওপর। আর এ বিশ্বাস রাখতে হবে যে, সমস্ত কিছু তার হাতেই নিয়ন্ত্রিত এবং রিজিকের ব্যবস্থা একমাত্র তিনিই করে থাকেন। ৪. ইবাদতের জন্য ফারেগ হওয়া: অর্থাৎ স্বীয় রবের ইবাদতের জন্য হৃদয়কে পরিপূর্ণ একাগ্র করার ক্ষেত্রে অধিক যত্নবান হওয়ার দ্বারাও স্বচ্ছলতা লাভ হয়। হজরত আবু

হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) একটি হাদিসে কুদসিতে বলেন, আল্লাহ পাক বলেছেন, হে বনি আদম! তুমি আমার ইবাদতের জন্য নিজেকে ফারেগ কর। (তাহলে) আমি তোমার সিনাকে সম্পদশালী করে দেব এবং তোমার দরিদ্রতাকে দূর করে দেব। আর যদি তা না কর তাহলে তোমার হাত (অর্থহীন) কাজে ব্যস্ত করে দেব আর লোকের কাছে তোমাকে মুখাপেক্ষী করে রাখব। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৪৬৬) ৫. ধারাবাহিকভাবে হজ ও ওমরা পালন: অর্থাৎ হজ সম্পাদনের পর ওমরার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা এবং ওমরা শেষ হলে পুনরায় হজের জন্য প্রস্তুত হতে থাকা রিজিক লাভের উপায়। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন,

হজ ও ওমরা একের পর এক আদায় কর। কারণ, এ দুটি দরিদ্রতা ও গোনাহকে এমনভাবে দূর করে দেয় যেমন হাপর (অগ্নি) লৌহ ও স্বর্ণ-রৌপ্যের ময়লা দূর করে দেয়। আর হজ্জে মাবরুর-এর প্রতিদান শুধুই জান্নাত। (জামে তিরমিজি : ৮১০) অতএব নিজেদের গোনাহের বোঝা এবং অভাব ও দরিদ্রতা থেকে নিষ্কৃতি পেতে হলে সামর্থ্য অনুযায়ী নিয়মিত হজ ও ওমরা পালন করতে হবে। ৬. আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা: জীবিকায় স্বচ্ছলতা লাভের আরেকটি উপায় হল আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা। হজরত আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি রিজিকের স্বচ্ছলতা ও দীর্ঘজীবন পছন্দ করে, সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে চলে। (সহিহ বুখারি, হাদিস :

৫৯৮৫) তাই সাধ্যমত আত্মীয়দের উপকার করা এবং যথাসাধ্য অনিষ্ঠ হতে তাদেরকে রক্ষা করার চেষ্টা করা। ৭. আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা: জীবিকায় স্বচ্ছলতা লাভের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হল আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা। যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করবে, তাকে পারলৌকিক প্রতিদানের পাশাপাশি দুনিয়াতেও প্রতিদান দেয়া হবে। মহান আল্লাহ বলেন, তোমরা যা কিছু ব্যয় কর, তিনি তার বিনিময় দেন। (সূরা সাবা, আয়াত, ৩৯) হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) একটি হাদিসে কুদসিতে বলেন, হে আদম সন্তান! তোমরা ব্যয় কর, আমি তোমাদের জন্য ব্যয় করব। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৯৯৩) আল্লাহর রাস্তায় ব্যয়কারীদের জন্য স্বচ্ছলতার এর চেয়ে পোক্ত প্রতিশ্রুতি এবং রিজিক লাভ করার এর চেয়ে সহজ ও নিশ্চিত মাধ্যম আর কি হতে পারে! ৮. দ্বীনের শিক্ষার্থীদের পেছনে ব্যয় করা: জীবিকায় স্বচ্ছলতা লাভের আরেকটি উপায় হল দ্বীনের শিক্ষার্থীদের পেছনে ব্যয় করা। হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজি (সা.)-এর জমানার দুই ভাইয়ের ঘটনা। তাদের একজন নবী কারিম (সা.)-এর খেদমতে ধর্মীয় জ্ঞান শিক্ষা করার জন্য আসত এবং অপরজন জীবিকা-অর্জনের চেষ্টায় লিপ্ত থাকত। যে ভাই জীবিকা অর্জনের জন্য মেহনত করত, একদিন সে নবী করিম (সা.)-এর নিকট এসে নিজের ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করল। জবাবে নবী করিম (সা.) বললেন, ‘হতে পারে তোমাকে তার অসিলাতেই রিজিক প্রদান করা হচ্ছে। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৩৪৫) তাই পর্যাপ্ত রিজিক লাভে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের জন্য ধর্মীয় জ্ঞান অর্জনকারী ছাত্রদের পেছনে নিজের অর্থ-সম্পদ ব্যয় করা উচিত। ৯. দুর্বল ও অসহায়দের প্রতি অনুকম্পা প্রদর্শন করা: দুর্বল, অসহায় ও নিরাশ্রয় ব্যক্তিদের প্রতি অনুকম্পা ও দয়া প্রদর্শন করাও স্বচ্ছলতা লাভের অন্যতম মাধ্যম। হজরত আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন, তোমাদের দুর্বল ও অসহায় ব্যক্তিদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করার মাধ্যমে আমার সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা কর। কারণ, তাদের কারণেই তোমরা রিজিক লাভ করে থাক এবং সাহায্য-সহযোগিতা পেয়ে থাক। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২৫৯৪ তাই আল্লাহ রাব্বুল আলামিন প্রদত্ত রিজিকের দরজা অবারিত করতে চাইলে দুর্বল, অসহায় ও দরিদ্র মানুষের প্রতি ইহসান ও দয়া-দাক্ষিণ্য করে যেতে হবে। ১০. আল্লাহ রাস্তায় হিজরত করা: স্বচ্ছলতা লাভের আরেকটি উপায় হল আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করা। আল্লাহ পাক এরশাদ করেন, যে কেউ আল্লাহর পথে দেশত্যাগ করে, সে এর বিনিময়ে অনেক স্থান ও স্বচ্ছলতা প্রাপ্ত হবে। (সূরা নিসা, আয়াত : ১০০) ইমাম রাজি (রহ.) বলেন, আল্লাহর জন্য নিজ দেশ ত্যাগ করে অন্য কোনো দেশে গমনকারী ব্যক্তি তার নতুন নিবাস-নগরে প্রভুত কল্যাণ ও নিয়ামত লাভ করবে। বুঝা গেল আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করা স্বচ্ছল জীবিকা লাভের পক্ষে সহায়ক। এটা আল্লাহ পাকের ওয়াদা। আর আল্লাহর ওয়াদা সত্য ও সুনিশ্চিত। আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে আল্লাহর পথে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
৪৩ শিক্ষককে বদলির পর প্রাথমিক শিক্ষকদের শাটডাউন স্থগিত ডিএমপির সব থানার ওসি বদলি, পরিবর্তন ১৩ ডিসি পদেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ভর্তিতে না ব্রিটেনের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আমজনতার দল’ ও ‘জনতার দল’ পাচ্ছে ইসির নিবন্ধন দৌলতপুরে কৃষককে গুলি করে হত্যা ব্যবসায়ীদের ভোজ্যতেলের দাম কমাতে বলল সরকার, রোববার আবার বৈঠক পেঁয়াজের দর ফের বেড়েছে, সবজির দাম কমছে না লাল গালিচায় প্রথম দিনেই বিশ্ব সিনেমার সেরা মুখগুলো শুটিংয়ে পোশাক নিয়ে অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতা জানালেন স্বরা শীতে লবঙ্গ চা খাওয়ার উপকারিতা অ্যামেরিকায় বড় হামলার পরিকল্পনা, বন্দুক ভর্তি গাড়িসহ পাক-বংশোদ্ভূত যুবক গ্রেপ্তার বিএনপি সন্ত্রাসীর হাজার কোটির চাঁদা ও দখল মিশন ওয়াশিংটনে গোপন দলিলে ২৬ মার্চ: ‘শেখ মুজিব স্বাধীন বাংলাদেশ ঘোষণা করেছেন’ বিডিআর বিদ্রোহের ‘দাবার ঘুঁটি’ ও খুনিদের মুক্তি: ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়ের পুনরাবৃত্তি- রুদ্র মুহম্মদ জাফর ”ভিডিও বানিয়ে ফাইভ স্টারে থাকা যায় না, ‘কনটেন্ট ক্রিয়েটর’ শুধুই লোকদেখানো মুখোশ, আমি কাজ করি ‘ইসরায়েলের’ হয়ে” গোবিন্দগঞ্জে চা দোকানিকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা চীন–পাকিস্তান ঘুরে বাংলাদেশের আকাশ নিরাপত্তা: ড্রোন ও প্রতিরক্ষা চুক্তিতে ব্যয়, ঝুঁকি ও গোপন প্রশ্ন অবৈধ ইউনুস সরকারের জেলখানা যে আওয়ামী লীগের মৃত্যুকুপ ডা. রাশেদুল হক একজন চিকিৎসক ২০১০-২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশ দারিদ্র্য ও অতি দারিদ্র্যের হার অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে শেখ হাসিনা