মুক্তিযুদ্ধে যেভাবে ভুমিকা রেখেছিল নদী
'নিউইয়র্ক টাইমস'-এর দিল্লি সংবাদদাতা সিডনি শনবার্গ (আগরতলা, ভারত, ১৩ এপ্রিল ১৯৭১) তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, '...বাঙালিরা নির্ভর করছে বর্ষা মৌসুমের বৃষ্টির ওপর, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে যা শুরু হবে। পূর্ব পাকিস্তানের গ্রামাঞ্চলের জটিল পথ-গাঙ্গেয় ব্রহ্মপুত্র জলধারা ও সহস্রোত নদীর আঁকিবুঁকি-পশ্চিম প্রদেশের শুষ্ক ও পার্বত্য অঞ্চল থেকে আগত পাঞ্জাবি ও পাঠানদের কাছে অপরিচিত। বর্ষায় যখন নদী ফুলে-ফেঁপে উঠবে এবং মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বন্যায় পূর্ব পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়বে, তখন এ অপরিচিতি আরও বাড়বে।'
বর্ষায় মুক্তিবাহিনীর প্রস্তুতির বিষয়ে এক বাঙালি কর্মকর্তা তাকে বলেন, 'আমরা এখন বর্ষার অপেক্ষায় রয়েছি...। তারা পানিকে এতো ভয় পায়, আপনি ভাবতেই পারবে না এবং আমরা হচ্ছি জলের
রাজা। তারা তখন ভারী কামান ও ট্যাংক নিয়ে চলতে পারবে না, জঙ্গি বিমান উড়াতে পারবে না। প্রকৃতি হবে আমাদের দ্বিতীয় বাহিনী।' (ডেটলাইন বাংলাদেশ: ১৯৭১, সিডনি শনবার্গ, অনুবাদ: মফিদুল হক) মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ৩ এপ্রিল ভারতের আগরতলার পত্রিকা 'দৈনিক সংবাদ' তাদের সম্পাদকীয়তে পশ্চিম পাকিস্তানিদের পরাজয়ের সম্ভাব্য কারণ বিশ্লেষণ করে। পরাজয়ের অনেকগুলো কারণের মধ্যে বর্ষায় বৃষ্টির পানি ও নদ-নদী, খাল-বিল যে তাদের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে তাও আলোচনায় আসে। পত্রিকাটি লিখেছিল, '...আসন্ন বর্ষায় ওদের অবস্থা হবে আরও শোচনীয়। বাংলাদেশের নদী নালা খালে বিলে এখন পাঞ্জাবী সৈন্যের ডুবে মরা ছাড়া গত্যন্তর থাকবে না। শহর ছেড়ে গ্রামের দিকে গেলেই তাদের মৃত্যু অনিবার্য।' হয়েছেও তাই। বর্ষায় বৃষ্টির
পানি ও বাংলার নদ-নদী পাকিস্তানিদের পরাজয় মানতে বাধ্য করে। শুধু পশ্চিমবঙ্গের ভাগীরথী নদীর তীরের স্থাপিত নৌ-কমান্ডো ক্যাম্প থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসা যোদ্ধারাই নয়, লাখো সাধারণ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিবাহিনী তাদের নিজস্ব কৌশল ব্যবহার করে নদীতে সংগঠিত যুদ্ধে জয়ী হয়েছে। নয় মাসব্যাপী যুদ্ধে বিশেষত বর্ষাকালে নদী ব্যবহারের সুবিধা ভোগ করে মুক্তিযোদ্ধারা। এ সময় নদীগুলোও তাদের সহযোদ্ধা হয়ে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
রাজা। তারা তখন ভারী কামান ও ট্যাংক নিয়ে চলতে পারবে না, জঙ্গি বিমান উড়াতে পারবে না। প্রকৃতি হবে আমাদের দ্বিতীয় বাহিনী।' (ডেটলাইন বাংলাদেশ: ১৯৭১, সিডনি শনবার্গ, অনুবাদ: মফিদুল হক) মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ৩ এপ্রিল ভারতের আগরতলার পত্রিকা 'দৈনিক সংবাদ' তাদের সম্পাদকীয়তে পশ্চিম পাকিস্তানিদের পরাজয়ের সম্ভাব্য কারণ বিশ্লেষণ করে। পরাজয়ের অনেকগুলো কারণের মধ্যে বর্ষায় বৃষ্টির পানি ও নদ-নদী, খাল-বিল যে তাদের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে তাও আলোচনায় আসে। পত্রিকাটি লিখেছিল, '...আসন্ন বর্ষায় ওদের অবস্থা হবে আরও শোচনীয়। বাংলাদেশের নদী নালা খালে বিলে এখন পাঞ্জাবী সৈন্যের ডুবে মরা ছাড়া গত্যন্তর থাকবে না। শহর ছেড়ে গ্রামের দিকে গেলেই তাদের মৃত্যু অনিবার্য।' হয়েছেও তাই। বর্ষায় বৃষ্টির
পানি ও বাংলার নদ-নদী পাকিস্তানিদের পরাজয় মানতে বাধ্য করে। শুধু পশ্চিমবঙ্গের ভাগীরথী নদীর তীরের স্থাপিত নৌ-কমান্ডো ক্যাম্প থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসা যোদ্ধারাই নয়, লাখো সাধারণ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিবাহিনী তাদের নিজস্ব কৌশল ব্যবহার করে নদীতে সংগঠিত যুদ্ধে জয়ী হয়েছে। নয় মাসব্যাপী যুদ্ধে বিশেষত বর্ষাকালে নদী ব্যবহারের সুবিধা ভোগ করে মুক্তিযোদ্ধারা। এ সময় নদীগুলোও তাদের সহযোদ্ধা হয়ে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করে।



