বাংলাদেশ আলু, পেঁয়াজ, চালে ভারতের ওপর কতটা নির্ভরশীল? – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আপডেটঃ ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪
     ৬:১৪ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ আলু, পেঁয়াজ, চালে ভারতের ওপর কতটা নির্ভরশীল?

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৬:১৪ 142 ভিউ
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে ভারতীয় পণ্য বর্জনে ব্যাপক প্রচারণা দেখা গিয়েছিলো। এবার ভারত থেকে বাংলাদেশে নিত্যপণ্য বিশেষ করে চাল, পেঁয়াজ ও আলু রপ্তানি 'বন্ধ' করে দেয়ার হুমকি দিয়ে সেদেশের এক রাজনীতিবিদ বক্তব্য দেয়ার পর দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কের বিষয়টি নতুন করে সংবাদমাধ্যমে জায়গা করে নিয়েছে। রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা বা স্থলবন্দর বন্ধ থাকার মতো কারণে ভারত থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ বা হ্রাস পাওয়ার ঘটনা নতুন নয়। তবে, এবারের প্রেক্ষাপটে বাণিজ্য নয় বরং রাজনৈতিক আলোচনাই মুখ্য হয়ে উঠেছে। গত সোমবার পেট্রাপোল স্থলবন্দরের কাছে 'বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন' বন্ধ এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে মুক্তির দাবিতে এক সমাবেশে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ভারত

থেকে আলু ও পেঁয়াজ আসা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন। এতে আগে থেকেই আলোচনায় থাকা এ ইস্যুটি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমেও তর্ক-বিতর্ক বাড়ে। এদিকে বাংলাদেশের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন "তাদের (ভারতের) রাজনৈতিক বক্তব্য যাই হোক, তাদের ব‍্যবসায়ীদের স্বার্থও দেখতে হবে।" যে কারণে বাণিজ্যিক সম্পর্কে প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন মি. আহমেদ। ভারত থেকে সর্বশেষ অর্থবছরে বাংলাদেশের আমদানির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১১ বিলিয়ন ডলার, তথ্য ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের। বাংলাদেশে রপ্তানিকারকদের তালিকায় চীনের পরেই দেশটির অবস্থান। কিন্তু, উল্লেখিত তিন পণ্য - আলু, পেঁয়াজ ও চালের ক্ষেত্রে ভারতের ওপর আদতে কতটুকু নির্ভরশীল বাংলাদেশ? আলু বাংলাদেশে ২০২৩ সালের আগে কখনো আলু আমদানিই করা হয়নি। দেশটি বরং আলু রপ্তানি করতো। দাম

নিয়ন্ত্রণের জন্য ওই বছরের অক্টোবরে প্রথমবারের মত আলু আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশটি থেকে ১৭ লাখ মার্কিন ডলারের আলু আমদানি হয় বাংলাদেশে। ওই অর্থবছরে বাংলাদেশে আলু উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল এক কোটি ১৬ লাখ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয়েছে এক কোটি ছয় লাখ মেট্রিক টন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)এর সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রকাশিত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। তবে, দেশে আলুর চাহিদা প্রায় ৮০ লাখ মেট্রিক টন। অর্থাৎ, উৎপাদন চাহিদার তুলনায় কম নয়। "আলু যেহেতু কোল্ডস্টোরেজে রাখা যায়, এই সুযোগটা ব্যবসায়ীরা কাজে লাগায়, মজুদ করে রাখে।" বলছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক

হাসনীন জাহান। এর ফলে দাম বৃদ্ধির ঘটনা ঘটে। যে কারণে আমদানির দিকে যায় সরকার। "আলু যদি সরাসরি বাজারে দিয়ে দিতে পারতো কৃষক, অর্থাৎ, সরবরাহ যদি স্বাভাবিক থাকতো আমদানি নির্ভরশীলতা কমানো যেতো," বলেন অধ্যাপক জাহান। পেঁয়াজ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৩৭ লাখ মেট্রিক টন লাখ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। সেই লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে প্রায় ৩৮ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে এ বছর। কিন্তু, এ বছরও ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পেঁয়াজ-রসুন জাতীয় পণ্যের রপ্তানির হিসাবে দেখা যাচ্ছে, প্রতিবেশী বাংলাদেশে প্রায় ২০ কোটি ডলারের পণ্য পাঠিয়েছে তারা। বাংলাদেশে বার্ষিক পেঁয়াজের চাহিদা ২৭-২৮ লাখ টন। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছিলেন মসলা গবেষণা

কেন্দ্রের তৎকালীন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শৈলেন্দ্রনাথ মজুমদার। মজুমদারের মতে, এর পুরোটাই দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজ দিয়েই পূরণ করা সম্ভব। তবু কেন আমদানি করতে হয়? কৃষি অর্থনীতিবিদ হাসনীন জাহান বলেন, পেঁয়াজের বেলায় প্রজেকশন (পূর্বাভাস) ঠিকমতো করা হয় না। "কৃষক হয়তো এক বছর দাম পাচ্ছে না, ফলে পরের বছর কম চাষ করে। কিংবা একবছর দাম বেশি পেলে পরেরবার চাষের পরিমাণ বাড়ে," ব্যাখ্যা করেন তিনি। তথ্যের ঘাটতি না থাকলে এবং অভ্যন্তরীণ সরবরাহ ও বাজার ব্যবস্থায় তদারকি ঠিকমতো করা গেলে আমদানি এড়ানো যেতো বলে মনে করেন তিনি। চাল আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দেশকে ধান-চালের নিরিখে 'খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ' বলে দাবি করা হতো। কিন্তু, তারপরও চাল আমদানি থেমে থাকেনি। ভারত থেকে বাংলাদেশে চাল

আমদানির তথ্যে বছর ভেদে ব্যাপক পার্থক্য দেখা গেছে। একেক বছরে আমদানির পরিমাণ একেক রকম। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে দেড় কোটি ডলারের চাল রপ্তানি করা হয়েছিল বাংলাদেশে। তবে এর আগের অর্থ বছরে ৩১ কোটি ডলারের চাল বাংলাদেশে রপ্তানি করা হয়। সর্বশেষ অর্থবছরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল চার কোটি ৩৪ লাখ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয় চার কোটি ২০ লাখ মেট্রিক টন। জাতিসংঘের বাণিজ্য বিষয়ক ডেটাবেইজ অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বাংলাদেশে আট কোটি ডলারের বেশি চাল রপ্তানি করেছে ভারত। পরিমাণের দিক থেকে ২ লাখ ১৫ হাজার টন প্রায়। ভারত ছাড়াও ভিয়েতনাম এবং থাইল্যান্ড থেকে চাল আনে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ) থেকে

গত এপ্রিলে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে পূর্বাভাস করা হয়েছে, আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের চাল আমদানি শুন্যের কাছাকাছি নেমে আসতে পারে। চলতি বছর বোরোর ভালো ফলন এবং আউশ-আমনের পরবর্তী মৌসুমের কথা বিবেচনায় নিয়ে সংস্থাটি বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি করতে পারে দেশটি। বোরোর ভালো উৎপাদনের কথা উল্লেখ করে কৃষি অর্থনীতিবিদ হাসনীন জাহান বলেন, সমস্যাটা হয় ডিস্ট্রিবিউশন (বন্টন) পর্যায়ে। মজুদদারি ঠেকিয়ে সরবরাহ ব্যবস্থা মজবুত করা গেলে চালের মূল্যবৃদ্ধি বা যোগান সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব বলে মন্তব্য তার। সূত্র: বিবিসি

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
অবৈধ দখলদার সরকারের শাসনে জনরোষ, ঘরে ঘরে অসন্তোষ জামাতি ষড়যন্ত্রে নির্বাচন অনিশ্চিত, দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষমতায় থাকছেন ডঃ ইউনুস! ইউক্রেন হওয়ার পথে বাংলাদেশ, আতঙ্কিত জনগণ ড. ইউনুসের কূটনীতি সেভেন সিস্টার্সের জন্য চ্যালেঞ্জ বাড়াচ্ছে ১৭ ডিসেম্বর ১৯৭১—অস্ত্রহীন এক ভারতীয় সেনা আর বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সাহসী উদ্ধার ধর্মান্ধতার নৃশংস উন্মাদনা—ভালুকায় হিন্দু শ্রমিককে হত্যা করে মরদেহে আগুন আইন-শৃঙ্খলা সংকটে বাংলাদেশ,হাদীর মৃত্যুর পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে, নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ সরকার বিজয় দিবসে ফুল দেওয়াই অপরাধ—এই রাষ্ট্র এখন কার দখলে? লুটপাটের মহোৎসবে ঢাকার পানি প্রকল্প বিজয় দিবসের ডিসপ্লেতে একাত্তরের সত্য—সহ্য করতে না পেরে শিশুদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল জামায়াত–শিবির বাংলাদেশের গর্ব, ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রতীক ছায়ানট— অ/গ্নি/সন্ত্রা/সে ভস্মীভূত প্রথম আলো–ডেইলি স্টার কার্যালয়, ধ্বং/স/স্তূপে পরিণত সংবাদকেন্দ্র সংবাদমাধ্যমে স/ন্ত্রা/স: উ/গ্র/বাদী/দের হামলায় স্তব্ধ “প্রথম আলো” ও “ডেইলি স্টার” ছাপা ও অনলাইন কার্যক্রম বন্ধ। গণমাধ্যমে হামলাকারীদের ‘বি/চ্ছি/ন্নতাবাদী উগ্রগোষ্ঠী’ বলে আখ্যায়িত করল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নয়া বন্দোবস্তের বাংলাদেশে জলে, স্থলে, অন্তরীক্ষে জামাতময় বিজয় উৎসব! তারেকের দেশে ফেরার আগে লন্ডনে জামায়াত আমির: সমঝোতা নাকি গোপন ষড়যন্ত্রের ছক? ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ধ্বংসের মুখে, ইউনূস শাসনে অর্থনীতি ধ্বস! শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আইসিটির রায় ‘আইনগতভাবে অবৈধ’: মোহাম্মদ আলী আরাফাত একজন বিদেশি বীরপ্রতীকের গল্প Bangladesh’s Export Downturn: Four Months of Decline