ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর
বিচারে সরকারের উদ্যোগ নেই
শিশু বলাৎকারের জন্য কখনো ক্ষমা চায়নি ইসকন
স্বাধীন ও নির্ভরযোগ্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জন্য সংস্কার প্রয়োজন
ইসকনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ
লগি-বৈঠা দিয়ে জামায়াত নেতাদের পিটিয়ে হত্যা: ১৮ বছর পর হাসিনার নামে মামলা
চিন্ময় কৃষ্ণসহ ইসকনের ১৭ সদস্যের ব্যাংক হিসাব জব্দ
আজ গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
প্রত্যাশা পূরণে আশাবাদী রাজনৈতিক নেতারা
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্ব অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। সরকারের দুই মাস পার হয়েছে। এ সময়ে তাদের কর্মকাণ্ডে ধীরগতি দেখলেও জনগণের প্রত্যাশা পূরণে আশাবাদী বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো।
শীর্ষ নেতাদের অভিমত- সরকারের প্রতি মানুষের যে রকমের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, দুই মাসে পুরোটার প্রতিফলন দেখা যায়নি। তবে আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি ছিল না। সরকারের প্রধান কাজ ছিল ১৬ বছরের আবর্জনা পরিষ্কার করা, ঘরকে কিছুটা বাসযোগ্য করা-এ ব্যাপারে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সামষ্টিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে সরকারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য থাকলেও এখনো প্রশাসনে অস্থিরতা আছে, দ্রুতগতিতে এর সমাধান করা জরুরি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজনীয় পুনর্গঠন করে তাদের
পেশাদারি দায়িত্বে আনা যায়নি। গ্রেফতার করা যায়নি গণহত্যার সঙ্গে জড়িত বড় মাপের চিহ্নিত অপরাধীদের। এগুলো সরকারের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের জায়গা। নেতাদের আরও অভিমত- জনগণ আশা করেছিল, দুই মাসের মধ্যে নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে। তা করা হয়নি, এ নিয়ে হতাশা আছে। রাজনৈতিক দলগুলো সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করছে, আগামী দিনেও করবে। গণতন্ত্র বা নির্বাচনের পথে যাত্রায় সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে রাজি তারা। নানা পদক্ষেপ নেওয়ার আগে স্টেকহোল্ডার হিসাবে রাজনৈতিক দল, ছাত্র-তরুণদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন নেতারা। তারা আশা করেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর যে লক্ষ্য ও স্বপ্ন নিয়ে নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে, আগামী দিনগুলোয় সেখানে
জনপ্রত্যাশার প্রতিফলন দেখা যাবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। সেই দিন ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। দুদিন পর ৮ আগস্ট শপথ গ্রহণের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নানা বিষয়ে পরামর্শ নিতে ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার তিন দফা সংলাপ করেছে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে। তবে আওয়ামী লীগ ও তাদের ১৪ দলীয় শরিকদের এসব সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এছাড়া সরকার ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন ও সংবিধান সংস্কারে কমিশনও গঠন করেছে। তারা কাজও শুরু করেছেন। এ বিষয়ে আশাবাদী রাজনৈতিক দলগুলো। জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এ সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে। আমাদের দল থেকে তাদের সমর্থন জানানো হয়েছে। তারা সংস্কার সম্পর্কে বিভিন্ন কথাবার্তা বলেছে। তারা কমিটি করেছে, এখনো কোনো স্পষ্ট পরিকল্পনা জনগণের সামনে দিইনি। আমরা মনে করি, জনগণ আশা করেছিল দুই মাসের মধ্যে, বিশেষ করে নির্বাচন সংস্কার নিয়ে তারা রোডম্যাপ ঘোষণা করবে। তা করতে পারেনি। আমরা প্রত্যাশা করি, শিগ্গিরই নির্বাচনের রোডম্যাপসহ বিভিন্ন সংস্কার সম্পর্কে যে কথা বলেছে, তা করবে। তিনি বলেন, আমি মনে করি, দুই মাসের মধ্যে সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে মূল্যায়ন করার সময় হয়নি। একটি স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের সব ক্ষেত্রে একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থায় সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। তা দুমাসেই
সফলতা-ব্যর্থতা এখনো মূল্যায়ন করার সময় হয়নি। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, জাতীয় স্বার্থের বিষয়ে যেহেতু একটা মসৃণ ও সুন্দর গণতান্ত্রিক পরিবেশই আমাদের লক্ষ্য ছিল, সেই লক্ষ্যে আমরা কতটা অগ্রসর হয়েছি-এটার বিষয়ে একটি প্রশ্ন কিন্তু এখন পর্যন্ত আছে। গলিপথে চলাচল করা আর হাইওয়েতে চলাচল করা এক জিনিস না। রাষ্ট্র মানে হাইওয়ে। আমরা এখনো গলিপথে চলাচল করছি। দেশ পরিচালনার জন্য এ সরকারে যারা আছেন, তাদের কিন্তু আগে দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতা নেই। এটা হলো নিরেট সত্য। স্টেকহোল্ডার হিসাবে আমরাসহ যারা দেশ পরিচালনা করেছি বা রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মানুষ যারা আছেন, তাদের সঙ্গে পরামর্শ করলে আমাদের মূল পথে অগ্রসর হওয়াটা আরও দ্রুত
হবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। তার আলোকে এ সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দীর্ঘদিনের বঞ্চনা, দুঃখকষ্ট, আত্মত্যাগ, আন্দোলন-সংগ্রাম আছে। এখন মানুষের প্রত্যাশা বেশি। সরকারের সাফল্য বা ব্যর্থতা এখনো বলার সময় হয়নি। যেসব কাজ হাতে নিয়েছে, কোন পর্যায়ে কতটুকু তারা করছে, তা জনগণ দেখবে। আমরা আশাবাদী, সরকার যৌক্তিক সময়ে সংস্কার ও নির্বাচন করতে পারবে। জনগণের প্রত্যাশা-বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সরকার তো অন্তর্বর্তীকালীন। এ সরকারের নির্দিষ্ট এজেন্ডা আছে বলে আমরা মনে করি না, থাকার কথাও না। সরকার যেহেতু জনগণের সমর্থিত, এ কারণেই সরকারকে সব সহযোগিতা জনগণ করবে। জনপ্রত্যাশার প্রতি তারা যদি আন্তরিক
হয়, নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে, তাহলেও জনপ্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবে বলে আমি মনে করি। তিনি বলেন, শুরুতে তো বুঝে উঠতে সময় লাগে। ধীরগতি হয়ে থাকলে তা স্বাভাবিক, তবে সেটা আবার দীর্ঘায়িত করাও ঠিক হবে না। দীর্ঘদিনের জঞ্জাল-আবর্জনা মুক্ত করতে গেলে একটা সময় লাগবে। একটা পরিবেশ তৈরি করতে হবে। গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকার জনপ্রত্যাশাকে ধারণ করার বিষয়ে আন্তরিক। তাদের নিষ্ঠা ও চেষ্টা আছে-এটা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। কিন্তু তাদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, দূরদর্শিতার যথেষ্ট ঘাটতি আমি দেখছি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু ভুল সিদ্ধান্ত, সেগুলোও লক্ষ করেছি। শেয়ারবাজারে আবারও কিছু বিপর্যয় হয়েছে। এটা ছাড়া সামষ্টিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে আমি মনে করি, সরকারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য আছে। বিশেষ করে সামষ্টিক অর্থনীতিকে একটা নিয়মের মধ্যে আনার ক্ষেত্রে নানা পদক্ষেপ প্রশংসনীয়। পাশাপাশি রেমিট্যান্সের গতি মোটামোটি একটু ভালো। মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনাল গঠন থেকে শুরু করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে এখন পর্যন্ত চিহ্নিত অপরাধীর অধিকাংশই গ্রেফতার হয়নি। তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে। এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যারা সরাসরি গুম-খুন, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তাদের অধিকাংশ এখনো অধরা। আর সরকারের মধ্যেই একধরনের সমন্বয়হীনতা দেখি, কিছু আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি লক্ষ করছি। এসব কিছু দুর্বলতা দেখছি। সরকারের অনেক জায়গায় ধীরগতি দেখছি। তিনি বলেন, সরকার সফল কি ব্যর্থ তার প্রধান পরীক্ষা হবে-একটি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে বা অল্প সময়ের মধ্যে অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারা। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পরবর্তী সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। এ লক্ষ্যে যদি সরকার এগোতে পারে, কাজ করতে পারে, তাহলে সরকারকে আমরা সফল বলতে পারব। সরকারকে বিভ্রান্ত করার জন্য নানা ধরনের উসকানি আছে। আশা করব, সরকার রাইট ট্র্যাকে থাকবে। যদি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের যথাযথ যোগাযোগ, বোঝাপড়া থাকে, তখন আশা করি সময় নিয়ে বড় ধরনের কোনো সমস্যা হবে না। নির্বাচন এক বছরের মাথায় হবে নাকি আরও দুমাস বেশি সময় লাগবে, সেটা আলাপ-আলোচনা করে আমি মনে করি ঠিক করা যাবে। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করছি। এরকম একটা সমর্থনের মধ্য দিয়েও সরকার যদি সঠিকভাবে এগোতে না পারে, সমর্থনটাকে যদি কাজে লাগাতে না পারে, তাহলে এর জন্য অন্তর্বর্তী সরকার দায়ী থাকবে। আশা করব, প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা নিয়ে তারা রাইট ট্র্যাকে থাকবে। মানুষের যে বিশাল প্রত্যাশা, তা পূরণে তারা কাজ করবে। এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, দুই মাস ধরে নানা প্রতিকূলতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়সহ বেশকিছু ক্ষেত্রে সরকারের কাজে গতিশীলতা এবং সাফল্য পরিলক্ষিত হলেও বেশির ভাগ মন্ত্রণালয়ের কাজ বেশ মন্থর ও দুর্বল বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। বিশেষ করে জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ের কাজে দৃঢ় সিদ্ধান্ত গ্রহণের অভাব এবং সমন্বয়হীনতার কারণে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বিচারব্যবস্থা ও প্রশাসনিক অচলাবস্থার বিষয়টি বেশ হতাশাজনক। ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা ছিল দ্রুত একটা নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করবে। দুই মাস চলে গেল; কিন্তু তাদের প্রধান যে এজেন্ডা নির্বাচন, সেদিকে তেমন একটা অগ্রগতি আসলে আমরা দেখতে পারছি না। আমাদের কাছে মনে হয়, দুই মাসে যে অগ্রগতি হওয়ার কথা ছিল, সেটা হয়নি। এছাড়া এখন পর্যন্ত প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দুই মাসে যতটা অগ্রগতি হওয়ার কথা ছিল, সেটা আমার মনে হয় খুব ধীরগতিতে হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার হয়তো তাদের মতো করে চেষ্টা করছে; কিন্তু আমাদের প্রত্যাশা ছিল আরও দ্রুততার সঙ্গে বিষয়গুলো গুছিয়ে নেবেন। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। এজন্য মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও হতাশা আছে। বাম গণতান্ত্রিক জোটের শীর্ষ নেতা ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি শাহ আলম বলেন, দেশে একটা স্বৈরাচারী শাসন চলছিল। মানুষের ভোটাধিকার ছিল না। গণতন্ত্র নির্বাসনে ছিল। গত তিনটি নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। এই লড়াইয়ের মূল প্রাণ হলো গণতন্ত্র। এটিকে বিভিন্নজন নানাভাবে মূল্যায়ন করছে। বিভিন্নভাবে এটিকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। কিন্তু আসলে আন্দোলেন মূল প্রাণটা হলো ডেমোক্রেসি। তিনি আরও বলেন, এখন দেশের মানুষের প্রত্যাশা হলো-গণতান্ত্রিক সংস্কার। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সেই পথ উন্মুক্ত হয়েছে। এ কাজটাই তারা (বর্তমান সরকার) করুক। এর মধ্যে বিচারব্যবস্থা, প্রশাসন ও নির্বাচনব্যবস্থার রিফর্ম ভালোভাবে হওয়া দরকার। আর আর্থিক ব্যবস্থায় জবাবদিহি আনা দরকার। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী এ সরকারের প্রতি মানুষের যে অসম্ভব রকমের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, দুই মাসে হয়তো সেই অর্থে প্রতিফলন দেখা যায়নি। কিন্তু আমরা আশা রাখতে চাই, আগামী দিনগুলোয় এ প্রতিফলন দেখা যাবে। কারণ, অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন নিয়েই তো আমরা এ সরকারেক সমর্থন দিয়েছি। রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে সরকারকে কীভাবে গতিশীল করা যায়, শক্তিশালী করা যায়, সেই লক্ষ্যেই তারা কাজ করবে এবং জন-আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দিয়েই রাষ্ট্র সংস্কারের পথে এগিয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে একটু সময় লাগবে। আমরাও সেই সময় দিতে চাই। এখনই অস্থির হতে চাই না। সরকার যেভাবে তাদের পরিকল্পনার কথা বলছে, সেটি যদি বাস্তবায়ন করা যায় এবং যদি কাঠামোগত পরিবর্তন এনে সরকারকে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করা যায়, তাহলে হয়তো যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমরা গণ-অভ্যুত্থান ঘটিয়েছি, তা বাস্তবায়ন সম্ভব বলেও মনে করি।
পেশাদারি দায়িত্বে আনা যায়নি। গ্রেফতার করা যায়নি গণহত্যার সঙ্গে জড়িত বড় মাপের চিহ্নিত অপরাধীদের। এগুলো সরকারের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের জায়গা। নেতাদের আরও অভিমত- জনগণ আশা করেছিল, দুই মাসের মধ্যে নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে। তা করা হয়নি, এ নিয়ে হতাশা আছে। রাজনৈতিক দলগুলো সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করছে, আগামী দিনেও করবে। গণতন্ত্র বা নির্বাচনের পথে যাত্রায় সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে রাজি তারা। নানা পদক্ষেপ নেওয়ার আগে স্টেকহোল্ডার হিসাবে রাজনৈতিক দল, ছাত্র-তরুণদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন নেতারা। তারা আশা করেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর যে লক্ষ্য ও স্বপ্ন নিয়ে নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে, আগামী দিনগুলোয় সেখানে
জনপ্রত্যাশার প্রতিফলন দেখা যাবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। সেই দিন ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। দুদিন পর ৮ আগস্ট শপথ গ্রহণের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নানা বিষয়ে পরামর্শ নিতে ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার তিন দফা সংলাপ করেছে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে। তবে আওয়ামী লীগ ও তাদের ১৪ দলীয় শরিকদের এসব সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এছাড়া সরকার ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন ও সংবিধান সংস্কারে কমিশনও গঠন করেছে। তারা কাজও শুরু করেছেন। এ বিষয়ে আশাবাদী রাজনৈতিক দলগুলো। জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এ সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে। আমাদের দল থেকে তাদের সমর্থন জানানো হয়েছে। তারা সংস্কার সম্পর্কে বিভিন্ন কথাবার্তা বলেছে। তারা কমিটি করেছে, এখনো কোনো স্পষ্ট পরিকল্পনা জনগণের সামনে দিইনি। আমরা মনে করি, জনগণ আশা করেছিল দুই মাসের মধ্যে, বিশেষ করে নির্বাচন সংস্কার নিয়ে তারা রোডম্যাপ ঘোষণা করবে। তা করতে পারেনি। আমরা প্রত্যাশা করি, শিগ্গিরই নির্বাচনের রোডম্যাপসহ বিভিন্ন সংস্কার সম্পর্কে যে কথা বলেছে, তা করবে। তিনি বলেন, আমি মনে করি, দুই মাসের মধ্যে সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে মূল্যায়ন করার সময় হয়নি। একটি স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের সব ক্ষেত্রে একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থায় সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। তা দুমাসেই
সফলতা-ব্যর্থতা এখনো মূল্যায়ন করার সময় হয়নি। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, জাতীয় স্বার্থের বিষয়ে যেহেতু একটা মসৃণ ও সুন্দর গণতান্ত্রিক পরিবেশই আমাদের লক্ষ্য ছিল, সেই লক্ষ্যে আমরা কতটা অগ্রসর হয়েছি-এটার বিষয়ে একটি প্রশ্ন কিন্তু এখন পর্যন্ত আছে। গলিপথে চলাচল করা আর হাইওয়েতে চলাচল করা এক জিনিস না। রাষ্ট্র মানে হাইওয়ে। আমরা এখনো গলিপথে চলাচল করছি। দেশ পরিচালনার জন্য এ সরকারে যারা আছেন, তাদের কিন্তু আগে দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতা নেই। এটা হলো নিরেট সত্য। স্টেকহোল্ডার হিসাবে আমরাসহ যারা দেশ পরিচালনা করেছি বা রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মানুষ যারা আছেন, তাদের সঙ্গে পরামর্শ করলে আমাদের মূল পথে অগ্রসর হওয়াটা আরও দ্রুত
হবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। তার আলোকে এ সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দীর্ঘদিনের বঞ্চনা, দুঃখকষ্ট, আত্মত্যাগ, আন্দোলন-সংগ্রাম আছে। এখন মানুষের প্রত্যাশা বেশি। সরকারের সাফল্য বা ব্যর্থতা এখনো বলার সময় হয়নি। যেসব কাজ হাতে নিয়েছে, কোন পর্যায়ে কতটুকু তারা করছে, তা জনগণ দেখবে। আমরা আশাবাদী, সরকার যৌক্তিক সময়ে সংস্কার ও নির্বাচন করতে পারবে। জনগণের প্রত্যাশা-বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সরকার তো অন্তর্বর্তীকালীন। এ সরকারের নির্দিষ্ট এজেন্ডা আছে বলে আমরা মনে করি না, থাকার কথাও না। সরকার যেহেতু জনগণের সমর্থিত, এ কারণেই সরকারকে সব সহযোগিতা জনগণ করবে। জনপ্রত্যাশার প্রতি তারা যদি আন্তরিক
হয়, নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে, তাহলেও জনপ্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবে বলে আমি মনে করি। তিনি বলেন, শুরুতে তো বুঝে উঠতে সময় লাগে। ধীরগতি হয়ে থাকলে তা স্বাভাবিক, তবে সেটা আবার দীর্ঘায়িত করাও ঠিক হবে না। দীর্ঘদিনের জঞ্জাল-আবর্জনা মুক্ত করতে গেলে একটা সময় লাগবে। একটা পরিবেশ তৈরি করতে হবে। গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকার জনপ্রত্যাশাকে ধারণ করার বিষয়ে আন্তরিক। তাদের নিষ্ঠা ও চেষ্টা আছে-এটা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। কিন্তু তাদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, দূরদর্শিতার যথেষ্ট ঘাটতি আমি দেখছি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু ভুল সিদ্ধান্ত, সেগুলোও লক্ষ করেছি। শেয়ারবাজারে আবারও কিছু বিপর্যয় হয়েছে। এটা ছাড়া সামষ্টিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে আমি মনে করি, সরকারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য আছে। বিশেষ করে সামষ্টিক অর্থনীতিকে একটা নিয়মের মধ্যে আনার ক্ষেত্রে নানা পদক্ষেপ প্রশংসনীয়। পাশাপাশি রেমিট্যান্সের গতি মোটামোটি একটু ভালো। মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনাল গঠন থেকে শুরু করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে এখন পর্যন্ত চিহ্নিত অপরাধীর অধিকাংশই গ্রেফতার হয়নি। তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে। এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যারা সরাসরি গুম-খুন, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তাদের অধিকাংশ এখনো অধরা। আর সরকারের মধ্যেই একধরনের সমন্বয়হীনতা দেখি, কিছু আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি লক্ষ করছি। এসব কিছু দুর্বলতা দেখছি। সরকারের অনেক জায়গায় ধীরগতি দেখছি। তিনি বলেন, সরকার সফল কি ব্যর্থ তার প্রধান পরীক্ষা হবে-একটি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে বা অল্প সময়ের মধ্যে অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারা। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পরবর্তী সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। এ লক্ষ্যে যদি সরকার এগোতে পারে, কাজ করতে পারে, তাহলে সরকারকে আমরা সফল বলতে পারব। সরকারকে বিভ্রান্ত করার জন্য নানা ধরনের উসকানি আছে। আশা করব, সরকার রাইট ট্র্যাকে থাকবে। যদি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের যথাযথ যোগাযোগ, বোঝাপড়া থাকে, তখন আশা করি সময় নিয়ে বড় ধরনের কোনো সমস্যা হবে না। নির্বাচন এক বছরের মাথায় হবে নাকি আরও দুমাস বেশি সময় লাগবে, সেটা আলাপ-আলোচনা করে আমি মনে করি ঠিক করা যাবে। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করছি। এরকম একটা সমর্থনের মধ্য দিয়েও সরকার যদি সঠিকভাবে এগোতে না পারে, সমর্থনটাকে যদি কাজে লাগাতে না পারে, তাহলে এর জন্য অন্তর্বর্তী সরকার দায়ী থাকবে। আশা করব, প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা নিয়ে তারা রাইট ট্র্যাকে থাকবে। মানুষের যে বিশাল প্রত্যাশা, তা পূরণে তারা কাজ করবে। এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, দুই মাস ধরে নানা প্রতিকূলতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়সহ বেশকিছু ক্ষেত্রে সরকারের কাজে গতিশীলতা এবং সাফল্য পরিলক্ষিত হলেও বেশির ভাগ মন্ত্রণালয়ের কাজ বেশ মন্থর ও দুর্বল বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। বিশেষ করে জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ের কাজে দৃঢ় সিদ্ধান্ত গ্রহণের অভাব এবং সমন্বয়হীনতার কারণে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বিচারব্যবস্থা ও প্রশাসনিক অচলাবস্থার বিষয়টি বেশ হতাশাজনক। ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা ছিল দ্রুত একটা নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করবে। দুই মাস চলে গেল; কিন্তু তাদের প্রধান যে এজেন্ডা নির্বাচন, সেদিকে তেমন একটা অগ্রগতি আসলে আমরা দেখতে পারছি না। আমাদের কাছে মনে হয়, দুই মাসে যে অগ্রগতি হওয়ার কথা ছিল, সেটা হয়নি। এছাড়া এখন পর্যন্ত প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দুই মাসে যতটা অগ্রগতি হওয়ার কথা ছিল, সেটা আমার মনে হয় খুব ধীরগতিতে হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার হয়তো তাদের মতো করে চেষ্টা করছে; কিন্তু আমাদের প্রত্যাশা ছিল আরও দ্রুততার সঙ্গে বিষয়গুলো গুছিয়ে নেবেন। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। এজন্য মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও হতাশা আছে। বাম গণতান্ত্রিক জোটের শীর্ষ নেতা ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি শাহ আলম বলেন, দেশে একটা স্বৈরাচারী শাসন চলছিল। মানুষের ভোটাধিকার ছিল না। গণতন্ত্র নির্বাসনে ছিল। গত তিনটি নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। এই লড়াইয়ের মূল প্রাণ হলো গণতন্ত্র। এটিকে বিভিন্নজন নানাভাবে মূল্যায়ন করছে। বিভিন্নভাবে এটিকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। কিন্তু আসলে আন্দোলেন মূল প্রাণটা হলো ডেমোক্রেসি। তিনি আরও বলেন, এখন দেশের মানুষের প্রত্যাশা হলো-গণতান্ত্রিক সংস্কার। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সেই পথ উন্মুক্ত হয়েছে। এ কাজটাই তারা (বর্তমান সরকার) করুক। এর মধ্যে বিচারব্যবস্থা, প্রশাসন ও নির্বাচনব্যবস্থার রিফর্ম ভালোভাবে হওয়া দরকার। আর আর্থিক ব্যবস্থায় জবাবদিহি আনা দরকার। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী এ সরকারের প্রতি মানুষের যে অসম্ভব রকমের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, দুই মাসে হয়তো সেই অর্থে প্রতিফলন দেখা যায়নি। কিন্তু আমরা আশা রাখতে চাই, আগামী দিনগুলোয় এ প্রতিফলন দেখা যাবে। কারণ, অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন নিয়েই তো আমরা এ সরকারেক সমর্থন দিয়েছি। রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে সরকারকে কীভাবে গতিশীল করা যায়, শক্তিশালী করা যায়, সেই লক্ষ্যেই তারা কাজ করবে এবং জন-আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দিয়েই রাষ্ট্র সংস্কারের পথে এগিয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে একটু সময় লাগবে। আমরাও সেই সময় দিতে চাই। এখনই অস্থির হতে চাই না। সরকার যেভাবে তাদের পরিকল্পনার কথা বলছে, সেটি যদি বাস্তবায়ন করা যায় এবং যদি কাঠামোগত পরিবর্তন এনে সরকারকে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করা যায়, তাহলে হয়তো যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমরা গণ-অভ্যুত্থান ঘটিয়েছি, তা বাস্তবায়ন সম্ভব বলেও মনে করি।