নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে হার্ভার্ডের ৯২% মুসলিম শিক্ষার্থী – ইউ এস বাংলা নিউজ




নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে হার্ভার্ডের ৯২% মুসলিম শিক্ষার্থী

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ | ১০:০৪ 7 ভিউ
ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে ইসলাম ও ইহুদিবিদ্বেষ। সম্প্রতি হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষের গঠিত দুটি টাস্কফোর্সের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন তথ্য। গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাস যখন বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে, তখনই ওই টাস্কফোর্স দুটি গঠন করা হয়। মঙ্গলবার হার্ভার্ড ক্যাম্পাসে ইসলাম ও ইহুদিবিদ্বেষের চিত্র তুলে ধরে আলাদা দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তারা। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজনের গভীরতা এবং ছাত্র–শিক্ষকরা কী ধরনের বৈষম্য ও বৈরীতার মুখোমুখি হচ্ছেন, তা উঠে এসেছে এই প্রতিবেদনে। এদিকে প্রতিবেদন দুটি এমন এক সময়ে প্রকাশ করা হলো, যখন ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আইনি লড়াই চলছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের। গাজা

যুদ্ধ ও এ নিয়ে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্য নির্ধারিত ২০০ কোটির ডলারেরও বেশি তহবিল স্থগিত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। তাদের দাবি, ক্যাম্পাসে চলমান ব্যাপক ইহুদি বিদ্বেষের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতাই এমন সিদ্ধান্তের কারণ। প্রতিবেদনের ফলাফল ঘোষণা করে হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন গারবার এক বিবৃতিতে জানান, যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে ইহুদি, ইসরাইলি ও জায়নবাদী গোষ্ঠীর সদস্যরা পরিচয় লুকিয়ে চলতে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যদিকে মুসলিম, আরব ও ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাদের ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে এবং কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। গারবার বলেন, ‘সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো—শিক্ষার্থীদের মধ্যে পারস্পরিক সহানুভূতির বদলে একে অন্যকে অবজ্ঞা করার প্রবণতা বেড়েছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একে অপরকে

তীব্রভাবে কটাক্ষ করছেন এবং একঘরে করে দিচ্ছেন। অনেকে অভিযোগ করেছেন, তাদের পরিচয় এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে সহপাঠীরা তাদের ক্যাম্পাসজীবনের মূল স্রোত থেকে সরে যেতে বাধ্য করছে।’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯২ শতাংশ মুসলিম শিক্ষার্থীই আশঙ্কা করেন, গাজা ইস্যুতে নিজেদের রাজনৈতিক মত প্রকাশ করলে অ্যাকাডেমিক এবং পেশার ক্ষেত্রে শাস্তি পেতে হতে পারে। এছাড়া মোট শিক্ষার্থীর অর্ধেকই মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাদের ওপর যেকোনো সময় হামলা হতে পারে। নাম প্রকাশ না করে এক শিক্ষার্থীর উদ্ধৃতি তুলে ধরা হয়েছে টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে। ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘একজন মুসলিম শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা প্রতিনিয়ত আতঙ্কের মধ্যে আছি।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘কয়েক মাস ধরে ক্যাম্পাসে কিছু ট্রাক ঘুরে বেড়াচ্ছে। ওই

ট্রাকগুলোতে আমার বেশ কয়েকজন মুসলিম সহপাঠীর ছবি দেখানো হচ্ছে, যারা শুধু ধর্মীয় সংগঠনের নেতৃত্বে থাকার কারণে চাকরিচ্যুত হয়েছেন বা চাকরির সুযোগ হারিয়েছেন। যদি ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষী বার্তা লেখা ট্রাক ঘুরে বেড়াত বা আকাশে ইহুদিবিদ্বেষী স্লোগান লেখা বিমান ওড়ানো হতো, আমি বিশ্বাস করি, হার্ভার্ড তখন আরও কঠোর ব্যবস্থা নিত।’ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনে সরাসরি সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীরা তো বটেই, যেসব মুসলিম শিক্ষার্থী অতটা সরব নন, তারাও হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। হিজাব পরেন এমন শিক্ষার্থীদেরও মৌখিক হেনস্তার শিকার হতে হয়। তাদেরকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে ডাকা হয়। প্রতিবেদনে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে ‘ডক্সিং’ (ব্যক্তিগত তথ্য অনলাইনে ফাঁস করে দেওয়া)। শুধু শারীরিক নিরাপত্তা ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যই নয়, বরং

শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের জন্যও ডক্সিং হুমকিস্বরূপ। গাজাযুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইহুদি ও মুসলিম শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা বেশ বেড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এদিকে ইহুদিবিদ্বেষ ও ইসরাইলবিরোধী পক্ষপাত মোকাবিলায় গঠিত ওই টাস্কফোর্স তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শুধু হার্ভার্ড নয়, সামগ্রিকভাবে অ্যাকাডেমিক জগতে ইহুদিবিদ্বেষ বেড়েছে। টাস্কফোর্সের অনলাইন জরিপে অংশ নেওয়া ইহুদি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৬ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ৩৯ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসটি যে নিজের সেটি তিনি অনুভব করতে পারছেন না। প্রায় ৬০ শতাংশ ইহুদি শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তাদের মতামতের কারণে তারা বৈষম্য, তকমা দেওয়া (স্টেরিওটাইপ) এবং নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির শিকার হয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী টাস্কফোর্সকে

বলেছেন, ‘ইসরাইলিরা প্রথম দিন থেকেই ক্যাম্পাসে বৈষম্যমূলক আচরণে অভ্যস্ত হয়ে যায়। কেউ কথা–ই বলতে চায় না। কেউ কেউ সৌজন্য দেখানোর ভান করে। কিন্তু যখন জানতে পারে যে আমি ইহুদি, তখন তারা আমাকে এড়িয়ে চলে।’ বিপরীতে মাত্র ২৫ শতাংশ ইহুদি শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, নিজেদের মত প্রকাশ করার ফলে অ্যাকাডেমিক বা পেশাগত কোনো ক্ষতির শিকার হতে হয়নি। উভয় টাস্কফোর্স পক্ষপাত দূরীকরণে একাধিক সুপারিশ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ডক্সিং মোকাবিলায় কার্যকর আইনগত সহায়তা সম্প্রসারিত করা এবং উন্মুক্ত বিতর্ক ও ভর্তি প্রক্রিয়ায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের গুরুত্ব দেওয়া। হার্ভার্ড প্রেসিডেন্ট অ্যালেন গারবার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ধরনের সংকট মোকাবিলায় তৎপরতা কয়েকগুণ বাড়াবে। সূত্র: রয়টার্স

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ, ছাত্রদল নেতা আটক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার ১ ‘আমার ছেলের বউ টিকটক করে, সে সব জানে’ আগামী নির্বাচনে জোট গঠন নিয়ে যা বললেন নাহিদ ইসলাম মূল্যস্ফীতির চাপে শ্রমজীবী মানুষ কষ্টে জীবনযাপন করছেন: তারেক রহমান প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ, প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ মিরাজ ভয়াবহ দাবানলে জ্বলছে ইসরাইল নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে হার্ভার্ডের ৯২% মুসলিম শিক্ষার্থী সাকিবের রেকর্ডে ভাগ বসালেন মিরাজ চিত্রনায়ক রুবেলের মৃত্যুর গুজব, যা বললেন ভাই সোহেল রানা পিয়াল হত্যা মামলায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড গরমে বরফের ৫ ব্যবহার, ক্ষতিগ্রস্ত ত্বক হতে পারে দাগহীন ও মসৃণ ঐশ্বরিয়া-আনুশকার নায়কের সিনেমা নিষিদ্ধ হচ্ছে পাকিস্তানে পাকিস্তানের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে বাঁচল ভারতের ৪ যুদ্ধবিমান টানা ৫ দিন বৃষ্টি হতে পারে যেসব অঞ্চলে অভিনেতা সিদ্দিকের ৭ দিনের রিমান্ড রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় দাসের জামিন জিম্বাবুয়েকে বিপাকে ফেলে চা বিরতিতে বাংলাদেশ রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি গিয়াস কাদের চৌধুরী ও গোলাম আকবর খোন্দকারকে শোকজ বিএনপির