নিজেকে ‘ফার্স্টলেডি’ ভাবতেন শিল্পী – ইউ এস বাংলা নিউজ




নিজেকে ‘ফার্স্টলেডি’ ভাবতেন শিল্পী

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৮ মার্চ, ২০২৫ | ৪:৪১ 45 ভিউ
বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু বেশিদিন এমপি থাকার ভাগ্য না হলেও পদ বাণিজ্যসহ দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি শতাধিক কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ত্যাগীদের বঞ্চিত করে টাকার বিনিময়ে অযোগ্য ও হাইব্রিডদের দায়িত্বশীল পদে বসিয়েছেন। তৃতীয় স্ত্রী শিল্পী বেগমও স্বামীকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে বদলি, নিয়োগসহ বিভিন্ন তদবির করে কোটিপতি হয়েছেন। আন্দোলনের আগে মজনু ওমরা হজে গিয়ে সৌদি আরবে রয়েছেন। তবে তার স্ত্রী ও সন্তানদের কোনো হদিস নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সময় দেউলিয়া হলেও ২০০৯ সালের পর মজিবর রহমান মজনুর ভাগ্য খুলে যায়। বগুড়া সদর ও শেরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে নামে-বেনামে এবং পরিবারের সদস্যদের নামে তিনি বিপুল সম্পতি গড়েন। দীর্ঘদিন

বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে ২০১৯ সালের ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সম্মেলনে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। শেরপুর পৌরসভায় চারবার চেয়ারম্যান ও দুবার উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকারী মজনু সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনে এমপি নির্বাচিত হন। মজনুর পাশাপাশি তার তৃতীয় স্ত্রী জেলা মহিলা লীগের সহ-সভাপতি শিল্পী বেগমও নিজেকে বগুড়ার ‘ফার্স্টলেডি’ ভাবতে শুরু করেন। দলীয় যে কোনো অনুষ্ঠানে তিনি সিনিয়রদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে স্বামীর পাশে দাঁড়াতেন। স্বামীর সমানতালে তিনিও তদবির, নিয়োগ, বদলিসহ বিভিন্নভাবে টাকা আয় করেন। এ দম্পতির কারণে অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠন ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নাম

প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক নেতাকর্মী অভিযোগ করেন, মজিবর রহমান মজনু কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেনের প্রশ্রয়ে গত কয়েক বছরে পদ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন খাতে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। শুধু টাকার বিনিময়ে অযোগ্য ও হাইব্রিডদের নেতা বানিয়ে তিনি আঙুল ফুলে কলাগাছ হলেও দলের বেহাল অবস্থা করেছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপুর সঙ্গে মতবিরোধের কারণে দীর্ঘদিন বগুড়া সদর, বগুড়া শহর, গাবতলী, ধুনট, সোনাতলাসহ বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড কমিটি পাশ হয়নি। নেতারা আরও বলেন, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতির ইতিহাসে মজনু-রিপু কমিটি ছিল সর্বনিম্ন পর্যায়ে। টাকা ছাড়া তারা কোনো কিছু বোঝেননি। এরা শুধু থ্রি ডব্লিউতে (ওয়েলথ, ওয়াইন

ও উইমেন) বিশ্বাসী ছিলেন। তাই এদের কাছে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের কোনো মূল্য ছিল না। ২০২১ সালে শেরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব আম্বিয়া পৌর নির্বাচনে মজিবর রহমান মজনুর ছেলের বিরুদ্ধে দলীয় মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেন। এ কারণে অডিও কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। আহসান হাবিব আম্বিয়া বলেন, দলীয় কোন্দলের কারণে তার ৫৩ মিনিটের অডিও বক্তব্য এডিট করে ছেড়ে তাকে ফাঁসানো হয়। বগুড়ার শেরপুর টাউন ক্লাব পাবলিক লাইব্রেরি মহিলা কলেজের সভাপতি হওয়ার কারণে ওই কলেজকে দলীয় কার্যালয় হিসাবে ব্যবহার করেন মজনু। তার দুর্নীতি-অনিয়ম নিয়ে কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ ঘটনার পর

অধ্যক্ষকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু পরে নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মজনুর সভাপতির পদ বাতিল হয়। কিন্তু তিন মাস পর ক্ষমতার জোরে তিনি আবার স্বপদে ফিরে আসেন। সাবেক অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম দাবি করেন, মজনু বিভিন্ন খাতে কলেজ থেকে অন্তত ১০ কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন। ধুনট উপজেলার বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, মজনু এমপি হওয়ার পর স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বিভিন্ন টেন্ডার ও বালুমহালে থাবা বসাতে শুরু করেন। কাবিখা, কাবিটা, টিআরসহ বিভিন্ন প্রকল্পে লুটপাট করেন। তার লুটপাট থেকে ঈদগাহ্সহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বাদ যায়নি। টিআর-কাবিখার টাকা দিয়ে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য সুলতান মাহমুদ বলেন, তিনি

প্রকল্পের সভাপতি হলেও তাকে না জানিয়ে নিম্নমানের ইট দিয়ে রাস্তার কাজ করা হয়। এ ব্যাপারে প্রশ্ন তুললে তাকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। এভাবে প্রতিটি প্রকল্পের সভাপতিকে দিয়ে জোড় করে স্বাক্ষর নিয়ে বিল পাস করিয়ে নিয়েছেন মজনু ও তার লোকজন। দলে পদ বাণিজ্য প্রসঙ্গে জানা যায়, শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ সাবেক বিএনপি কর্মী সাইফুল ইসলামের কাছে বিক্রি করা হয়। সম্মেলনের সময় মজনু নিজে মঞ্চে ঘোষণা দিয়ে পদ দেন সাইফুলকে। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলেও তার ভয়ে কেউ মুখ খোলেননি। এছাড়া বগুড়ার ১০৮টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে টাকার বিনিময়ে দলের ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতাকর্মীদের বঞ্চিত করে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ও হাইব্রিডদের মনোনয়ন দেওয়া

হয়েছে। মজিবর রহমান মজনু উপজেলার কতিপয় দুর্নীতিবাজ নেতাকর্মীর সহযোগিতায় উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের নামে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করেন। মজনুর বিরুদ্ধে হত্যা, নাশকতা, বিস্ফোরক, অগ্নিসংযোগ, বিএনপি অফিসে হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ২০টি মামলা হয়েছে। ঢাকায় তার ছেলের বাড়িতে আত্মগোপনে আছেন এমন খবরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা অভিযান চালায়। পরে যৌথ বাহিনী সেখানে গিয়ে মজনু ও তার পরিবারের কাউকে পায়নি। মজনু দেশের বাইরে থাকায় অভিযোগগুলোর ব্যাপারে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা শুধু মজিবর রহমান মজনু নয়, বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সঙ্গে যুক্ত থেকে দুর্নীতিতে জড়িত চিহ্নিত নেতাদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
মুক্তিযুদ্ধে ১২৫৬ হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামাত নেতা মুক্ত, আদালতে নীরব ছিল ইউনুস সরকার যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী জামালপুরবাসীর কল্যাণে অগ্রবর্তী অংশে থেকে কাজ করবো: নিম্মি লালমনিরহাট বিমানবন্দর চালুর পরিকল্পনায় শঙ্কিত ভারত ঈদুল আজহার তারিখ ঘোষণা করল বৃহৎ মুসলিম দেশ কারওয়ান বাজারে লিফট ছিঁড়ে আহত ৯ আজহারের ফাঁসির রায়ের জন্য দুঃখ প্রকাশ আপিল বিভাগের বেলুচিস্তানে স্ত্রী-সন্তানের সামনে সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা সাবেক এমপি ওমর ফারুকের প্লাজায় আগুন, দুই ঘণ্টায় নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের ইতিহাসে মাথাপিছু আয় এবার সর্বোচ্চ হাল ছেড়ে দেন ডাক্তার, স্বামীর সেবায় ক্যানসার জয় স্ত্রীর মিয়ানমারে সহিংসতা বন্ধের আহবান আসিয়ানের পাকিস্তানের দলকে ধন্যবাদ দিয়ে যা বললেন সাকিব যুক্তরাষ্ট্রে দুর্বৃত্তদের গুলিতে সিলেটের যুবক নিহত সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলন স্থগিত শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও মোল্যা মাসুদ গ্রেপ্তার ঈদুল আজহা কবে জানা যাবে বুধবার মিরপুরে প্রকাশ্যে গুলি, ব্যবসায়ীর ২২ লাখ টাকা ছিনতাই সীমান্তে ড্রোন উড়াচ্ছে বিএসএফ স্টারলিংককে ‘এক্সট্রা খাতির’ এসি-ফ্রিজের ভ্যাট বেড়ে হতে পারে দ্বিগুণ