ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে নেতানিয়াহুর করমর্দনের ছবিটি নিয়ে যা জানা গেল – ইউ এস বাংলা নিউজ




ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে নেতানিয়াহুর করমর্দনের ছবিটি নিয়ে যা জানা গেল

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৭ এপ্রিল, ২০২৫ | ৮:২০ 13 ভিউ
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে ইসরাইল। হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর ঘটনা সে অঞ্চলে দৈনন্দিন এক ব্যাপার হয়ে উঠেছে তখন থেকেই। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এ ভয়াবহতা আরও বৃদ্ধির খবর আসছে। এরই প্রেক্ষিতে কিছু সুস্পষ্ট দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে যেগুলো আগেই মীমাংসিত হয়ে ফ্যাক্টচেক করা হয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জড়িয়ে প্রচার হওয়া এসব ভুয়া দাবি চলমান সংঘাতের মধ্যে ব্যাপকভাবে নেটিজেনরা প্রচার করছেন বলে লক্ষ্য করেছে রিউমর স্ক্যানার। ২০২৩ সালের অক্টোবরে যখন ফিলিস্তিনিদের মধ্যে হামলার ভয়াবহতা শুরু হয় সে সময়ই বাংলাদেশে প্রচার হতে শুরু করে, ইসরাইলকে ১০০ কোটি

টাকা সহায়তা দিয়েছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিষয়টি নিয়ে সে সময়ই বিস্তারিত অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার। অনুসন্ধানে জানা যায়, অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ইনসাইডারের (বর্তমানে বন্ধ) সে বছরের ১৩ অক্টোবরের একটি প্রতিবেদন থেকে আলোচিত দাবিটি ছড়িয়ে পড়ে। উক্ত প্রতিবেদনে দাবিটির পক্ষে ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বিবৃতির বিষয়ে বলা হলেও উক্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃক সে সময়ে প্রকাশিত কোনো বিবৃতিতে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ওই দাবি সম্বলিত কোনো বিবৃতি প্রকাশিত হয়নি বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করা হয়। তাছাড়া, ইসরাইলের সাংবাদিক এবং ফ্যাক্টচেকারও এমন কোনো সহায়তার বিষয়ে অবগত নন বলে রিউমর স্ক্যানারকে জানান। একই সঙ্গে, ইউনূস সেন্টারও বিষয়টি ভুয়া

বলে নিশ্চিত করেছে। ফ্যাক্টচেকটি পড়ুন এখানে। এ ফ্যাক্টচেক পরিবর্তে সময়েও নিয়মিত বিরতিতে এই গুজব প্রচার হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বরতা বৃদ্ধির ঘটনার প্রেক্ষিতেও তাকে জড়িয়ে এই ভুয়া দাবি ফের ভাইরাল হতে দেখা যাচ্ছে। ইসরাইল ইস্যুতে রীতিমতো সংঘবদ্ধ গুজবের শিকার হচ্ছেন ড. ইউনূস। সম্প্রতি, ‘ইসরাইল কে মনো সমর্থন দেওয়ায় ড. ইউনুস কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নেতানিয়াহু’ শীর্ষক শিরোনামে বেসরকারি ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম যমুনা টেলিভিশনের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে প্রচার হচ্ছে। যদিও ফটোকার্ডটিতে তারিখ লেখা রয়েছে ০৩ অক্টোবর, ২০২৪। মূলত, সে সময়ই এ দাবিটি ছড়ায়। রিউমর স্ক্যানার সে সময়ই বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক (পড়ুন) করে জানায়, যমুনা টিভি এমন কোনো সংবাদ বা

ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি এবং ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়ে নেতানিয়াহুও কোনো মন্তব্য করেননি। ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যমুনা টিভির ফেসবুক পেজে প্রচারিত একটি ফটোকার্ড নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। এই দাবিটি সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে ফেসবুক এবং এক্সে ফের প্রচার হতে দেখা যাচ্ছে। গণমাধ্যমের ফটোকার্ড সম্পাদনা করে এই ইস্যুতে পুরোনো আরেকটি ভুয়া দাবিও সম্প্রতি ফের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হচ্ছে। ২০২৩ সালের ০৫ অক্টোবর দুদক কার্যালয়ে নিজের বিরুদ্ধে চলা মামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেদিন ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের ফেসবুক পেজে তার বক্তব্য নিয়ে একটি ফটোকার্ড প্রকাশিত হয়। উক্ত ফটোকার্ডে থাকা ড. ইউনূসের বক্তব্য সম্পাদনা করে তিনি ‘ইজরাইল

তার আত্মরক্ষার অধিকার রাখে।’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার সে সময়ই বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানের পর ফ্যাক্টচেক করে জানায়, ড. ইউনূস এমন কোনো মন্তব্য করেননি। তবে, যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সে সময়ে এবং পূর্বে বিভিন্ন সময়ে হুবহু একই মন্তব্য করেছেন। এ দাবিটিও সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে আবারো প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। ফটোকার্ড ছাড়াও সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি ভুয়া ছবি দিয়েও গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এমনই একটি ছবিতে দেখা যায়, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ড. ইউনূসের সঙ্গে করমর্দন করছেন। অন্তত গত বছর থেকেই ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়ে আসছে। সম্প্রতি আবারো ছবিটি নিয়ে ফেসবুক ও এক্সে

আলোচনা দেখা যাচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে জেনেছে, ছবিটি সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে৷ মূল ছবিটি ২০২৩ সালের। ছবিতে নেতানিয়াহু ছিলেনই না। মূলত পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট মারসোলো রেবেলো ডি সুজার সঙ্গে ড. ইউনূসের করমর্দনের ছবি সম্পাদন করে ভুয়া ছবিটি তৈরি করে প্রচার হচ্ছে। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ড. ইউনূসের করমর্দনের দাবিতে সমজাতীয় আরেকটি ছবিও গেল বছরের অন্তত সেপ্টেম্বর থেকে প্রচার হয়ে আসছে। নভেম্বরে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানের পর রিউমর স্ক্যানার জানায়, গত বছরের ১১ মে ইতালীয় প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি সার্জিও ম্যাটারেলার সঙ্গে ড. ইউনূসের সাক্ষাতের সময়ে তোলা ছবি থেকে ড. ইউনূসের ছবিটি নেওয়া হয়। অন্যদিকে, ২০১৯ সালের মার্চে নেতানিয়াহু সামোয়ার প্রধানমন্ত্রী তুইলেপা আইওনো সাইলেলে

মালিলেগাওইয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তোলা ছবি থেকে ছবির পেছনের অংশটি নেওয়া হয়। অর্থাৎ, দুইটি আলাদা ছবিকে জোড়া দিয়ে এবং পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন উপাদান সম্পাদনার মাধ্যমে এ ছবিটি তৈরি করা হয়েছে। এ ছবিটিও বর্তমানে প্রেক্ষাপটে ফের আলোচনায় এসেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ফিলিস্তিন ইস্যুতে প্রচার হওয়া এসব ভুয়া দাবিগুলো শুধু যে পোস্টের মাধ্যমেই ছড়াচ্ছে এমন নয়। পোস্টের চেয়ে কমেন্টে ছবি আকারে এবং ইনবক্সে একজন থেকে আরেকজনে ছড়িয়ে যাচ্ছে উক্ত দাবির ছবিগুলো। ফ্যাক্টচেক হওয়ার পর ভুয়া এসব দাবি প্রচারকারী সকলের কাছে তা না পৌঁছানোর দরুণ এসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে থেকে যাচ্ছে। এভাবে পরবর্তীতে ভিন্ন কোনো প্রেক্ষাপটে আবার ছবিগুলো একই দাবিতে প্রচার হচ্ছে৷ তবে এসব ভুয়া ছবি প্রচারকারীদের বড় একটি অংশই বিষয়টি ভুয়া জেনেও অপতথ্য হিসেবে বছর বছর সেগুলো প্রচার করে আসছেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
ইসরাইলকে নাড়িয়ে দেওয়ার মতো সক্ষমতা আমাদের আছে: হামাস ৫ বাংলাদেশিসহ ৪ শতাধিক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করল যুক্তরাষ্ট্র ঢাকায় বিক্ষোভের ঘোষণা আজহারির, উপস্থিত থাকবেন নিজেই গাজাবাসীকে রক্ষায় দরকার বাংলাদেশি ক্যাপ্টেনের মতো সাহসী এয়ার স্ট্রাইকার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে নেতানিয়াহুর করমর্দনের ছবিটি নিয়ে যা জানা গেল সেই কনস্টেবল রাষ্ট্রপতি পদকে ভূষিত মার্চে রপ্তানি আয়ে সুখবর দিল ইপিবি ফিরেই নান্নুদের কাঠগড়ায় তুললেন নাসির আইসিসির গ্রেফতার এড়িয়ে যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছালেন নেতানিয়াহু এফএ কাপ জয়ের মুহূর্তে ফিলিস্তিনের পতাকা গায়ে জড়িয়েছিলেন হামজা ‘ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ’ স্লোগানে মুখর বায়তুল মোকাররম এলাকা ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তাহমিনা বরখাস্ত নির্বাচনি আচরণবিধির খসড়া তৈরি, প্রচারণায় পোস্টার থাকছে না: ইসি চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের মিছিল, পুলিশের বাধা আফগানিস্তানের উত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে আইপিএল গাজার জন্য ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির ডাক এলো কোথা থেকে? বজ্র ও শিলাবৃষ্টি নিয়ে নতুন তথ্য দিলেন আবহাওয়াবিদ পলাশ ১২ এপ্রিল ‘মার্চ ফর গাজায়’ অংশ নেওয়ার আহ্বান মাহমুদউল্লাহর ‘আমার গল্পটা মনে রেখো, আমি কেবল একটা সংখ্যা নই’ পহেলা বৈশাখে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জরুরি নির্দেশনা