ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
জাতীয় ব্যবসা সংলাপ উদ্যোক্তাদের উদ্বেগ আমলে লউন
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার রাজধানীর এক হোটেলে অনুষ্ঠিত জাতীয় ব্যবসা সংলাপে বিশেষত ব্যবসায়ীদের বক্তব্যে ব্যবসায় ও শিল্প খাত লইয়া যেই উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ পাইয়াছে, সেইগুলি উপেক্ষার কোনো সুযোগ নাই বলিয়া আমরা মনে করি। প্রথমত, শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশ (আইসিসিবি) এবং ১৫টি জাতীয় বাণিজ্য সংগঠন যৌথভাবে এই সংলাপের আয়োজন করে, যাহারা কার্যত দেশের সকল খাতের ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করে। তাই এই ধারণা অসংগত নহে, সংলাপে প্রদত্ত ব্যবসায়ীদের বক্তব্যে দেশের ব্যবসায় ও শিল্প খাতে বিরাজমান পরিস্থিতির সামগ্রিক চিত্রই উঠিয়া আসিয়াছে। দ্বিতীয়ত, দেশের সকল খাতের ব্যবসায়ী নেতাদের এইভাবে একযোগে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কথা বলিতে সাধারণত দেখা যায়
না। পরিস্থিতি বাধ্য করিয়াছে বলিয়াই তাহারা এহেন উদ্যোগ গ্রহণ করিয়াছেন। কে অস্বীকার করিতে পারে, শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলনের সময় বিশেষত রপ্তানিসহ শিল্প খাতে যেই অস্থিরতার সূচনা হয়, গণঅভ্যুত্থানের মুখে বিগত সরকারের পতনের পর নূতন সরকার গঠনের মধ্য দিয়া উহার অবসান প্রত্যাশিত থাকিলেও বাস্তবতা ভিন্ন? ইদানীং বরং নানা মহলের উস্কানিতে শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা বৃদ্ধি পাইয়াছে। প্রায় বিনা বাধায় দুষ্কৃতকারীরা ব্যবসায়িক স্থাপনা, শিল্পকারখানায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজ চালাইতেছে। ফলস্বরূপ একদিকে মালিকদের বিপুল অঙ্কের ক্ষতি পোহাইতে হইতেছে, এমনকি তাহারা প্রতিষ্ঠান চালু রাখার আর্থিক সক্ষমতা হারাইতেছেন, অন্যদিকে কয়েক সহস্র মানুষ ইতোমধ্যে বেকার হইয়াছেন এবং আরও বহু শ্রমিক অনুরূপ ভয়ংকর পরিণতির সম্মুখীন, যাহা সামাজিক তো বটেই নূতন করিয়া
রাজনৈতিক অস্থিরতারও জন্ম দিতে পারে। উল্লেখ্য, প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শিল্পে প্রায় ৭ কোটি জনবল কর্মরত। সংলাপে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে যথার্থই বলা হইয়াছে, আন্দোলনকালে শিক্ষার্থী-জনতাকে নির্যাতনের ঘটনাসমূহ যদ্রূপ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করিয়াছে, তদ্রূপ অভ্যুত্থান-পরবর্তী নানা ঘটনা সম্পর্কে বিদেশি মিডিয়া, বিশেষ করিয়া কয়েকটি প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ হইতে ছড়ানো অপতথ্যসমূহও বিদেশি বিনিয়োগকারী ও ক্রেতার মনে আস্থার সংকট সৃষ্টি করিয়াছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, ভারতসহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দেশ হইতে বাংলাদেশে ভ্রমণ সতর্কতা জারি আছে। এই সকল বিষয় বহির্বিশ্বে ব্র্যান্ড ও ক্রেতাদের নিকট বাংলাদেশের রপ্তানি শিল্প সম্পর্কে নেতিবাচক ভাবমূর্তি সৃষ্টি করিতেছে। ফলে আস্থার অভাবে ভবিষ্যৎ রপ্তানি কার্যাদেশ লইয়া শঙ্কা তৈরি হইতেছে। স্বীকার করিতে
হইবে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিহীনতার ব্যাপক অভিযোগ সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিগত সময়ে বিস্ময়কর প্রবৃদ্ধি ঘটিয়াছে। রপ্তানিকারকদের প্রাপ্ত ভর্তুকি ও কর সুবিধা লইয়া প্রশ্ন থাকিলেও, উক্ত সময়ে তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন খাতে নূতন নূতন বাজার সৃষ্টি হইয়াছে, কারখানার আধুনিকায়ন ঘটিয়াছে এবং এইগুলির সম্মিলিত প্রভাবে রপ্তানির পরিমাণ বহুগুণ বৃদ্ধি পাইয়াছে। মোদ্দা কথা, এমন কিছু করা যাইবে না, যাহা অর্থনীতির এই গতিকে পশ্চাৎমুখী করে। সন্দেহ নাই, উদ্যোক্তাদের কেহ কেহ বিগত সরকারের সহযোগী ছিলেন। কিন্তু তাহাদের গড়া প্রতিষ্ঠানসমূহ জাতীয় সম্পদ। বস্তুত কয়েক দশকে উদ্যোক্তা ও শ্রমিকের মিলিত তিল তিল সংগ্রামের ফসল হিসাবে গড়িয়া উঠা এই শিল্প খাতকে কিছু বিশেষ মহলের উদ্দেশ্য বা বিদ্বেষমূলক প্রচারণার শিকার
হইয়া আমরা ধ্বংস হইতে দিতে পারি না। তাই এই মুহূর্তে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণকে ‘এক নম্বর অগ্রাধিকার’ প্রদানের যে দাবি আলোচ্য সংলাপে উঠিয়াছে, উহা সময়োপযোগী তো বটেই, জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষার প্রশ্নেও গুরুত্বপূর্ণ। আশার বিষয়, সংলাপে প্রধান উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির আশ্বাস দিয়া শ্রমিক, শিল্প মালিক এবং সরকারকে এক হইয়া কাজ করার আহ্বান জানাইয়াছেন। আমাদের বিশ্বাস, এই লক্ষ্য অর্জন সহজ হইতে পারে যদি ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব অনুসারে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা যায়।
না। পরিস্থিতি বাধ্য করিয়াছে বলিয়াই তাহারা এহেন উদ্যোগ গ্রহণ করিয়াছেন। কে অস্বীকার করিতে পারে, শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলনের সময় বিশেষত রপ্তানিসহ শিল্প খাতে যেই অস্থিরতার সূচনা হয়, গণঅভ্যুত্থানের মুখে বিগত সরকারের পতনের পর নূতন সরকার গঠনের মধ্য দিয়া উহার অবসান প্রত্যাশিত থাকিলেও বাস্তবতা ভিন্ন? ইদানীং বরং নানা মহলের উস্কানিতে শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা বৃদ্ধি পাইয়াছে। প্রায় বিনা বাধায় দুষ্কৃতকারীরা ব্যবসায়িক স্থাপনা, শিল্পকারখানায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজ চালাইতেছে। ফলস্বরূপ একদিকে মালিকদের বিপুল অঙ্কের ক্ষতি পোহাইতে হইতেছে, এমনকি তাহারা প্রতিষ্ঠান চালু রাখার আর্থিক সক্ষমতা হারাইতেছেন, অন্যদিকে কয়েক সহস্র মানুষ ইতোমধ্যে বেকার হইয়াছেন এবং আরও বহু শ্রমিক অনুরূপ ভয়ংকর পরিণতির সম্মুখীন, যাহা সামাজিক তো বটেই নূতন করিয়া
রাজনৈতিক অস্থিরতারও জন্ম দিতে পারে। উল্লেখ্য, প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শিল্পে প্রায় ৭ কোটি জনবল কর্মরত। সংলাপে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে যথার্থই বলা হইয়াছে, আন্দোলনকালে শিক্ষার্থী-জনতাকে নির্যাতনের ঘটনাসমূহ যদ্রূপ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করিয়াছে, তদ্রূপ অভ্যুত্থান-পরবর্তী নানা ঘটনা সম্পর্কে বিদেশি মিডিয়া, বিশেষ করিয়া কয়েকটি প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ হইতে ছড়ানো অপতথ্যসমূহও বিদেশি বিনিয়োগকারী ও ক্রেতার মনে আস্থার সংকট সৃষ্টি করিয়াছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, ভারতসহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দেশ হইতে বাংলাদেশে ভ্রমণ সতর্কতা জারি আছে। এই সকল বিষয় বহির্বিশ্বে ব্র্যান্ড ও ক্রেতাদের নিকট বাংলাদেশের রপ্তানি শিল্প সম্পর্কে নেতিবাচক ভাবমূর্তি সৃষ্টি করিতেছে। ফলে আস্থার অভাবে ভবিষ্যৎ রপ্তানি কার্যাদেশ লইয়া শঙ্কা তৈরি হইতেছে। স্বীকার করিতে
হইবে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিহীনতার ব্যাপক অভিযোগ সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিগত সময়ে বিস্ময়কর প্রবৃদ্ধি ঘটিয়াছে। রপ্তানিকারকদের প্রাপ্ত ভর্তুকি ও কর সুবিধা লইয়া প্রশ্ন থাকিলেও, উক্ত সময়ে তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন খাতে নূতন নূতন বাজার সৃষ্টি হইয়াছে, কারখানার আধুনিকায়ন ঘটিয়াছে এবং এইগুলির সম্মিলিত প্রভাবে রপ্তানির পরিমাণ বহুগুণ বৃদ্ধি পাইয়াছে। মোদ্দা কথা, এমন কিছু করা যাইবে না, যাহা অর্থনীতির এই গতিকে পশ্চাৎমুখী করে। সন্দেহ নাই, উদ্যোক্তাদের কেহ কেহ বিগত সরকারের সহযোগী ছিলেন। কিন্তু তাহাদের গড়া প্রতিষ্ঠানসমূহ জাতীয় সম্পদ। বস্তুত কয়েক দশকে উদ্যোক্তা ও শ্রমিকের মিলিত তিল তিল সংগ্রামের ফসল হিসাবে গড়িয়া উঠা এই শিল্প খাতকে কিছু বিশেষ মহলের উদ্দেশ্য বা বিদ্বেষমূলক প্রচারণার শিকার
হইয়া আমরা ধ্বংস হইতে দিতে পারি না। তাই এই মুহূর্তে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণকে ‘এক নম্বর অগ্রাধিকার’ প্রদানের যে দাবি আলোচ্য সংলাপে উঠিয়াছে, উহা সময়োপযোগী তো বটেই, জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষার প্রশ্নেও গুরুত্বপূর্ণ। আশার বিষয়, সংলাপে প্রধান উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির আশ্বাস দিয়া শ্রমিক, শিল্প মালিক এবং সরকারকে এক হইয়া কাজ করার আহ্বান জানাইয়াছেন। আমাদের বিশ্বাস, এই লক্ষ্য অর্জন সহজ হইতে পারে যদি ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব অনুসারে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা যায়।