
ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর

চাঁদাবাজি করার সময় জনতার হাতে আটক বৈছার দুই কেন্দ্রীয় নেতা

ইউনূস শাসনে জাকার্তা মেথডে আওয়ামী লীগ নেতাদের হত্যাযজ্ঞ: স্বাধীনতাপরবর্তী বাংলাদেশে নয়া বিভীষিকা

চরম সংকটে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, আশার আলো দেখছেন না শিল্পোদ্যাক্তারা

গ্রেফতারের ৪৮ ঘণ্টা পরও আদালতে তোলা হয়নি মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ১৪ সেনা কর্মকর্তাকে

প্রধানমন্ত্রী মেলোনির সাক্ষাৎ না পেয়ে রোমের মেয়রের অফিসে হাজির ড. ইউনূস: ক্ষুণ্ন দেশের ভাবমূর্তি, সমালোচনা

গাড়ির হর্ন ব্যবহারে বিআরটিএ’র নির্দেশনা

ময়মনসিংহের ১১ পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল
জাতিসংঘের ঢাকা রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর গুইন লুইসের ইয়াঙ্গুন স্থানান্তর: বাংলাদেশে বিতর্কিত ভূমিকার পর নতুন দায়িত্ব

জাতিসংঘের ঢাকা রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর গুইন লুইস মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছেন, যা কূটনৈতিক মহলে একটি উল্লেখযোগ্য স্থানান্তর হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই পরিবর্তনটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ বাংলাদেশের ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পূর্ববর্তী মাসগুলোতে এবং পরবর্তী সময়ে তিনি একটি গোপন কিন্তু প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এই আন্দোলনটি শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটায় এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে মুহাম্মদ ইউনুসকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। গত ৭ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে লুইস যমুনা স্টেট গেস্ট হাউসে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন।
তিন বছরেরও বেশি সময় ঢাকায় দায়িত্ব পালনের পর লুইস অবশেষে বাংলাদেশ ত্যাগ করছেন। তাঁর নতুন
কর্মস্থল মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন, যেখানে তিনি মাইকেল ডানফোর্ডের স্থলাভিষিক্ত হবেন। ডানফোর্ড ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ২০২২ সালের ৮ মে লুইসকে বাংলাদেশে রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর হিসেবে নিয়োগ দেন। নিয়োগের সময় তাঁর অভিজ্ঞতার ঝুলিতে ছিল আন্তর্জাতিক উন্নয়ন, শান্তি স্থাপন এবং মানবিক কার্যক্রমে দুই দশকেরও বেশি অভিজ্ঞতা। ঢাকায় যোগদানের আগে লুইস পশ্চিম তীরে UNRWA (জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সহায়তা সংস্থা)-এর পরিচালক এবং লেবাননে UNRWA প্রোগ্রামের উপ-পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। এর আগে জেনেভায় ইউনিসেফের ইমার্জেন্সি ডিভিশনে গ্লোবাল ক্লাস্টার কো-অর্ডিনেশন সেকশন পরিচালনা করেন। তিনি FAO (জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা) থেকে ইউনিসেফে যোগ দেন, যেখানে মানবিক নীতি এবং দেশভিত্তিক সহায়তা তদারকি
করতেন। এই অভিজ্ঞতা তাঁকে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে কাজ করার দক্ষতা দিয়েছে, যেমন মধ্যপ্রাচ্যের সংকটময় এলাকায়। কিন্তু বাংলাদেশে দায়িত্বকালে, বিশেষ করে ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনের পূর্বে, লুইসের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গোপনীয় এবং কৌশলগত। কূটনৈতিক সূত্রগুলোর মতে, তিনি সক্রিয় ছিলেন যখন পশ্চিমা নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর (যেমন CIA-এর মতো অভিযোগকৃত সংস্থা) সহায়তায় শেখ হাসিনা সরকারের পতন ত্বরান্বিত হয়। এই আন্দোলনে অন্তত ১,০০০ জনেরও বেশি মৃত্যু হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, যদিও লুইস নিজে ৪১৩ জন নিহতের কথা বলেছেন—যা সরকারি হিসাব (প্রায় ৩০০) এবং স্বাধীন পর্যবেক্ষকদের (৫০০-১,০০০+) থেকে ভিন্ন। শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন ৫ আগস্ট ২০২৪-এ,
এবং আন্দোলনটি কোটা সংস্কার থেকে শুরু হয়ে সরকারবিরোধী বিদ্রোহে পরিণত হয়। লুইস এই পরিবর্তনকে “একটি বিপ্লব” বলে অভিহিত করেন এবং বলেন, জনগণ “নিজেদের জীবনের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করেছে”। এই মন্তব্য জাতিসংঘের নিরপেক্ষতা নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক, কারণ UN চার্টারের আর্টিকেল ১০০(১) অনুসারে, জাতিসংঘ কর্মকর্তারা কোনো সরকার বা বাহ্যিক কর্তৃপক্ষের নির্দেশ গ্রহণ করতে পারবেন না এবং নিরপেক্ষ থাকবেন। তাঁর এই বক্তব্য শেখ হাসিনার সরকারের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে এবং নতুন শাসনকে সমর্থন করে বলে সমালোচিত হয়েছে। জাতিসংঘের রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটরের প্রধান দায়িত্ব মানবিক ও উন্নয়ন সহায়তা সমন্বয় করা, রাজনৈতিক প্রভাবক না। ইয়াঙ্গুনে স্থানান্তরটি ঘটছে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে উত্তেজনার মধ্যে। সেখানে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আরমি (ARSA) এবং রোহিঙ্গা
সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (RSO)-এর মধ্যে সীমান্ত সংঘর্ষ চলছে। ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত, বাংলাদেশ সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা বেড়েছে, যেখানে ARSA-কে বাংলাদেশ থেকে অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে বলে মিয়ানমারের জান্তা সরকার দাবি করে। নিরাপত্তা সূত্রমতে, একটি নতুন গেরিলা গ্রুপ রাখাইনে সক্রিয়, যা এখনও শনাক্ত হয়নি। রোহিঙ্গা সংকটে ২০১৭ সাল থেকে ১০ লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, এবং ARSA-কে আইএসআইএস-অনুপ্রাণিত জঙ্গি গ্রুপ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঢাকা ছাড়ার আগে, ১৩ অক্টোবর ২০২৪-এ জাতিসংঘের ৭৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী (বা ৮০তম বার্ষিকী উদযাপনের প্রাক্কালে) অনুষ্ঠানে লুইস বলেন, “জাতিসংঘের কান্ট্রি টিম দশক ধরে বাংলাদেশের পাশে ছিল—সাম্প্রতিক রূপান্তরেও আমরা গর্বিত।” অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, যাঁকে রোহিঙ্গা
বিষয়ে এবং ARSA/RSO-এর সীমান্ত অভিযানে গোপন সম্পৃক্ততার অভিযোগে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের একই মঞ্চে উপস্থিতি ঢাকা-ইয়াঙ্গুনের ভূ-রাজনৈতিক সমন্বয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে, বিশেষ করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এবং সীমান্ত নিরাপত্তা ইস্যুতে। এই স্থানান্তরটি লুইসের অভিজ্ঞতাকে মিয়ানমারের জটিল সংকটে (২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে চলমান গৃহযুদ্ধ) কাজে লাগাতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশে তাঁর ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত রাখবে। জাতিসংঘের নিরপেক্ষতা এবং পশ্চিমা প্রভাবের প্রশ্ন এখনও উন্মোচিত।
কর্মস্থল মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন, যেখানে তিনি মাইকেল ডানফোর্ডের স্থলাভিষিক্ত হবেন। ডানফোর্ড ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ২০২২ সালের ৮ মে লুইসকে বাংলাদেশে রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর হিসেবে নিয়োগ দেন। নিয়োগের সময় তাঁর অভিজ্ঞতার ঝুলিতে ছিল আন্তর্জাতিক উন্নয়ন, শান্তি স্থাপন এবং মানবিক কার্যক্রমে দুই দশকেরও বেশি অভিজ্ঞতা। ঢাকায় যোগদানের আগে লুইস পশ্চিম তীরে UNRWA (জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সহায়তা সংস্থা)-এর পরিচালক এবং লেবাননে UNRWA প্রোগ্রামের উপ-পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। এর আগে জেনেভায় ইউনিসেফের ইমার্জেন্সি ডিভিশনে গ্লোবাল ক্লাস্টার কো-অর্ডিনেশন সেকশন পরিচালনা করেন। তিনি FAO (জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা) থেকে ইউনিসেফে যোগ দেন, যেখানে মানবিক নীতি এবং দেশভিত্তিক সহায়তা তদারকি
করতেন। এই অভিজ্ঞতা তাঁকে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে কাজ করার দক্ষতা দিয়েছে, যেমন মধ্যপ্রাচ্যের সংকটময় এলাকায়। কিন্তু বাংলাদেশে দায়িত্বকালে, বিশেষ করে ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনের পূর্বে, লুইসের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গোপনীয় এবং কৌশলগত। কূটনৈতিক সূত্রগুলোর মতে, তিনি সক্রিয় ছিলেন যখন পশ্চিমা নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর (যেমন CIA-এর মতো অভিযোগকৃত সংস্থা) সহায়তায় শেখ হাসিনা সরকারের পতন ত্বরান্বিত হয়। এই আন্দোলনে অন্তত ১,০০০ জনেরও বেশি মৃত্যু হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, যদিও লুইস নিজে ৪১৩ জন নিহতের কথা বলেছেন—যা সরকারি হিসাব (প্রায় ৩০০) এবং স্বাধীন পর্যবেক্ষকদের (৫০০-১,০০০+) থেকে ভিন্ন। শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন ৫ আগস্ট ২০২৪-এ,
এবং আন্দোলনটি কোটা সংস্কার থেকে শুরু হয়ে সরকারবিরোধী বিদ্রোহে পরিণত হয়। লুইস এই পরিবর্তনকে “একটি বিপ্লব” বলে অভিহিত করেন এবং বলেন, জনগণ “নিজেদের জীবনের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করেছে”। এই মন্তব্য জাতিসংঘের নিরপেক্ষতা নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক, কারণ UN চার্টারের আর্টিকেল ১০০(১) অনুসারে, জাতিসংঘ কর্মকর্তারা কোনো সরকার বা বাহ্যিক কর্তৃপক্ষের নির্দেশ গ্রহণ করতে পারবেন না এবং নিরপেক্ষ থাকবেন। তাঁর এই বক্তব্য শেখ হাসিনার সরকারের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে এবং নতুন শাসনকে সমর্থন করে বলে সমালোচিত হয়েছে। জাতিসংঘের রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটরের প্রধান দায়িত্ব মানবিক ও উন্নয়ন সহায়তা সমন্বয় করা, রাজনৈতিক প্রভাবক না। ইয়াঙ্গুনে স্থানান্তরটি ঘটছে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে উত্তেজনার মধ্যে। সেখানে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আরমি (ARSA) এবং রোহিঙ্গা
সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (RSO)-এর মধ্যে সীমান্ত সংঘর্ষ চলছে। ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত, বাংলাদেশ সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা বেড়েছে, যেখানে ARSA-কে বাংলাদেশ থেকে অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে বলে মিয়ানমারের জান্তা সরকার দাবি করে। নিরাপত্তা সূত্রমতে, একটি নতুন গেরিলা গ্রুপ রাখাইনে সক্রিয়, যা এখনও শনাক্ত হয়নি। রোহিঙ্গা সংকটে ২০১৭ সাল থেকে ১০ লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, এবং ARSA-কে আইএসআইএস-অনুপ্রাণিত জঙ্গি গ্রুপ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঢাকা ছাড়ার আগে, ১৩ অক্টোবর ২০২৪-এ জাতিসংঘের ৭৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী (বা ৮০তম বার্ষিকী উদযাপনের প্রাক্কালে) অনুষ্ঠানে লুইস বলেন, “জাতিসংঘের কান্ট্রি টিম দশক ধরে বাংলাদেশের পাশে ছিল—সাম্প্রতিক রূপান্তরেও আমরা গর্বিত।” অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, যাঁকে রোহিঙ্গা
বিষয়ে এবং ARSA/RSO-এর সীমান্ত অভিযানে গোপন সম্পৃক্ততার অভিযোগে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের একই মঞ্চে উপস্থিতি ঢাকা-ইয়াঙ্গুনের ভূ-রাজনৈতিক সমন্বয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে, বিশেষ করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এবং সীমান্ত নিরাপত্তা ইস্যুতে। এই স্থানান্তরটি লুইসের অভিজ্ঞতাকে মিয়ানমারের জটিল সংকটে (২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে চলমান গৃহযুদ্ধ) কাজে লাগাতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশে তাঁর ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত রাখবে। জাতিসংঘের নিরপেক্ষতা এবং পশ্চিমা প্রভাবের প্রশ্ন এখনও উন্মোচিত।