এবার দুদকের মামলায় খালাস গোল্ডেন মনির – ইউ এস বাংলা নিউজ




এবার দুদকের মামলায় খালাস গোল্ডেন মনির

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৯ জুন, ২০২৫ | ৬:৪৮ 12 ভিউ
এবার দুদকের মামলায় খালাস পেলেন মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনির। এ নিয়ে তিনটি মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। এর আগে গত বছর অস্ত্র আইন এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় খালাস পেয়েছিলেন তিনি। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। সম্প্রতি খালাস পাওয়া দুদকের মামলার রায়ে আদালত বলেছেন, মনির হোসেন ১ কোটি ৪৩ লাখ ২৫ হাজার ৩৩৫ টাকার যে আয়কর দিয়েছেন, তা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গ্রহণ করেছে। এটি আসামির বৈধ আয়; এই আয়ের বিষয়ে দুদক কর্তৃপক্ষের কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ নেই। গত ৩ মার্চ ঢাকার সপ্তম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক প্রদীপ কুমার রায় দুদকের করা মামলায় এ রায় দেন। আদালত রায়ে আরও বলেছেন, আসামির

এসব সম্পদ তার বৈধ উপায়ে অর্জিত আয় এবং তার জ্ঞাতআয়বহির্ভূত সম্পদ নয়। আসামি মো. মনির হোসেন অসাধুভাবে জ্ঞাতআয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ তিন কোটি ১০ লাখ ৮৫ হাজার ৩৩৫ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন ও দখলে যে রেখেছেন, তা প্রসিকিউশন পক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি। রায়ে আদালত বলেছেন, আসামির বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪’ এর ২৭(১) ধারায় অভিযোগ গঠন করা সঠিক হয়নি। আসামির বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারার অপরাধের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম না হওয়ায় তাকে অপরাধের অভিযোগ থেকে খালাস প্রদান করা হলো।’ অবৈধ সম্পদ অর্জনের এই মামলাটি ২০১২ সালের ১৩ মার্চ রাজধানীর রমনা মডেল

থানায় দায়ের করে দুদক। এ মামলায় তার বিরুদ্ধে তিন কোটি ১০ লাখ ৮৫ হাজার ৩৩৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন করে দুদক। ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। মামলার বিচার চলাকালীন ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। পরে বিচার প্রক্রিয়া শেষে ১৩ মার্চ এ মামলায় রায়ে মনির হোসেনকে খালাস দেন আদালত। এ তিন মামলা ছাড়া মনিরের বিরুদ্ধে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দায়ের করা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের একটি মামলা রয়েছে। তা এখনো তদন্তাধীন। এর আগে ২০২০ সালের ২০ নভেম্বর রাজধানীর মেরুল বাড্ডার বাসায় অভিযান চালিয়ে মনিরকে গ্রেফতার

করেছিল র‌্যাব। এ সময় একটি বিদেশি পিস্তল, চার লিটার বিদেশি মদ, ৩২টি নকল সিল, ৮ লাখ টাকার বেশি মূল্যমানের বৈদেশিক মুদ্রা, ৬০০ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১ কোটি ৯ লাখ টাকা জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় অস্ত্র আইনসহ বাড্ডা থানায় পৃথক তিনটি মামলা করেছিল র‌্যাব। পরে গত বছর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রায় ৩ বছর জেল খেটে জামিনে মুক্ত হন। ওই বছরই অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় খালাস পান তিনি। রায়ে দুই মামলার অভিযোগ প্রমাণে রাষ্ট্রপক্ষ চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) দায়ের করা অস্ত্র আইনের মামলায় গোল্ডেন মনিরকে খালাস দেন

ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের তৎকালীন বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। রায়ে উল্লেখ করা হয়, মনির হোসেনের বাড্ডার বাসার শয়নকক্ষে খাটের তোশকের নিচ থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া একই বছরের ৫ মে ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তেহসিন ইফতেখার সোনা ও টাকা উদ্ধারের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায়ও তাকে খালাসের রায় দেন। রায়ে বলা হয়, বাড্ডায় মনিরের বাসা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে র‌্যাবের জব্দ করা ১ কোটি ৯ লাখ টাকা, আট কেজি সোনা ও বৈদেশিক মুদ্রা বৈধ উপার্জনের মাধ্যমে অর্জিত। রাষ্ট্রপক্ষ মনিরের বিরুদ্ধে আনা বিশেষ ক্ষমতা আইনের অভিযোগ প্রমাণে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছে। সর্বশেষ দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনের

মামলায় তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। গোল্ডেন মনিরের আইনজীবী দবির উদ্দিন বলেন, প্রতিপক্ষের উসকানি, ষড়যন্ত্রের কারণে এসব মামলা করা হয়েছিল। কিন্তু মামলাগুলো ট্রায়ালে এলে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। সেক্ষেত্রে তিনি খালাস পেয়েছেন। অথচ নির্দোষ হয়েও তিনি জেল খেটেছেন। এতে তার মানহানি হয়েছে, হয়রানির শিকার হয়েছেন। সব মামলার কাগজপত্র তুলছি। বিনা অপরাধে জেলে থাকা, মানহানি ও হয়রানির ক্ষতিপূরণ চেয়ে উচ্চ আদালতে যাব। এ বিষয়ে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর রেজাউল করিম রেজা বলেন, আমরা আদালতে উপস্থাপন করেছি, আসামি নিজের আয়করে উল্লেখ করেন তিনি স্ত্রী, মায়ের কাছে থেকে ঋণ নিয়েছেন। তবে তদন্তে ওই সব তথ্যের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। আদালত আসামিকে খালাস দিয়েছেন। আমরা এ রায়ে

সন্তুষ্ট নই। রায়ের সার্টিফাইড কপি হাতে পেলে আমরা আপিলের মতামত দিয়ে কমিশনকে অবগত করব। যেভাবে গোল্ডেন মনিরের উত্থান : নব্বইয়ের দশকে গাউছিয়া মার্কেটে কাপড়ের দোকানের বিক্রয়কর্মী ছিলেন মনির। পরে মৌচাক মার্কেটের ক্রোকারিজের দোকানে চাকরি নেন। এরপর তিনি বিমানবন্দরকেন্দ্রিক লাগেজ পার্টি ও সোনা চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েন। পরিচিতি পান ‘গোল্ডেন মনির’ নামে। বিক্রয়কর্মী থেকে লাগেজ পার্টিতে যোগ দেওয়ার পর মনির শুরুতে কর ফাঁকি দিয়ে কাপড়, প্রসাধনী, ইলেকট্রনিক পণ্য, কম্পিউটারসামগ্রীসহ বিভিন্ন মালামাল আনা-নেওয়া করতেন। একপর্যায়ে আকাশপথে সোনা চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েন। ২০২০ সালের ২২ নভেম্বর মনিরকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাবের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছিল। এছাড়া তদন্তাধীন মানি লন্ডারিং মামলার কাগজপত্রের তথ্য বলছে, গোল্ডেন মনির ও তার স্বার্থসংশিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ১২৯টি ব্যাংক হিসাবে ৭৯১ কোটি ৫ লাখ ৯৬ হাজার ৫২৩ টাকা জমা করা হয়। মনির এ আয়ের একটি অংশ সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সদস্যদের যোগসাজশে যৌথ ও একক নামে ব্যবসায় বিনিয়োগ করে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তিতে রূপান্তর করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
গাজার ত্রাণের বস্তায় নেশার বিষ নতুন পাইপলাইন প্রকল্পে ট্যাংকার শিল্পে বিপর্যয় এবার দুদকের মামলায় খালাস গোল্ডেন মনির ‘প্যাডসর্বস্ব’ রাজনৈতিক দলগুলোও তৎপর ধরাছোঁয়ার বাইরে বেশ কিছু মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান ব্যবসা-বাণিজ্য মহাসংকটে দুর্বল ১২ ব্যাংক পেল ৫৩ হাজার কোটি টাকা কুমিল্লায় নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল কমল স্বর্ণের দাম বিশ্বে ১ কোটি ৩৩ লাখ শিশু শরণার্থী পাকিস্তানে আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩২ ইস্পাহানের ভূগর্ভেই ইরানের ‘পারমাণবিক শক্তি’ চীনে ২০টি নতুন ভাইরাসের সন্ধান থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নের পদত্যাগের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ ড. ইউনূস, আলী রীয়াজ ও আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে মিশিগান কোর্টে মামলা মব পেল বৈধতা, ইউনূসের নেতৃত্বে রক্তাক্ত বাংলাদেশ ‘বিচ্ছেদ’ গুঞ্জন নিয়ে মুখ খুললেন ঐশ্বরিয়া খামেনির প্রাণ বাঁচিয়েছি, ধন্যবাদ লাগবে না: ট্রাম্প এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশের বিষয়ে জরুরি নির্দেশনা পাকিস্তানে আত্মঘাতি হামলায় ১৬ সেনা নিহত